হন্তারক
হন্তারক
@@@@@
জহির সাহেব একজন চৌকস লোক, শিক্ষিত,বলিষ্ঠ, উপস্থিত বুদ্ধিসম্পন্ন, স্মার্ট... আরও অনেক কিছু তার সম্পর্কে বললে বলা যাবে, সমাজে তার অসাধারণ একটা ভাবমূর্তি আছে...চেহারা সৌম্যকান্তি, বলা যায় তিনি রীতিমতো সৌন্দর্যচর্চা করেন, তার খাওয়া দাওয়া আর ব্যক্তিগত প্রয়োজন মেটানোর জন্যে দুজন গৃহকর্মী আছে, সাধারণত রুটিনে চলেন, অসাধারণত রুটিন এলোমেলো হয়ে যায়, তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়, কিন্তু কোথায় যেন তাকে অপরদের সাথে আপনি মিলিয়ে ফেলতে পারবেননা, বাবা রাজনীতি করতেন, দুর্ধর্ষ ব্যক্তি ছিলেন তিনি, সম্পদের পাহাড় গড়ে গেছেন , অন্যরা সো কলড বখে গেলেও বখে যাননি তিনি, খুব ঠান্ডা মাথার মানুষ তিনি, কিন্তু উঁচু জলদগম্ভীর কণ্ঠস্বর তার, বাইরে থেকে একটা ডিগ্রিও যোগাড় করেছেন তিনি,সম্প্রতি ধর্মীয় আচার পালনেও বেশ নিয়মিত হয়েছেন , রাজনীতিতে অনেক কৌশলী হতে হয় আপনারা জানেন, তাকেও এর বাইরে রাখা যায় কি? তিনি মূল বাড়ীর সামনে বাবার তৈরী করা একটা হলরুমে বসেন আসরের নামাজের পর,রুটিন করে রাত ৯:৩০পর্যন্ত থাকেন সেখানে, সেখানে কিছুক্ষণ পরপর চায়ের আয়োজন চলে, অন্যান্য আপ্যায়ন চলে অতিথির ধরণ বুঝে,দেশের নেতা থেকে আমলা সবার দেখা মিলবে তার এই দরবারে, মানুষের সাথে জনসংযোগ চলে নিয়ম করে, শুক্র -শণি বিশেষ প্রয়োজন না হলে বসেননা, মাঝে মাঝে দিল্লি , কোলকাতা, ব্যাংকক পরিবার নিয়ে বেড়াতে যান, আরও কোথাও যান কিনা সেটা আমাদের খোলসা করে বলা হয়না সবসময়...এয়ারলাইনস এর সাথে তার একান্ত সহযোগীর নিয়মিত যোগাযোগ,
বিচার বৈঠকে এমন একটা ভাব দ্যাখান যে তার মতো নিরপেক্ষ মানুষ আর দুটি নেই, কিন্ত তার চার স্তরের সহযোগী আছে, তারা অংক করে আনেন বিচারের রায় কার পক্ষে যাবে... এরা সবাই অত্যন্ত দক্ষ ও বিচক্ষণ, এদের উপর একটা আস্থা তো রাখতেই হয়, বিচার আচার শেষে বলেন, মাঠে আমার লোকজন আছে, এবার কোনো দরকার পড়লে, ওদের হয়ে আসবেন, সরাসরি আমার কাছে আসার প্রয়োজন নেই! বুদ্ধিমান যাঁরা তারা ঠিক বুঝে নেবেন....হাবাগোবা দিনমজুর শরফ আলী বলছিলো, না পারতে আমরা গরীবরা উনার কাছে যাইনে...
ঈদে পার্বণে গরীব দুখিদের জন্যে বাজেট আছে, পারিবারিক ব্যবসা ও জমি শোনা যায় কেবল ফুলে ফেঁপে উঠছে, যেদিকে দুচোখ যায় কেবল তার জমির গল্প...তার ব্যাপ্তি, ক্ষমতা আর প্রসারের গল্প কবে কখন রূপকথার মতো হয়ে যায়...
এতো কিছুর মাঝে এক প্রতিহিংসা তাকে তাড়া করে ফেরে, সে গল্প আপনাদেরকে আজ বলবোনা, কি ছিলো সেই ক্ষতি? ইচ্ছেমতো কল্পনা করে নিন...যে ক্ষতি একজীবনে পুসিয়ে নেওয়া যায়না...!
প্রায়শই তার পরনে থাকে ধবধবে সাদা পাঞ্জাবি,তাকে দেখলে এক অন্যরকম সমীহ জাগে অল্প পরিচিতদের মনে,এসবের বাইরে মাঝে মাঝে রক্তের খেলায় মেতে উঠতে হয় তাকে,স্বার্থে আঘাত পড়লে ছেড়ে দেওয়া যায় কি? না, না, তাই বলে হাতে সরাসরি রক্ত মাখতে হয়না তাকে...!
অন্যদিন জাল টেনে মাছ ধরা হয়, আজ শুক্রবার , আজ তাজা মাছ রান্না হবে, তাঁর সাথে জনা পাঁচেক সহযোগী আছে, ভিতর বাড়ীতে বিশাল দীঘি,সকাল ৯ টার পরে নাস্তা শেষ করে বর্শা দিয়ে মাছ ধরবেন তিনি, বাবা-দাদার কাছ থেকে রপ্ত করা,খাবার দিয়ে পোষা মাছদের পানির উপরে তুলে আনতে হয়, প্রথম টার্গেট মিস করা যাবেনা, সফল হলেন কি তিনি? বিশালকায় এক কাতলা...রক্তারক্তি কাণ্ড সাদা পাঞ্জাবি জুড়ে, চোখেমুখে ছড়িয়ে গেলো রক্তের ছিঁটেফোঁটা...এবার কিভাবে ফসকে গেলো, সাধারণত ভুল হয়না, তাঁর আত্মবিশ্বাসের অংকে কোথাও কি ভুল হয়ে গেলো? অজানা এক উত্তেজনায় থর থর করে কাঁপছেন তিনি...।
@@@@@
জহির সাহেব একজন চৌকস লোক, শিক্ষিত,বলিষ্ঠ, উপস্থিত বুদ্ধিসম্পন্ন, স্মার্ট... আরও অনেক কিছু তার সম্পর্কে বললে বলা যাবে, সমাজে তার অসাধারণ একটা ভাবমূর্তি আছে...চেহারা সৌম্যকান্তি, বলা যায় তিনি রীতিমতো সৌন্দর্যচর্চা করেন, তার খাওয়া দাওয়া আর ব্যক্তিগত প্রয়োজন মেটানোর জন্যে দুজন গৃহকর্মী আছে, সাধারণত রুটিনে চলেন, অসাধারণত রুটিন এলোমেলো হয়ে যায়, তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়, কিন্তু কোথায় যেন তাকে অপরদের সাথে আপনি মিলিয়ে ফেলতে পারবেননা, বাবা রাজনীতি করতেন, দুর্ধর্ষ ব্যক্তি ছিলেন তিনি, সম্পদের পাহাড় গড়ে গেছেন , অন্যরা সো কলড বখে গেলেও বখে যাননি তিনি, খুব ঠান্ডা মাথার মানুষ তিনি, কিন্তু উঁচু জলদগম্ভীর কণ্ঠস্বর তার, বাইরে থেকে একটা ডিগ্রিও যোগাড় করেছেন তিনি,সম্প্রতি ধর্মীয় আচার পালনেও বেশ নিয়মিত হয়েছেন , রাজনীতিতে অনেক কৌশলী হতে হয় আপনারা জানেন, তাকেও এর বাইরে রাখা যায় কি? তিনি মূল বাড়ীর সামনে বাবার তৈরী করা একটা হলরুমে বসেন আসরের নামাজের পর,রুটিন করে রাত ৯:৩০পর্যন্ত থাকেন সেখানে, সেখানে কিছুক্ষণ পরপর চায়ের আয়োজন চলে, অন্যান্য আপ্যায়ন চলে অতিথির ধরণ বুঝে,দেশের নেতা থেকে আমলা সবার দেখা মিলবে তার এই দরবারে, মানুষের সাথে জনসংযোগ চলে নিয়ম করে, শুক্র -শণি বিশেষ প্রয়োজন না হলে বসেননা, মাঝে মাঝে দিল্লি , কোলকাতা, ব্যাংকক পরিবার নিয়ে বেড়াতে যান, আরও কোথাও যান কিনা সেটা আমাদের খোলসা করে বলা হয়না সবসময়...এয়ারলাইনস এর সাথে তার একান্ত সহযোগীর নিয়মিত যোগাযোগ,
বিচার বৈঠকে এমন একটা ভাব দ্যাখান যে তার মতো নিরপেক্ষ মানুষ আর দুটি নেই, কিন্ত তার চার স্তরের সহযোগী আছে, তারা অংক করে আনেন বিচারের রায় কার পক্ষে যাবে... এরা সবাই অত্যন্ত দক্ষ ও বিচক্ষণ, এদের উপর একটা আস্থা তো রাখতেই হয়, বিচার আচার শেষে বলেন, মাঠে আমার লোকজন আছে, এবার কোনো দরকার পড়লে, ওদের হয়ে আসবেন, সরাসরি আমার কাছে আসার প্রয়োজন নেই! বুদ্ধিমান যাঁরা তারা ঠিক বুঝে নেবেন....হাবাগোবা দিনমজুর শরফ আলী বলছিলো, না পারতে আমরা গরীবরা উনার কাছে যাইনে...
ঈদে পার্বণে গরীব দুখিদের জন্যে বাজেট আছে, পারিবারিক ব্যবসা ও জমি শোনা যায় কেবল ফুলে ফেঁপে উঠছে, যেদিকে দুচোখ যায় কেবল তার জমির গল্প...তার ব্যাপ্তি, ক্ষমতা আর প্রসারের গল্প কবে কখন রূপকথার মতো হয়ে যায়...
এতো কিছুর মাঝে এক প্রতিহিংসা তাকে তাড়া করে ফেরে, সে গল্প আপনাদেরকে আজ বলবোনা, কি ছিলো সেই ক্ষতি? ইচ্ছেমতো কল্পনা করে নিন...যে ক্ষতি একজীবনে পুসিয়ে নেওয়া যায়না...!
প্রায়শই তার পরনে থাকে ধবধবে সাদা পাঞ্জাবি,তাকে দেখলে এক অন্যরকম সমীহ জাগে অল্প পরিচিতদের মনে,এসবের বাইরে মাঝে মাঝে রক্তের খেলায় মেতে উঠতে হয় তাকে,স্বার্থে আঘাত পড়লে ছেড়ে দেওয়া যায় কি? না, না, তাই বলে হাতে সরাসরি রক্ত মাখতে হয়না তাকে...!
অন্যদিন জাল টেনে মাছ ধরা হয়, আজ শুক্রবার , আজ তাজা মাছ রান্না হবে, তাঁর সাথে জনা পাঁচেক সহযোগী আছে, ভিতর বাড়ীতে বিশাল দীঘি,সকাল ৯ টার পরে নাস্তা শেষ করে বর্শা দিয়ে মাছ ধরবেন তিনি, বাবা-দাদার কাছ থেকে রপ্ত করা,খাবার দিয়ে পোষা মাছদের পানির উপরে তুলে আনতে হয়, প্রথম টার্গেট মিস করা যাবেনা, সফল হলেন কি তিনি? বিশালকায় এক কাতলা...রক্তারক্তি কাণ্ড সাদা পাঞ্জাবি জুড়ে, চোখেমুখে ছড়িয়ে গেলো রক্তের ছিঁটেফোঁটা...এবার কিভাবে ফসকে গেলো, সাধারণত ভুল হয়না, তাঁর আত্মবিশ্বাসের অংকে কোথাও কি ভুল হয়ে গেলো? অজানা এক উত্তেজনায় থর থর করে কাঁপছেন তিনি...।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
কামরুজ্জামান সাদ ১৮/১০/২০২৪চমৎকার
-
শাহানারা মশিউর ১২/০৮/২০২৪শিরোনামটি দৃষ্টি আকর্ষণ করলো!
জহির সাহেবের ব্যক্তিত্বে বৈশিষ্ট্যের কী বাহার! রূপকে রূপকে কবির কলমে তার কুৎসিত দিকগুলো উঠে এসেছে পরিষ্কারভাবে। এক জহির সাহেবের সাথে সমাজে আছে অসংখ্য জহির সাহেবের অবস্থান।
আপনার সৃজনে অনন্য সুন্দর এ ছোটগল্প পাঠে মুগ্ধতা রেখে গেলাম। অবিরত শুভেচ্ছা প্রিয় কবি,এক্সখ্চভালো থাকুন নিরন্তর। -
ফয়জুল মহী ০৩/০৮/২০২৪চমৎকার ।
মুগ্ধতা রইলো। -
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ০৩/০৮/২০২৪দারুণ