www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

নিষ্ঠুর অয়ন

কমলা সোহাগীর চুলের বেনুনী খুলে দিতে বলল।সোহাগী কিছু বুঝে ওঠার আগেই পাশের বাড়ির ছবিরন চুলের বেনুনী খুলে দিয়ে বলল,"ভাল করে দ্যাখ,মায়েডার কোন খুত নেই - লক্ষীমন্ত মায়ে আমাগের।" সোহাগী মতিনের দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইল।পাথরের মত চোখ দুটো যেন সবুজ অরন্যের লতাপাতায় আটকে গেছে।

সোহাগী কলাগাছের মত তরতর করে খানিকটা বেড়ে উঠেছে।কচি লাউডগার মত লকলকে শরীরকে আর বুঝি মাঁচায় আটকে রাখা যাবে না।পাড়ার ডানপিটে ছেলেদের শকুনি চোখ যেন খুবলে খেতে চায়। সোহাগীর সহজ সরল চোখের দৃষ্টি বইয়ের মলাটেই আটকে আছে। আট ক্লাস আর কি এমন? একটি বছর বাদেই ব্যাঙের শরীর কেটে স্বপ্নের প্রথম ধাপ শুরু করতে চাই সোহাগী। এখনও চোখে ভাসে মায়ের করুণ মুখ। কত কষ্টই না পেয়েছিল জরিনা। সোহাগীকে জন্ম দেবার পাঁচ বছর পরই পরবর্তী সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে বিলম্বিত প্রসব যন্ত্রণায় অকালে চলে যেতে হলো তাকে। মাকে ধরে রাখতে না পারলেও বাংলার অনেক মাকে সোহাগী বাঁচাতে চায়।গলায় ঝুলাতে চায় স্টেথোস্কোপ।

মতিন মেয়ের চোখের দিকে তাকিয়েই দৃষ্টি অন্য দিকে সরিয়ে নিল।আকাশে তখন মেঘ জমতে শুরু করেছে।আশান্বিত সূর্যটা ঢাকা পড়েছে সাদা -কালো মেঘে। অন্তরালে চলছে নিদারুণ সমাজ বাস্তবতার লড়াই।অমিমাংসিত জীবনকে মিমাংসিত ঠিকানায় ঠেলে দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেবার ব্যর্থ চেষ্টা। মতিন বারান্দার এক কোণে বসে পড়লো।সোহাগী পিতার পাশে এসে বসল।আস্তে আস্তে মতিনের কনিষ্ঠা আঙ্গুল ধরে মৃদুস্বরে বলে উঠল,চল না একটু তোমার সাইকেলে চড়বো,কতদিন তোমার সাথে হাটে যায়নি।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮০৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৫/০৩/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • শেষটুকু চমৎকার ছিল।
  • Abheek ০৫/০৩/২০১৮
    খুব সুন্দর...
 
Quantcast