www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

লোকায়ত রবীন্দ্রনাথ (4)

(পরবর্তী অংশ)
অবশ্য লোকায়ত দর্শন তাঁর কবিতাতেও প্রভাব ফেলেছে।তার 'সোনার তরী' কাব্যগ্রন্থের একটি কবিতায় তিনি লিখেছেন-"দেবতারে যাহা দিতে পারি দিই তাই/প্রিয়জনে,প্রিয়জনে যাহা দিতে পাই/তাই দিই দেবতারে-আর পাব কোথা/দেবতারে প্রিয় করি,প্রিয়েরে দেবতা",এই দেবতা কোনো ধর্মের দেবতা নন তিনি রবীন্দ্রনাথের 'জীবনদেবতা'।তাঁর 'পত্রপুট' কাব্যে কুষ্ঠিয়া-শিলাইদহের স্মৃতি বাণীময় হয়ে উঠেছে,-"কতদিন দেখেছি ওদের সাধককে/একলা প্রভাতের রৌদ্রে সেই পদ্মানদীর ধারে,/যে নদীর নেই কোনো দ্বিধা/পাকা দেউলের পুরাতন ভিত ভেঙে ফেলতে।/দেখেছি একতারা হাতে চলেছে গানের ধারা বেয়ে/মনের মানুষকে সন্ধান করবার/গভীর নির্জন পথে"।শুরুতেই লোকায়ত দর্শন ও রবীন্দ্রচেতনার যে সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে যা কিনা ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ বঙ্গভঙ্গের সময়ে লিখিত রবীন্দ্রগানগুলি,যা কিনা উঠে এসেছিল সমস্ত স্তরের মানুষের কন্ঠে।এর কৃতিত্ব যতখানি রবীন্দ্রনাথের বাণীর ততটাই গানগুলির সহজিয়া সুরের যা কিনা আসলে বিভিন্ন লোকগানের সুর এবং তাই মানুষের হৃদয়ের খুবই কাছের।গগন হরকরার যে দুটি গানের হদিশ আজ পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে তার একটি হলো-"আমি কোথায় পাব তারে";যার সুরের রদবদল করে রবীন্দ্রনাথ 1905 সালে রচনা করেন "আমার সোনার বাংলা,আমি তোমায় ভালোবাসি" আর অন্যটি হলো-"ও মন অসার মায়ায় ভুলে রবে কতকাল এমনিভাবে",যার সুর অবলম্বনে রবীন্দ্রনাথ রচনা করেন "যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক আমি তোমায় ছাড়ব না মা"।এছাড়া আরও কিছু গান তিনি রচনা করেছেন যেমন-"মন মাঝি সামাল সামাল" এর সুর অবলম্বনে "এবার তোর মরা গাঙে বান এসেছে" বা "হরিনাম দিয়ে জগৎ মাতালে" এর সুর অবলম্বনে "যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে" ইত্যাদি। (ক্রমশ)
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৫৯১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৯/১১/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সোলাইমান ১০/১১/২০১৭
    খুবই সুন্দর কবিবর।
  • সুন্দর বিশ্লেষণ।
 
Quantcast