কাণ্ডারি
ঘোলাটে দৃষ্টির সাথে কপালের বলিরেখা গুলির কোনও এক কাকতালীয় যোগাযোগে একসাথে চেয়ে থাকে বিস্তীর্ণ প্রান্তরের দিকে।
রুপাই আর সাঁজু কি এখনো দুদিকের দুটি গ্রামের দিকে তাকিয়ে থাকে অঝোর ধারে?
ভাবে এই কথাটাই ছেঁড়া নকশি কাঁথা বোনা মনে পলাশ আর কেয়া।
গ্রামের ধার দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট্ট পাগলা ঝোড়াটার পাড়ে বসে।
দূরে ধূসর পানসি বেয়ে চলেছে গাঙের মাঝি।
ছলাত ছলাত কত চিন্তা মনে আসছে আর যাচ্ছে, কিন্তু ওদের দুজনের কোনও আওয়াজই এই পড়ন্ত বিকেলকে মুখরিত করতে পারছে না।
শুধু একটা হাল্কা হাওয়া যেন ওদের কথা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছে পেছনের বনটাতে।
আজ যদি কেউ ওদের মনের ভাষা পড়তে পারত, তাহলে বুঝতে পারত যে পলাশ ও কেয়া কেউই একটা সম্পূর্ণ গল্প লিখতে চাইছে না, বরং কেউই তাদের নিজেরও একটা সম্পূর্ণ গল্পও বলতে চাইছে না।
ওরা দুজনেই যেন খাপছাড়া ভাবে দুজনের নানা গল্পের বিভিন্ন লাইন এলোমেলো ভাবে লিখে তাকে জোড়ার চেষ্টা করছে মনের অতলান্তে।
সেই মিলের সাথে নিজেদের মেলাতে চেষ্টা করছে হয়ত।
কিন্তু অতলান্ত সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে বার বার সেই যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়াটাও ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে।
না, না, আমি কোনও গল্পও বলতে বসিনি, আজকে আমাদের সবার অবস্থা টা কেমন সেইটা একটু বোঝার চেষ্টা করছি মাত্র।
সময় প্রচুর পাগলামি করার আমার হাতে।
পলাশ আর কেয়া আমরা যে কেউই হতে পারি।
রুপাই আর সাঁজু আমাদের না পাওয়া সেই অধরা স্বপ্নও হতে পারে, এবং সেই নকশি কাঁথার মাঠ আমাদের জীবনে চলার ক্ষেত্রও হতে পারে।
সেই দূর গাঙে ধূসর পানসি বয়ে নিয়ে যাওয়া মাঝি আমাদের সমাজের সেইসব কর্মযোগী পুরুষও হতে পারে, যাদের চলার ছলাত শব্দে আমদের চিন্তাগুলো, গল্পগুলো আমদের হাতের রেখা থেকে একছুটে বেরিয়ে মিশতে চায় তাদের তরঙ্গের সাথে।
হ্যাঁ, বেরিয়ে গিয়ে মিশতে চায়, তাদের পথ অনুসরণ করতে চায়, কারণ আজ আমাদের বেশির ভাগ মানুষেরই নিজের চলার পথ নেই। আমরা অভ্যস্ত অনুকরণে।
অন্তত আমি তো তাইই।
পলাশ আর কেয়ার না বলা কথাগুলো যেন আমাদের জীবন খুঁজে পাওয়ার অব্যাক্ত চেষ্টা।
পড়ন্ত বিকেলটা যেন আমাদের এক সন্ধিক্ষণ - পাওয়া না পাওয়ার বা নেওয়া না নেওয়ার, যাওয়া না যাওয়ার।
একটু ছন্নছাড়া, কি পাবে, নেবে, দেবে, কোথায় যাবে, কি রাখবে, কি বিলাবে; কোনও কিছুরই যেন কোনও নিশ্চয়তা নেই।
এই যেমন আমি, মাঝে মাঝেই ভাবি আমার একটা নতুন ধারার লেখা হবে, একটা নতুন সৃষ্টি হবে।
লিখিও।
কিন্তু পরেই দেখি আমার কথা কেউ না কেউ কখনও না কখনও বলে গেছে তার মত করে, আমার আগেই, আমার অজ্ঞাতে।
ব্যাস, আমার মৌলিকত্বের হরিনাম সংকীর্তন হয়ে গেল।
তাহলে নতুন কথা কে বলবে, কোথায় পাব তাকে?
একেবারে নতুন কথা শোনার জন্যে কতদিনের অপেক্ষা লাগবে কে জানে?
এর উত্তর কে বলতে পারে…
একজন এমন কেউ যে আকাশের গায়ে শোয়, চাঁদের বালিশে মাথা রেখে।
যার শ্বাস-প্রশ্বাসে গাছ-গাছালি দোল খায়, হাওয়া বয়, ঝড় ওঠে।
নদী উঠে আসে তার কাছে জলপান করাতে, শস্য রস টেনে নিয়ে সূর্য তাকে দেয় পুষ্টি।
গায়ের গন্ধে যার মহুয়ার মাদকতা, আর বজ্রের গর্জন যার কণ্ঠস্বরে।
যার এপাশ ওপাশ ফেরায় পর্বত রাশি তৈরি হয়।
দুঃখে যার চোখের জল মাটিতে ফসল ফলায়।
যার বিদ্যুতের ঝিলিকে সমস্ত পাপ জ্বলে যাবে।
যে হেঁটে গেলে অতিক্রান্ত হবে রাতের অন্ধকার দিনের আলয়।
যার আনান্দে ফেটে যাবে লক্ষ আগ্নেয়গিরি আর তার লাভায় তৈরি হবে নতুন পৃথিবী।
যার প্রশান্তিতে আমরা হব অজর, অক্ষয়।
আমায় এমন একটা পথভোলা খুঁজে দেবে?
রুপাই আর সাঁজু কি এখনো দুদিকের দুটি গ্রামের দিকে তাকিয়ে থাকে অঝোর ধারে?
ভাবে এই কথাটাই ছেঁড়া নকশি কাঁথা বোনা মনে পলাশ আর কেয়া।
গ্রামের ধার দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট্ট পাগলা ঝোড়াটার পাড়ে বসে।
দূরে ধূসর পানসি বেয়ে চলেছে গাঙের মাঝি।
ছলাত ছলাত কত চিন্তা মনে আসছে আর যাচ্ছে, কিন্তু ওদের দুজনের কোনও আওয়াজই এই পড়ন্ত বিকেলকে মুখরিত করতে পারছে না।
শুধু একটা হাল্কা হাওয়া যেন ওদের কথা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছে পেছনের বনটাতে।
আজ যদি কেউ ওদের মনের ভাষা পড়তে পারত, তাহলে বুঝতে পারত যে পলাশ ও কেয়া কেউই একটা সম্পূর্ণ গল্প লিখতে চাইছে না, বরং কেউই তাদের নিজেরও একটা সম্পূর্ণ গল্পও বলতে চাইছে না।
ওরা দুজনেই যেন খাপছাড়া ভাবে দুজনের নানা গল্পের বিভিন্ন লাইন এলোমেলো ভাবে লিখে তাকে জোড়ার চেষ্টা করছে মনের অতলান্তে।
সেই মিলের সাথে নিজেদের মেলাতে চেষ্টা করছে হয়ত।
কিন্তু অতলান্ত সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে বার বার সেই যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়াটাও ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে।
না, না, আমি কোনও গল্পও বলতে বসিনি, আজকে আমাদের সবার অবস্থা টা কেমন সেইটা একটু বোঝার চেষ্টা করছি মাত্র।
সময় প্রচুর পাগলামি করার আমার হাতে।
পলাশ আর কেয়া আমরা যে কেউই হতে পারি।
রুপাই আর সাঁজু আমাদের না পাওয়া সেই অধরা স্বপ্নও হতে পারে, এবং সেই নকশি কাঁথার মাঠ আমাদের জীবনে চলার ক্ষেত্রও হতে পারে।
সেই দূর গাঙে ধূসর পানসি বয়ে নিয়ে যাওয়া মাঝি আমাদের সমাজের সেইসব কর্মযোগী পুরুষও হতে পারে, যাদের চলার ছলাত শব্দে আমদের চিন্তাগুলো, গল্পগুলো আমদের হাতের রেখা থেকে একছুটে বেরিয়ে মিশতে চায় তাদের তরঙ্গের সাথে।
হ্যাঁ, বেরিয়ে গিয়ে মিশতে চায়, তাদের পথ অনুসরণ করতে চায়, কারণ আজ আমাদের বেশির ভাগ মানুষেরই নিজের চলার পথ নেই। আমরা অভ্যস্ত অনুকরণে।
অন্তত আমি তো তাইই।
পলাশ আর কেয়ার না বলা কথাগুলো যেন আমাদের জীবন খুঁজে পাওয়ার অব্যাক্ত চেষ্টা।
পড়ন্ত বিকেলটা যেন আমাদের এক সন্ধিক্ষণ - পাওয়া না পাওয়ার বা নেওয়া না নেওয়ার, যাওয়া না যাওয়ার।
একটু ছন্নছাড়া, কি পাবে, নেবে, দেবে, কোথায় যাবে, কি রাখবে, কি বিলাবে; কোনও কিছুরই যেন কোনও নিশ্চয়তা নেই।
এই যেমন আমি, মাঝে মাঝেই ভাবি আমার একটা নতুন ধারার লেখা হবে, একটা নতুন সৃষ্টি হবে।
লিখিও।
কিন্তু পরেই দেখি আমার কথা কেউ না কেউ কখনও না কখনও বলে গেছে তার মত করে, আমার আগেই, আমার অজ্ঞাতে।
ব্যাস, আমার মৌলিকত্বের হরিনাম সংকীর্তন হয়ে গেল।
তাহলে নতুন কথা কে বলবে, কোথায় পাব তাকে?
একেবারে নতুন কথা শোনার জন্যে কতদিনের অপেক্ষা লাগবে কে জানে?
এর উত্তর কে বলতে পারে…
একজন এমন কেউ যে আকাশের গায়ে শোয়, চাঁদের বালিশে মাথা রেখে।
যার শ্বাস-প্রশ্বাসে গাছ-গাছালি দোল খায়, হাওয়া বয়, ঝড় ওঠে।
নদী উঠে আসে তার কাছে জলপান করাতে, শস্য রস টেনে নিয়ে সূর্য তাকে দেয় পুষ্টি।
গায়ের গন্ধে যার মহুয়ার মাদকতা, আর বজ্রের গর্জন যার কণ্ঠস্বরে।
যার এপাশ ওপাশ ফেরায় পর্বত রাশি তৈরি হয়।
দুঃখে যার চোখের জল মাটিতে ফসল ফলায়।
যার বিদ্যুতের ঝিলিকে সমস্ত পাপ জ্বলে যাবে।
যে হেঁটে গেলে অতিক্রান্ত হবে রাতের অন্ধকার দিনের আলয়।
যার আনান্দে ফেটে যাবে লক্ষ আগ্নেয়গিরি আর তার লাভায় তৈরি হবে নতুন পৃথিবী।
যার প্রশান্তিতে আমরা হব অজর, অক্ষয়।
আমায় এমন একটা পথভোলা খুঁজে দেবে?
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আব্দুর রহমান আনসারী ২০/০৯/২০২৩সত্যই সুন্দর
-
নাসরীন আক্তার রুবি ২৮/০৫/২০২০ভালো লাগল লেখাটি।
-
সিন্ধু সেঁচে মুক্তা-আব্দুল কাদির মিয়া ১৭/০৫/২০২০অসাধারন
-
ফয়জুল মহী ১০/০৫/২০২০নিপুণ বস্তুনিষ্ঠ প্রকাশ..