নৌকা বাইচ
নদী মাতৃক দেশ বাংলাদেশ এবং নৌকা বাইচ আমাদের গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্যবাহি চিত্র। ভরা বরষায় নৌকা বাইচ দেখেনি এমন কোন মানুষ বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া যাবে বলে আমার মনে হয় না। এই নৌকা বাইচ দেখতে যে কি মজা ! তা ভাষায় বরণনা করা যায় না। যারা নৌকা বাইচ করে তদের অনুভূতি পাহাড় সমান। তাঁদের সাধারণ মানুষের কাতারে ফেলা যায় না। তখন তারা অতি মানব হয়ে যায়। মাথায় লাল ফিতা বেঁধে দে বৈঠা টান! আর যাদি তারা নৌকা বাইচ-এ জিতে যেতে পারে তবে তো কথাই নেই! তখন তাঁরা গ্রামের সবার প্রিয় পাত্র হয়ে যায়। গ্রামের গৌরব আনয়নের জন্য গোটা গ্রামের মানুষ তাঁদের (যারা নৌকা বাইচ করে) কাছে ঋণী থাকে। সবসময় তাদের গুণ-কীরতন করতে থাকে। এই নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে খেলা হয়। বড় বড় অনুষ্ঠান হয় যেখানে বড় বড় মানুষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার দেয়। এ ধরনের নৌকা বাইচ সাধারণত আগে থেকে জানিয়ে হয়।
কিন্তু আমি আজ এক ধরনের অঘোষিত নৌকা বাইচ-এর কথা বলবো। এ ধরনের নৌকা বাইচ আমাদের এলাকায় হরহামেসাই দেখা যায়। যেখানে নৌকা বাইচ আছে ঠিকই কিন্তু কোন পুরস্কার নেই, কোন আনুষ্ঠানিকতার বালাই নেই।
আমাদের বাড়ী ধরতে গেলে বিলের মাধ্যে। পাত্তুরী বিল। বছরের প্রায় ছয় মাসই আমাদের বাড়ীর চারিপাশে পানি থাকতো। আমাদের চলাচলের বাহন কুন্দা বা নৌকা। আমরা বরষাকালে নৌকা দিয়ে নাগরী বা পূবাইল বাজারে আসতাম। যাওয়া বা আসার সময় আমাদের মত এরকম অনেক নৌকার সাথে আমাদের নৌকা বাইচ হয়ে যেত। আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো আমাদের আগে যেন কোন নৌকা যেতে না পারে। অন্য নৌকায় যারা থাকতো তাদেরও উদ্দেশ্যে একই। অরথাৎ তাদের আগে যেন কেউ যেতে না পারে। এভাবে আমরা অনেক নৌকা বাইচ করেছি। অনেক সময় জিতেছি। তখন মন প্রফুল্ল হয়ে যেত, কিন্তু কোন পুরস্কার পেতাম না। অনেক সময় হেরেছি। তখন মনে ব্যাথা নিয়ে বাড়ী ফিরেছি। তখন সামান্য এই আনন্দ বেদনার মধ্যেই জীবনের স্বারথকতা বা ব্যরথতা খুঁজে পেতাম। এই সামান্যকে আমরা জীবন মনে করতাম। কিন্তু এখন আমরা কত কিছু চাই! সামন্যতে খুশী হতে চাই না। শুধু চাই, আর চাই। কখনও ভাবি না- আমাদের দেবেন কে???
-স্বপন রোজারিও, ২৯/৯/২০
কিন্তু আমি আজ এক ধরনের অঘোষিত নৌকা বাইচ-এর কথা বলবো। এ ধরনের নৌকা বাইচ আমাদের এলাকায় হরহামেসাই দেখা যায়। যেখানে নৌকা বাইচ আছে ঠিকই কিন্তু কোন পুরস্কার নেই, কোন আনুষ্ঠানিকতার বালাই নেই।
আমাদের বাড়ী ধরতে গেলে বিলের মাধ্যে। পাত্তুরী বিল। বছরের প্রায় ছয় মাসই আমাদের বাড়ীর চারিপাশে পানি থাকতো। আমাদের চলাচলের বাহন কুন্দা বা নৌকা। আমরা বরষাকালে নৌকা দিয়ে নাগরী বা পূবাইল বাজারে আসতাম। যাওয়া বা আসার সময় আমাদের মত এরকম অনেক নৌকার সাথে আমাদের নৌকা বাইচ হয়ে যেত। আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো আমাদের আগে যেন কোন নৌকা যেতে না পারে। অন্য নৌকায় যারা থাকতো তাদেরও উদ্দেশ্যে একই। অরথাৎ তাদের আগে যেন কেউ যেতে না পারে। এভাবে আমরা অনেক নৌকা বাইচ করেছি। অনেক সময় জিতেছি। তখন মন প্রফুল্ল হয়ে যেত, কিন্তু কোন পুরস্কার পেতাম না। অনেক সময় হেরেছি। তখন মনে ব্যাথা নিয়ে বাড়ী ফিরেছি। তখন সামান্য এই আনন্দ বেদনার মধ্যেই জীবনের স্বারথকতা বা ব্যরথতা খুঁজে পেতাম। এই সামান্যকে আমরা জীবন মনে করতাম। কিন্তু এখন আমরা কত কিছু চাই! সামন্যতে খুশী হতে চাই না। শুধু চাই, আর চাই। কখনও ভাবি না- আমাদের দেবেন কে???
-স্বপন রোজারিও, ২৯/৯/২০
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ন্যান্সি দেওয়ান ৩০/০৯/২০২০বাহ দারুন
-
আব্দুর রহমান আনসারী ৩০/০৯/২০২০সুখপাঠ্য
-
মুহাম্মদ ইসলাম উদ্দিন শরীফ ৩০/০৯/২০২০এসব পড়লেই পুরনো দিনে হারিয়ে যাই
-
হাবিবা বেগম ৩০/০৯/২০২০চমৎকার লাগল।
পুরোদনো ঐতিহ্য। -
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৯/০৯/২০২০এক ঐতিহ্যের নাম।
-
ফয়জুল মহী ২৯/০৯/২০২০অপূর্ব লেখনশৈলী