www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

রংধনুর আট রং

ভেবেছিলাম তোকে নিয়ে কিছু লিখবনা।তবে এখন আর না লিখে পারলাম না।হ্যা আজ এই দিনে, এই মুহূর্তে,তোকে নিয়ে লিখতে বসেছি।জানিস তোকে নিয়ে যখনই লিখতে বসি,হাজারো থিম মাথার মধ্যে কাজ করে।কেমন জানি এক অদ্ভুত মায়াজাল আমাকে আবদ্ধ করে দেয়।লাজুকতার স্বর্ন শিখরে পৌছে যাই আমি।আচ্ছা কি নিয়ে লিখব তোকে?আমিত ভেবেই পাইনা।তোর রুপ-সৌন্দর্য,তোর হাসি,তোর মিষ্টি মিষ্টি কথা,অপূর্ব অভিমান,তোর হাটার ভঙ্গি,কথা বলার স্টাইল,তোর মায়াবি টানাটানা চোখ,ভীতু হরিণীর মত দৃষ্টি,গালের ভাজে লুকিয়ে থাকা টোল, তোর সুউচ্চ নাক,ঘন কালো চূল,কপালের লাল টিপ,হাতের নোখ,পায়ের আলতা,আর কানের দুল………।কোনটা নিয়ে লিখব আমি?? আমিত রিতিমত ভ্যাবাস্যাকা খেয়ে যাই।মনে হয় হাজার বছর তোকে নিয়ে লিখলেও তা নেহায়াৎ কম হয়ে যাবে।
আচ্ছা তোর চোখ দুটু এত মায়াবি কেনরে?যাদু আছে নাকি ওতে??তুই যখন বোরকা পড়িস,তোর চোখ দুটু দূর হতে জ্বল-জ্বল করে।আহ কি মিষ্টি চোখ দুটু…।মনে হয় হৃদয়টা ছিরে যাবে।অবশ্য মাঝে-মধ্যে ইচ্ছা করেই,তোর চোখে হারিয়ে যেতে মন চায়।জানিস তুই যখন ঐ মিষ্টি চোখে,ডেব-ডেব করে আমার দিকে তাকাস,বিশ্বাস কর,আমার হার্ট বিট বেড়ে যায়।ঘনঘন শ্বাস নিতে শুরু করি,শরিরে ঘাম ছুটে যায়।কখনো কখনোতো নিজেকেই ভুলে যাই।
হুম একদিন তকে শাড়ি পড়া অবস্থায় দেখেছিলাম। ১৭ বছরের ছিপছিপে ,লম্বা,উজ্জল,শ্যামলা দুরন্ত এক কিশোরি।যার প্রতিটা রন্দ্রে-রন্দ্রে রহস্যে ভরা।সেদিন তোকে দেখার লোভ সামলাতে পারিনি।লাজুক চোখে তোকে দেখছি,এ যেন মানুষ না,মনে হয় সদ্য স্বর্গ থেকে নেমে আসা কোন অপ্সরী।তোর রুপ-লাবন্যে যুবক থেকে বৃদ্ধ সবাই হাঁ হয়ে গিয়েছিল।হাইলে হাল ছেড়েছিল,জাইলে তার জাল।কবি তার,কবিতার ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিল।বাক রুদ্ধ হয়েছিল বসন্তের কোকিল।এক মুহূর্তের জন্য স্তব্দ হয়ে গেয়েছিল পুরু ধরনী।এ যেন স্বর্গীয় এক মুহূর্ত।এতটা নিরব,এতটা নিস্তব্দ প্রকৃতি,সবই যেন তর রুপে মাতাল।তবে,আমার কিন্তু তোকে দেখে হিংসা হচ্ছিল।শোন হুটহাট করে শাড়ী পড়ে,এভাবে আর বের হবিনা বুজলি?যাতে করে আমি ছাড়া আর কারো নজর না লাগে।
তোর পূর্ণিমার চাঁদের মত গগন বিদারী হাসিটা,খুব মিস করি।হাসিতে যেন রত্ন ঝরে।তোর রুপার মত দু-পাটি সাদা দাতে, আলোর ঝল্কানি,প্রকৃতিকে অবাক করে দেয়।জানিস তোর হাসির ঝংকার শুনে,পাখিরা গান গাইতে শুরু করে,ময়ুর তার পাখানা মেলে মনের আনন্দে নাচতে শুরু করে,বইতে থাকে দক্ষিনা ফাগুন হাওয়া।এ যেন কোন স্বর্গ রাজ্য।
আচ্ছা চলনা কোন এক দিন কাক ড়াকা দুপুরে,দুজন সাইকেল নিয়ে,গ্রামের রাস্তায় পুরু দুপুর জুড়ে সবুজ মাঠ-ঘাট ,প্রান্তর চষে বেড়াই।আর যখন কান্ত হয়ে যাব,সবুজ ঘাসের ওপর দুজন বসে গল্প করব।তুই আমার কাধে মাথা রাখবি, আর আমি তোর চুলে বিলি কেটে দিব।তা দেখে,প্রকৃতি তার লজ্জায় ফেটে পড়বে।অচমকা দমকা বাতাস গাছের সবুজ পাতার সাথে মিলে একাকার হয়ে অদ্ভুত রিমঝিম,আমীয় সুরের ঝংকার সৃষ্টি করবে।আর তারি ফাকে তোর বদন খানির ওপর আছড়ে পড়া গুধোলির আলো-ছায়ার খেলা অবলোকোন করব।এক মুহূর্তের জন্য হারিয়ে যাব তোর মাঝে।আহ,কি বহু রুপী তুই।।
তোর রাঙ্গা অভিমানী রাগি মুখটা,অনেকটা আলিফ লায়লার মালিকা হামিরার মত লাগে।যেন তার ভয়ে পুরু পৃথিবী চুপসে যায়।বন্ধ হয়ে যায় সাগরের বুকে উপচে পড়া ঢেউ এর গর্জন।অন্ধকার নেমে আসে পুরু গগন জুড়ে।
আচ্ছা,তুই কি দস্যু রাণীর মত হা...রা...রে বলে,আমার সব কিছু লুটে নিবি??আমাকে শাসন করার অধিকার নিবি??ভাগ বসাবি আমার সপ্নে??তবে সেটা আমি ভালোই উপভোগ করব।
শোন পরের বার যখনই বৃষ্টি হবে,তুই নীল শাড়ী পড়ে,আচলটা কোমরে বেধে নিয়ে খালি পায়ে বৃষ্টিতে ভিজবি,আমিও তোর সাথে ভিজব……।তোর কলমের মত হাত-খানা ধরে, নদীর কুলে বসব আর বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে গল্প করব।আর কদম ফুলটা না হয় আগামি বছর তোর খোপায় গেথে দিব।এই বৃষ্টি,এই আকাশ-বাতাস,মেঘমাল্লা,আমাদের প্রেমের অমর সাক্ষী হয়ে থাকবে।এই বহমান নদীর কলকাকলীর শব্দের সাথে উচ্চারিত হবে দুই যুবক-যুবতির নিপুণ প্রেম গাথা।
আচ্ছা শোননা, এখন থেকে যখনই আইস্ক্রীম খাবি,ঠুটে খূব কড়া করে প্রিয় গোলাপী লিপিষ্টিক মেখে তারপর খাবি।আমি হুট-করে অচমকা তোর হাতে থাকা,লিপিষ্টিক মাখানো আইস্ক্রিমটা কেড়ে নিয়ে,দিব এক দৌড়।তারপর হাপিয়ে হাপিয়ে পরম তৃপ্তি সহকারে আইস্ক্রীমটা আসাদ্বন করব।
জানিস আমারনা আজকাল খুব করে পাখি হতে ইচ্ছা করে।আমি হব চড়ুই পাখি,আর তুই হবি শালিক।সারাদিন এই জমি থেকে ঐ জমি,পুরু শস্য ক্ষ্যাত ঘুরে বেড়াব।ছুটে বেড়াব এক দিগন্ত থেকে অন্য দিগন্তে,কখনো তারাদের দেশে,কখনোবা মেঘেদের দেশে।একেবারে এই মহা বিশ্বের শেষ সীমা পর্যন্ত।মনের আনন্দে লাফাব,নাচব,কিচির মিচির করে গাইব আর সন্ধ্যা হলে,তোকে নিয়ে নিড়ে ফিরব।আর এভাবেই হটাৎ করে একদিন আমাদের ঘর আলোকিত করে আসবে একটা বেবি।জানিস তার নাম কি হবে?তার নাম হবে টুইঙ্কেল।তুই হবি আম্মু আর আমি গর্বিত বাবা।
শোন ভালবেসে অন্য সবার মত আমিও তোকে,হরেক নাম ধরে ডাকব।এই ধর মায়াবতি,ইরাবতি,সুভাষীণি,সুকেসীনি,সুহাসিনী,অপ্সরি,অনন্যা,
অনামিকা,সুস্নিগ্ধা,আয়তনয়না,অসুজ্জমস্প্রর্শা,প্রিয়ংবদা আরো কত কি???
তবে হ্যা বিয়ের পর কিন্তু তোকে ডাইনি,পেত্নি আর বল্টুর আম্মু বলেই ডাকব।আর সারাক্ষন তকে রাগাব,জ্বালাব…তোর রাগি মুখটা দেখার জন্য।
জানি তুই আমাকে ভালোবাসিস।তুই আমাকেই কেন ভালবাসিস?এটা ভাবতে ভাবতেই আমিও তোর প্রেমে পড়ে গেছি।আর তোর প্রেমে পড়ার এটাই মুল কারন।যদিও নিজেকে সবসময় স্রোতের বিপরীতে ভাবতাম ।কিন্তু দিন শেষে আমিও রক্তে-মাংসে গড়া প্রাকৃতিক মানুষ। তাইতো তোর অবাধ্য,দুরুন্ত,পাগলাটে ভালোবাসার,ত্রীব্য প্রবল হাওয়া ,আমার পাল ছিড়ে ,স্রোতের দিকেই আমাকে ঠেলে দিল।আর তখনই সবচাইতে বড় ভুলটাই করে বসলাম,যেটা তুই অনেক আগেই শুরু করেছিস।
আচ্ছা পারবিকি,কোন একদিন হঠাৎ করেই আমার রাস্তা আগলিয়ে,শার্টের কলারটা শক্ত করে চেপে ধরে,রাণী ক্লিওপ্রেট্টার মত ,খুব করে বকে দিতে?পারবিকি জোর গলায় বলতে,আমাকে এত তুই তুই করে বলেন কেন??আজ হতে তুমি করে বলবা কেমন।তখন আমিও পরম আনন্দের সহিত তোমাকে রংধনুর ৮ নাম্বার রংটা দেখাব।
সমাপ্ত
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯৯৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৭/০৬/২০২১

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • Toufiqur Rahman shojib ০৮/০৬/২০২১
    এককথায় সুন্দর উপস্থাপনা।এগিয়ে যাও বহুদূর।অনেক অনেক শুভকামনা।
 
Quantcast