www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

প্রাণদায়ী যখন প্রাণঘাতী।

সবুজের সমাহার আমরা কেই না ভালোবাসি! প্রকৃতি তার ভান্ডার ভরিয়ে রেখেছে নানা রঙের ফুল ফলে।যাদের সমারোহ আমাদের মনকে আপ্লুত করে তোলে। তাইতো আমরা অনেকেই গড়ে তুলি আমাদের ছোট্ট বাগান! সে বাড়ির সামনে পড়ে থাকা ছোট্ট উঠানেই হোক অথবা মাথার ওপর থাকা এক চিলতে ছাদের উপর। সকাল বিকেল দূষণমুক্ত বাতাস পেতে অনেকেই বাগানে ঘোরাঘুরি করা পছন্দ করেন। কিন্তু সেই বাগানই যদি প্রাণ কেড়ে নেয়? যদি তার স্পর্শ আমাদের চিরনিদ্রার কারণ হয়ে পড়ে? আপনি কি সাহস করবেন তাহলে সেই বাগানে যাবার?
আজ আমরা জানবো এমন এক বাগানের কথা যেখানে গাছ বা ফুল ফল নাড়াচড়া করা তো দূরে থাক সামান্য সেই বাগানের ভেতর দিয়ে চলাফেরা করায় আপনার জীবনের পক্ষে বিপদের হতে পারে। এমন এক বাগান যা স্পর্শ আপনাকে স্বাভাবিক জীবন থেকে সরিয়ে রাখতে পারে অনেক দিনের জন্য অথবা যার বাতাসে বাতাসে ছড়িয়ে রয়েছে মৃত্যুর পরোয়ানা। এমন এক বাগান যেখানে প্রবেশ করা জীবন হাতে নিয়ে খেলা করার মতন। কোথায় রয়েছে সেই বাগান আর তার মধ্যে আছেই বা কি? কেন অত সতর্কতা তাকে নিয়ে? আসুন একটু ছোট্ট করে জেনে নিন তার সম্পর্কে।
ইংল্যান্ডের বোটানিক্যাল গার্ডেন তার গাছের প্রদর্শনীর জন্য জগৎ বিখ্যাত। কেবলমাত্র ইংল্যান্ডেরই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ও বিভিন্ন প্রান্তের নানা রকম গাছের দেখা মেলে এই বোটানিক্যাল গার্ডেনে। এই বোটানিক্যাল গার্ডেনের ই একটি অংশ হল বিখ্যাত অ্যালানউইক গার্ডেন যা কিনা পয়েজনগার্ডেন নামেও বিখ্যাত। নর্থ অ্যাম্বার ল্যান্ডের প্রথম ডিউক হিউ পারসি ১৭৫০ সালে অ্যলউইক ক্যাসেল এর কাছে বাগানটি নির্মাণ করেন। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় তিনি এমন একটি বাগান নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন যেটি সকলের থেকে আলাদা হয়। ফলশ্রুতি হিসেবে উঠে আসে এই বাগানটি যেটি বিষাক্ত,নেশাজাতীয় ও চেতনা নাশক গাছে ভর্তি। বিষাক্ত এই বাগানের মধ্যে রয়েছে ১০০রও বেশি এমন গাছ যা মুহূর্তের মধ্যে কেড়ে নিতে পারে আপনার প্রাণ। দেশ বিদেশের বিভিন্ন নেশা জাতীয় গাছেরও দেখা মেলা এখানে। গাছগুলির রুপের জগতে মোহিত হতে পারেন যে কেউ কিন্তু অসাবধানতার সাথেপ্রবেশ করলেই এদের বিষ বাষ্পে ঝরে যেতে পারে আপনার প্রাণ। যদিও বাগানের প্রবেশের মুখে বড় বড় অক্ষরে লেখা আছে সতর্কতা বাণী এবং বাগানের মধ্যে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে নিতে হবে বিশেষ অনুমতি। কেন এত সতর্কতা অবলম্বন এই বাগানে প্রবেশ নিয়ে? তার জিকারণ তো আগেই বলা হয়েছে! যেমন ধরুন ব্রাজিলের ব্রাগমানসিয়া নামক গাছ। আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ এই গাছটি মুহূর্তের মধ্যে আপনাকে পঙ্গু করার ক্ষমতা রাখে। বাগানে থাকা লওরেলস নামক গাছটি সর্বক্ষণ বাতাসে ছড়িয়ে চলেছে তার বিষবাষ্প। এই গাছের সংস্পর্শে থাকা বাতাসে শ্বাস নিলে আপনি সহজেই চেতনা রহিত হতে পারেন। ডেভিল ট্রাম্পেট নামক গাছটি তো আপনাকে চিরনিদ্রার দেশে পাঠিয়ে দিতেও সক্ষম। আরো রয়েছে ডেডলি নাইটস্ট্যাণ্ড গাছ যেটি কেড়ে নিতে পারে আপনার দৃষ্টি শক্তি। এরকম আরো কত গাছ রয়েছে যাদের থেকে আপনার দূরে থাকাই ভালো। ইউপারসি নির্মিত বাগানটি সময়ের সাথে সাথে কিছুটা লুপ্ত গৌরব হয়ে পড়ে। পরবর্তীকাল ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে নর্থ আম্বার ল্যান্ড এর বর্তমান ডাচেস বাগানটি পুনর্নির্মাণ করেন ও ধীরে ধীরে বাগানটি আবার জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করে। যদিও অনেকে এই বাগানের অস্তিত্ব থাকার উপর প্রশ্নবোধক চিহ্ন লাগিয়েছেন। অনেকেই এমন বাগান থাকার বিরোধিতা করে থাকেন। কিন্তু ধীরে ধীরে এই বাগান জনমানুষে তার জনপ্রিয়তা বাড়িয়েই তুলেছে।
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ৩১০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৫/০৭/২০২২

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast