ধারাবাহিক গল্প উবার ২২৬১
ভালবাসার গল্প : উবার ২২৬১
[ চতুর্থ পর্ব ]
পাঁচ.
- মিসেস আভা , আপনি ভুল করতে যাচ্ছেন !
-স্যার , আমি মিস , নট মিসেস !
- ওই একই কথা ! আপনি যে ডিসিশনটা নিতে যাচ্ছেন , আমার মনে হয় আপনি ভুল করছেন ! আরেকবার ভেবে দেখেন !
- স্যার, আমি খুব ভালভাবে চিন্তা করেই ডিসিশনটা নিয়েছি ! কারণ, এই মুহূর্তে চায়না কখনোই আমেরিকার সাথে পাল্লা দিয়ে তাঁর প্রোডাক্ট লস করে বিক্রি করবে না ! অতএব, সেই চিন্তা করে আমি আমার প্রোডাক্টকেও চিপ করে ইউরোপিয়ানদের হাতে তুলে দিতে পারিনা ! বায়ারতো অনেক অজুহাত দেখাবেই , তাদের তিনটা হাত অলওয়েজ এক্টিভ !
- তারপরেও আমি বলবো মিসেস আভা, একটু ভেবে দেখেন ; অযথা এই রানিং আইটেমগুলো স্টকলট করে লাভ কি ? আই হেভ শেয়ার্ড মাই ওপিনিয়ন ! হোয়াটেভার , বেস্ট অফ লাক !
সানশাইন গ্রূপ অব কোম্পানিজের অনেক হাই অফিসিয়ালদের মধ্যে লস্কর সাব আভার অপছন্দের শীর্ষে | কথা নেই বার্তা নেই হুটহাট করে রুমে ঢুকে পড়েন, কোনো কার্টেসি মেইনটেইন করেন না | আরেকদিন আভা মিটিং-এ যাওয়ার আগে একটু হ্যান্ড মিররে লিপস্টিক লাগিয়ে নিচ্ছিলো , ঠিক সেইসময় লস্কর সাব ঢুকেই বলে ফেললেন, এই সাজগোজ করে কোথায় যাওয়া হচ্ছে মিসেস আভা !
থতমত খেয়ে সেইদিনের পরিস্থিতি সামলে আভা বলেছিলো, " স্যার আমি মিস আভা ! নট মিসেস ! " কে শুনে কার কথা ? লস্কর সাব দেখা হলেই ওই একই কথার পুনরাবৃত্তি | আভাও ছেড়ে দেবার পাত্রী নয় |
কলিংবেল টিপে সেলিমকে একটা হট কফি দিতে বললো আভা | আজ আবার গুলশানে যাওয়ার একটা প্ল্যান আছে | গাড়ি রেডি আছে কিনা ইন্টারকমে জেনে নিলো সে | ওপাশ থেকে জানানো হলো, অফিসের গাড়ি নিয়ে যাবে আভাকে | সঙ্গে সেকান্দার সাহেবের ও যাওয়ার কথা | আভার অপছন্দের আরেকজন | উনার সঙ্গে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না , নিজে একা একাই বলে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ইন্টারকমে আবার কল দিয়ে বললো - লিজা, আপনি বরং সেকান্দার সাবকে গাড়ি নিয়ে যেতে বলেন | আমি অন্যভাবে পৌঁছে যাবো |
ফোন হাতে নিয়ে ভাবছিলো, ইভানকে একটা কল দিবে কিনা ? ব্যাপারটা কি বেশী হালকা হয়ে যাবে ? পার্সোনালিটিতে কি আঁচড় পড়বে ? ইভান কি বুঝে নেবে , আমি ওর প্রেমে পড়ে গেছি | যদি এভোয়েড করে , তাহলে একটা লজ্জার ব্যাপার হবে | না থাক, উবারেই কল দেই, সেই ভালো |
ছয়.
গুলশান থেকে ফেরার পথে আভা তাঁর মাকে আসতে বলেছিলো ইউনিমার্টে | সেখান থেকে দুজনে শপিং করে বাড়ি ফেরার পথে মায়ের কিছু কথার মুখোমুখি হতে হলো ওকে |
- আম্মু, বিয়েটাই কি সব ?
- শোনো মা, মেয়েদের একটা অবলম্বন থাকা ভালো | তাহলে মানুষের কুনজরে পড়তে হয়না !
-আমার দিকে কে নজর দেবে বলো ? কার এমন দায় পড়েছে ?
- আমার মেয়ে কি রাজকন্যার চেয়ে কম কিছু ?
- তুমি কটা রাজকন্যাকে দেখেছো আম্মু ? সব রাজকন্যাই কি সুন্দরী ?
- আমি এতকথা জানিনা মা, বিয়েটা করে ফেলো | মেয়েদের বেশী বয়সে বিয়ে হলে বাচ্চা-কাচ্চা নিতে প্রব্লেম হয় !
-আম্মু , তুমি গাড়িতে এইসব কি বলছো ? এটা কি তোমার বাসার বেডরুম নাকি ! আশ্চর্য্য !!
- পছন্দের কেউ থাকলে সেটাও বলো, তোমার মামা আছেন , শিবলী আছে , নোমান আছে ! তাদেরকে আমি বলি !
-আম্মু , বাসায় চলো তো ! সারাক্ষন মাথার মধ্যে বিয়ে বিয়ে বিয়ে | থামো তো !
লুকিং গ্লাস দিয়ে ড্রাইভের সাহেবের বারবার তাকানো ফলো করছিলো আভা | -আপনি সামনের দিকে ভালো করে তাকিয়ে গাড়ি চালান ড্রাইভার সাব |
- জি ম্যাডাম !
বাসায় ফিরে একটা লম্বা শাওয়ার নিলো আভা | ফ্রিজ থেকে টক দইয়ের হাড়িটা বের করে বাটিতে তিনচামচ দই ঢেলে নিলো | সঙ্গে পাকা আমের কিছু টুকরো | রিসেন্টলি প্রকাশ হওয়া ঈদ সংখ্যার ক্যানভাসটা নিয়ে বারান্দায় গিয়ে বসলো আভা | দইয়ের বাটি থেকে এক চামচ দই মুখে পুড়ে নিলো সে | ক্যানভাসের পাতায় চোখ বুলাচ্ছিল একের পর এক পৃষ্ঠা উল্টে | এমন সময় আভার মা মোবাইল হাতে নিয়ে আভার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো ....আভা , এই নাও তোমার ফোন | ইভান ....!
---- চলবে
[ চতুর্থ পর্ব ]
পাঁচ.
- মিসেস আভা , আপনি ভুল করতে যাচ্ছেন !
-স্যার , আমি মিস , নট মিসেস !
- ওই একই কথা ! আপনি যে ডিসিশনটা নিতে যাচ্ছেন , আমার মনে হয় আপনি ভুল করছেন ! আরেকবার ভেবে দেখেন !
- স্যার, আমি খুব ভালভাবে চিন্তা করেই ডিসিশনটা নিয়েছি ! কারণ, এই মুহূর্তে চায়না কখনোই আমেরিকার সাথে পাল্লা দিয়ে তাঁর প্রোডাক্ট লস করে বিক্রি করবে না ! অতএব, সেই চিন্তা করে আমি আমার প্রোডাক্টকেও চিপ করে ইউরোপিয়ানদের হাতে তুলে দিতে পারিনা ! বায়ারতো অনেক অজুহাত দেখাবেই , তাদের তিনটা হাত অলওয়েজ এক্টিভ !
- তারপরেও আমি বলবো মিসেস আভা, একটু ভেবে দেখেন ; অযথা এই রানিং আইটেমগুলো স্টকলট করে লাভ কি ? আই হেভ শেয়ার্ড মাই ওপিনিয়ন ! হোয়াটেভার , বেস্ট অফ লাক !
সানশাইন গ্রূপ অব কোম্পানিজের অনেক হাই অফিসিয়ালদের মধ্যে লস্কর সাব আভার অপছন্দের শীর্ষে | কথা নেই বার্তা নেই হুটহাট করে রুমে ঢুকে পড়েন, কোনো কার্টেসি মেইনটেইন করেন না | আরেকদিন আভা মিটিং-এ যাওয়ার আগে একটু হ্যান্ড মিররে লিপস্টিক লাগিয়ে নিচ্ছিলো , ঠিক সেইসময় লস্কর সাব ঢুকেই বলে ফেললেন, এই সাজগোজ করে কোথায় যাওয়া হচ্ছে মিসেস আভা !
থতমত খেয়ে সেইদিনের পরিস্থিতি সামলে আভা বলেছিলো, " স্যার আমি মিস আভা ! নট মিসেস ! " কে শুনে কার কথা ? লস্কর সাব দেখা হলেই ওই একই কথার পুনরাবৃত্তি | আভাও ছেড়ে দেবার পাত্রী নয় |
কলিংবেল টিপে সেলিমকে একটা হট কফি দিতে বললো আভা | আজ আবার গুলশানে যাওয়ার একটা প্ল্যান আছে | গাড়ি রেডি আছে কিনা ইন্টারকমে জেনে নিলো সে | ওপাশ থেকে জানানো হলো, অফিসের গাড়ি নিয়ে যাবে আভাকে | সঙ্গে সেকান্দার সাহেবের ও যাওয়ার কথা | আভার অপছন্দের আরেকজন | উনার সঙ্গে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না , নিজে একা একাই বলে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ইন্টারকমে আবার কল দিয়ে বললো - লিজা, আপনি বরং সেকান্দার সাবকে গাড়ি নিয়ে যেতে বলেন | আমি অন্যভাবে পৌঁছে যাবো |
ফোন হাতে নিয়ে ভাবছিলো, ইভানকে একটা কল দিবে কিনা ? ব্যাপারটা কি বেশী হালকা হয়ে যাবে ? পার্সোনালিটিতে কি আঁচড় পড়বে ? ইভান কি বুঝে নেবে , আমি ওর প্রেমে পড়ে গেছি | যদি এভোয়েড করে , তাহলে একটা লজ্জার ব্যাপার হবে | না থাক, উবারেই কল দেই, সেই ভালো |
ছয়.
গুলশান থেকে ফেরার পথে আভা তাঁর মাকে আসতে বলেছিলো ইউনিমার্টে | সেখান থেকে দুজনে শপিং করে বাড়ি ফেরার পথে মায়ের কিছু কথার মুখোমুখি হতে হলো ওকে |
- আম্মু, বিয়েটাই কি সব ?
- শোনো মা, মেয়েদের একটা অবলম্বন থাকা ভালো | তাহলে মানুষের কুনজরে পড়তে হয়না !
-আমার দিকে কে নজর দেবে বলো ? কার এমন দায় পড়েছে ?
- আমার মেয়ে কি রাজকন্যার চেয়ে কম কিছু ?
- তুমি কটা রাজকন্যাকে দেখেছো আম্মু ? সব রাজকন্যাই কি সুন্দরী ?
- আমি এতকথা জানিনা মা, বিয়েটা করে ফেলো | মেয়েদের বেশী বয়সে বিয়ে হলে বাচ্চা-কাচ্চা নিতে প্রব্লেম হয় !
-আম্মু , তুমি গাড়িতে এইসব কি বলছো ? এটা কি তোমার বাসার বেডরুম নাকি ! আশ্চর্য্য !!
- পছন্দের কেউ থাকলে সেটাও বলো, তোমার মামা আছেন , শিবলী আছে , নোমান আছে ! তাদেরকে আমি বলি !
-আম্মু , বাসায় চলো তো ! সারাক্ষন মাথার মধ্যে বিয়ে বিয়ে বিয়ে | থামো তো !
লুকিং গ্লাস দিয়ে ড্রাইভের সাহেবের বারবার তাকানো ফলো করছিলো আভা | -আপনি সামনের দিকে ভালো করে তাকিয়ে গাড়ি চালান ড্রাইভার সাব |
- জি ম্যাডাম !
বাসায় ফিরে একটা লম্বা শাওয়ার নিলো আভা | ফ্রিজ থেকে টক দইয়ের হাড়িটা বের করে বাটিতে তিনচামচ দই ঢেলে নিলো | সঙ্গে পাকা আমের কিছু টুকরো | রিসেন্টলি প্রকাশ হওয়া ঈদ সংখ্যার ক্যানভাসটা নিয়ে বারান্দায় গিয়ে বসলো আভা | দইয়ের বাটি থেকে এক চামচ দই মুখে পুড়ে নিলো সে | ক্যানভাসের পাতায় চোখ বুলাচ্ছিল একের পর এক পৃষ্ঠা উল্টে | এমন সময় আভার মা মোবাইল হাতে নিয়ে আভার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো ....আভা , এই নাও তোমার ফোন | ইভান ....!
---- চলবে
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২২/০৯/২০১৯বেশ!
-
মোঃ নূর ইমাম শেখ বাবু ২২/০৯/২০১৯বেশ লিখছেন
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২২/০৯/২০১৯বেশ