বিরহী জীবনানন্দ(2)
'বোধ' কবিতায় কবি লিখছেন,"ভালোবেসে দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে,/অবহেলা ক'রে আমি দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে,/ঘৃণা ক'রে দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে;"।'মেয়েমানুষ' এই শব্দটি নিঃসন্দেহে সমসাময়িক শব্দ চয়নের রীতিকে সজোরে ধাক্কা দিয়েছিল,ভদ্রজনেরা বিস্ময়সহকারে নাক সিঁটকে ছিলেন সুনিশ্চিতভাবে।কিন্তু এই শব্দটিই জীবনানন্দের পছন্দ হল কেন?এক,স্ত্রী বা নারীর ওপর যতটা জোর ফলানো যায় মেয়েমানুষের ওপর তার চেয়ে বেশি জোর ফলানো যায়।দুই,এই শব্দটির মধ্যে একটা সচেতন বিভাজন তৈরি করে দেওয়া আছে; মানুষ কিন্তু মেয়েমানুষ।তিন,এই দুইয়ের যোগফলে যা হয় - একজন মেয়ে যে পুরুষের সম্পত্তি তাকে নিয়ে যা খুশি করা চলে।তাকে ভালোবাসা যায়,অবহেলা করা যায়,ঘৃণা করা যায়।মুশকিল হল অবহেলা বা ঘৃণার জন্ম পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া যায় কিন্তু ভালোবাসা?তবু এইসব মেয়েমানুষেরা সেসবে সাড়া দেয়-"আমারে সে ভালোবাসিয়াছে,/আসিয়াছে কাছে,"।একসময় ভাঙে ভুল,তারপর পুরুষের হৃদয়ে সত্যিই ভালোবাসা জন্ম নেয় কিন্তু,"উপেক্ষা সে করেছে আমারে,/ঘৃণা ক'রে চ'লে গেছে- যখন ডেকেছি বারে বারে/ভালোবেসে তারে;"।অতএব এবার পুরুষের নত হবার পালা,সাধনার সময় আর বিরহের শুরু,"তবুও সাধনা ছিল একদিন,-এই ভালোবাসা;/আমি তার উপেক্ষার ভাষা/আমি তার ঘৃণার আক্রোশ/অবহেলা ক'রে গেছি;....." এবং অনন্ত প্রতীক্ষা। (ক্রমশ)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মীর মুহাম্মাদ আলী ২০/১১/২০১৭মনের মাধুরী দিয়ে লেখা একটি কবিতা।শুভেচ্ছা।
-
শাহজাদা আল হাবীব ০৫/১১/২০১৭ভালো।
-
সোলাইমান ০৫/১১/২০১৭সুন্দর
-
কামরুজ্জামান সাদ ০৪/১১/২০১৭বন বাঁদাড়ের জীবনানন্দকে যেমন ভাল লাগে,রোম্যান্টিক জীবনানন্দ তেমনি ভাল