www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

পোড়ো বাড়ির রহস্য - পর্ব - ৩

পর্ব - ৩

............ রক্তের বদলে জল বইতে লাগলো।

আমি কিছুক্ষণের জন্য হতভম্ব হয়ে গেলাম। এত রাতে একটা বাচ্চা কোথায় কাঁদছে ? যথেষ্ট জোরে শব্দটি আসছে। কিন্তু ভয় পেলে চলবে না। ধীরে ধীরে নীচে নেমে আসলাম। পোড়ো বাড়ি'টার বাইরে আসলাম। না এখানে আশপাশে কোনো বাড়ি তো নেই তাহলে শব্দটি আসছে কোথা থেকে ? কিন্তু যত সময় যাচ্ছে ততই যেন গোঙরানোর শব্দটি বেড়েই চলছে। প্রায় আধ ঘন্টা আমি কানে হাত দিয়ে রাখলাম। তারপর কান থেকে হাত সরিয়ে দেখলাম, কান্নার শব্দটি ঠিক আগের মতোই আছে। তখন বুঝতে পারলাম এই শব্দটির মধ্যে কোনো রহস্য আছে। আমি টর্চ জ্বালায়ে খুঁজতে লাগলাম, কোথা থেকে এই বিকট ভয়ানক শব্দটি আসছে ?? প্রায় দশ মিনিট খোঁজা খুঁজির পর দেখলাম শব্দটি আসছে কবরস্থানের দিক থেকে। এগিয়ে যেতে লাগলাম কবরস্থানের দিকে। কান্নার উৎসের কাছে পৌচ্ছাতেই দেখলাম একটা বাচ্চা একটা কবরস্থানের পাশে বসে কাঁদছে। আমার দিকে পিছন ফেরানো সেজন্য বাচ্চা'টার মুখ দেখতে পাচ্ছি না। আমি বাচ্চাটির দিকে টর্চ মারলাম না।হয়ত ও ভয় পেতে পারে, এই ভেবে। এবার আর হতভম্ব হলাম না, পুরো ভয় পেয়ে গেলাম। কিন্তু আমি তো একা তাই নিজেকে নিজেই সাহস জোগালাম।

এক পা এক পা করে খুব নিশব্দে বাচ্চা'টার কাছে গেলাম। দেখলাম সে তখনও কাঁদছে। আমি বাচ্চাটিকে জিজ্ঞাসা করলাম, " কি হয়েছে? তুমি কাঁদছ কেন?" কিন্তু কোনো উত্তর নেই। আমি আবার পুনরায় জিজ্ঞাসা করলাম, " তুমি কাঁদছো কেন, আমায় বলতে পারো। কোনো ভয় নেই।" আবারও কোনো উত্তর নেই বরং সে কেঁদেই চললো। বিকট ভয়ানক সে শব্দ। উত্তর না পাওয়ায় এবার বাধ্য হয়েই বাচ্চাটির দিকে টর্চ মারলাম। দেখি সেটা কোনো মানুষ নয়। একটা বড়ো সাইজের পুতুল। পুতুলটাকে হাত দিয়ে তুলতেই দেখি একটা স্পিকার। এবার পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে গেল। স্পিকারটা বন্ধ করে দিলাম।

একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম। জানি না, আরও কত কিছু আমার জন্য অপেক্ষা করছে। যাই হোক, এখন রাত ৩ টে বাজে ভোর হতে আর বেশি বাকি নেই।

যতই রাত ভোরের দিকে এগোচ্ছে ততই টর্চের উজ্জ্বলতা কমতে থাকছে। চার্জ কমে যাচ্ছে।

আর্কষন বা একটা টান কেমনভাবে অনুভব করতে হয়, সেটা আজ বুঝতে পেরেছি। আমি কীভাবে যেন নিজেই নিজের ভারসম্য হারিয়ে ফেলছি। এই পোড়ো বাড়িটার দিকে তাকালেই মনে হচ্ছে, এই বাড়িটা আমাকে কিছু বলতে চাইছে। মনে যেন একটা প্রশ্ন চিহ্ন আমাকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। অবশেষে স্থির করলাম, যে করেই হোক এই পোড়ো বাড়ির রহস্য ভেদ করতেই হবে।

ও একটা কথা তো বলাই হয়নি, কিছুক্ষণ আগে আমি উপরের একটা ঘরে কয়েক ফোঁটা হয়ত রক্ত দেখেছি। কিন্তু ওটা রক্ত কিনা সেটা আর একবার না দেখলে নিশ্চিত হতে পারবো না।

অনেকক্ষণ থেকে ঘুম পাচ্ছে। আসলে রাত তিনটে ,সাড়ে তিনটে নাগাদ ঘুম পাই। তার বেশি কখনও জেগে থাকার অভ্যাস নেই। সেজন্যই হয়ত ঘুম পাচ্ছে। শরীরের কষ্ট দিয়ে জেগে থেকে লাভ নেই।

একটা গাছের শেকড়ের ওপর বসে পড়লাম। গাছটি কি গাছ বোঝা যাচ্ছে না। তবে যাই হোক, খুব সুন্দর, হেলান দিয়ে বসেছি। মনে হচ্ছে ঘুমটা খুব সুন্দরই হবে। সবেমাত্র চোখ দুটো বুজাতে যাব এমন সময় সামনে দেখি কেউ একজন দাঁড়িয়ে। ভয়ে আমার সারা শরীর শিউরে উঠল।

চলছে ..........
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৩১৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৪/০১/২০২২

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • বেশ রোমহর্ষক
  • অনেক সুন্দর
  • শরীফ আহমেদ ০৫/০১/২০২২
    অনেক সুন্দর উপস্থাপনা
  • ফয়জুল মহী ০৪/০১/২০২২
    Next
  • একনিষ্ঠ অনুগত ০৪/০১/২০২২
    পুতুল! এটা কি হল। কে রাখলো ঐ পুতুল, কতক্ষণ ধরে বাজছিল, নায়ক কেন আগে শুনতে পেল না সে শব্দ। রহস্যে যে প্রগাঢ়তা এসেছিল তা এক নিমেশে নষ্ট হয়ে গেল। পুতুলের ব্যাপারটা আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে হবে।
  • পড়তে থাকি।
 
Quantcast