মধুকবির বীরাঙ্গনারা(2)
(পরবর্তী অংশ)
দ্বিতীয় সর্গে দেবগুরু বৃহস্পতির পত্নী তারা পত্রে প্রেম নিবেদন করেছেন সোম(চন্দ্র) নামে আশ্রমের এক শিষ্যকে।অথচ পত্রের শুরুতে প্রেম নিবেদনের পরপরই কলম কে দোষারোপ করেছেন; কিন্তু পরক্ষণেই বলে উঠেছেন-' কিন্তু বৃথা গঞ্জি তোরে!হস্তদাসী সদা/তুই;মনোদাস হস্ত;সে মনঃ পুড়িলে/কেন না পুড়িবি তুই?ব্রজাগ্নি যদ্যপি/দহে তরুশিরঃ,মরে পদাশ্রিত লতা!' তারার মনে পড়ে সোমের প্রথম আশ্রমে আসার দিনটির কথা-'
যে দিন প্রথমে তুমি এ শান্ত আশ্রমে/প্রবেশিলা,নিশিকান্ত,সহসা ফুটিল/নবকুমুদিনীসম এ পরাণ মম/উল্লাসে,ভাসিল যেন আনন্দ- সলিলে!' এরপর তারা সোমকে লিখেছেন আশ্রমে থাকাকালীন গরু চরাতে একা বনে গেলে তাঁর চিন্তার কথা,গুরুপত্নী তিনি কিন্তু তাঁকে প্রণাম করতে গেলে তিনি সেই প্রণামকে অভিমান ভাঙানোর অভিপ্রায় ভেবে পুলকিত হয়েছেন।তারা সোমকে মনে করিয়ে দিয়েছেন-'যোগাইতে জল যবে গুরুর আদেশে/বহির্দ্বারে,কত যে কী রাখিতাম পাতে/চুরি করি আনি আমি,পড়ে কী হে মনে?' সোমের জন্য তার আকুলতা প্রকাশ পেয়েছে যখন তিনি বলেছেন-'শুনি লোকমুখে,সখে,চন্দ্রলোকে তুমি/ধর মৃগশিশু কোলে,কত মৃগশিশু/ধরেছি যে কোলে আমি কাঁদিয়া বিরলে,/কি আর কহিব তার?শুনিলে হাসিবে,/হে সুহাসি!নাহি ঞ্জান;না জানি কি লিখি!'।রাতে হ্রদে পদ্ম ফুটলে তা রাগে ছিঁড়েছেন আর সোমপত্নী রোহিনীর প্রতি তার ঈর্ষা প্রকাশ পেয়েছে-'ডাকিতাম মেঘদলে চির আবরিতে/রোহিনীর স্বর্ণকান্তি।ভ্রান্তিমদে মাতি,/সপত্নী বলিয়া তারে গঞ্জিতাম রোষে!' এই কথাগুলিতে সোমের প্রতি তিনি যে কতখানি অনুরক্ত,কতখানি তার সমর্পণ তা প্রকাশ পেয়েছে এই কথাগুলিতে-'কলঙ্কী শশাঙ্ক,তোমা বলে সর্ব্বজনে।/কর আসি কলঙ্কিনী কিঙ্করী তারারে,/তারানাথ!নাহি কাজ বৃথা কুলমানে।' এই পত্রটি মধুকবির কাব্যপ্রতিভার একটি ভাস্বর প্রতিফলন।পরকীয়া প্রেমের মতো নিষিদ্ধ বিষয়ও মধুকবির লেখনির স্পর্শে অনুপম সাহিত্যরসসম্পন্ন কাব্য হয়ে উঠেছে।(ক্রমশ)
দ্বিতীয় সর্গে দেবগুরু বৃহস্পতির পত্নী তারা পত্রে প্রেম নিবেদন করেছেন সোম(চন্দ্র) নামে আশ্রমের এক শিষ্যকে।অথচ পত্রের শুরুতে প্রেম নিবেদনের পরপরই কলম কে দোষারোপ করেছেন; কিন্তু পরক্ষণেই বলে উঠেছেন-' কিন্তু বৃথা গঞ্জি তোরে!হস্তদাসী সদা/তুই;মনোদাস হস্ত;সে মনঃ পুড়িলে/কেন না পুড়িবি তুই?ব্রজাগ্নি যদ্যপি/দহে তরুশিরঃ,মরে পদাশ্রিত লতা!' তারার মনে পড়ে সোমের প্রথম আশ্রমে আসার দিনটির কথা-'
যে দিন প্রথমে তুমি এ শান্ত আশ্রমে/প্রবেশিলা,নিশিকান্ত,সহসা ফুটিল/নবকুমুদিনীসম এ পরাণ মম/উল্লাসে,ভাসিল যেন আনন্দ- সলিলে!' এরপর তারা সোমকে লিখেছেন আশ্রমে থাকাকালীন গরু চরাতে একা বনে গেলে তাঁর চিন্তার কথা,গুরুপত্নী তিনি কিন্তু তাঁকে প্রণাম করতে গেলে তিনি সেই প্রণামকে অভিমান ভাঙানোর অভিপ্রায় ভেবে পুলকিত হয়েছেন।তারা সোমকে মনে করিয়ে দিয়েছেন-'যোগাইতে জল যবে গুরুর আদেশে/বহির্দ্বারে,কত যে কী রাখিতাম পাতে/চুরি করি আনি আমি,পড়ে কী হে মনে?' সোমের জন্য তার আকুলতা প্রকাশ পেয়েছে যখন তিনি বলেছেন-'শুনি লোকমুখে,সখে,চন্দ্রলোকে তুমি/ধর মৃগশিশু কোলে,কত মৃগশিশু/ধরেছি যে কোলে আমি কাঁদিয়া বিরলে,/কি আর কহিব তার?শুনিলে হাসিবে,/হে সুহাসি!নাহি ঞ্জান;না জানি কি লিখি!'।রাতে হ্রদে পদ্ম ফুটলে তা রাগে ছিঁড়েছেন আর সোমপত্নী রোহিনীর প্রতি তার ঈর্ষা প্রকাশ পেয়েছে-'ডাকিতাম মেঘদলে চির আবরিতে/রোহিনীর স্বর্ণকান্তি।ভ্রান্তিমদে মাতি,/সপত্নী বলিয়া তারে গঞ্জিতাম রোষে!' এই কথাগুলিতে সোমের প্রতি তিনি যে কতখানি অনুরক্ত,কতখানি তার সমর্পণ তা প্রকাশ পেয়েছে এই কথাগুলিতে-'কলঙ্কী শশাঙ্ক,তোমা বলে সর্ব্বজনে।/কর আসি কলঙ্কিনী কিঙ্করী তারারে,/তারানাথ!নাহি কাজ বৃথা কুলমানে।' এই পত্রটি মধুকবির কাব্যপ্রতিভার একটি ভাস্বর প্রতিফলন।পরকীয়া প্রেমের মতো নিষিদ্ধ বিষয়ও মধুকবির লেখনির স্পর্শে অনুপম সাহিত্যরসসম্পন্ন কাব্য হয়ে উঠেছে।(ক্রমশ)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সোলাইমান ১৬/১১/২০১৭
প্রিয় কবির জন্য এক রাশ রক্তিম শুভেচ্ছা ও গভীর ভালোবাসা রেখে গেলাম।
ভালো থাকুন দাদা সবসময়!