www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

গাঞ্জা

শুক্রবার সকালকে পেরেরা সাব একটু বেশী ঘুমায়। কাল রাতে সে গিয়েছিল উত্পল মাষ্টারের বাড়ী। ফিরেছে গভীর রাতে। তাই বিছানা ছেড়ে উঠতে তার মন চাইছিল না। এর মধ্যে একটা ফোন। ফোনটি করেছে সাভারের নয়ন মাষ্টারের বউ। পেরেরার বুকটা ধক করে উঠল। সেই দিনের মদ খাওয়ার জন্য ফোন করে নাই তো?
ফোনটি সে ভয়ে ভয়ে রিসিভ করে।
-হ্যালো
-হ্যালো পেরেরা ভাই একটু সাভার আসেন জরুরী কথা আছে।-
-কি কথা?(ভয়ে ভয়ে)
-বিরাট  ঘটনা। মান-সম্মান নিয়া টানাটানির মত অবস্থা।
-বলেন কি? একটু ঝেড়ে কাশেন তো?
-শোনলাম মাষ্টার নাকি ইদানীং গাঞ্জা খাওয়া শুরু করছে!মদ্য পানও নাকি করে। কেমন আক্কেল চিন্তা করেন। মাষ্টার করবি মাষ্টারী, না সে খায় গাঞ্জা-মদ!
-কেউ কি দেখেছে?
-শংকর দেখেছে?
-কোন শংকর?
-মাষ্টারের বন্ধু কালা শংকর।
-বলেন কি? সাথে কি কাউকে দেখেছিল?
-সাথে নাকি আরো তিন বান্দর ছিল!
পেরেরা সাবের মুখ কালো হয়ে গেল। কারণ সে, উতপল মাষ্টার আর অভি গিয়েছিল। মাষ্টারের সাথে তারাও গাঞ্জা সেবন করতে। এই বুঝি ধরা খেয়ে গেল। আজ আর রক্ষা নেই।
-ও ভাই কথা বলছেন না কেন?
-ব ব বলেন।
-এখনই চলে আসেন।
- জ্বি আসতেছি।

পেরেরা  মনে মনে তিন বার সাধু যোনার নাম নিয়ে রওনা হলো।
সাভার বাষ্ট ষ্ট্যান্ড আসতে তার ২টা বেজে গেল। সে একটা রিক্সা ডেকে তাতে উঠে পড়ল। একটু পরেই পিছন থেকে হাক-ডাক। এই পেরেরা থাম থাম। আরে নয়ন মাষ্টার কি ব্যাপার?
-ব্যাপার কিছু না।বউ টের পাইছে। আমারা যে বাউলের আখড়ায় গাঞ্জা সেবন করি, কে যেন আমাদের দেখে ফেলেছে। আজ বউ বলেছে আমার মুখ দেখতে চায় না। চলো চলো।
-কোথায় সাভার শহীদ মিনারা ঘুরে সময় কাটাই। রাতে একটা ব্যাবস্থা হবে।
-মাষ্টার তোমার বউ তো আমারে খবর দিছে।
- যাইতে চাইলে যাও। ঝাটার বাএই খাইছ কোন দিন?
-না।
-তাইলে খাইয়া আসো। তোমার নাম তো লিষ্টে আছে।
আমন সময় একটা পরামশ দিল । চলো বাউলের আখড়ায় যাই। গাঞ্জা খাই বুকে সাহস বাড়ব। বউ দেখবা বাপ বাপ কইরা বাপের বাড়ি দৌড়।
-উত্পল মাষ্টার ঠিক বলছে চলো যাই। গাঞ্জা খেলে নাকি সাহস বাড়ে।
তবে নয়ন মাষ্টারের সাহস বাড়ে না। সে শুধু গাঞ্জা সেবন করে কাঁদে! কি কারনে কাঁদে জানা হলো না। আর উতপল অকারনে খিল খিল করে হাসে। এখন বলেন এরা বউকে শাসাবে কীভাবে?

আখড়ায় আগেই অনেক ভক্ত তালিম শুরু করে দিয়েছে। মাষ্টার তিন পুইরা কিনল। কলকিতে ভরে দে টান। আহ কি সুখ টান আর মাষ্টারের কান্না জড়ানো করুণ সুরের গান।আর সাথে ভেউ ভেউ করে কান্না তো আছেই। উতপল! তা দেখে হাসতে হাসতে জান যায় অবস্থা। আর মাঝে মাঝে শিউলী শিউলী চিতকার করছে।

পেরেরা কি করবে বুঝতে পারছে না। তার নেশা ধরে গেছে। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। সে হাসবে না কাঁবে বুঝতে পারছে না।
আসর শেষ একে একে বাড়ী ফিরছে গাজারুরা। আর এঅ তিন বান্দর!
আজ তিন বান্দরের খবর আছে।ইতোমধ্যে তাদের বুকে ঢিপ ঢিপ শুরু হয়ে গেছে।

পেরেরা সাব ভাবছে দুর এই দুই মাষ্টারের কথা কি ধরাটা না খেয়েছে। বাসার কথা মনে হতেই নেশা এক নিমিষে উধাও!

১০/০১/২০১৩
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১০১৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০১/১০/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • ভালো লাগলো।
  • নতুন লেখা কই
  • জেবাউল নকিব ০৩/১০/২০১৩
    হাহাহাহা । মজার গল্প পড়লাম গুরু...
  • কি আর করা। রাজা রাজ্য চালায়। রাজাকে চালায় রাণী। চেতন অচেতন অবচেতন মনে এই কথা আমরা সবাই মানি। খুব জীবনমুখী লেখা, মিলে যাচ্ছে জীবনের সাথে
  • দীপঙ্কর বেরা ০২/১০/২০১৩
    বেশ লাগল তো ।
  • Înšigniã Āvî ০২/১০/২০১৩
    tongue
  • সহিদুল হক ০২/১০/২০১৩
    অসাধারণ গল্প।
  • ইব্রাহীম রাসেল ০২/১০/২০১৩
    দারুণ গো তোমার গাঞ্জা গল্পখানি
  • হাহাহাঃ আমি বড় সখ করে এক পুরিয়া আনাইছিলাম সিগারেটের শুকা ফেলে তাতে বড়ে খাইছিলাম হায় আমার পূরা কপাল কোন নেশাই হইলনা। সিগারেটের চেয়ে একটু করা এই যা।
    • হা হা হা দাদা ভাই কলকিতে ভরে খেতে হয়!!
      • কলকিতে ফ্লেভার সিগারেট খাইছি মানে ওসমানী সাব যেটা খাইতেন ওতে ভরে। ওইখানে গাঞ্জা ট্রাই করিনাই একদিন করতে হবে। :p
 
Quantcast