চোরের ঘুম
1ম পর্ব
ঢেঁকি নাকি স্বর্গে গেলেও ধান বানে। যার যেটা স্বভাব সেতো সেটা করবেই। ওই যে একটা কথা আছেনা -কয়লা ধুইলে ময়লা যায়না। ধান বানতে গিয়ে শিবের গীত গাইছি দেখে হয়ত বলতে পারেন, আরে মিয়া ওই সব গৌরচন্দ্রিকা মার্কা খাজুইরা আলাপ বাদ আসল কথা কন। সময়ের ম্যালা দাম। আরে ভাই ক্ষেপছেন কেন? আমি আসল কথা বলতেইতো এসেছি। কথা হচ্ছে যে কেরামতকেতো অনেকেই চিনেন? চিনি মানি ঐ হালায়তো আস্ত একটা চোর। হুম, যাক সে কথা। তার সম্পর্কে পাঠকদের একটু ধারণা দেয়া দরকার। কেরামত একজন ব্যর্থ চোর। সেকি কথা, চোর আবার ব্যর্থ হয় কেমনে! জীবনে ব্যর্থ প্রেমিকের নাম শোনছি কিন্তু ব্যর্থ চোরের কথা এই প্রথম শোনলাম। যাগগে রাখুন ওসব, আসলে সে চোর হলেও ধরা খেয়ে ডলা খাওয়া চোর। তার প্রথম চুরির ইতিহাসটা অনেক মজার। একবার প্রচন্ড শীত পড়েছে। শীতে কেরামতের অবস্থা যায় যায় আরকি। তো হয়েছে কি মানে চুরি বিদ্যা থাকতে শীত নিয়া টেনশনটা তার ধাঁতে সইলনা। সরাসরি চেয়ারম্যান সাহেবের বেডরুমে ঢুকে পড়ল সে। ভাগ্যিস ঘরে কেউ ছিলনা। সে বীর দর্পে নিজের মনে করে একখানা কম্বল নিয়ে রওনা হল। উঠান পার হতেই বিপত্তি, কোন বেরসিক যেনো চোর চোর বলে চেঁচিয়ে উঠল। কেরামতের তো মেরামত হবার যোগাড়! সর্বশক্তি দিয়ে রুদ্ধশ্বাসে দৌড় দিল সে। কিন্তু ততক্ষণে জনাবিশেক লোক তার পিছু নিয়েছে। তাদের এক কথা – খাইছি তোরে! কিছুক্ষণ দৌড়িয়ে কেরামত হাঁপিয়ে উঠল। একটু ফাঁকা জায়গায় একজন তাকে ধরে ফেল্ল। পাইছি তোরে, এইবার যাবি কই হালারপো। কেরামত দেখল লোকটা শীতে কাঁপছে। ভাই আমারে মারেন কাটেন সমস্যা নাই কিন্তু আপনেতো শীতে কাঁপতাছেন। নেন কম্বল গায় দেন হেইয়ার পর আমার বিচার যা হয় করেন। বা হাত দিয়ে কম্বল এগিয়ে দেয় সে। লোকটি ভাবল – কম্বল গায় দিয়েই নেয়া যাক, পরে ওর একটা বিহিত করতাছি। কত্ত বড় সাহস, চেয়ারম্যানের বাসায় চুরি! কেরামতকে ছেড়ে কম্বলটি গায় দিতে গেল সে। চোরের হাত ছাড়লে যা হয়, তাই হল। কেরামত চম্পট দিয়েছে। কম্বল গায় দিকে লোকটি বেকুবের মত সেদিকে তাকিয়ে থাকল।
হরিপদ অনেকদিন পর তার স্ত্রীর সাথে একটু সুখ দুখের কথা বলছে। হরিপদের ই বা কি দোষ, অভাবের সংসার দুঃখে দুঃখে কলিজা কালা হয়ে গেছে। এ সংসারে সবখানেই দুঃখ। কথায় দুঃখ, চলায় দুঃখ,বলায় দুঃখ। তাই মেজাজটা সবসময় ই চড়া থাকে হরিপদের। তারই বহিঃ প্রকাশ হিসেবে রাত বিরাতে স্ত্রীর পিঠে দু চার ঘা লাঠির বাড়ি পরত! আজ অবশ্য একটা বিশেষ কারনে হরিপদের মনটা ভালো। চুপি চুপি বলি, দিন কাল যা পড়েছে, আবার কখন কে শোনে ফেলে! আপনারা আবার কারো কাছে বলবেননা যেনো। ব্যপার হচ্ছে আজ হাল চাষ করতে গিয়ে হরিপদ মাটির তলায় একটা স্বর্ণের বাটি পেয়েছে। খুশিতেতো আরেকটু হলেই সে টাইফয়েড বাধিঁয়ে দিত। এখন এ সোনার বাটি কোথায় রাখবে সে নিয়েই স্ত্রীর সাথে কথা হচ্ছিল। ঠিক এমন সময়ই কেরামত চুরির মতলব নিয়ে হরিপদের ঘরের চালের উপর উঠে বসেছে। চালের একপাশের টিন ও ইতিমধ্যে ফাঁকা করে ফেলছে। মড়াৎ েকরে একটা শব্দ হল। হরিপদ মনে হয় কিছুটা আঁচ করতে পারল। এর মধ্যেই হই হই রই রই করে একটা ডাকাত দল হরিপদের বাড়ি
হামলা করল। হরিপদ স্বর্ণের বাটি ও অন্যান্য মালামাল পুটলিতে বেঁধে স্ত্রীকে বল্লে – আমি পাশের বাগানে আছি, ডাকাত এসে আমার কথা জিজ্ঞেস করলে চালের উপরে দেখিয়ে দিবি। হরিপদ চলে যেতে ডাকাত দল ঘরে ঢোকে তার স্ত্রীকে বল্ল – তোর কর্তা কোথায়? স্ত্রী কাঁদো কাঁদো গলায় চালের উপরে আঙুল তোলে নির্দেশ করল। আর যায় কোথায়, ডাকাত দল টেনে হিচড়ে চুরি করতে আসা কেরামতকে নামিয়ে আনল। কি শালা চালের উপর কি করছিস? ভালোয় ভালোয় স্বর্ণের বাটিটা দিয়ে দে। আমি জানিনা। তবে,,,রে চোরের উপর বাটপারি, কেলিয়ে তোর পিঠের ছাল উঠিয়ে ফেলব আজ। শুরু হল রাম প্যাঁদানি। সে কি প্যাঁদানি, কেরামতের অবস্থা যায় যায়। সে চোখে সর্ষের তেল দেখতে লাগল। ততক্ষণে গ্রামবাসী চলে এসেছে। অবস্থা বেগতিক দেখে ডাকাতদল পালিয়ে গেল। গ্রামবাসী ডাকাত মারতে এসে চোর রূপি আঁধা মরা কেরামতকে পেল। শুরু হল আরেক
দফা ধোলাই। এর মাঝে হরিপদেরর স্ত্রী এসে বল্ল -ওকে আর মেরো নাগো, ডাকাতদের কাছে ওকে কর্তা বানিয়েইতো আজ আমরা বেঁচে গেলাম।
ঢেঁকি নাকি স্বর্গে গেলেও ধান বানে। যার যেটা স্বভাব সেতো সেটা করবেই। ওই যে একটা কথা আছেনা -কয়লা ধুইলে ময়লা যায়না। ধান বানতে গিয়ে শিবের গীত গাইছি দেখে হয়ত বলতে পারেন, আরে মিয়া ওই সব গৌরচন্দ্রিকা মার্কা খাজুইরা আলাপ বাদ আসল কথা কন। সময়ের ম্যালা দাম। আরে ভাই ক্ষেপছেন কেন? আমি আসল কথা বলতেইতো এসেছি। কথা হচ্ছে যে কেরামতকেতো অনেকেই চিনেন? চিনি মানি ঐ হালায়তো আস্ত একটা চোর। হুম, যাক সে কথা। তার সম্পর্কে পাঠকদের একটু ধারণা দেয়া দরকার। কেরামত একজন ব্যর্থ চোর। সেকি কথা, চোর আবার ব্যর্থ হয় কেমনে! জীবনে ব্যর্থ প্রেমিকের নাম শোনছি কিন্তু ব্যর্থ চোরের কথা এই প্রথম শোনলাম। যাগগে রাখুন ওসব, আসলে সে চোর হলেও ধরা খেয়ে ডলা খাওয়া চোর। তার প্রথম চুরির ইতিহাসটা অনেক মজার। একবার প্রচন্ড শীত পড়েছে। শীতে কেরামতের অবস্থা যায় যায় আরকি। তো হয়েছে কি মানে চুরি বিদ্যা থাকতে শীত নিয়া টেনশনটা তার ধাঁতে সইলনা। সরাসরি চেয়ারম্যান সাহেবের বেডরুমে ঢুকে পড়ল সে। ভাগ্যিস ঘরে কেউ ছিলনা। সে বীর দর্পে নিজের মনে করে একখানা কম্বল নিয়ে রওনা হল। উঠান পার হতেই বিপত্তি, কোন বেরসিক যেনো চোর চোর বলে চেঁচিয়ে উঠল। কেরামতের তো মেরামত হবার যোগাড়! সর্বশক্তি দিয়ে রুদ্ধশ্বাসে দৌড় দিল সে। কিন্তু ততক্ষণে জনাবিশেক লোক তার পিছু নিয়েছে। তাদের এক কথা – খাইছি তোরে! কিছুক্ষণ দৌড়িয়ে কেরামত হাঁপিয়ে উঠল। একটু ফাঁকা জায়গায় একজন তাকে ধরে ফেল্ল। পাইছি তোরে, এইবার যাবি কই হালারপো। কেরামত দেখল লোকটা শীতে কাঁপছে। ভাই আমারে মারেন কাটেন সমস্যা নাই কিন্তু আপনেতো শীতে কাঁপতাছেন। নেন কম্বল গায় দেন হেইয়ার পর আমার বিচার যা হয় করেন। বা হাত দিয়ে কম্বল এগিয়ে দেয় সে। লোকটি ভাবল – কম্বল গায় দিয়েই নেয়া যাক, পরে ওর একটা বিহিত করতাছি। কত্ত বড় সাহস, চেয়ারম্যানের বাসায় চুরি! কেরামতকে ছেড়ে কম্বলটি গায় দিতে গেল সে। চোরের হাত ছাড়লে যা হয়, তাই হল। কেরামত চম্পট দিয়েছে। কম্বল গায় দিকে লোকটি বেকুবের মত সেদিকে তাকিয়ে থাকল।
হরিপদ অনেকদিন পর তার স্ত্রীর সাথে একটু সুখ দুখের কথা বলছে। হরিপদের ই বা কি দোষ, অভাবের সংসার দুঃখে দুঃখে কলিজা কালা হয়ে গেছে। এ সংসারে সবখানেই দুঃখ। কথায় দুঃখ, চলায় দুঃখ,বলায় দুঃখ। তাই মেজাজটা সবসময় ই চড়া থাকে হরিপদের। তারই বহিঃ প্রকাশ হিসেবে রাত বিরাতে স্ত্রীর পিঠে দু চার ঘা লাঠির বাড়ি পরত! আজ অবশ্য একটা বিশেষ কারনে হরিপদের মনটা ভালো। চুপি চুপি বলি, দিন কাল যা পড়েছে, আবার কখন কে শোনে ফেলে! আপনারা আবার কারো কাছে বলবেননা যেনো। ব্যপার হচ্ছে আজ হাল চাষ করতে গিয়ে হরিপদ মাটির তলায় একটা স্বর্ণের বাটি পেয়েছে। খুশিতেতো আরেকটু হলেই সে টাইফয়েড বাধিঁয়ে দিত। এখন এ সোনার বাটি কোথায় রাখবে সে নিয়েই স্ত্রীর সাথে কথা হচ্ছিল। ঠিক এমন সময়ই কেরামত চুরির মতলব নিয়ে হরিপদের ঘরের চালের উপর উঠে বসেছে। চালের একপাশের টিন ও ইতিমধ্যে ফাঁকা করে ফেলছে। মড়াৎ েকরে একটা শব্দ হল। হরিপদ মনে হয় কিছুটা আঁচ করতে পারল। এর মধ্যেই হই হই রই রই করে একটা ডাকাত দল হরিপদের বাড়ি
হামলা করল। হরিপদ স্বর্ণের বাটি ও অন্যান্য মালামাল পুটলিতে বেঁধে স্ত্রীকে বল্লে – আমি পাশের বাগানে আছি, ডাকাত এসে আমার কথা জিজ্ঞেস করলে চালের উপরে দেখিয়ে দিবি। হরিপদ চলে যেতে ডাকাত দল ঘরে ঢোকে তার স্ত্রীকে বল্ল – তোর কর্তা কোথায়? স্ত্রী কাঁদো কাঁদো গলায় চালের উপরে আঙুল তোলে নির্দেশ করল। আর যায় কোথায়, ডাকাত দল টেনে হিচড়ে চুরি করতে আসা কেরামতকে নামিয়ে আনল। কি শালা চালের উপর কি করছিস? ভালোয় ভালোয় স্বর্ণের বাটিটা দিয়ে দে। আমি জানিনা। তবে,,,রে চোরের উপর বাটপারি, কেলিয়ে তোর পিঠের ছাল উঠিয়ে ফেলব আজ। শুরু হল রাম প্যাঁদানি। সে কি প্যাঁদানি, কেরামতের অবস্থা যায় যায়। সে চোখে সর্ষের তেল দেখতে লাগল। ততক্ষণে গ্রামবাসী চলে এসেছে। অবস্থা বেগতিক দেখে ডাকাতদল পালিয়ে গেল। গ্রামবাসী ডাকাত মারতে এসে চোর রূপি আঁধা মরা কেরামতকে পেল। শুরু হল আরেক
দফা ধোলাই। এর মাঝে হরিপদেরর স্ত্রী এসে বল্ল -ওকে আর মেরো নাগো, ডাকাতদের কাছে ওকে কর্তা বানিয়েইতো আজ আমরা বেঁচে গেলাম।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সামিন শুভ ০৮/০৮/২০১৮Sera
-
T s J ১২/০৬/২০১৫ভালো লেগেছে
-
তরীকুল ইসলাম সৈকত ২৮/০৫/২০১৫মৌলিক কিনা জানিনা। তবে ভালো লাগলো।
-
মিজান রহমান ২৭/০৫/২০১৫চরম ।
ভাল লাগল ।