www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বৈঠকী গান

আগে ভাওয়াল এলাকায় বৈঠকী গানের প্রচলন ছিলো। এই গান আমাদের সাংস্কৃতিরই অংশ ছিলো। তখনকার গ্রাম-বাংলার মানুষ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে এই বৈঠকী গান উপভোগ করতো। দুইটি দল পালাক্রমে এই গান পরিচালনা করতো। এই গানের শেষে এক দল আরেক দলকে বাইবেল ভিত্তিক প্রশ্ন করতো এবং অন্য দল প্রশ্নের উত্তর দিতো। আমাদের এলাকায় দুটি শক্তিশালী বৈঠকী গানের দল ছিলো। একটি পিপ্রাশৈর দল এবং অন্যটি চড়াখোলা দল। এছাড়া রাঙ্গামাটিয়া, মাল্লাসহ আরও অনেক বৈঠকী গানের দল ছিলো। এই গান যিনি পরিচালনা করতেন বা যিনি নেতৃত্ব দিতেন তাঁকে সরকার বলা হত। পিপ্রাশৈর গানের দলের সরকার ছিলো বীর মুক্তিযোদ্ধা অরুণ কস্তা (গোপাইটা)। অরুণ কস্তা একজন গীতিকার ও সুরকার। পিপ্রাশৈর গ্রামের কীর্তন দলের যত গান আছে তার অধিকাংশই রচনা করেছেন অরুণ কস্তা। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন অরুণ কস্তার নিকট কীর্তনের গানের তালিম লওয়ার সুযোগ আমার হয়েছিলো। চড়াখোলা গ্রামের সরকার ছিলো যোসেফ-আব্রাহাম রিবেরু দুই ভ্রাতা। আব্রাহাম রিবেরুর পরিচালনা আমার খুব ভালো লাগতো। আমি যেন এখনও তাঁকে আবছা আবছা দেখতে পাই। তাঁর লম্বা লম্বা চুল ছিলো। যখন তিনি গানের সাথে সাথে চুল ঝাঁকি দিতেন তখন তাঁকে চমৎকার লাগতো। তাঁকে নায়ক নায়ক মনে হত। আমার কাছে তাঁর অঙ্গভঙ্গি অপূর্ব লাগতো। তাঁকে একনজর দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম।
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বৈঠকী গান এখন বিলুপ্তপ্রায়। এই ঐতিহ্যকে আমাদের এখন ধরে রাখতে হবে। বৈঠকী গানসহ গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্যগুলো ধরে রাখতে পারলে আমাদের সমাজে অপরাধ প্রবনতা একেবারেই কমে যাবে।
-স্বপন রোজারিও, মধুবাগ, ঢাকা, ১১/০৮/২০
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৩২৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১১/০৮/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast