আকাশ কুসুম
খ্যাতির শীর্ষে দাড়িয়ে থাকা হয়তো একে বলে...বলে কি ?তৃতীয় বিশ্বে জন্ম নেওয়া আমি অনেক ঢেউ পাড়ি দিয়ে আজ এখানে সেটল হয়েছি...না কোনো পিছুটান...কোনো নৈতিকতার ধার ধারিনি আমি ...সবাই বলে ,"সাবাব তোর ম্যাজিকটা কি ? আমাদের তো মনে হয়"castle in the air ...এসব ভাবার সময় আমার ছিলো না ...না,আমি মনে হয় মেধাবী ...মেধা সংগ দিয়েছে আমাকে মেধার কারণে আমি ছুতে পেরেছি সবচেয়ে দূরের বুড়ী...তাহলে কি আমাকে এমন ফুটে থাকা কাঁটার মতো খোচাচ্ছে ? আমি দারুণ্ভাবে গুছিয়ে নিয়েছি আমার দৈনন্দিন ...সংসারী বউ আছে আমার ...দু দুটো ছেলে...বাবা-মা গত হয়েছেন কিছুদিন হোলো ...
মা জীবিত থাকতে মাঝে মাঝে বাড়ি যাওয়া পড়তো ...মা মারা যাবার পরে সে পাঠ চুকেছে ...তারপরেও কিসের এই যন্ত্রণা? কিসের অভাব ? "বিষন্নতা একটি রোগ " ডক্টর স্যামুয়েল বলছিলেন ,"নিয়মিত ডিপ্রেসন এর অসুধটা খেয়ে যেতে হবে"...এমন ভর-ভরন্ত জীবনে বিষন্নতা আসে কোথা থেকে ? প্রেসারও আছে ...দুই পেগ খেয়ে বিছানায় যাই ...ফারাহ খুব ঘৃণা করতো ...এই একটি কারণে ফারাহ দূরের মানুষ হয়ে গেলো ...মিষ্টি একটা আদুরে মেয়ে ফারাহ...আমরা এক সাথেই বড় হচ্ছিলাম .....একটা অকপট বন্ধুত্ব ...আস্তে আস্তে বোকা বোকা প্রেম ...পরে জেনাছি ঐ বয়সে সারা পৃথিবীতে আমার মতো হাজার-হাজার কিশোর-কিশোরী প্রেমে পড়ে ...খুব কম প্রেম পরিণতি পায় ...দুখের ক্ষত চিহ্ন রয়ে যায় ...খুব অল্প বয়সে আমার হাতে চ্লে আসে গাজার মোড়ক আমার এক দুসম্পর্কের মামা আমার হাতে তুলে দেন ..."নে টেষ্ট করে দ্যাখ "...একটু দ্বিধা আর কৌতুহল নিয়ে শুরু করি ...এখনও আমার সাথের সাথী...ফারাহ প্রথমটায় বিশ্বাস করেনি ...একদিন ঐ মামার ঘরে দরজা ভেজিয়ে খাচ্ছিলাম ...ওর ছোট ভাই অরু আমাকে দেখিয়ে দিয়ে বলল দ্যাখ ,ফারাহ দ্যাখ !এখন বিশ্বাস করলি ...এই হোলো আমাদের সাবাব...ফারাহ'র দুচোখে ঘৃণা আর অভিমানের পানি টলমল করছিলো ...এরপরে দু-একদিন মাত্র ফারার সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছিলাম ...ইউনিভার্সটির ছুটিতে বাড়ীতে ফিরলে ফারাহকে একবার দেখার জন্যে জীবন বাজি রাখার জন্যেও রেডি থাকতাম...ছুটি শেষে ফিরে যাওয়ার দিনগুলোতে ...ওদের বাড়ী অতিক্রম করার সময় কেবলই মনে হোতো এখনই বুঝি ফারাকে দেখতে পাবো ...আর সব ভুলে গিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ওর সেই বিখ্যাত হাসি দিয়ে বলবে ..."তুই আমার থেকে বেশী বোঝার চেষ্টা করবিনে সাবাব "...না, কেউ বের হয় না...ওদের বাড়ীর সামনেটা শীতের সকালকে সাক্ষী রেখে একদম ফাঁকা পড়ে থাকে ...সেই পুরনো বুড়ো শিউলী গাছটা থেকে ফুল ঝরে ঝরে নীচটা একদম দুধশাদা হয়ে আছে ...আমি খুব সতর্ক চোখ রাখি ওদের দোতলার বারান্দায় ...না কাউকে দেখা যায় না ...ফারা কি কারো মুখ থেকে শোনেনি আমি বাড়ীতে এসেছিলাম...আজ ফিরে যাবো ...না, ফারার অবহেলার কোনো মাথামুণ্ডু নেই ...আমেরিকাতে পড়তে গিয়ে একদম শেষ্দিকে আর দশজন মানুষের মতো স্থিতু হোলাম ...একটা সময় সবাইকে ছকের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হয় ...হয়নাকি ...ফারা একটা corporate এ চাকুরী করে...ওরও তো বেশ বয়স হোলো ...শুনেছি বেশ আছে ...আমার ছোটবোন দীবাকে নাকি বলেছে : "এই ভালোই আছি দীবা,চাকরী- সংসার-ব্যস্ততা কিভাবে যে সময় কেটে যায় টেরও পাইনে,খুব বড়দেরকেও তো দেখছি ......এই মোটামুটি জীবন এই বেশ ভালো ...ভালোই বলতে পারো"। আমি ব্যকুল হয়ে জিজ্ঞেস করি "আমাদের কথা না মানে আমার কথা কিছু জানতে চায়নি..."। দীবা নিস্পৃহ গলায় বলল,"জানিস তো ,ও একটা clean hearted মানুষ,কখনো ওকে বাড়তি কৌতুহল প্রকাশ করতে দেখেছিস ?"
সেই দিন থেকে একটা অসুখ বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি আমি ,একটু একান্ত সময় পেলে কেবলই একটা প্রশ্ন আমাকে তাড়া করে,"সেই ফারা,আমার সেই ফারা, তার কোথাও কি আমি নেই ? আজ এতোদূর যার জন্যে আমি পাড়ি দিয়েছি...তার অস্তিত্বের কোথাও আমি নেই"...এক গভীর শূণ্যতার অনুভূতি আমাকে ঘিরে ফেলতে চায় ...আমি ডক্টর স্যামুয়েলকে আবার ফোন করি ...
মা জীবিত থাকতে মাঝে মাঝে বাড়ি যাওয়া পড়তো ...মা মারা যাবার পরে সে পাঠ চুকেছে ...তারপরেও কিসের এই যন্ত্রণা? কিসের অভাব ? "বিষন্নতা একটি রোগ " ডক্টর স্যামুয়েল বলছিলেন ,"নিয়মিত ডিপ্রেসন এর অসুধটা খেয়ে যেতে হবে"...এমন ভর-ভরন্ত জীবনে বিষন্নতা আসে কোথা থেকে ? প্রেসারও আছে ...দুই পেগ খেয়ে বিছানায় যাই ...ফারাহ খুব ঘৃণা করতো ...এই একটি কারণে ফারাহ দূরের মানুষ হয়ে গেলো ...মিষ্টি একটা আদুরে মেয়ে ফারাহ...আমরা এক সাথেই বড় হচ্ছিলাম .....একটা অকপট বন্ধুত্ব ...আস্তে আস্তে বোকা বোকা প্রেম ...পরে জেনাছি ঐ বয়সে সারা পৃথিবীতে আমার মতো হাজার-হাজার কিশোর-কিশোরী প্রেমে পড়ে ...খুব কম প্রেম পরিণতি পায় ...দুখের ক্ষত চিহ্ন রয়ে যায় ...খুব অল্প বয়সে আমার হাতে চ্লে আসে গাজার মোড়ক আমার এক দুসম্পর্কের মামা আমার হাতে তুলে দেন ..."নে টেষ্ট করে দ্যাখ "...একটু দ্বিধা আর কৌতুহল নিয়ে শুরু করি ...এখনও আমার সাথের সাথী...ফারাহ প্রথমটায় বিশ্বাস করেনি ...একদিন ঐ মামার ঘরে দরজা ভেজিয়ে খাচ্ছিলাম ...ওর ছোট ভাই অরু আমাকে দেখিয়ে দিয়ে বলল দ্যাখ ,ফারাহ দ্যাখ !এখন বিশ্বাস করলি ...এই হোলো আমাদের সাবাব...ফারাহ'র দুচোখে ঘৃণা আর অভিমানের পানি টলমল করছিলো ...এরপরে দু-একদিন মাত্র ফারার সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছিলাম ...ইউনিভার্সটির ছুটিতে বাড়ীতে ফিরলে ফারাহকে একবার দেখার জন্যে জীবন বাজি রাখার জন্যেও রেডি থাকতাম...ছুটি শেষে ফিরে যাওয়ার দিনগুলোতে ...ওদের বাড়ী অতিক্রম করার সময় কেবলই মনে হোতো এখনই বুঝি ফারাকে দেখতে পাবো ...আর সব ভুলে গিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ওর সেই বিখ্যাত হাসি দিয়ে বলবে ..."তুই আমার থেকে বেশী বোঝার চেষ্টা করবিনে সাবাব "...না, কেউ বের হয় না...ওদের বাড়ীর সামনেটা শীতের সকালকে সাক্ষী রেখে একদম ফাঁকা পড়ে থাকে ...সেই পুরনো বুড়ো শিউলী গাছটা থেকে ফুল ঝরে ঝরে নীচটা একদম দুধশাদা হয়ে আছে ...আমি খুব সতর্ক চোখ রাখি ওদের দোতলার বারান্দায় ...না কাউকে দেখা যায় না ...ফারা কি কারো মুখ থেকে শোনেনি আমি বাড়ীতে এসেছিলাম...আজ ফিরে যাবো ...না, ফারার অবহেলার কোনো মাথামুণ্ডু নেই ...আমেরিকাতে পড়তে গিয়ে একদম শেষ্দিকে আর দশজন মানুষের মতো স্থিতু হোলাম ...একটা সময় সবাইকে ছকের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হয় ...হয়নাকি ...ফারা একটা corporate এ চাকুরী করে...ওরও তো বেশ বয়স হোলো ...শুনেছি বেশ আছে ...আমার ছোটবোন দীবাকে নাকি বলেছে : "এই ভালোই আছি দীবা,চাকরী- সংসার-ব্যস্ততা কিভাবে যে সময় কেটে যায় টেরও পাইনে,খুব বড়দেরকেও তো দেখছি ......এই মোটামুটি জীবন এই বেশ ভালো ...ভালোই বলতে পারো"। আমি ব্যকুল হয়ে জিজ্ঞেস করি "আমাদের কথা না মানে আমার কথা কিছু জানতে চায়নি..."। দীবা নিস্পৃহ গলায় বলল,"জানিস তো ,ও একটা clean hearted মানুষ,কখনো ওকে বাড়তি কৌতুহল প্রকাশ করতে দেখেছিস ?"
সেই দিন থেকে একটা অসুখ বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি আমি ,একটু একান্ত সময় পেলে কেবলই একটা প্রশ্ন আমাকে তাড়া করে,"সেই ফারা,আমার সেই ফারা, তার কোথাও কি আমি নেই ? আজ এতোদূর যার জন্যে আমি পাড়ি দিয়েছি...তার অস্তিত্বের কোথাও আমি নেই"...এক গভীর শূণ্যতার অনুভূতি আমাকে ঘিরে ফেলতে চায় ...আমি ডক্টর স্যামুয়েলকে আবার ফোন করি ...
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ইসমাত ইয়াসমিন ১১/১১/২০১৩" সেই ফারাহ, আমার সেই ফারাহ, তার কোথাও কি আমি নেই? আজ এতদুর যার জন্য আমি পাড়ি দিয়েছি।।তার অস্তিত্তের কোথাও আমি নেই" ।।লাইনগুলো খুব সুন্দর। ভাল লাগল, শুভকামনা রইল।
-
দাদা মুহাইমিন চৌধূরী ৩০/১০/২০১৩অসাধারন প্রিয়তে রাখলাম। সাবাব এর কষ্ট মনে হয় বোঝতে পারছি।
-
আরজু নাসরিন পনি ২৯/১০/২০১৩সাবাবের হাহাকারটা খুব বুকে বাজল ।
লেখকের এই লেখাটা উপস্থাপনে খুব ভালো লাগলো এই ভেবে যে, তিনি সম্পূর্ণ বিপরীত লিঙ্গকে উত্তম পুরুষে প্রকাশ করেছেন ।
এখানেই লেখকের লেখার, প্রকাশের মুন্সিয়ানা ।
সেলফ কাউন্সেলিংটা অনেক সময় জরুরী হয়ে পড়ে ।
ফারাহ-র ভেতরে সাবারের জন্যে জায়গা হয়তো সবসময়ই আছে...
সেই নচিকেতার গানের মতো...
হয়তো কারো বুকে মাথা রেখে
দীর্ঘশ্বাস হাসি দিয়ে ঢেকে
নিরাপত্তার উষ্ণতা নিয়ে থাকবে যন্ত্রণায়,
নীলাঞ্জনা...
অনেক শুভকামনা রইল ।
শুভ সকাল ।। -
সুমাইয়া বরকতউল্লাহ্ ২৮/১০/২০১৩দারুন! ভালো লাগলো। ধন্যবাদ নিন।