একটি বিয়ে বাড়ির আত্মকথা (১)
আমি একটি গ্রামের বিয়ে বাড়ি। আমার মাধ্যমে একটি পুরুষ ও নারী সারা জীবনের স্বপ্ন দেখে, সুখের ঘর বাঁধে। সবাই যে সুখের ঘর বাঁধে তা হলফ করে বলতে পারবো না। কেউ কেউ ঘর বেঁধে অসুখীও হয়েছে। সুতরাং সুখ-দু:খ দু্ই ধরণের অনুভূতিই আমার আছে। বিবাহ উপলক্ষে আমার কাছে বিখ্যাত-কুখ্যাত দুই ধরনের মানুষই আসে। ভালো মানুষ আসলে আমার মনটা আনন্দে ভরে যায়। ভালো মানুষদের আমি মনে প্রাণে আপ্যায়ন করি। তাঁদের যেন কোন কষ্ট না হয় সমসময় সেই কাজই করি। অন্য দিকে দুষ্ট লোক আসলে আমার মনটা খারাপ হয়ে যায়। এই লোকদের আমি ভালোভাবে অপ্যায়ণের চেষ্টা করি না। যেন বিদায় করে দিতে পারলেই বাঁচি। যারা কোমল পানি খেয়ে আমার কাছে আসে তাদের আমি দেখতে পারি না, মনে প্রাণে ঘৃণা করি। তাদের জন্য আমার চেহারা ম্লান হয়ে যায়। তাদের জন্য আমি রাস্তায় পানি ঢেলে রাখি যেন তারা পা পিছলে পড়ে যায় এবং আমার কাছ থেকে বিদায় নেয়। যখন বিয়ের বাজনা বাজে তখন আমার অনেক ভালো লাগে। মনের মধ্যে একটা আনন্দের ঢেউ বয়ে যায় যা বিয়ে শেষ না হওয়া পর্যন্ত থামে না। এই আনন্দ আমার কাছে সীমাহীন, আমার কাছে অমূল্য। ঢাকের মধ্যে যখন হাত পড়ে তখন একটা উচ্ছাস অনুভূত হয় যা সীমার মধ্যে অসীম, যেন কালের মধ্যে অনন্তকাল। ঢাকের বাজনায় সারারাত নাচতে ইচ্ছা করে। মন চলে যায় আকাশে বা হিমালয়ে, কখনো কখনো মহাসমুদ্রে বা পাতালে। অতিথিরা যখন গিফট দেয় তখন আমার অনেক ভালো লাগে। একজন যখন উচ্চস্বরে বলতে থাকে ‘ছেলের মামি একটি পিতলা কলসী দিচে’ তখন আমি খুবই পুলকিত হই এবং যে এই ঘোষণাটি দেয় তাকে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় নেতা মনে করি। বর-কনেকে আশিরবাদ করতে এসে বাবা-মায়েরা যখন কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তখন আমিও কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি। মানুষ যখন খেয়ে-দেয়ে চলে যায় তখন আমি মনে খুবই কষ্ট পাই।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
বোরহানুল ইসলাম লিটন ১৩/০৮/২০২০
-
সুমাইয়া হোসেন সুরভী ১৩/০৮/২০২০অসাধারণ
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ১৩/০৮/২০২০amazing...
-
ফয়জুল মহী ১২/০৮/২০২০তথ্যমূলক লেখা । অজানা ছিল পড়ে জানা হলো।
এ যেন আমার মনের কথা লিখেছেন।