আমার রেলগাড়িতে চড়া
তখন আমি ৭ম বা ৮ম শ্রেণীতে পড়ি। তখন আমাদের পরীক্ষায় প্রায়ই একটি রচনা লিখতে দিতো। তা হলো A journey by Train. এই রচনাটি আমার পক্ষে লেখা খুবই কষ্টসাধ্য ছিলো। কারণ আমি তখনও রেলগাড়িতে উঠি নাই। একটা কাজ নিজে করে যেমন সুন্দরভাবে লেখা যায়, শুধু বই পড়ে সেভাবে লেখা যায় না। এভাবে চলতে থাকে অনেক দিন কিন্তু ঢাকায় আসার কোন সুযোগ হয়ে উঠে না। অন্যদিকে পরীক্ষায় রচনায় অনেক খারাপ নাম্বার পেতে থাকলাম। এবং মন ক্রমেই খারাপ হতে লাগলো।
একটি কথা বলা দরকার, আমার স্কুলের পাশেই রেললাইন। ঢাকা-চট্রগ্রাম রেললাইন। প্রতিদিন টিফিনের সময় ছাত্ররা মিলে রেললাইনে চলে যেতাম। সেই সময় ৫ পয়সা বা ১০ পয়সার মুদ্রা পাওয়া যেত। আমাদের বাড়ী থেকে ৫ পয়সা বা ১০ পয়সার মুদ্রা দেয়া হত টিফিন খাওয়ার জন্য। আমরা সেই পয়সায় টিফিন না খেয়ে পয়সার মুদ্রাটি রেললাইনে রাখতাম। আর পয়সার উপর দিয়ে রেলগাড়ির চাকা যাওয়ার ফলে সেটা লম্বা হয়ে ছুরির মত হয়ে যেত। আর সেই ছুরি দিয়ে সবাই মিলে আম কেটে খেতাম। আহা! কি যে আনন্দ। ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।
তো যাই হোক, আমার একটি সুযোগ ছিলো এটা যে, আমার কাকারা সবাই ঢাকা থাকতো। আমার এক কাকাকে গিয়ে বললাম, ‘ কাকা, সামনে বড়দিন আসতেছে, তাই জামা-কাপড় কেনার জন্য ঢাকা নিয়ে চল।’ কাকা বিনা বাক্যে রাজী হয়ে গেল আমাকে ঢাকা নিয়ে আসার জন্য। তখন আমাকে আর পায় কে? একবারে আনন্দের চোটে বাড়ি তোলপাড় করে ফেললাম আর কি! ঠিক হলো- সকালেই ঢাকা যাব, জামা-কাপড় কেনার জন্য। ঢাকা যাওয়ার চিন্তায় আর রাতে ঘুম আসলো না। তখন আমার কাছে ঢাকা আসা মানে বিশাল স্বপ্নের ব্যাপার ছিলো। মানুষ কানাড়া বা আমেরিকা যাবার সময়ও এ সুখ পায় না, যা আমি সেই সময় পেয়েছিলাম।
ভোরে রওয়ানা হলাম রেলগাড়ির উদ্দেশ্যে। আমাদের স্টেশনের নাম আড়িখোলা। আমরা স্টেশনে আসার সাথে সাথে যন্ত্রদানবও প্ল্যাটফরমে এসে হাজির হলো। কাকা টিকেট কিনে আসতে আসতে আমরা সবাই রেলগাড়িতে উঠে পড়লাম। আর বড় একটি হুইসেল দিলে গাড়িটি চলতে আরম্ভ করলো। আর আনন্দে আমার মত ভরে গেল। তখন গাড়িতে উপচে পড়া ভিড় ছিলো। একজনের মাথা আরেক জনে খাওয়ার মত অবস্থা। এভাবে চলতে লাগলো গাড়িটি। আমি জানালা দিয়ে দেখলাম, আশে পাশের সব গাছপালা এবং বাড়িগুলো যেন দৌড়াচ্ছে। এভাবে নলছাটা, পূবাইল, তালটিয়া ও টঙ্গী পর্যন্ত আসলাম। টঙ্গীর পরে গাড়ি অনেক ফাঁকা হয়ে গেল। এর কারণ ছিলো টঙ্গীর পরে ঢাকা যাওয়ার বিকল্প রাস্তা ছিলো। টঙ্গীর পরে ক্যান্টনমেন্ট, বনানী হয়ে গাড়িটি তেজগাঁও এসে পড়লো। আমি কাকার সাথে তেজগাঁও নেমে তাঁর বাসায় চলে গেল। এই হলো আমার রেলভ্রমণ। আমি এতো জায়গা ঘুরেছি কিন্তু প্রথম রেলভ্রমণের কথা এখনও ভুলতে পারি নি।
একটি কথা বলা দরকার, আমার স্কুলের পাশেই রেললাইন। ঢাকা-চট্রগ্রাম রেললাইন। প্রতিদিন টিফিনের সময় ছাত্ররা মিলে রেললাইনে চলে যেতাম। সেই সময় ৫ পয়সা বা ১০ পয়সার মুদ্রা পাওয়া যেত। আমাদের বাড়ী থেকে ৫ পয়সা বা ১০ পয়সার মুদ্রা দেয়া হত টিফিন খাওয়ার জন্য। আমরা সেই পয়সায় টিফিন না খেয়ে পয়সার মুদ্রাটি রেললাইনে রাখতাম। আর পয়সার উপর দিয়ে রেলগাড়ির চাকা যাওয়ার ফলে সেটা লম্বা হয়ে ছুরির মত হয়ে যেত। আর সেই ছুরি দিয়ে সবাই মিলে আম কেটে খেতাম। আহা! কি যে আনন্দ। ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।
তো যাই হোক, আমার একটি সুযোগ ছিলো এটা যে, আমার কাকারা সবাই ঢাকা থাকতো। আমার এক কাকাকে গিয়ে বললাম, ‘ কাকা, সামনে বড়দিন আসতেছে, তাই জামা-কাপড় কেনার জন্য ঢাকা নিয়ে চল।’ কাকা বিনা বাক্যে রাজী হয়ে গেল আমাকে ঢাকা নিয়ে আসার জন্য। তখন আমাকে আর পায় কে? একবারে আনন্দের চোটে বাড়ি তোলপাড় করে ফেললাম আর কি! ঠিক হলো- সকালেই ঢাকা যাব, জামা-কাপড় কেনার জন্য। ঢাকা যাওয়ার চিন্তায় আর রাতে ঘুম আসলো না। তখন আমার কাছে ঢাকা আসা মানে বিশাল স্বপ্নের ব্যাপার ছিলো। মানুষ কানাড়া বা আমেরিকা যাবার সময়ও এ সুখ পায় না, যা আমি সেই সময় পেয়েছিলাম।
ভোরে রওয়ানা হলাম রেলগাড়ির উদ্দেশ্যে। আমাদের স্টেশনের নাম আড়িখোলা। আমরা স্টেশনে আসার সাথে সাথে যন্ত্রদানবও প্ল্যাটফরমে এসে হাজির হলো। কাকা টিকেট কিনে আসতে আসতে আমরা সবাই রেলগাড়িতে উঠে পড়লাম। আর বড় একটি হুইসেল দিলে গাড়িটি চলতে আরম্ভ করলো। আর আনন্দে আমার মত ভরে গেল। তখন গাড়িতে উপচে পড়া ভিড় ছিলো। একজনের মাথা আরেক জনে খাওয়ার মত অবস্থা। এভাবে চলতে লাগলো গাড়িটি। আমি জানালা দিয়ে দেখলাম, আশে পাশের সব গাছপালা এবং বাড়িগুলো যেন দৌড়াচ্ছে। এভাবে নলছাটা, পূবাইল, তালটিয়া ও টঙ্গী পর্যন্ত আসলাম। টঙ্গীর পরে গাড়ি অনেক ফাঁকা হয়ে গেল। এর কারণ ছিলো টঙ্গীর পরে ঢাকা যাওয়ার বিকল্প রাস্তা ছিলো। টঙ্গীর পরে ক্যান্টনমেন্ট, বনানী হয়ে গাড়িটি তেজগাঁও এসে পড়লো। আমি কাকার সাথে তেজগাঁও নেমে তাঁর বাসায় চলে গেল। এই হলো আমার রেলভ্রমণ। আমি এতো জায়গা ঘুরেছি কিন্তু প্রথম রেলভ্রমণের কথা এখনও ভুলতে পারি নি।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আব্দুর রহমান আনসারী ২৫/০৯/২০২০অভিজ্ঞতা অসাধারণ
-
শ.ম. শহীদ ২৩/০৯/২০২০বেশ ভালো লিখেছেন।
-
কুমারেশ সরদার ২২/০৯/২০২০সুন্দর
-
ফয়জুল মহী ২১/০৯/২০২০Valo laglo
-
দীপঙ্কর বেরা ২১/০৯/২০২০ভাল অভিজ্ঞতা