www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

গর্বের সমবায়- গরিবের ব্যাংক

সমবায় হল এমন একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও অবাধ সদস্যপদের স্বায়ত্বশাসিত ও স্বাধীন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান। যার মালিক এর সদস্যগণ। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত। এখানে সকলে মিলেমিশে আর্থিক সমস্যার সমাধান করতে প্রয়াসী হয়।

সমবায় সদস্যসেবা ও সহযোগিতার সংগঠন। সমবায় সমাজ উন্নয়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সমবায়ে থাকবে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও তথ্যের সমারোহ। এই সমবায় ইতোমধ্যে গরিব মানুষের ব্যাংক হিসেবে সমধিক পরিচিতি লাভ করেছে। কারণ, যে সকল সাধারণ মানুষ ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে পারে না, তারা সহজেই সমবায়ের সদস্য হতে পারেন এবং সমবায়ের মাধ্যমে জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে পারেন। ফলশ্রুতিতে দেশের আনাচেকানাচে আজ সমবায়ের পদচারণা।

বাংলাদেশে সমবায় আন্দোলনে প্রবাদ পুরুষ হলেন একজন ধর্মীয় যাজক। স্বর্গীয় ফাদার চার্লস জে. ইয়াং সি.এস.সি। তিনি কানাডার কোডি ইনন্সিটিউট থেকে সমবায়ের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে সমবায় শুরু করেন। এরপর তিনি স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় দেশের প্রতিটি ধর্মপল্লীতে সমবায় আন্দোলন জোরদার করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। ফলশ্রুতিতে প্রতিটি ধর্মপল্লীতে বর্তমানে সমবায় সমিতি রয়েছে। এরপর এ আন্দোলন দেশব্যাপি বিস্তার লাভ করেছে। তাই ফাদার ইয়াংসহ যাঁরা সমবায় আন্দোলনে অসীম অবদান রেখেছেন তাঁদের অবদানের কথা আজ আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।


সমবায় আমাদের চলার পথের সাথী। বিপদে-আপদে এ সমবায়ই প্রকৃত বন্ধুর ভূমিকা পালন করে। যেখানেই আমরা আর্থির সমস্যার কারণে থেমে গিয়েছি, সেখানে সমবায় আমাদের সহযোগিতা করেছে সমবায়। আর্থিক সচ্ছলতা দিয়ে আমাদের জীবনের চলার গতিকে করেছে সচল।

সমবায় না থাকলে আমাদের জীবন হয়তো-বা থেমে গিয়ে মুখ থুবরে পরে থাকত কোন কোন সময়। বর্তমানে সমবায় জাতীয়ভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর হিসাবে পরিগনিত হয়েছে। এ ধরনের সাবলম্বী প্রতিষ্ঠান বেশি নেই আমাদের দেশে। এ প্রতিষ্ঠান নিজের ফান্ড থেকে সদস্যদের আর্থিক সেবা প্রদান করে। সমবায় অন্য কোনো সংস্থার আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে চলে না।

সমবায় এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা নিয়ে আমরা রীতিমতো গর্ব বোধ করতে পারি। সমবায় থেকে ঋণ নিয়ে অনেক সদস্য অনেক কাজ করেছে। তাদের আর্থিক সমস্যার সমাধান করে জীবনমানের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। এর ভুরভুরি প্রমাণ পাওয়া যায়। বিশেষ করে গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকদের আপন বন্ধু হিসেবে সমবায় সমিতি কাজ করে যাচ্ছে। কোন বাড়িতে একটি ইটের ঘর থাকলে এবং সে গৃহের বাসিন্দারা যদি কোনো সমবায় সমিতির সদস্য হন, তবে অনেকটা ধারণা করা যায় যে, ওই ঘরটি সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এ ধারণা অনেকাংশে সঠিক। শুধু ঘর দেওয়া কেন, ছেলে-মেয়ের বিবাহ, সন্তানকে বিদেশে পাঠানো, জরুরি চিকিৎসা, জমি ক্রয়, ফার্নিচার ক্রয়, হাঁস-মুরগীর খামার, গরু ক্রয়, মৎস পালন, ব্যবসা, কৃষি, বই কেনা, ঋণ পরিশোধ এমন বহুবিধ উদ্দেশ্যে ঋণ প্রদান করা হয়।

একথা বলাই বাহুল্য যে, সমবায় থেকে এ ধরনের ঋণ নিয়ে সমিতির সদস্য-সদস্যাগণ উপকৃতও হচ্ছেন অনেক বেশি।
সমবায়ই উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির চাবিকাঠি। একথা সত্য যে, একটি সমবায়কে ধ্বংস করতে হলে কয়েকজন অসৎ লোকই যথেষ্ট। তাই সমবায়ে কোনো অসৎ লোক রাখা যাবে না। সমবায় অঙ্গণে যদি কোনো অসৎ লোক থেকে থাকে, তবে তাকে সনাক্ত করে বর্জন করতে হবে। সমবায় অঙ্গন অসৎ লোক মুক্ত রাখতে হবে। স্বর্গীয় ফাদার চার্লস জে. ইয়াং বলে গেছেন, ‘সমবায়ে অসৎ লোকের কোনো স্থান নেই।’
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৩৬৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৪/০৫/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast