সমবায়ীদের জন্য প্রণোদনা এখন জরুরী
মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) -এর ফলে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অর্থনীতি চরমভাবে ক্ষতির সন্মুখিত হয়েছে। পৃথিবীর সুপার পাওয়ার হিসেবে পরিচিত খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশের অর্থনীতি এই করোনার ফলে একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে, চাকরি থেকে ছাঁটাই হয়েছে লক্ষ লক্ষ শ্রমজীবি মানুষ। বাংলাদেশের অবস্থাও কোন অংশে ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশে অন্যান্য খাতের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সমবায় খাতও। এই মহামারিতে অনেক সমবায়ী চাকুরি হতে ছাঁটাই হয়েছে। অনেকের ব্যবসায় মন্দাভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। টাকার অভাবে অনেক সমবায়ী আবার ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক সমবায়ী তাদের শেষ সম্বল ভিটে-মাটি বিক্রি করে নি:স্ব হয়ে গেছে। অনেকে শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গিয়েছে। হাতে টাকা না থাকার কারণে অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ক্রয় করে কোনভাবে বেঁচে থাকার জন্য সমবায়ীরা তাদের জমানো টাকা তুলে নিয়ে গেছে। ফলশ্রুতিতে সমিতিতে প্রাতিষ্ঠানিক মূলধন বিপুলহারে কমে গেছে। আবার কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে কোন কোন ক্ষেত্রে সঠিক বিনিয়োগের সুযোগ না থাকার কারণে তারল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার দীর্ঘ লকডাউনের ফলে সদস্যদের আয় শূন্যের কোঠায় গিয়ে পৌঁছেছে। ফলশ্রুতিতে সমিতির ঋণ প্রবাহ একেবারে কমে গেছে অর্থাৎ সদস্যরা ঋণ নিতে উৎসাহিত হচ্ছেন না বা আয় না থাকার কারণে ঋণ নেয়ার জন্য কোয়ালিফাই করছেন না। অন্যদিকে সদস্যদের কাজ না থাকার ফলে আয়-রোজগারহীনভাবে থাকার কারণে সদস্যরা ঋণের কিস্তি ও সুদ স্বাভাবিকভাবেই ফেরৎ দিতে পারছেন না। সমিতি সদস্যদের নিকট থেকে এফডিআর হিসেবে যে টাকা এনেছে বা ক্রয় করেছে তার সুদ কিন্তু সমিতি কোন সদস্যকে কম দিতে পারবে না। অন্যভাবে বলতে গেলে, কোন সদস্যই তার এফডিআর-এর বিপরীতে কম সুদ বা মুনাফা গ্রহণ করবেন না। অথচ সমিতির যে প্রধান ও একমাত্র আয় ঋণের বিপরীতে মুনাফা বা সুদ তা সমিতির সদস্যরা ঠিকমত সমিতিতে ফেরত দিতে পারছে না। ফলে খেলাপীর হার ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এই খেলাপীর হার বেশী বৃদ্ধি পেলে সমিতি একসময় আর চলবে না। অন্যদিকে সমবায় সমিতি অন্য কোন কল-কারখানার মত এত সহজেই এর কর্মী ছাঁটাই করে না। ফলে এ খারাপ পরিস্থিতিতেও সমিতিতে অপারেটিং কষ্ট কমানোর কোনই সুযোগই আসলে নেই। দেশের অনেক সমিতি সদস্যদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা প্রদান করে আসছে। এই পরিস্থিতিকে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা খাতেও সমিতি ব্যয় বিপুলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই করোনা মহামারিতে মানুষের মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে গেছে অনেকগুণ। এই রোগের প্রদুর্ভাবে অনেক সদস্য মৃত্যুবরণও করেছে। এই করোনা পরিস্থিতিতে যদি সমিতির সদস্যই না থাকে তাহলে সমিতি চলবে কি করে? মহামারির এই পরিস্থিতিতে নানাভাবে ক্ষতির সন্মুখিন হয়েছেন ১ কোটির বেশী সমবায়ী এবং ৯ লক্ষের অধিক সমবায় কর্মকর্তা ও কর্মী।
বাংলাদেশের সংবিধানে সমবায় খাতকে উন্নয়নের দ্বিতীয় খাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বিভিন্ন খাতে প্রনোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সমবায়ীদের অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা বিবেচনা করে তাদের জন্যও প্রনোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হোক এবং সমিতির উপর আরোপিত ১৫% আয়কর প্রত্যাহার করা হোক। একইসাথে সময় এসেছে সিডিএফ (কো-অপারেটিভ ডেভেলপমেন্ট ফান্ড) থেকে সমবায়ীদের অনুদান প্রদান করারও।
২৮/৭/২০
বাংলাদেশের সংবিধানে সমবায় খাতকে উন্নয়নের দ্বিতীয় খাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বিভিন্ন খাতে প্রনোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সমবায়ীদের অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা বিবেচনা করে তাদের জন্যও প্রনোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হোক এবং সমিতির উপর আরোপিত ১৫% আয়কর প্রত্যাহার করা হোক। একইসাথে সময় এসেছে সিডিএফ (কো-অপারেটিভ ডেভেলপমেন্ট ফান্ড) থেকে সমবায়ীদের অনুদান প্রদান করারও।
২৮/৭/২০
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মজনুআহাদী ১০/০৮/২০২০সহমত, দারুণ উপস্থাপনা
-
আব্দুর রহমান আনসারী ০১/০৮/২০২০বেশ সুন্দর
-
মো.রিদওয়ান আল হাসান ৩০/০৭/২০২০ঠিক
-
সুলতান মাহমুদ ২৮/০৭/২০২০good thinking
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২৮/০৭/২০২০nice
-
ফয়জুল মহী ২৭/০৭/২০২০উৎকৃষ্ট চিন্তার চয়ন ।