ছেলেবেলার অদ্ভুত তাস খেলা
আমাদের ছেলেবেলা কেটেছে গ্রাম বাংলায়। সত্তর দশকের শেষ দিকে এবং আশি ও নব্বই-এর দশকে আমরা গ্রামে একধরনের অদ্ভুত তাস খেলায় মেতে থাকতাম। এই খেলা শুরু হলে আর শেষ হতো না। কত যে সময় নষ্ট করেছি এই খেলার পেছনে তা লিখে শেষ করতে পারবো না। তাস খেলা মানে সিগারেটের প্যাকেট খেলা আর কি! এটা আবার কি! একটু খুলে বলছি। আগে সিগারেটগুলো সুদৃশ্য প্যাকেটে মোড়ানো থাকতো। খুব চকচকা কালার। সিগারেটের প্যাকেটগুলো খুব সুন্দর লাগতো। এই প্যাকেটগুলোই ছিলো আমাদের খেলার উপাদান। সেই সময় হুক্কা খাওয়ার বেশ প্রচলন ছিলো। এমন কোন বাড়ী পাওয়া যেতনা যেখানে হুক্কা নেই। তখন মানুষের বাড়ী অতিথি আসলে হুক্কা খাওইয়ে আপ্যায়ন করা হতো। আমার দেখা কত মানুষ আমাদের বাড়ীতে এসেছে এবং হুকা বা তামাক খেয়ে চলে গেছে তার কোন হিসাব নেই। যারা একটু বড়লোক ছিলো তারা সিগারেট খেত। বিশেষ করে যারা ঢাকা বা অন্য কোন জায়গায় চাকুরী করতো তারা বেশী সিগারেট খেতো। বাড়ী গেলে অন্যকে তারা সিগারেট দিতো। আমাদের লোভ ছিলো সিগারেটে নয়, সিগারেটের প্যাকেটে। একটা সিগারেটের প্যাকেট পেলে মনে হয় যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়ে যেতাম আর কি! নিজেকে তখন বিরাট ধনী ধনী মনে হত। কোন ভাবে একটা প্যাকেট পেলে মনটা ভরে যেত! যেন জীবনে আর কিছু চাই না। সেই সময় কে-টু, স্টার, এ-থ্রি প্রভৃতি সিগারেটের প্রচলন বেশী ছিলো।
তো যা হোক, এই তাস খেলার জন্য আরেকটি উপাদান লাগতো, তা হল চাড়া। চাড়া মানে হলো- মাটির বা লোহার পাতিলের ভাঙ্গা অংশবিশেষ। কালীগঞ্জের বিখ্যাত মসলিন কটন মিলস এ বিভিন্ন বড় বড় গাইট বাঁধার জন্য ছোট চতুরভূজাকৃত্রির লৌহ জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করতো। যার মধ্যখানে কাটা থাকতো। কালীগঞ্জ থেকে আমাদের বাড়ী বেশী দূরে নয় বিধায় আমরা সেই লোহার চাড়া বেশী ব্যবহার করে তাস খেলতাম। খেলাটা হল- আমরা দুইটা পক্ষ হতাম। একটু ঢালু জায়গা হলে ভালো হত। একটা নির্দিষ্ট জায়গা থেকে একপক্ষ চাড়া চালান দিতো। অন্যপক্ষ দুই বার টেরি টেরি করে শেষ বার সই করতো অর্থাৎ দুইবার প্র্যাকটিস করে শেষ বার চাড়া ফাইনাল চালান দিতো। খেলার পূর্বেই মাপের একক নির্ধারণ করা হতো। যেমন- দুই আঙ্গুল বা ১ ইঞ্চি, বুইড়া আঙ্গুল হতে কাই আঙ্গুল পর্যন্ত ইত্যাদি। পরে দুইটা চাড়ার দূরত্ব মেপে খেলার জয় পরাজয় নির্ধারন করা হত। পরাজিত দল জয়ী দলকে তখন পূর্বের চুক্তি মোতাবেক তাস দিতো।
জীবনের অনেক সময় এই তাস খেলে আমি পার করে দিয়েছি। অনেক সময় এই তাস খেলার জন্য ভীষণ দৌঁড়ানী খেতাম। বিশেষ করে বয়োজেষ্ঠদের আসতে দেখলেই আমরা তাস খেলা রেখে দিতাম এক দৌড়। আমার ছোট বেলা যে কিভাবে কেটেছে তা বলাই বহুল্য!
তো যা হোক, এই তাস খেলার জন্য আরেকটি উপাদান লাগতো, তা হল চাড়া। চাড়া মানে হলো- মাটির বা লোহার পাতিলের ভাঙ্গা অংশবিশেষ। কালীগঞ্জের বিখ্যাত মসলিন কটন মিলস এ বিভিন্ন বড় বড় গাইট বাঁধার জন্য ছোট চতুরভূজাকৃত্রির লৌহ জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করতো। যার মধ্যখানে কাটা থাকতো। কালীগঞ্জ থেকে আমাদের বাড়ী বেশী দূরে নয় বিধায় আমরা সেই লোহার চাড়া বেশী ব্যবহার করে তাস খেলতাম। খেলাটা হল- আমরা দুইটা পক্ষ হতাম। একটু ঢালু জায়গা হলে ভালো হত। একটা নির্দিষ্ট জায়গা থেকে একপক্ষ চাড়া চালান দিতো। অন্যপক্ষ দুই বার টেরি টেরি করে শেষ বার সই করতো অর্থাৎ দুইবার প্র্যাকটিস করে শেষ বার চাড়া ফাইনাল চালান দিতো। খেলার পূর্বেই মাপের একক নির্ধারণ করা হতো। যেমন- দুই আঙ্গুল বা ১ ইঞ্চি, বুইড়া আঙ্গুল হতে কাই আঙ্গুল পর্যন্ত ইত্যাদি। পরে দুইটা চাড়ার দূরত্ব মেপে খেলার জয় পরাজয় নির্ধারন করা হত। পরাজিত দল জয়ী দলকে তখন পূর্বের চুক্তি মোতাবেক তাস দিতো।
জীবনের অনেক সময় এই তাস খেলে আমি পার করে দিয়েছি। অনেক সময় এই তাস খেলার জন্য ভীষণ দৌঁড়ানী খেতাম। বিশেষ করে বয়োজেষ্ঠদের আসতে দেখলেই আমরা তাস খেলা রেখে দিতাম এক দৌড়। আমার ছোট বেলা যে কিভাবে কেটেছে তা বলাই বহুল্য!
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আব্দুর রহমান আনসারী ২৬/০৯/২০২০এরকম তাসখেলার অভিজ্ঞতা আছে। শৈশবের এ খেলা ভুলবার নয়। আরও কত অভিজ্ঞতা!
-
ফয়জুল মহী ২০/০৯/২০২০Kub valo laglo
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২০/০৯/২০২০অনেক পুরাতন স্মৃতি!