আমার প্রিয় রং হলুদ ( রম্য রচনা )
( পর্ব-১ )
দুনিয়াতে অনেক রঙের সমাহার । বেনিআসহকলা নামেও একটি শব্দ আছে | রংধনুর সাতরঙ্গের বাহার কার না জানা আছে ? কিন্তু এতকিছুর বাইরে আমি কেন হলুদ রংকে নিয়ে এই রম্যরচনা লিখছি , আসুন পুরোটা পড়া যাক !
হলুদ একটি উজ্জ্বল রং। প্রতিটি মানুষের জীবনে হলুদ রঙের যথেষ্ট তাৎপর্য আছে। কীভাবে? কারণ, সূর্যের আলোর রং হলুদ (যদিও সূর্যের আলো সাদা। কিন্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে সূর্যের আলো বিচ্ছুরণের কারণে আমাদের চোখে হলুদ দেখায়)। আপনি হয়তো খেয়াল করেছেন, স্মাইলি ইমোজির রংও হলুদ। লাল ও হলুদ রং মেশালে পাওয়া যায় কমলা রং। আবার হলুদের সঙ্গে নীল রং মেশালে পাওয়া যায় সবুজ। তার মানে এই যে আমাদের দেশের জাতীয় পতাকা , সেটার সবুজ রঙের ভিতর ঘাপটি মেরে বসে আছে আমার প্রিয় রং হলুদ । আসুন, এই হলুদের বিশাল অক্টপাসের মতন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার পিলে চমকানো আনন্দ খোঁজার চেষ্টা করি । আমার সাথে সাথে দেখবেন , আপনার কাছেও প্রিয় হয়ে উঠেছে হলুদ রং ।
আমাদের পছন্দের রং আমাদের চরিত্র সম্পর্কে অনেক কিছু বলতে পারে। আমাদের প্রিয় রঙের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে আমাদের মানসিকতা ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। আমি অনেক জায়গায় স্টাডি করে হলুদ রঙের পছন্দকারীদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আবিষ্কার করেছি, পুরোটা মিলে গেলে আপনি মহা ভাগ্যবান ।
অনলাইনের গবেষণা বলছে - সবসময় হাসি খুশি থাকতেই ভালোবাসেন আপনি। আশাবাদী ও ইতিবাচক চিন্তাভাবনা পোষণ করেন হলুদ রঙের প্রেমীরা। আবার সৎ ও নিষ্ঠাবানও। কঠিন পরিশ্রমের পর সাফল্য অর্জন করেন। অন্যকে সঠিক পথে চালিত করতে ভালোবাসেন। হলুদ যাঁদের প্রিয় রং, তাঁরা সকলের সাহায্যের জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকেন। চারদিকে আনন্দ ছড়ানো নাকি আমাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু মাঝে মধ্যে, বেশি পরোপকারী স্বভাবের কারণে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। হলুদ রং শুভ। এই রং যাঁরা পছন্দ করেন, তাঁদের ধার্মিক মনে করা হয়। এতো সুন্দর সুন্দর প্রশংসা শুনে নিজের কাঁধে নিজেকেই চাপড়াতে ইচ্ছে করছে ।
একগাল হাসি দিয়ে গালের দুই পাশ নিশ্চয় লাল হয়ে গেছে | সেই লাল রঙের পিছনেও কিন্তু হলুদের অবদান । কারণ, হলুদের ল ধার নিয়েই লালের পরিপূর্ণতা ! ছোটখাটো ব্যাপারে মাথা ঘামাতে একদম পছন্দ করেন না হলুদপ্রেমীরা। অতীতের ভুল নিয়ে তারা কান্নাকাটি করেন না। বরং ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে ভালোবাসেন। যে কোনো পরিস্থিতিতে তারা খুব পজিটিভ থাকেন। আমরা আরেকটু গভীরে যাই !
কলা খেতে কে না পছন্দ করে ? ঠিক জমজমাট হলুদ না হলে কলা না কিনে বাড়ি ফেরা লোকের সংখ্যা নেহায়েত কম নয় ! রাস্তায় পটকা ফুটলে কিংবা পাওনাদারদের দেখলে চোখে সর্ষে ফুল দেখা লোকটির চোখে-মুখে হলুদের ঝিলিক দেখলে আমার কিন্তু খুব ভালো লাগে । সর্ষেফুলটাই যে হলুদে হলুদ ! আহা !
এই তো ক'দিন আগেই শেষ হয়ে গেলো ফাল্গুনী উৎসব ! পুরো ফাল্গুন জুড়েই যেন হলুদের মেলা ! সুন্দরী রমনীদের খোঁপায় গাঁদা ফুলের মালাই প্রমান করে, হলুদ না হলে ঠিক জমে না ! হলুদ পাঞ্জাবি পড়া ছেলেগুলাকে দেখে ফিরে যেতাম কলেজ লাইফে , ভার্সিটির দুরন্তপনা সময়ে । তখনকার সময়ে হলুদ কিছু পড়া মানেই খ্যেত ! হুমায়ুন আহমেদের অনেক ছোট গল্পের প্রিয় ক্যারেক্টারের একটি হিমু । যার একমাত্র পোশাক ছিল জিন্স এন্ড হলুদ পাঞ্জাবি | সঙ্গে চামড়ার স্যান্ডেল । দারুন চরিত্র , নিঃসন্দেহে | আমার-ও মাঝে মাঝে হিমু হয়ে যেতে ইচ্ছে করে ।
গায়ে হলুদের প্রোগ্রামে কাঁচা হলুদের একটু ঘষাঘষি না হলে যেন বিয়ের আনন্দটাই ঠিক জমে না ! হলদি বাটো মেন্দি বাটো , বাটো ফুলের মৌ ...এই গানটার সাথে সাথে যেমন বিয়েটা হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায়; ঠিক তেমনি ডিমের কুসুমটা হলুদ না হলে অমলেটটাই যেন পাংশে লাগে ! যেমন পাকা আমের মধুর রসে, রঙিন করি মুখ ! সেই আমের ভিতরটা কিন্তু হলুদ হওয়া চাই ! ফলের দোকানে গিয়ে যেমন কাঁঠালটা ভেঙে কোয়াগুলো হলুদ না হলে দোকানদারের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধারে বাঙালির জুড়ি নাই ! হলুদ যেন আমার রক্তের শিরায় শিরায় ! --- চলবে
দুনিয়াতে অনেক রঙের সমাহার । বেনিআসহকলা নামেও একটি শব্দ আছে | রংধনুর সাতরঙ্গের বাহার কার না জানা আছে ? কিন্তু এতকিছুর বাইরে আমি কেন হলুদ রংকে নিয়ে এই রম্যরচনা লিখছি , আসুন পুরোটা পড়া যাক !
হলুদ একটি উজ্জ্বল রং। প্রতিটি মানুষের জীবনে হলুদ রঙের যথেষ্ট তাৎপর্য আছে। কীভাবে? কারণ, সূর্যের আলোর রং হলুদ (যদিও সূর্যের আলো সাদা। কিন্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে সূর্যের আলো বিচ্ছুরণের কারণে আমাদের চোখে হলুদ দেখায়)। আপনি হয়তো খেয়াল করেছেন, স্মাইলি ইমোজির রংও হলুদ। লাল ও হলুদ রং মেশালে পাওয়া যায় কমলা রং। আবার হলুদের সঙ্গে নীল রং মেশালে পাওয়া যায় সবুজ। তার মানে এই যে আমাদের দেশের জাতীয় পতাকা , সেটার সবুজ রঙের ভিতর ঘাপটি মেরে বসে আছে আমার প্রিয় রং হলুদ । আসুন, এই হলুদের বিশাল অক্টপাসের মতন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার পিলে চমকানো আনন্দ খোঁজার চেষ্টা করি । আমার সাথে সাথে দেখবেন , আপনার কাছেও প্রিয় হয়ে উঠেছে হলুদ রং ।
আমাদের পছন্দের রং আমাদের চরিত্র সম্পর্কে অনেক কিছু বলতে পারে। আমাদের প্রিয় রঙের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে আমাদের মানসিকতা ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। আমি অনেক জায়গায় স্টাডি করে হলুদ রঙের পছন্দকারীদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আবিষ্কার করেছি, পুরোটা মিলে গেলে আপনি মহা ভাগ্যবান ।
অনলাইনের গবেষণা বলছে - সবসময় হাসি খুশি থাকতেই ভালোবাসেন আপনি। আশাবাদী ও ইতিবাচক চিন্তাভাবনা পোষণ করেন হলুদ রঙের প্রেমীরা। আবার সৎ ও নিষ্ঠাবানও। কঠিন পরিশ্রমের পর সাফল্য অর্জন করেন। অন্যকে সঠিক পথে চালিত করতে ভালোবাসেন। হলুদ যাঁদের প্রিয় রং, তাঁরা সকলের সাহায্যের জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকেন। চারদিকে আনন্দ ছড়ানো নাকি আমাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু মাঝে মধ্যে, বেশি পরোপকারী স্বভাবের কারণে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। হলুদ রং শুভ। এই রং যাঁরা পছন্দ করেন, তাঁদের ধার্মিক মনে করা হয়। এতো সুন্দর সুন্দর প্রশংসা শুনে নিজের কাঁধে নিজেকেই চাপড়াতে ইচ্ছে করছে ।
একগাল হাসি দিয়ে গালের দুই পাশ নিশ্চয় লাল হয়ে গেছে | সেই লাল রঙের পিছনেও কিন্তু হলুদের অবদান । কারণ, হলুদের ল ধার নিয়েই লালের পরিপূর্ণতা ! ছোটখাটো ব্যাপারে মাথা ঘামাতে একদম পছন্দ করেন না হলুদপ্রেমীরা। অতীতের ভুল নিয়ে তারা কান্নাকাটি করেন না। বরং ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে ভালোবাসেন। যে কোনো পরিস্থিতিতে তারা খুব পজিটিভ থাকেন। আমরা আরেকটু গভীরে যাই !
কলা খেতে কে না পছন্দ করে ? ঠিক জমজমাট হলুদ না হলে কলা না কিনে বাড়ি ফেরা লোকের সংখ্যা নেহায়েত কম নয় ! রাস্তায় পটকা ফুটলে কিংবা পাওনাদারদের দেখলে চোখে সর্ষে ফুল দেখা লোকটির চোখে-মুখে হলুদের ঝিলিক দেখলে আমার কিন্তু খুব ভালো লাগে । সর্ষেফুলটাই যে হলুদে হলুদ ! আহা !
এই তো ক'দিন আগেই শেষ হয়ে গেলো ফাল্গুনী উৎসব ! পুরো ফাল্গুন জুড়েই যেন হলুদের মেলা ! সুন্দরী রমনীদের খোঁপায় গাঁদা ফুলের মালাই প্রমান করে, হলুদ না হলে ঠিক জমে না ! হলুদ পাঞ্জাবি পড়া ছেলেগুলাকে দেখে ফিরে যেতাম কলেজ লাইফে , ভার্সিটির দুরন্তপনা সময়ে । তখনকার সময়ে হলুদ কিছু পড়া মানেই খ্যেত ! হুমায়ুন আহমেদের অনেক ছোট গল্পের প্রিয় ক্যারেক্টারের একটি হিমু । যার একমাত্র পোশাক ছিল জিন্স এন্ড হলুদ পাঞ্জাবি | সঙ্গে চামড়ার স্যান্ডেল । দারুন চরিত্র , নিঃসন্দেহে | আমার-ও মাঝে মাঝে হিমু হয়ে যেতে ইচ্ছে করে ।
গায়ে হলুদের প্রোগ্রামে কাঁচা হলুদের একটু ঘষাঘষি না হলে যেন বিয়ের আনন্দটাই ঠিক জমে না ! হলদি বাটো মেন্দি বাটো , বাটো ফুলের মৌ ...এই গানটার সাথে সাথে যেমন বিয়েটা হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায়; ঠিক তেমনি ডিমের কুসুমটা হলুদ না হলে অমলেটটাই যেন পাংশে লাগে ! যেমন পাকা আমের মধুর রসে, রঙিন করি মুখ ! সেই আমের ভিতরটা কিন্তু হলুদ হওয়া চাই ! ফলের দোকানে গিয়ে যেমন কাঁঠালটা ভেঙে কোয়াগুলো হলুদ না হলে দোকানদারের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধারে বাঙালির জুড়ি নাই ! হলুদ যেন আমার রক্তের শিরায় শিরায় ! --- চলবে
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
অর্ঘ্যদীপ চক্রবর্তী ২০/০৫/২০২৩ভালো