পোড়ো বাড়ির রহস্য - পর্ব - ৭
পর্ব - ৭
....................... অপরিচিত মানুষ'টা ??"
পটল আমার দিকে তাকিয়ে বললো, " আরে ভাই, পরিতোষ জ্যেঠু ...! "আমি যেন আনমনেই বললাম," তাই তো, উনার কথা তো মনেই ছিল না।"
আমাদের পরিতোষ জ্যেঠু। সম্পূর্ণ নাম পরিতোষ কর। জ্যেঠু চাকরি পেয়েও সেটা ত্যাগ করে চাষবাস'টাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। কারণ জ্যেঠু মনে করেন, চাষবাস করতে গেলেও শিক্ষার প্রয়োজন। তাছাড়া, শিক্ষিত ব্যক্তি'রা চাষবাস করতে পারবে না এমন তো কোথাও লেখা নেই। সাধারণত গ্রামের দিকের ছেলেরা শিক্ষিত হওয়ার পর যদি তাকে একদিন মাঠে যেতে বলা হয়, তাহলে সে মনে করে সেটাই তার কাছে সবচেয়ে বড়ো অপমানের আর শহরের ছেলেরা তো মাঠে কখনই যাই না।
তো যাই হোক, পরিতোষ জ্যেঠু'র আমাদের পরিচয় বহুদিন আগে থেকেই। ছোটোবেলায় মাঝে মাঝে আমরা বন্ধু'রা মিলে জ্যেঠু'র কাছে চলে যেতাম গল্প শোনার জন্যে।
আমরা তিন বন্ধু মিলে ঠিক করলাম জ্যেঠু'র কাছেই যাব। কিন্তু একটা প্রশ্ন, জ্যেঠু যদি জানতে চায় কেন, আমরা এত আগ্রহী, পোড়ো বাড়ির সম্পর্কে তাহলে কি বলবো ?? পরে ভাবলাম, সব প্রশ্নের উত্তর আগে থেকে জানা উচিত নয়, পরিস্থিতি'র উপর নির্ভর করে কখনও কখনও উত্তর পরিবর্তন হয়ে যায়।
অবশেষে গেলাম জ্যেঠু'র বাড়িতে। গিয়ে দেখি অনেক পরিবর্তন হয়েছে জ্যেঠু'র বাড়ি। জ্যেঠু'র বয়স বেড়েছে। মুখে বৃদ্ধের ছাপ স্পষ্ট। কাছে যেতেই জ্যেঠু চিনতে পারলেন আমাদের'কে। ভাঙা ভাঙা কন্ঠে বললেন, মনে পড়লে জ্যেঠু'কে তাহলে। আবার নিশ্চয় গল্প শুনবি বলে এসেছিস।" আমি হালকা হেসে বললাম, "হ্যাঁ, জ্যেঠু। অনেক দিন তোমার গল্প শুনিনি। আসলে পড়াশোনা'র এত চাপ...! আজ অনেক আশা নিয়ে কিন্তু গল্প শুনতে এলাম। শোনাবে তো !" জ্যেঠু আবার ভাঙা ভাঙা কন্ঠে বললেন, " অবশ্যই শোনাবো। বল তোরা কি শুনতে চাস ?" আমি ইতস্তত করে বললাম, " আমরা ঐ পোড়ো বাড়ি সম্পর্কে জানতে চাই। মানে ওখানে কারা থাকত, কি হয়েছিল, এটার নাম পোড়ো বাড়ি হল কীভাবে ইত্যাদি। বলো তো বলবে ! " পটল আর পেঁচা আমার সাথে সম্মতি জানিয়ে বললো, " হ্যাঁ, জ্যেঠু...... এতদিন ধরে এই গ্রামে থাকি কিন্তু এই পোড়ো বাড়ির সম্পর্কে কিছুই তেমন জানা হয়নি। সেজন্য আর কি ....। জ্যেঠু একটু অস্বস্তি বোধ করলেও অবশেষে বললো, " আচ্ছা। বলছি, তবে তার আগে তোদের কথা দিতে তোরা কাউকে কিছু বলবি না।" আমরা তিনজন একসাথে ঘাড় নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে দিলাম।
জ্যেঠু সেই ভাঙা ভাঙা কন্ঠে বলতে শুরু করলেন, " ঘটনাটা ১৯৭৪ সালের। সেই সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সবেমাত্র যবনিকা পড়েছে। কিছু মানুষ এদেশ থেকে ওদেশে আবার কিছু মানুষ ওদেশ থেকে এদেশে এসেছে। সেইরকমই একটা পরিবার ছিল সরকার পরিবার। পরিবার'টা একান্নবর্তী পরিবার ছিল। তারা ঐ দেশে যথেষ্ট ধনশালী ছিল। কিন্তু কোনো বিশেষ কারণে সবকিছু ছেড়ে শূন্য হাতে এদেশে চলে আসতে একপ্রকার বাধ্য হয়েছিল। এখানে এসে তাদের প্রথমে থাকা'র জন্য কোনো ঘর পর্যন্ত ছিল না। কিছুদিন খোঁজা খুঁজির পর তারা এই বাড়িটির সন্ধান পাই।"
এই পর্যন্ত বলে জ্যেঠু একটা সিগারেট ধরালেন।তারপর চেয়ার'টায় গা এলিয়ে চোখ দুটো শূন্যের দিকে রেখে কিছু নিশ্চয়ই ভাবছে।
চলছে ...................
....................... অপরিচিত মানুষ'টা ??"
পটল আমার দিকে তাকিয়ে বললো, " আরে ভাই, পরিতোষ জ্যেঠু ...! "আমি যেন আনমনেই বললাম," তাই তো, উনার কথা তো মনেই ছিল না।"
আমাদের পরিতোষ জ্যেঠু। সম্পূর্ণ নাম পরিতোষ কর। জ্যেঠু চাকরি পেয়েও সেটা ত্যাগ করে চাষবাস'টাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। কারণ জ্যেঠু মনে করেন, চাষবাস করতে গেলেও শিক্ষার প্রয়োজন। তাছাড়া, শিক্ষিত ব্যক্তি'রা চাষবাস করতে পারবে না এমন তো কোথাও লেখা নেই। সাধারণত গ্রামের দিকের ছেলেরা শিক্ষিত হওয়ার পর যদি তাকে একদিন মাঠে যেতে বলা হয়, তাহলে সে মনে করে সেটাই তার কাছে সবচেয়ে বড়ো অপমানের আর শহরের ছেলেরা তো মাঠে কখনই যাই না।
তো যাই হোক, পরিতোষ জ্যেঠু'র আমাদের পরিচয় বহুদিন আগে থেকেই। ছোটোবেলায় মাঝে মাঝে আমরা বন্ধু'রা মিলে জ্যেঠু'র কাছে চলে যেতাম গল্প শোনার জন্যে।
আমরা তিন বন্ধু মিলে ঠিক করলাম জ্যেঠু'র কাছেই যাব। কিন্তু একটা প্রশ্ন, জ্যেঠু যদি জানতে চায় কেন, আমরা এত আগ্রহী, পোড়ো বাড়ির সম্পর্কে তাহলে কি বলবো ?? পরে ভাবলাম, সব প্রশ্নের উত্তর আগে থেকে জানা উচিত নয়, পরিস্থিতি'র উপর নির্ভর করে কখনও কখনও উত্তর পরিবর্তন হয়ে যায়।
অবশেষে গেলাম জ্যেঠু'র বাড়িতে। গিয়ে দেখি অনেক পরিবর্তন হয়েছে জ্যেঠু'র বাড়ি। জ্যেঠু'র বয়স বেড়েছে। মুখে বৃদ্ধের ছাপ স্পষ্ট। কাছে যেতেই জ্যেঠু চিনতে পারলেন আমাদের'কে। ভাঙা ভাঙা কন্ঠে বললেন, মনে পড়লে জ্যেঠু'কে তাহলে। আবার নিশ্চয় গল্প শুনবি বলে এসেছিস।" আমি হালকা হেসে বললাম, "হ্যাঁ, জ্যেঠু। অনেক দিন তোমার গল্প শুনিনি। আসলে পড়াশোনা'র এত চাপ...! আজ অনেক আশা নিয়ে কিন্তু গল্প শুনতে এলাম। শোনাবে তো !" জ্যেঠু আবার ভাঙা ভাঙা কন্ঠে বললেন, " অবশ্যই শোনাবো। বল তোরা কি শুনতে চাস ?" আমি ইতস্তত করে বললাম, " আমরা ঐ পোড়ো বাড়ি সম্পর্কে জানতে চাই। মানে ওখানে কারা থাকত, কি হয়েছিল, এটার নাম পোড়ো বাড়ি হল কীভাবে ইত্যাদি। বলো তো বলবে ! " পটল আর পেঁচা আমার সাথে সম্মতি জানিয়ে বললো, " হ্যাঁ, জ্যেঠু...... এতদিন ধরে এই গ্রামে থাকি কিন্তু এই পোড়ো বাড়ির সম্পর্কে কিছুই তেমন জানা হয়নি। সেজন্য আর কি ....। জ্যেঠু একটু অস্বস্তি বোধ করলেও অবশেষে বললো, " আচ্ছা। বলছি, তবে তার আগে তোদের কথা দিতে তোরা কাউকে কিছু বলবি না।" আমরা তিনজন একসাথে ঘাড় নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে দিলাম।
জ্যেঠু সেই ভাঙা ভাঙা কন্ঠে বলতে শুরু করলেন, " ঘটনাটা ১৯৭৪ সালের। সেই সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সবেমাত্র যবনিকা পড়েছে। কিছু মানুষ এদেশ থেকে ওদেশে আবার কিছু মানুষ ওদেশ থেকে এদেশে এসেছে। সেইরকমই একটা পরিবার ছিল সরকার পরিবার। পরিবার'টা একান্নবর্তী পরিবার ছিল। তারা ঐ দেশে যথেষ্ট ধনশালী ছিল। কিন্তু কোনো বিশেষ কারণে সবকিছু ছেড়ে শূন্য হাতে এদেশে চলে আসতে একপ্রকার বাধ্য হয়েছিল। এখানে এসে তাদের প্রথমে থাকা'র জন্য কোনো ঘর পর্যন্ত ছিল না। কিছুদিন খোঁজা খুঁজির পর তারা এই বাড়িটির সন্ধান পাই।"
এই পর্যন্ত বলে জ্যেঠু একটা সিগারেট ধরালেন।তারপর চেয়ার'টায় গা এলিয়ে চোখ দুটো শূন্যের দিকে রেখে কিছু নিশ্চয়ই ভাবছে।
চলছে ...................
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোঃ আমিনুল ইসলাম মিঠু ০৮/০১/২০২২দারুণ লিখিয়ে। ভাল লাগল
-
একনিষ্ঠ অনুগত ০৮/০১/২০২২তারপর...
-
ফয়জুল মহী ০৭/০১/২০২২চমৎকার
-
মোঃ আমিনুল ইসলাম মিঠু ০৭/০১/২০২২ভাল লাগলো