শিশুসাহিত্যে নজরুল(2)
প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় 'প্রভাতী' নামের কবিতাটির কথা।"ভোর হলো/দোর খোলো/খুকুমণি ওঠো রে" এই ছত্রগুলির সঙ্গে পরিচয় নেই এমন বাঙালি বিরল।স্বল্প শব্দের আয়োজনে নজরুল এই কবিতাটিতে যে ছন্দ-ঝংকার সৃষ্টি করেছেন তা এককথায় অনবদ্য।নির্মল হাস্যরসের কবিতা সৃজনেও তিনি সিদ্ধহস্ত;"রাস্তায় তেড়ে এল এঁড়ে এক দামড়া/টুঁস খেয়ে বাঁটকুর ছ'ড়ে গেল চামড়া/ভয়ে মটকুর চোখ হয়ে গেল আমড়া"।তাঁর হাস্যরসে মুগ্ধ না হয়ে উপায় কি? তাঁর ছড়া-কবিতায় ধরা পড়ে ননসেন্সের ছোঁয়া,"শেয়ালের ল্যাজ/গোটা দুই প্যাঁজ/বেশ ক'রে ভিজিয়ে/ঘুট ক'রে খেয়ে ফেল!/মুখে কোন্ কথা কথা এল?/কি মজার চীজই এ!"-লিয়েরের লিমেরিকের কথা মনে পড়ে যায় না কি? কখনো আপাত ননসেন্সের ভেতর থেকে উঁকি মারে সমাজবাস্তবতা ও শ্লেষ যখন 'ছোট হিটলার' কবিতায় তিনি বলেন-"রাত্রে সেথায় হয় না লড়াই,/রাত-কানা সব নাৎসী পোল,/না হয় হলোই রাতে লড়াই!/বাজে যা সব ঢক্কা ঢোল।ওই আওয়াজেই ঘাবড়ে গিয়ে বেরোয় না ভূত-পেত্নী সব,/যত ভূত এই বাংলাদেশে;নির্ভূত সে দেশ আজব/ঐ হিটলার মুসলো যদি জন্মাত মা এই দেশে,/হেসো না মা,ভূতের ভয়ে শুতো বাবার কোল ঘেঁষে!"।তাঁর কিছু কিছু কবিতায় ছন্দের দোলা এমনই অমোঘ যে নিতান্ত বড়রাও শৈশবে পৌঁছে যাই।যেমন তাঁর লিচুচোর কবিতাটি-"পুকুরের ঐ কাছে না/লিচুর এক গাছ আছে না/হোথা না আস্তে গিয়ে/য়্যাবড় কাস্তে নিয়ে,/গাছে গ্যে যেই চড়েছি/ছোট এক ডাল ধরেছি/ও বাবা মড়াৎ ক'রে/পড়েছি সড়াৎ জোরে"। (ক্রমশ)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সৌমেন সেন ১০/০৩/২০১৮
-
মোঃআরাফাত হোসাইন ২৮/০২/২০১৮nic
শুভ কামনা নিরন্তর।
আমার ক্ষুদ্র পাতায় ঘুরে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি প্রিয়।ধন্যবাদ প্রিয় কবিবন্ধু।ভাল থাকবেন প্রিয়