www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

লোকায়ত রবীন্দ্রনাথ (6)

(পরবর্তী অংশ)
1880 সালে কাঙাল হরিনাথ ফিকিরচাঁদ দলের পত্তন করেন ও নিজে ফিকিরচাঁদ ফকির নাম বা ভণিতা নেন।এই দলের জন্য মীর মোশাররফ হোসেন একটি গান লিখে দেন।কাঙাল হরিনাথের সূত্রেই মীর এর সঙ্গে লালন এর আলাপ হয়।1887 সালে মোশাররফ তাঁর 'সঙ্গীত লহরী' গ্রন্থের একটি গানে লেখেন,"আরে ভাই পাইনা দিশে,কলির শেষে,/কিসে কার মন মজেছে।/ফিকিরচাঁদে,আজবচাঁদে/রসিকচাঁদে সব মেতেছে।/কোথা আর পাগল কানাই,লালন গোঁসাই,/সব সাঁই এতে হার মেনেছে।" হরিনাথের এই 'শখের বাউলদল' লালনের গান ও তাঁর ভাবাদর্শকে বাঙালি সঙ্গীত রসিকের কাছে পৌঁছে দিতে সমর্থ হয়েছিল।
ঠাকুর পরিবারের যে দুই সুপুত্র লালনকে বিশ্বময় পরিচিতি দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ ছিলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর।লালনের মৃত্যুর পর তাঁর সমাধিটি পাকা করে দেবার জন্য জ্যোতিরিন্দ্রনাথ আদেশ দিয়েছিলেন কিন্তু সে বছর ফসল খারাপ হওয়ায় সেকাজ পিছিয়ে যায়।পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথ সেই কাজে সচেষ্ট হলেও বিভিন্ন কারণে তা হয়ে ওঠেনি।1904 সালে লালনের দুই শিষ্য শীতল শাহ ও ভোলাই শাহ চুন সুরকি দিয়ে লালনের সমাধি পাকা করে দেন।1889 সালে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ একটি বোটে বসে লালনকে একটি চেয়ারে বসিয়ে তাঁর একটি স্কেচ এঁকেছিলেন।ইতিহাসে লালনের অবয়বের সাক্ষীস্বরূপ প্রামাণ্য চিহ্ন বলতে সবেধন নীলমণি এটিই।নন্দলাল বসুর আঁকা লালনের জনপ্রিয় চিত্রটি কল্পনার আশ্রয়ে আঁকা,এটি আঁকা হয় 1916 সালে।জ্যোতিরিন্দ্রনাথ যদি লালনের অবয়বকে ইতিহাসের পটে স্থান করে দিয়ে থাকেন তবে রবীন্দ্রনাথ ইতিহাসে স্থান করে দিয়েছিলেন লালনের হৃদয় অর্থাৎ চিন্তাভাবনা ও গানগুলিকে।
(ক্রমশ)
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৪৭০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১১/১১/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast