গডমাদার
গডমাদার
সুব্রত সামন্ত (বুবাই)
আমার পরিচয়ে আরো কয়েকটা চুমকি বসিয়ে
এবার নতুন ঠিকানায় আমি আমার বাসাকে নিয়ে এলাম।
কিন্তু এখানে আসার পর থেকেই একটি নতুন ঘটনা
নিয়মিতভাবে আমাকে জেঁকে ধরে বসে আছে।
আস্ত রাস্তাকে সামনে ফেলে রেখে, গলির কোনে এতটুকু একটা মেয়ে
প্রতিদিন স্বাতী নক্ষত্রের মতো স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ;
কিংবা কোনো কোনো দিন মেঘে ঢাকা নক্ষত্রের চেয়েও
হয়তবা আরো অনেক গভীর হয়ে।
ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়ার মতোই তার বয়স।
আর সেই হেতু অভ্যাসবশত অথবা বাধ্য হয়ে
আমাকেও একদিন সে তার চোখের রঙ্গশালে মশাল জ্বালিয়ে নিশানায় এনেছে।
এবং পরক্ষণেই মাথা নীচু করে সে তার ভুলের সংশোধন করে নিয়েছে।
আর সেইসাথে জানিয়ে দিয়েছে , এ জীবন তার কাছে কতবেশি বিড়ম্বনায়।
একদিন ইচ্ছে করেই গেলাম তার কাছে।
সে পালাতে চেয়েও আবার ফিরে এল আমার ডাক শুনে।
আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ এ জীবন তোর ভালোলাগে ?’
কোনো কথা খরচা না করেই সে আমাকে সোজাসুজি বুঝিয়ে দিল
তার জীবনের মাত্র দু’খানা শূণ্য একের পরে বারবার বসাতে চেয়েও
কীভাবে ভুলে করে বামে গিয়ে পড়ে ?
আমি বললাম ‘স্কুলে যাবি’ ?
সে বলল, ‘কী হবে স্কুলে গিয়ে’ ?
আমি বললাম ‘ভালো খাবি, ভালো পড়বি, ভালো থাকবি
দেখবি সবাই তোকে ম্যাডাম বলবে’।
সে বলল , তাহলে আমি স্কুলে যাই নি বলেই কি ওরা আমাকে ওটা বলে !
আমি জিজ্ঞাসা করলাম , কেন কি বলে ?
সে বলল এমা, তুমি এটাও জানো না ! সবাই আমাকে মাগী বলে।
কেন বলে গো বাবু, আমি তো এই কাজ করি শুধু আমার পেট ভরাতে
কিন্তু যারা তোমাদের রাজ্যে জেলায় আয়োজনের আসর খুলে
বাসরে জেগে খদ্দের ধরে... তারা কেন হিসেবের বাইরে পড়ে ?
আমিও তো বাকি সবায়ের মতো রোদ হলে রোদে পুড়ি, বৃষ্টি হলে জলে ভিজি
তবু কেন আমার স্বপ্ন ভাঙে ? রাতের শেষে দিন না এসে আবার সেই রাতই আসে ?
থাক বাবু, এসব ভেবে আর তোমার কাজ নেই।
এখন যেটা পারবে বরং সেটাই বলি----
বাড়িতে আমার অক্ষম মা আর নাম-না-জানা হারামি-বাপের আরো দুটো মেয়ে আছে
কি হবে বাবু , স্কুল কলেজে নাম লিখিয়ে ?
তাই বলি কি আমার জন্য একান্তই কিছু যদি করতে চাও তাহলে
তুমিও চুপিচুপি রাতেরবেলা চলে এসে ‘অন্য অনেকের মতো’ হারামি হয়ে।
আমি তার কথাতে অসম্মান বোধ করে বাড়ির দিকে পা বাড়ালাম ;
কিন্তু মনে মনে বলেই ফেললাম, ‘তুমি আমার গডমাদার হবে ?’
বিঃ দ্রঃ – ইণ্ডিয়া থেকে বাহরাইন-এ ফোন আসল “কাল সারারাত বৃষ্টি হয়েছিলো” অডিও সিডির রেকডিং শুরু। আমি আমার কথা রাখতে “আজ কবিতারা কথা বলবে পার্ট -২” এর কাজ হাতে নিলাম। কবিতা বাছতে গিয়ে হঠাত মনে এল আমার ‘আসুন না বাবু খুশি করে দেবো’ এই কবিতাটার কথা ; এই কবিতাটি অনেকদিন পড়ার পর সম্পূর্ণ একটি নতুন ভাবনা আমার মনের মধ্যে ভেসে উঠল ; আর তৈরি হল এই কবিতাটি। এই কবিতাতে এমন একটি ইঙ্গিত আছে যাতে সুস্থ সমাজের রুচি ভঙ্গ হতে পারে, কিন্তু আমি তো সমাজ বহিভূত নই। আর আপনারাও... আশা করি কি বলতে চাচ্চিলাম বুঝতে পেরেছেন। তাই আগে থেকেই বলে রাখলাম কবিতাটি যদি কাউকে আঘাত দিয়ে থাকে তার জন্য আমি অন্য অনেকের মতই দুঃখিত। _ সুব্রত।
সুব্রত সামন্ত (বুবাই)
আমার পরিচয়ে আরো কয়েকটা চুমকি বসিয়ে
এবার নতুন ঠিকানায় আমি আমার বাসাকে নিয়ে এলাম।
কিন্তু এখানে আসার পর থেকেই একটি নতুন ঘটনা
নিয়মিতভাবে আমাকে জেঁকে ধরে বসে আছে।
আস্ত রাস্তাকে সামনে ফেলে রেখে, গলির কোনে এতটুকু একটা মেয়ে
প্রতিদিন স্বাতী নক্ষত্রের মতো স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ;
কিংবা কোনো কোনো দিন মেঘে ঢাকা নক্ষত্রের চেয়েও
হয়তবা আরো অনেক গভীর হয়ে।
ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়ার মতোই তার বয়স।
আর সেই হেতু অভ্যাসবশত অথবা বাধ্য হয়ে
আমাকেও একদিন সে তার চোখের রঙ্গশালে মশাল জ্বালিয়ে নিশানায় এনেছে।
এবং পরক্ষণেই মাথা নীচু করে সে তার ভুলের সংশোধন করে নিয়েছে।
আর সেইসাথে জানিয়ে দিয়েছে , এ জীবন তার কাছে কতবেশি বিড়ম্বনায়।
একদিন ইচ্ছে করেই গেলাম তার কাছে।
সে পালাতে চেয়েও আবার ফিরে এল আমার ডাক শুনে।
আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ এ জীবন তোর ভালোলাগে ?’
কোনো কথা খরচা না করেই সে আমাকে সোজাসুজি বুঝিয়ে দিল
তার জীবনের মাত্র দু’খানা শূণ্য একের পরে বারবার বসাতে চেয়েও
কীভাবে ভুলে করে বামে গিয়ে পড়ে ?
আমি বললাম ‘স্কুলে যাবি’ ?
সে বলল, ‘কী হবে স্কুলে গিয়ে’ ?
আমি বললাম ‘ভালো খাবি, ভালো পড়বি, ভালো থাকবি
দেখবি সবাই তোকে ম্যাডাম বলবে’।
সে বলল , তাহলে আমি স্কুলে যাই নি বলেই কি ওরা আমাকে ওটা বলে !
আমি জিজ্ঞাসা করলাম , কেন কি বলে ?
সে বলল এমা, তুমি এটাও জানো না ! সবাই আমাকে মাগী বলে।
কেন বলে গো বাবু, আমি তো এই কাজ করি শুধু আমার পেট ভরাতে
কিন্তু যারা তোমাদের রাজ্যে জেলায় আয়োজনের আসর খুলে
বাসরে জেগে খদ্দের ধরে... তারা কেন হিসেবের বাইরে পড়ে ?
আমিও তো বাকি সবায়ের মতো রোদ হলে রোদে পুড়ি, বৃষ্টি হলে জলে ভিজি
তবু কেন আমার স্বপ্ন ভাঙে ? রাতের শেষে দিন না এসে আবার সেই রাতই আসে ?
থাক বাবু, এসব ভেবে আর তোমার কাজ নেই।
এখন যেটা পারবে বরং সেটাই বলি----
বাড়িতে আমার অক্ষম মা আর নাম-না-জানা হারামি-বাপের আরো দুটো মেয়ে আছে
কি হবে বাবু , স্কুল কলেজে নাম লিখিয়ে ?
তাই বলি কি আমার জন্য একান্তই কিছু যদি করতে চাও তাহলে
তুমিও চুপিচুপি রাতেরবেলা চলে এসে ‘অন্য অনেকের মতো’ হারামি হয়ে।
আমি তার কথাতে অসম্মান বোধ করে বাড়ির দিকে পা বাড়ালাম ;
কিন্তু মনে মনে বলেই ফেললাম, ‘তুমি আমার গডমাদার হবে ?’
বিঃ দ্রঃ – ইণ্ডিয়া থেকে বাহরাইন-এ ফোন আসল “কাল সারারাত বৃষ্টি হয়েছিলো” অডিও সিডির রেকডিং শুরু। আমি আমার কথা রাখতে “আজ কবিতারা কথা বলবে পার্ট -২” এর কাজ হাতে নিলাম। কবিতা বাছতে গিয়ে হঠাত মনে এল আমার ‘আসুন না বাবু খুশি করে দেবো’ এই কবিতাটার কথা ; এই কবিতাটি অনেকদিন পড়ার পর সম্পূর্ণ একটি নতুন ভাবনা আমার মনের মধ্যে ভেসে উঠল ; আর তৈরি হল এই কবিতাটি। এই কবিতাতে এমন একটি ইঙ্গিত আছে যাতে সুস্থ সমাজের রুচি ভঙ্গ হতে পারে, কিন্তু আমি তো সমাজ বহিভূত নই। আর আপনারাও... আশা করি কি বলতে চাচ্চিলাম বুঝতে পেরেছেন। তাই আগে থেকেই বলে রাখলাম কবিতাটি যদি কাউকে আঘাত দিয়ে থাকে তার জন্য আমি অন্য অনেকের মতই দুঃখিত। _ সুব্রত।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
নুফরাত জেরীন ০৮/০১/২০১৬নতুনত্বের স্বাদ পেলাম
-
মাহাবুব ০৭/০১/২০১৬ভালো লাগলো কবিতাটা।
-
রাশেদ খাঁন ০৭/০১/২০১৬ভালো
-
পরশ ০৭/০১/২০১৬ভালো লাগলো
-
ধ্রুব রাসেল ০৭/০১/২০১৬সমাজের অতিরিক্ত সুস্থতার কারণে হয়তো এসব কর্ম গুলো তলে তলে বেশিই ঘটে। যা সমাজ জেনেও জানতে চায়না, বুঝেও বুঝতে চায়না। যেহেতু সমাজ সুস্থ!