আমার ঠাম্মি
আমার ঠাম্মি
**************
ও ঠাম্মি....
আজ কেন জানিনা বুক টার মধ্যে কেমন উথালপাতাল হচ্ছে
গলার কাছে এক টা না পাওয়া
কেমন আটকে আছে।
তুমি এখন লাঠি টায় ভর করে হাঁটো?
তোমার সেই হরলিক্সের শিশির কাঁচের চশমা টা পরে সেলাই কর?
আমাদের গরু টা বেঁচে আছে গো ঠাম্মি?
বিনুদের বাড়ির ছাগল টাকে তুমি এখন পারো
তাড়া করতে লাউ ডগা টা খেতে আসলে?
এখনো ভাতের হাঁড়িতে সুতো দিয়ে লাউ ডগা বেঁধে ভাত বসাও?
কি স্বাদ ছিল গো ..
গরম ভাতে তেল লঙকা দিয়ে মেখে খেতে।
জানো ঠাম্মি আমি না এখন রোজ
মাছ মাংস মিষটি খাই।
কিন্ত কচু শাক..কচু বাটা
কলমি শাকের ঝোল
খেতে পাইনা গো।
পয়সা দিয়েও মেলে না যে।
জানো ঠাম্মি.. প্রথম। প্রথম খুব কাঁদতাম
বাবার ওপর রাগ হতো
কেন আমায় কলকাতায় পাঠিয়ে দিল
হরিহর এর পিসির সাথে।
আমি তো তোমাদের কোনো ক্ষতি করিনি
এখন বুঝি গো.. বাবার কোন দোষ ছিলনা
আমার থেকে সাত হাজার টাকা কত বেশি দামী।
তুমি খুব কেঁদেছিলে আমার মনে আছে।
মা তো ভয়ে সিঁটিয়ে ছিল
আচ্ছা ঠাম্মি মা যখন চলে গেলো
আমায় একবার ডাকতে পারতে তো
আমি না হয় দূর থেকেই দেখতাম।
খুব মনে পড়ে গো মা র মুখ টা।।
কী যে বকি না আমি
দেখেছ তো সে অভ্যেস টা আজও যায়নি
বকবক বকবক করা।
না গো ঠাম্মি সন্ধ্যের পর এত বকিনা।
সময় কই বল
গা ধোও রে.. চকচকে শাড়ি পরো রে
ফুলদানি আর নিজের খোঁপা ফুলে সাজাও রে
কাচের গেলাস সাজাও রে.. কত কাজ।
ও ঠামমি.. মনে পড়ে তোমার বুকের মধ্যে মুখ গুঁজে থাকতাম লজ্জা পেয়ে
যখন তুমি বলতে" ওই যে শোনা যায়
রাজপুত্তুরের ঘোড়ার খুরের টগবগ শব্দ
আসছে আমার দিদিভাইকে নিতে"...
আজ তোমার দিদিভাই কে রোজ রাতে রানী সাজতে হয় গো ঠাম্মি
নির্দিষ্ট রাজকুমারের জন্যে না হলেও
বাঁচার তাগিদে গো.. পেট ভরে খেতে পারার তাগিদে।
খুব ইচ্ছে করে গো তোমার হাতের সেলাই করা কাঁথার গন্ধ নিতে
দামী কম্বল টা কেমন গলা টিপে ধরে মাঝরাতে।
আমি অনেক টাকা জমিয়েছি গো
যেতে মন চায় একবার গ্রামে
কিন্ত গত মাসে বাবা টাকা নিতে এসে বলে গেলো
আমি গ্রামে গেলে বাবার সম্মান থাকবেনা।
আচ্ছা ঠাম্মি আমি এত পাপিষ্ঠা আর আমার টাকা পুণ্য কেন গো?
বাবা কে বলেছি.. তোমায় এক টা চশমা বানিয়ে দিতে
তোমার বেস্পতিবারের পাঁচালি পড়তে সুবিধে হবে।
আর তোমার গোপালের জন্যে এক টা মশারী কিনে নিও
যা মশা বাপ রে বাপ।।
তুমি ভালো থেকো
তোমমায় খুব দেখতে ইচ্ছে হয়
জানি এ জনমে আর হবেনা দেখা।
তুমি সগগে গিয়ে
আমায় তাড়াতাড়ি নিয়ে যেও তো
অনেক গল্প বাকি আছে যে।।
আর শোনো কাশির ওষুধ টা খেয়ো তিন বেলাই।
আর যত কষট ই হোক বাবা কে
রান্না করে দিও।
পুকুরের সত্ত টা বাবা পেয়ে গেছে আমায় বিক্রি করার টাকা দিয়ে
মহাজনকে শোধ করে।
এখন তো রোজ দু বেলা মাছ খেতে পারছে।।
এটাই অনেক.. আমার কি আছে বল তো?
তোমার রাজেন্দ্রনন্দিনী ঠামম্মি এখন
রোজ রাতে কত হাত বদল হয় গো।
একদিকে ভালো ই হয়েছে
তোমার সাথে দেখা না হয়ে
কি বলতাম তোমায়
আমি যে সত্যি ভালো নেই গো ঠামম্মি
সত্যি ভালো নেই।।।।।
** সীমা*********
**************
ও ঠাম্মি....
আজ কেন জানিনা বুক টার মধ্যে কেমন উথালপাতাল হচ্ছে
গলার কাছে এক টা না পাওয়া
কেমন আটকে আছে।
তুমি এখন লাঠি টায় ভর করে হাঁটো?
তোমার সেই হরলিক্সের শিশির কাঁচের চশমা টা পরে সেলাই কর?
আমাদের গরু টা বেঁচে আছে গো ঠাম্মি?
বিনুদের বাড়ির ছাগল টাকে তুমি এখন পারো
তাড়া করতে লাউ ডগা টা খেতে আসলে?
এখনো ভাতের হাঁড়িতে সুতো দিয়ে লাউ ডগা বেঁধে ভাত বসাও?
কি স্বাদ ছিল গো ..
গরম ভাতে তেল লঙকা দিয়ে মেখে খেতে।
জানো ঠাম্মি আমি না এখন রোজ
মাছ মাংস মিষটি খাই।
কিন্ত কচু শাক..কচু বাটা
কলমি শাকের ঝোল
খেতে পাইনা গো।
পয়সা দিয়েও মেলে না যে।
জানো ঠাম্মি.. প্রথম। প্রথম খুব কাঁদতাম
বাবার ওপর রাগ হতো
কেন আমায় কলকাতায় পাঠিয়ে দিল
হরিহর এর পিসির সাথে।
আমি তো তোমাদের কোনো ক্ষতি করিনি
এখন বুঝি গো.. বাবার কোন দোষ ছিলনা
আমার থেকে সাত হাজার টাকা কত বেশি দামী।
তুমি খুব কেঁদেছিলে আমার মনে আছে।
মা তো ভয়ে সিঁটিয়ে ছিল
আচ্ছা ঠাম্মি মা যখন চলে গেলো
আমায় একবার ডাকতে পারতে তো
আমি না হয় দূর থেকেই দেখতাম।
খুব মনে পড়ে গো মা র মুখ টা।।
কী যে বকি না আমি
দেখেছ তো সে অভ্যেস টা আজও যায়নি
বকবক বকবক করা।
না গো ঠাম্মি সন্ধ্যের পর এত বকিনা।
সময় কই বল
গা ধোও রে.. চকচকে শাড়ি পরো রে
ফুলদানি আর নিজের খোঁপা ফুলে সাজাও রে
কাচের গেলাস সাজাও রে.. কত কাজ।
ও ঠামমি.. মনে পড়ে তোমার বুকের মধ্যে মুখ গুঁজে থাকতাম লজ্জা পেয়ে
যখন তুমি বলতে" ওই যে শোনা যায়
রাজপুত্তুরের ঘোড়ার খুরের টগবগ শব্দ
আসছে আমার দিদিভাইকে নিতে"...
আজ তোমার দিদিভাই কে রোজ রাতে রানী সাজতে হয় গো ঠাম্মি
নির্দিষ্ট রাজকুমারের জন্যে না হলেও
বাঁচার তাগিদে গো.. পেট ভরে খেতে পারার তাগিদে।
খুব ইচ্ছে করে গো তোমার হাতের সেলাই করা কাঁথার গন্ধ নিতে
দামী কম্বল টা কেমন গলা টিপে ধরে মাঝরাতে।
আমি অনেক টাকা জমিয়েছি গো
যেতে মন চায় একবার গ্রামে
কিন্ত গত মাসে বাবা টাকা নিতে এসে বলে গেলো
আমি গ্রামে গেলে বাবার সম্মান থাকবেনা।
আচ্ছা ঠাম্মি আমি এত পাপিষ্ঠা আর আমার টাকা পুণ্য কেন গো?
বাবা কে বলেছি.. তোমায় এক টা চশমা বানিয়ে দিতে
তোমার বেস্পতিবারের পাঁচালি পড়তে সুবিধে হবে।
আর তোমার গোপালের জন্যে এক টা মশারী কিনে নিও
যা মশা বাপ রে বাপ।।
তুমি ভালো থেকো
তোমমায় খুব দেখতে ইচ্ছে হয়
জানি এ জনমে আর হবেনা দেখা।
তুমি সগগে গিয়ে
আমায় তাড়াতাড়ি নিয়ে যেও তো
অনেক গল্প বাকি আছে যে।।
আর শোনো কাশির ওষুধ টা খেয়ো তিন বেলাই।
আর যত কষট ই হোক বাবা কে
রান্না করে দিও।
পুকুরের সত্ত টা বাবা পেয়ে গেছে আমায় বিক্রি করার টাকা দিয়ে
মহাজনকে শোধ করে।
এখন তো রোজ দু বেলা মাছ খেতে পারছে।।
এটাই অনেক.. আমার কি আছে বল তো?
তোমার রাজেন্দ্রনন্দিনী ঠামম্মি এখন
রোজ রাতে কত হাত বদল হয় গো।
একদিকে ভালো ই হয়েছে
তোমার সাথে দেখা না হয়ে
কি বলতাম তোমায়
আমি যে সত্যি ভালো নেই গো ঠামম্মি
সত্যি ভালো নেই।।।।।
** সীমা*********
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মনিরুজ্জামান জীবন ২৮/০১/২০১৬বিধান সময়ের অতি উত্কৃষ্ট লেখা।
-
বিদ্রোহী ফাহিম খান ২৭/০১/২০১৬ভালো লাগলো॥ শুভেচ্ছা॥
-
ধ্রুব রাসেল ২৭/০১/২০১৬ভাল লাগলো। তবে ঠাম্মি বানানের বহুরূপতা দেখিয়েছেন।
-
প্রদীপ চৌধুরী ২৭/০১/২০১৬খুবই ভালো লাগলো