আমার স্বপ্নের ম্যাজিস্ট্রেট
আমি ছোট বেলা থেকেই স্বপ্নবিলাসী ছিলাম। তাই মনে হয় আমার বাবা-মা বা আত্মীয়-স্বজন আমার নাম রেখেছিলেন স্বপন। যাহোক, আমি আমার এসএসসি পরীক্ষার কথা বলছি। আমি তুমিলিয়া বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র।১৯৮৭ সাল। আমি এসএসসি পরীক্ষা দিব। আমাদের সীট পড়েছে কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট হাই স্কুলে। বৃহস্পতিবার। দুইটি পরীক্ষা, বাংলা ১ম ও দ্বিতীয় পত্র। সেই সময় আমাদের বাংলা ও ইংরেজী পরীক্ষা একদিনে হত। তো সেদিন আমাদের বাংলা পরীক্ষা চলছিলো। মাথা নীচ করে লেখা শুরু করি। কারণ তখন ধারণা ছিলো- বাংলা পরীক্ষায় অনেক লিখতে হয়। স্যারেরা নাকি কাগজ দেখে নম্বর দেয়। লেখা দেখে নয়। তাই প্রশ্নপত্র পাওয়ার সাথে সাথে লিখতে শুরু করলাম। আরেকটা বিষয় ছিলো- বাংলা বিষয়ে ১০০ নম্বরের উত্তর দেয়া খুবই কঠিন ব্যাপার ছিলো। যত তাড়াতাড়িই লিখতাম না কেন, শেষে দেখা যেত ১০ নম্বরের উত্তর বাকী আছে। সুতরাং শেষ দিকে দ্রুত কমল চালাতে হত পরীক্ষা শেষ করার জন্য। তো পরীক্ষা চলছিলো। হঠাৎ করে দেখি আমার সামনে দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের ম্যাজিস্ট্রেট ঘুরছে। ঠক্ ঠক্ করে তাঁর জুতোর শব্দ হচ্ছে। আমি তাঁকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে অভিভূত হয়ে যাই। আমি তাঁকে তখন মনে করেছি, তিনিই মহামানব। তাঁর মত ক্ষমতাবান লোক যেন এই বিশ্বে আর নেই। তাঁর জুতোর ঠক্ ঠক্ শব্দ আমি এখনও যেন শুনতে পাই। তখন আমি প্রতিজ্ঞা নিয়েছিলাম যে, আমি জীবনে ম্যাজিস্ট্রেট হবো। আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার লক্ষ্যে। বিসিএস পরীক্ষাও দিয়েছিলাম। কিন্তু বিধি বাম। ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারি নি। কিস্তু ম্যাজিস্ট্রেট-এর জুতোর ঠক্ ঠক্ শব্দ আমি যেন এখনও শুনতে পাই....।
-স্বপন রোজারিও, মধুবাগ, ঢাকা, ১৫/৪/২০
-স্বপন রোজারিও, মধুবাগ, ঢাকা, ১৫/৪/২০
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মুনজুরুল ইসলাম নাহিদ ২৮/০৮/২০২০ভালো লাগলো
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ১৬/০৮/২০২০ভালো লাগলো।
-
ফয়জুল মহী ১৫/০৮/২০২০অসামান্য ও অতুলীয় ভাবনায় নান্দনিক লেখনী ।