পোড়ো বাড়ির রহস্য - পর্ব - ২
পর্ব - ২
....... উপরের তলায় গেলাম। উপরে তিনটি ঘর।
যখন সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছি তখন মনে হচ্ছিল আমার সাথে কেউ যেন উপরে আসছে। কিন্তু পরে বুঝলাম ওটা আমারই পদ শব্দ। আসলে আমি বিশ্বাস করি ভয় শব্দটির সঙ্গে মন শব্দটির একটা সম্পর্ক আছে। যেমন ধরো, যখন তুমি রাতের বেলা একা একা কোথাও যাবে তখন তোমার হঠাৎই মনে হবে তোমার পেছনে কেউ আসছে। আসলে ওটা তোমারই পায়ের পদধ্বনি ইকো হচ্ছে।রাতের বেলায় শব্দ দ্রুত ছড়িয়ে যাই এবং আবার আমাদের কানে ফিরে আসে। তখন তোমার পিছনে কেউ থাক বা না থাক তোমার একটা মনের মধ্যে ভয় কাজ করবে। তারপর ভয়'তে যখন তুমি পেছনে তাকাবে তখন তোমার মনে হবে তোমার সামনে বোধ হয় কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। ফলে তোমার ভয় আরও বেড়ে যাবে। সেজন্য যখন ভয় লাগবে তখন পেছন ফিরে না দেখে দ্রুত পায়ে সে স্থান ত্যাগ করবে।
যাই হোক, অবশেষে উপরে গেলাম। বাইরের দিকে টর্চ মারতেই দেখলাম, কি একটা যেন পুকুরের ধার দিয়ে দৌড়ে গেল। বুঝতে পারলাম না। হঠাৎ বুকটা কেঁপে উঠলেও তাড়াতাড়ি করে নীচে নেমে আসলাম। দৌড়ে পুকুরের ধারে গেলাম। হাতে একটা শুকনো কাঠ নিলাম। হাজার হোক, যদি কোনো মানুষ থাকে অন্তত নিজেকে বাঁচাতে পারবো। তারপর চারদিকে টর্চ জ্বালিয়ে দেখলাম কেউ কোথাও নেই। মনে মনে ভাবতে লাগলাম তাহলে কি ছিল এখানে ?
যখন এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছি তখন হঠাৎ বুঝতে পারলাম আমার পাশে কেউ দাঁড়িয়ে। খড় খড় শব্দ হচ্ছে। এক মুহুর্তের মধ্যে ভাবলাম কি করা উচিত। হাতে শুকনো কাঠ'টাকে আরও শক্ত করে ধরলাম। তারপর দ্রুত ঘুরে, পিছনে সরে দাঁড়িয়ে দেখলাম, কোনো মানুষ নয়। একটা খেঁকশেয়াল । আমি ঘুরে দাঁড়াতেই এক ছুটে পালালো।
একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে আবার ধীরে ধীরে পোড়ো বাড়ি'টার দিকে গেলাম। বাড়ি'টায় ঢুকতে যাব এমন সময় দেখলাম বাড়িটার উপরে বড়ো বড়ো করে লেখা 'সরকার ভবন, সাল ১৯৭৪ (ইং)' । বুঝলাম এই বাড়িটা মাত্র ৪৭ বছর আগের।
তাহলে কি এমন ঘটেছিল যার জন্য সবাই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিল ? এই পরিবারের কতজন সদস্য ছিল ? আচ্ছা, সবাই কি আত্মহত্যা করেছিল ? এসবের মূল কারণ কি ?
যত ভাবছি ততই যেন ভাবনাগুলো আরও আমাকে আকৃষ্ট করছে। বারবার এটাকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হচ্ছি।
কিছুক্ষণ পর অনেক ভেবেচিন্তে মনে হল, এই রহস্য ভেদ করতে পারি বা না পারি মনের প্রশ্নগুলোকে দমাতে আমাকে কিছু একটা করতেই হবে। সেজন্য আবার উপরে যেতে গিয়ে হঠাৎই লক্ষ করলাম। কয়েকটি পায়ের ছাপ। না এগুলো আমার পায়ের ছাপ নয়। আমার পায়ের ছাপ হলে স্পষ্ট হত কিন্তু এগুলোর উপরে অল্প ধূলো জমেছে। হয়ত আর কিছুদিন থাকলে বোঝা যেত না।
যাই হোক, হতে পারে হয়ত আমার মতো কেউ কারোর কাছে বাজি রেখে এসেছিল। হতে পারে তারই পায়ের ছাপ। নিঃসন্দেহে এড়িয়ে যাওয়া না গেলেও আপতত এটা মনে না রাখলেও চলবে।
উপরে গিয়ে দেখি তিনটে দরজা একটাও তালা মারা নেই। দরজা বন্ধ আছে। আস্তে ঠেলা দিয়ে প্রথমে দক্ষিণ দিকের ঘরে ঢুকলাম। এ ঘরে তেমন কিছু দেখতে পেলাম না। একটা বিছানা তাতে ধূলোর স্তর পড়ে বিছানা তার সৌন্দর্য হারিয়েছে। কোনার দিকে একটা আলমারি রাখা আছে। তারপর মাঝের ঘরে ঢুকলাম। একই সবকিছু। নতুন কিছু চোখে পড়ল না। তারপর উত্তর দিকের ঘরে ঢুকে দেখি এই ঘরে দু'টো চেয়ার রাখা আছে। দেওয়ালে একটা ১৯৭৪ সালের ছেঁড়া অস্পষ্ট ক্যালেন্ডার। একটা টেবিল কোনার দিকে যার উপরে রাখা আছে একটা হ্যারিকেন। হ্যারিকেনের কাচটা বড্ড কালো। এগিয়ে দিয়ে কাচে হাত দিয়ে দেখলাম যথেষ্ট ঠান্ডা। সবেমাত্র ঘুরতে যাব এমন নজরে আসলো একটা জিনিস যা দেখে আমার সারা শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গেল। ঠিক সেই মুহুর্তে বাইরে একটা বাচ্চার ভয়ানক কান্না। আমার শরীরে রক্তের বদলে যেন জল বইতে লাগলো।
চলছে ............
....... উপরের তলায় গেলাম। উপরে তিনটি ঘর।
যখন সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছি তখন মনে হচ্ছিল আমার সাথে কেউ যেন উপরে আসছে। কিন্তু পরে বুঝলাম ওটা আমারই পদ শব্দ। আসলে আমি বিশ্বাস করি ভয় শব্দটির সঙ্গে মন শব্দটির একটা সম্পর্ক আছে। যেমন ধরো, যখন তুমি রাতের বেলা একা একা কোথাও যাবে তখন তোমার হঠাৎই মনে হবে তোমার পেছনে কেউ আসছে। আসলে ওটা তোমারই পায়ের পদধ্বনি ইকো হচ্ছে।রাতের বেলায় শব্দ দ্রুত ছড়িয়ে যাই এবং আবার আমাদের কানে ফিরে আসে। তখন তোমার পিছনে কেউ থাক বা না থাক তোমার একটা মনের মধ্যে ভয় কাজ করবে। তারপর ভয়'তে যখন তুমি পেছনে তাকাবে তখন তোমার মনে হবে তোমার সামনে বোধ হয় কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। ফলে তোমার ভয় আরও বেড়ে যাবে। সেজন্য যখন ভয় লাগবে তখন পেছন ফিরে না দেখে দ্রুত পায়ে সে স্থান ত্যাগ করবে।
যাই হোক, অবশেষে উপরে গেলাম। বাইরের দিকে টর্চ মারতেই দেখলাম, কি একটা যেন পুকুরের ধার দিয়ে দৌড়ে গেল। বুঝতে পারলাম না। হঠাৎ বুকটা কেঁপে উঠলেও তাড়াতাড়ি করে নীচে নেমে আসলাম। দৌড়ে পুকুরের ধারে গেলাম। হাতে একটা শুকনো কাঠ নিলাম। হাজার হোক, যদি কোনো মানুষ থাকে অন্তত নিজেকে বাঁচাতে পারবো। তারপর চারদিকে টর্চ জ্বালিয়ে দেখলাম কেউ কোথাও নেই। মনে মনে ভাবতে লাগলাম তাহলে কি ছিল এখানে ?
যখন এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছি তখন হঠাৎ বুঝতে পারলাম আমার পাশে কেউ দাঁড়িয়ে। খড় খড় শব্দ হচ্ছে। এক মুহুর্তের মধ্যে ভাবলাম কি করা উচিত। হাতে শুকনো কাঠ'টাকে আরও শক্ত করে ধরলাম। তারপর দ্রুত ঘুরে, পিছনে সরে দাঁড়িয়ে দেখলাম, কোনো মানুষ নয়। একটা খেঁকশেয়াল । আমি ঘুরে দাঁড়াতেই এক ছুটে পালালো।
একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে আবার ধীরে ধীরে পোড়ো বাড়ি'টার দিকে গেলাম। বাড়ি'টায় ঢুকতে যাব এমন সময় দেখলাম বাড়িটার উপরে বড়ো বড়ো করে লেখা 'সরকার ভবন, সাল ১৯৭৪ (ইং)' । বুঝলাম এই বাড়িটা মাত্র ৪৭ বছর আগের।
তাহলে কি এমন ঘটেছিল যার জন্য সবাই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিল ? এই পরিবারের কতজন সদস্য ছিল ? আচ্ছা, সবাই কি আত্মহত্যা করেছিল ? এসবের মূল কারণ কি ?
যত ভাবছি ততই যেন ভাবনাগুলো আরও আমাকে আকৃষ্ট করছে। বারবার এটাকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হচ্ছি।
কিছুক্ষণ পর অনেক ভেবেচিন্তে মনে হল, এই রহস্য ভেদ করতে পারি বা না পারি মনের প্রশ্নগুলোকে দমাতে আমাকে কিছু একটা করতেই হবে। সেজন্য আবার উপরে যেতে গিয়ে হঠাৎই লক্ষ করলাম। কয়েকটি পায়ের ছাপ। না এগুলো আমার পায়ের ছাপ নয়। আমার পায়ের ছাপ হলে স্পষ্ট হত কিন্তু এগুলোর উপরে অল্প ধূলো জমেছে। হয়ত আর কিছুদিন থাকলে বোঝা যেত না।
যাই হোক, হতে পারে হয়ত আমার মতো কেউ কারোর কাছে বাজি রেখে এসেছিল। হতে পারে তারই পায়ের ছাপ। নিঃসন্দেহে এড়িয়ে যাওয়া না গেলেও আপতত এটা মনে না রাখলেও চলবে।
উপরে গিয়ে দেখি তিনটে দরজা একটাও তালা মারা নেই। দরজা বন্ধ আছে। আস্তে ঠেলা দিয়ে প্রথমে দক্ষিণ দিকের ঘরে ঢুকলাম। এ ঘরে তেমন কিছু দেখতে পেলাম না। একটা বিছানা তাতে ধূলোর স্তর পড়ে বিছানা তার সৌন্দর্য হারিয়েছে। কোনার দিকে একটা আলমারি রাখা আছে। তারপর মাঝের ঘরে ঢুকলাম। একই সবকিছু। নতুন কিছু চোখে পড়ল না। তারপর উত্তর দিকের ঘরে ঢুকে দেখি এই ঘরে দু'টো চেয়ার রাখা আছে। দেওয়ালে একটা ১৯৭৪ সালের ছেঁড়া অস্পষ্ট ক্যালেন্ডার। একটা টেবিল কোনার দিকে যার উপরে রাখা আছে একটা হ্যারিকেন। হ্যারিকেনের কাচটা বড্ড কালো। এগিয়ে দিয়ে কাচে হাত দিয়ে দেখলাম যথেষ্ট ঠান্ডা। সবেমাত্র ঘুরতে যাব এমন নজরে আসলো একটা জিনিস যা দেখে আমার সারা শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গেল। ঠিক সেই মুহুর্তে বাইরে একটা বাচ্চার ভয়ানক কান্না। আমার শরীরে রক্তের বদলে যেন জল বইতে লাগলো।
চলছে ............
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
একনিষ্ঠ অনুগত ০৪/০১/২০২২রহস্য গভীর হচ্ছে, দেখা যাক কি হয়।
-
মোঃজাকিরুল চৌধুরী ০৪/০১/২০২২চমৎকার লিখেছেন কবি