অলীক স্বপ্ন
রাত জাগাটা খারাপ অভ্যাস তখনই মনে হয় যখন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠার জন্য বিছানার সাথে তুমুলঝগড়া করতে হয়। গতিশীল পা দুটোও শীতল হয়ে ওঠে বাস মিস করার ভয়ে। টিকিটটা কেটে কোনমতে বাসে উঠে পিছনের দিকের ফাঁকা দুটো সিটের মধ্যে স্বভাব বশত জালানার কাছের সিটে বসলাম। অসম্পূর্ণ ঘুমটা সম্পূর্ণ করার অভিপ্রায় নিয়ে চোখ দুটোয় নিকষ অন্ধকার নামিয়ে আনতেই একটা মৃদু কন্ঠস্বর ভেসে আসলো "রাতে ঘুম হয় নাই?"
ক্ষানিকটা কম্পিত হয়ে তাকাতেই স্তব্ধ হয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।
জ্ঞান ফিরলো কন্ঠস্বরটা যখন ভারী হয়ে একটা উপদেশ মূলক বাক্য তৈরি করলো "লোকাল বাসে ঘুমানো খারাপ অভ্যাস গুলোর মধ্যে একটা।"
কথাটা খুবই ভালো মনে হল আজ। নিজেকে সামলে নিয়ে কিছু একটা বলতে যাব এর মধ্যেই সে আবার প্রশ্ন করল "রাত জাগার অভ্যাসটা এখনো যায়নি?নিজের খেয়াল নিতে কবে শিখবে?"
আজ প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে খুবই ইচ্ছা করছে। আর এই প্রশ্নগুলো কয়েকদিন আগেও অবান্তর বলে মনে হতো আমার কাছে। কিন্তু উত্তর দেয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি আজ। এক সময় যে মানুষটার সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়ার প্রয়োজন মনে করতাম না, তার প্রশ্নের যথাযথ উত্তর আজ আমার জানা নাই।
"শুনেছি চাকরি পেয়েছ?"
"হুম্" অস্পষ্ট গলায় বললাম।
"কি অদ্ভুত তাই না? আমরা এরকম একটা শিশির সিক্ত ভোরে দেখা করার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু তা আর বাস্তবে রুপ নিলো না। আজ কিন্তু পরিকল্পনা ছাড়াই দেখা হয়ে গেল। এমন অনেক সকাল একা দাঁড়িয়ে থেকেছি তোমার অপেক্ষায়। বিকালটাও যে ভালো কেটেছে তা বলাও কঠিন। তোমার কাছে তো কোন সময়ই ছিলো না আমাকে দেয়ার মতো" আড়ষ্ঠ কন্ঠে কতটা অভিমান জমা আছে তা অনুমান করার চেষ্টা করলাম।
"আমি তো তোমার কাছে আমার দায়িত্বটা দিতে চেয়েছিলাম। তোমার আকাশের একটা ক্ষুদ্র নক্ষত্র হয়ে থাকতে চেয়েছিলাম। সেই নক্ষত্রটা ধারন করার মত জায়গাটুকোও ছিলো না তোমার কাছে।"
আমি শুধু এক অপরাধীর মত তাকিয়ে ছিলাম ওর মুখের দিকে। কিছুই বলার শক্তি ছিল না আমার।
সে বলতে লাগল "যাহোক, দেখা হয়ে ভালোই হলো। অর্ক এর ইচ্ছা সামনের মাসেই বিয়েটা হোক, আমারও তাই ইচ্ছে। অর্ক মানে জানতো? সূর্য, হ্যা! আমার অন্ধকার জীবন সূর্যের মতই আলোকিত করেছে সে। তার সাথেই দেখা করতে যাচ্ছি। একটু আগেই যাচ্ছি, কারন অপেক্ষা করার যন্ত্রণা তাকে উপলদ্ধি করানোর মত সাহস আমার নাই। যদি পারো বিয়েতে এসো।"
আমি দৃষ্টিটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে শুধু মাথা নাড়ালাম।
কম্পিত গলায় শুধু বলল "আজও আমার প্রশ্নের সুস্পষ্ট কোন উত্তর পেলাম না"
ফিরে তাকাতেই দেখতে পেলাম দ্রুত পায়ে সে বাস থেকে নেমে যাচ্ছে। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না, অজান্তেই চোখ থেকে জল বেরিয়ে এলো। এমনটা তো চাইনি কখনো। হারানোর সম্ভাবনাই ছিল না, তাই বোধ হয় চাইনি। আমার আকাশটাই তো কালো মেঘে ঢাকা ছিল। সেই মেঘ ভেদ করে আমার আলো তোমার কাছে পৌছাতে অনেক দেরি করে ফেলেছে। আস্তে আস্তে আমার চোখও অন্ধকারে ডুবে গেল।
হঠাৎ কিছু একটার স্পর্শে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।
স্বপ্নের ঘোরটা কাটিয়ে তাকাতেই দেখি পাশে বসা এক বৃদ্ধ আমার হাতটা চেপে ধরে বলছে "কোথায় নামবা বাবা? কন্ট্রাক্টর টিকিট এর জন্য অপেক্ষা করছে।"
আমি কোন কথা না বলে উঠে দাঁড়ালাম, হয়তো এ প্রশ্নেরও কোন সুস্পষ্ট উত্তর আমার কাছে নাই। কন্ট্রাক্টরকে টিকিটটা দিয়ে বাস থেকে নেমে পরলাম। চোখের সামনের সব কিছু কেমন যেন ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে। নিচে নামতেই নিজের ছায়াটা পায়ের নিচে আবিস্কার করলাম। মেঘমুক্ত আকাশের দিকে তাকাতেই মনে হল সূর্যটা আজ একটু বেশীই তাপ দিচ্ছে।
ক্ষানিকটা কম্পিত হয়ে তাকাতেই স্তব্ধ হয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।
জ্ঞান ফিরলো কন্ঠস্বরটা যখন ভারী হয়ে একটা উপদেশ মূলক বাক্য তৈরি করলো "লোকাল বাসে ঘুমানো খারাপ অভ্যাস গুলোর মধ্যে একটা।"
কথাটা খুবই ভালো মনে হল আজ। নিজেকে সামলে নিয়ে কিছু একটা বলতে যাব এর মধ্যেই সে আবার প্রশ্ন করল "রাত জাগার অভ্যাসটা এখনো যায়নি?নিজের খেয়াল নিতে কবে শিখবে?"
আজ প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে খুবই ইচ্ছা করছে। আর এই প্রশ্নগুলো কয়েকদিন আগেও অবান্তর বলে মনে হতো আমার কাছে। কিন্তু উত্তর দেয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি আজ। এক সময় যে মানুষটার সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়ার প্রয়োজন মনে করতাম না, তার প্রশ্নের যথাযথ উত্তর আজ আমার জানা নাই।
"শুনেছি চাকরি পেয়েছ?"
"হুম্" অস্পষ্ট গলায় বললাম।
"কি অদ্ভুত তাই না? আমরা এরকম একটা শিশির সিক্ত ভোরে দেখা করার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু তা আর বাস্তবে রুপ নিলো না। আজ কিন্তু পরিকল্পনা ছাড়াই দেখা হয়ে গেল। এমন অনেক সকাল একা দাঁড়িয়ে থেকেছি তোমার অপেক্ষায়। বিকালটাও যে ভালো কেটেছে তা বলাও কঠিন। তোমার কাছে তো কোন সময়ই ছিলো না আমাকে দেয়ার মতো" আড়ষ্ঠ কন্ঠে কতটা অভিমান জমা আছে তা অনুমান করার চেষ্টা করলাম।
"আমি তো তোমার কাছে আমার দায়িত্বটা দিতে চেয়েছিলাম। তোমার আকাশের একটা ক্ষুদ্র নক্ষত্র হয়ে থাকতে চেয়েছিলাম। সেই নক্ষত্রটা ধারন করার মত জায়গাটুকোও ছিলো না তোমার কাছে।"
আমি শুধু এক অপরাধীর মত তাকিয়ে ছিলাম ওর মুখের দিকে। কিছুই বলার শক্তি ছিল না আমার।
সে বলতে লাগল "যাহোক, দেখা হয়ে ভালোই হলো। অর্ক এর ইচ্ছা সামনের মাসেই বিয়েটা হোক, আমারও তাই ইচ্ছে। অর্ক মানে জানতো? সূর্য, হ্যা! আমার অন্ধকার জীবন সূর্যের মতই আলোকিত করেছে সে। তার সাথেই দেখা করতে যাচ্ছি। একটু আগেই যাচ্ছি, কারন অপেক্ষা করার যন্ত্রণা তাকে উপলদ্ধি করানোর মত সাহস আমার নাই। যদি পারো বিয়েতে এসো।"
আমি দৃষ্টিটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে শুধু মাথা নাড়ালাম।
কম্পিত গলায় শুধু বলল "আজও আমার প্রশ্নের সুস্পষ্ট কোন উত্তর পেলাম না"
ফিরে তাকাতেই দেখতে পেলাম দ্রুত পায়ে সে বাস থেকে নেমে যাচ্ছে। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না, অজান্তেই চোখ থেকে জল বেরিয়ে এলো। এমনটা তো চাইনি কখনো। হারানোর সম্ভাবনাই ছিল না, তাই বোধ হয় চাইনি। আমার আকাশটাই তো কালো মেঘে ঢাকা ছিল। সেই মেঘ ভেদ করে আমার আলো তোমার কাছে পৌছাতে অনেক দেরি করে ফেলেছে। আস্তে আস্তে আমার চোখও অন্ধকারে ডুবে গেল।
হঠাৎ কিছু একটার স্পর্শে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।
স্বপ্নের ঘোরটা কাটিয়ে তাকাতেই দেখি পাশে বসা এক বৃদ্ধ আমার হাতটা চেপে ধরে বলছে "কোথায় নামবা বাবা? কন্ট্রাক্টর টিকিট এর জন্য অপেক্ষা করছে।"
আমি কোন কথা না বলে উঠে দাঁড়ালাম, হয়তো এ প্রশ্নেরও কোন সুস্পষ্ট উত্তর আমার কাছে নাই। কন্ট্রাক্টরকে টিকিটটা দিয়ে বাস থেকে নেমে পরলাম। চোখের সামনের সব কিছু কেমন যেন ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে। নিচে নামতেই নিজের ছায়াটা পায়ের নিচে আবিস্কার করলাম। মেঘমুক্ত আকাশের দিকে তাকাতেই মনে হল সূর্যটা আজ একটু বেশীই তাপ দিচ্ছে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
পবিত্র চক্রবর্তী ১৫/০৪/২০১৮খুবই ভালো