মাকে মনে পড়ে
'যাও আর দেখা হবেনা'
জীবদ্দশায় এটিই ছিল আমার সাথে মায়ের শেষ কথা।
তবে মায়ের সাথে একদিন পর আমার আরো একবার দেখা হয়েছে। তখন তাঁর আত্মা আর ইহজগতে নেই। মাঝে মধ্যে এখনও মাকে স্বপ্নে দেখি। কথা বলি। ঘুমভাঙলে খুঁজে পাইনা!
২০১০ সালের ১৩ ডিসেম্বর সোমবার। দীর্ঘদিনের নানান জটিল উপসর্গ জনিত কারণে শয্যাশায়ী মা। তবে বেশী কাহিলও নয়।সকালবেলা নেইলকাটার দিয়ে হাতের নখ কেটে দিয়েছি। অল্প স্বল্প কথা বলেছি। একসময় বললাম, মা ছুটি শেষ, বিকালে কর্মস্থলের উদ্দেশে চলে যাব। আমি বুঝতে পারলাম, এ কথা শুনেই শিশু বাচ্চার মত মন খারাপ হয়ে গেল। দুধে আলতা গায়ের বরণ ও মুখশ্রী ছিল মায়ের।ফর্সা আকাশে যেন হঠাৎ কালো মেঘের ছায়া।
তখন আমার কর্মস্থল ছিল কাপ্তাই। ১৫ দিনের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বল্লভপুরে।দুপুরের খাবার শেষে প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড় গুছিয়ে মায়ের কাছে বসলাম।আমি চলে যাব তাই পরিবারের সবাই ঘরে জড়ো হতে লাগল।বড় মামা খন্দকার জামশেদ চেয়ারে বসে আছেন, অন্যান্যরা দাঁড়িয়ে।আমি মায়ের বিছানায় খাটে বসলাম। আমার দু হাতে মায়ের দুটো হাত ধরলাম। মায়ের চাঁদপানা মুখের দিকে অপলক চেয়ে থাকলাম।বুকে বিদায়ের বেদনা, ছলছল চোঁখে মাকে বললাম, নিয়মিত ঔষধ খেও,ভাল থেকো,আবার ছুটি নিয়ে আসবো। মা আমার সব কথার অর্থই বুঝতেন।এত তাড়াতাড়ি ছুটিও হবেনা আর তাড়াতাড়ি আসবোওনা।এটা তিনি ভাল করেই জানতেন। আমার দুটো হাত শক্ত করে ধরে দোয়া করলেন।হঠাৎ প্রবল অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নিলেন,হাতও ছেড়ে দিলেন।বললেন,"যাও আর দেখা হবেনা"। আমি কিছুক্ষণ মায়ের পাশে বসে থাকলাম।দুচোখ জলে ঝাপসা হয়ে আসলো। মায়ের কষ্টের কারণ বুঝতে আমারও কোনো অসুবিধা হয়নি।ছেলে মানুষের কর্মই ধর্ম। তাই আর আর সবার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে মহানগর গোধূলি ট্রেনে রাত সাড়ে দশটায় চট্টগ্রাম পৌছালাম। টাইগারপাস বড় বোনের বাসায় রাত্রিযাপন করে সকাল ১২টার মধ্যে কাপ্তাই পৌঁছে যাব। কিন্তু সেবার ছুটিশেষে যথাসময়ে কাপ্তাই যাওয়া হয়নি আমার।বোন-ভগ্নিপতি ও ভাগিনাদের সাথে রাতের খাবার গ্রহণ ও গল্প শেষে ঘুমিয়ে পড়লাম।রাত ১টা ১৫ মিনিটে মোবাইলে ইনকামিং টোন বেজে উঠল। স্ক্রিনসেভারে বাড়ির নম্বর দেখে আতংকিত বোধ করলাম। ঘুমঘুম চোঁখে এক অজানা আশংকা নিয়ে ফোন রিসিভ করলাম। ওপাশ থেকে জানালো কিছুক্ষণ আগে মা পরপারে চলে গেছেন। বাকীটা রাত নির্ঘুমে কাটলো। চট্টগ্রাম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিজ গ্রামের উদ্দেশে ভোর ৭টায় মহানগর প্রভাতী ট্রেনে উঠলাম।
'ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না-ইলাইহি রাজেউন'।
জীবদ্দশায় এটিই ছিল আমার সাথে মায়ের শেষ কথা।
তবে মায়ের সাথে একদিন পর আমার আরো একবার দেখা হয়েছে। তখন তাঁর আত্মা আর ইহজগতে নেই। মাঝে মধ্যে এখনও মাকে স্বপ্নে দেখি। কথা বলি। ঘুমভাঙলে খুঁজে পাইনা!
২০১০ সালের ১৩ ডিসেম্বর সোমবার। দীর্ঘদিনের নানান জটিল উপসর্গ জনিত কারণে শয্যাশায়ী মা। তবে বেশী কাহিলও নয়।সকালবেলা নেইলকাটার দিয়ে হাতের নখ কেটে দিয়েছি। অল্প স্বল্প কথা বলেছি। একসময় বললাম, মা ছুটি শেষ, বিকালে কর্মস্থলের উদ্দেশে চলে যাব। আমি বুঝতে পারলাম, এ কথা শুনেই শিশু বাচ্চার মত মন খারাপ হয়ে গেল। দুধে আলতা গায়ের বরণ ও মুখশ্রী ছিল মায়ের।ফর্সা আকাশে যেন হঠাৎ কালো মেঘের ছায়া।
তখন আমার কর্মস্থল ছিল কাপ্তাই। ১৫ দিনের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বল্লভপুরে।দুপুরের খাবার শেষে প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড় গুছিয়ে মায়ের কাছে বসলাম।আমি চলে যাব তাই পরিবারের সবাই ঘরে জড়ো হতে লাগল।বড় মামা খন্দকার জামশেদ চেয়ারে বসে আছেন, অন্যান্যরা দাঁড়িয়ে।আমি মায়ের বিছানায় খাটে বসলাম। আমার দু হাতে মায়ের দুটো হাত ধরলাম। মায়ের চাঁদপানা মুখের দিকে অপলক চেয়ে থাকলাম।বুকে বিদায়ের বেদনা, ছলছল চোঁখে মাকে বললাম, নিয়মিত ঔষধ খেও,ভাল থেকো,আবার ছুটি নিয়ে আসবো। মা আমার সব কথার অর্থই বুঝতেন।এত তাড়াতাড়ি ছুটিও হবেনা আর তাড়াতাড়ি আসবোওনা।এটা তিনি ভাল করেই জানতেন। আমার দুটো হাত শক্ত করে ধরে দোয়া করলেন।হঠাৎ প্রবল অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নিলেন,হাতও ছেড়ে দিলেন।বললেন,"যাও আর দেখা হবেনা"। আমি কিছুক্ষণ মায়ের পাশে বসে থাকলাম।দুচোখ জলে ঝাপসা হয়ে আসলো। মায়ের কষ্টের কারণ বুঝতে আমারও কোনো অসুবিধা হয়নি।ছেলে মানুষের কর্মই ধর্ম। তাই আর আর সবার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে মহানগর গোধূলি ট্রেনে রাত সাড়ে দশটায় চট্টগ্রাম পৌছালাম। টাইগারপাস বড় বোনের বাসায় রাত্রিযাপন করে সকাল ১২টার মধ্যে কাপ্তাই পৌঁছে যাব। কিন্তু সেবার ছুটিশেষে যথাসময়ে কাপ্তাই যাওয়া হয়নি আমার।বোন-ভগ্নিপতি ও ভাগিনাদের সাথে রাতের খাবার গ্রহণ ও গল্প শেষে ঘুমিয়ে পড়লাম।রাত ১টা ১৫ মিনিটে মোবাইলে ইনকামিং টোন বেজে উঠল। স্ক্রিনসেভারে বাড়ির নম্বর দেখে আতংকিত বোধ করলাম। ঘুমঘুম চোঁখে এক অজানা আশংকা নিয়ে ফোন রিসিভ করলাম। ওপাশ থেকে জানালো কিছুক্ষণ আগে মা পরপারে চলে গেছেন। বাকীটা রাত নির্ঘুমে কাটলো। চট্টগ্রাম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিজ গ্রামের উদ্দেশে ভোর ৭টায় মহানগর প্রভাতী ট্রেনে উঠলাম।
'ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না-ইলাইহি রাজেউন'।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।