লোকায়ত রবীন্দ্রনাথ (5)
( পরবর্তী অংশ)
লালনের গান শিক্ষিত সমাজে ছড়িয়ে দেবার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন অন্যতম।তিনি তাঁর ভাইঝি ইন্দিরাদেবীকে দিয়ে লালনের দুটি গানের স্বরলিপি করে 'বীণাবাদিনী' পত্রিকায় ছেপে দেন।আবার ছেউড়িয়ার আখড়া থেকে লালনের গানের খাতা নিয়ে এসে বামাচরণ ভট্টাচার্যকে দিয়ে 298টি গান অন্য একটি খাতায় নকল করে নেন।মূলখাতা আর আখড়ায় ফেরত যায়নি তা বর্তমানে শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত রয়েছে।রবীন্দ্রনাথ এই খাতার 8টি গান ও তাঁর সংগৃহীত 12টি গান, মোট 20টি গান 1915 সালে 'প্রবাসী' পত্রিকার 'হারামণি' বিভাগে আশ্বিন থেকে মাঘ সংখ্যাগুলিতে প্রকাশ করেন।এর আগে ঐ বছরের আষাঢ় মাসে শ্রীসতীশচন্দ্র দাস ও ভাদ্র মাসে শ্রীকরুণাময় গোস্বামী নামে দুই গবেষক কয়েকটি লালনগীতি ঐ পত্রিকায় প্রকাশ করেন।তবে লালনগীতিকে প্রথম শিক্ষিত সমাজে প্রকাশ করার কৃতিত্ব কুমারখালির হরিনাথ মজুমদারের, যিনি সমধিক পরিচিত কাঙাল হরিনাথ নামেই।ইনি 'গ্রামবার্তা প্রকাশিকা' নামে একখানি কাগজ বের করতেন সেই কাগজে 1872 সালের আগষ্ট মাসে তিনি লেখেন-"লালন শা নামে এক কায়স্থ আর এক ধর্মের আবিষ্কার করিয়াছে।হিন্দু মুসলমান সকলেই এই সম্প্রদায়ভুক্ত।....3/4 বৎসরের মধ্যে এই সম্প্রদায় অতিশয় প্রবল হইয়াছে।ইহারা যে জাতিভেদ স্বীকার করেনা সেকথা বলা বাহুল্য"।পরবর্তীকালে লালনের সঙ্গে হরিনাথের ঘনিষ্ঠতা হয় ও হরিনাথ এবং লালন এক অসমবয়সী সহমর্মী বন্ধুতার সূত্র বাঁধা পড়েন।লালনের প্রায় দশহাজার শিষ্য ছিল,একবার হরিনাথ তাঁর কাগজে জমিদারদের নিপীড়ন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে কলম ধরলে তাঁকে শাস্তি দিতে ঠাকুরবাড়ির জমিদাররা লাঠিয়াল ও পাঞ্জাবী গুন্ডা পাঠায়।এখবর পেয়ে বন্ধু হরিনাথকে রক্ষা করতে লালন তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে নিয়ে এসে সেই লাঠিয়ালদের দমন করেন।সত্যিই ইতিহাস রসিক পুরুষ বটে,যে ঠাকুর পরিবারের বিরুদ্ধে লালনকে লাঠি ধরতে হয়েছিল সেই পরিবারেরই দুই সুপুত্র লালনকে পরবর্তীকালে বিশ্বের সঙ্গে পরিচয় করাবেন। (ক্রমশ)
লালনের গান শিক্ষিত সমাজে ছড়িয়ে দেবার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন অন্যতম।তিনি তাঁর ভাইঝি ইন্দিরাদেবীকে দিয়ে লালনের দুটি গানের স্বরলিপি করে 'বীণাবাদিনী' পত্রিকায় ছেপে দেন।আবার ছেউড়িয়ার আখড়া থেকে লালনের গানের খাতা নিয়ে এসে বামাচরণ ভট্টাচার্যকে দিয়ে 298টি গান অন্য একটি খাতায় নকল করে নেন।মূলখাতা আর আখড়ায় ফেরত যায়নি তা বর্তমানে শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত রয়েছে।রবীন্দ্রনাথ এই খাতার 8টি গান ও তাঁর সংগৃহীত 12টি গান, মোট 20টি গান 1915 সালে 'প্রবাসী' পত্রিকার 'হারামণি' বিভাগে আশ্বিন থেকে মাঘ সংখ্যাগুলিতে প্রকাশ করেন।এর আগে ঐ বছরের আষাঢ় মাসে শ্রীসতীশচন্দ্র দাস ও ভাদ্র মাসে শ্রীকরুণাময় গোস্বামী নামে দুই গবেষক কয়েকটি লালনগীতি ঐ পত্রিকায় প্রকাশ করেন।তবে লালনগীতিকে প্রথম শিক্ষিত সমাজে প্রকাশ করার কৃতিত্ব কুমারখালির হরিনাথ মজুমদারের, যিনি সমধিক পরিচিত কাঙাল হরিনাথ নামেই।ইনি 'গ্রামবার্তা প্রকাশিকা' নামে একখানি কাগজ বের করতেন সেই কাগজে 1872 সালের আগষ্ট মাসে তিনি লেখেন-"লালন শা নামে এক কায়স্থ আর এক ধর্মের আবিষ্কার করিয়াছে।হিন্দু মুসলমান সকলেই এই সম্প্রদায়ভুক্ত।....3/4 বৎসরের মধ্যে এই সম্প্রদায় অতিশয় প্রবল হইয়াছে।ইহারা যে জাতিভেদ স্বীকার করেনা সেকথা বলা বাহুল্য"।পরবর্তীকালে লালনের সঙ্গে হরিনাথের ঘনিষ্ঠতা হয় ও হরিনাথ এবং লালন এক অসমবয়সী সহমর্মী বন্ধুতার সূত্র বাঁধা পড়েন।লালনের প্রায় দশহাজার শিষ্য ছিল,একবার হরিনাথ তাঁর কাগজে জমিদারদের নিপীড়ন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে কলম ধরলে তাঁকে শাস্তি দিতে ঠাকুরবাড়ির জমিদাররা লাঠিয়াল ও পাঞ্জাবী গুন্ডা পাঠায়।এখবর পেয়ে বন্ধু হরিনাথকে রক্ষা করতে লালন তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে নিয়ে এসে সেই লাঠিয়ালদের দমন করেন।সত্যিই ইতিহাস রসিক পুরুষ বটে,যে ঠাকুর পরিবারের বিরুদ্ধে লালনকে লাঠি ধরতে হয়েছিল সেই পরিবারেরই দুই সুপুত্র লালনকে পরবর্তীকালে বিশ্বের সঙ্গে পরিচয় করাবেন। (ক্রমশ)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সোলাইমান ১১/১১/২০১৭অপূর্ব ভাবনার প্রকাশ।।।