বদ্ধভূমিতে আর কতদিন
একটি জাতির উন্নতি-অগ্রগতির প্রথম সোপান হলো জাতীয় ঐক্য। একটি ঐক্যবদ্ধ ক্ষুদ্র জাতিকেও অনৈক্য-হানাহানিতে লিপ্ত বৃহৎ জাতি সমীহ করে চলতে বাধ্য হয়। এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ আমাদের ইতিহাসেই রয়েছে। আমরা জাতি হিসেবে যখনই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি তখনই অত্যাচারী যালেম শাসকদের ভিত কাঁপিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন এবং ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ আজও বাঙালি জাতির ঐক্যের প্রতীক হয়ে আছে।
সেই দিনগুলোকে হৃদয়ে ধারণ করে আমরা সম্মুখপানে এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা লাভ করি। শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসে আমাদের ঐক্যবদ্ধ অতীতকে স্মরণ করে পুলকিত হই, আমাদের জড়-স্থবির দেহে প্রাণের সঞ্চার হয়। আমরা জেগে উঠি। কিন্তু আজ সেই ঐক্য কোথায়? নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে যে স্বাধীন দেশটি বিশ্ব দরবারে গৌরবের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল, আজ বিশ্ব দরবারে সেই দেশটির অবস্থান কোথায়? আবেগ নয়, আসুন যুক্তি দিয়ে নিরূপণ করি। আমরা স্বীকার করতে বাধ্য যে, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪২ বছর অন্তে এসে বিশ্ব দরবারে আমাদের যে স্থানটি অধিকার করা উচিত ছিল তা থেকে আমরা এখন যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছি। আরও ভয়াবহ ব্যাপার হলো দিন দিন আমাদের অগ্রগতি সাধন তো হচ্ছেই না, বরং অধঃপতন হচ্ছে। বিশ্ব যখন দুর্বার গতিতে সামনে এগিয়ে চলছে, আমরা তখন আটকে রয়েছি আমাদের অভ্যন্তরীণ হানাহানি-দ্বন্দ্ব-সংঘাতের জালে। সর্বোতভাবে আজ আমরা পক্ষাঘাতগ্রস্ত। যতো দলে-উপদলে, শাখা-উপশাখায় বিভক্ত হওয়া সম্ভব আমরা হয়েছি। আমাদের জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকার মতো কোনো প্লাটফর্ম নেই। নেই শক্তভাবে এই অনৈক্য-হানাহানিতে লিপ্ত জাতিটিকে একটি প্লাটফর্মে এনে ঐক্যবদ্ধ করার মতো কোনো দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতৃত্ব। বরং কঠিন বাস্তবতা হলো, রাজনীতির নামে আমাদের দেশে যে সংস্কৃতিটি চালু রয়েছে সেটাই আমাদের মধ্যে অনৈক্যের বীজ বপন করে চলেছে প্রতিনিয়ত। আমরা যতোই চেষ্টা করি ঐক্যবদ্ধ হবো, প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমাদের ব্যর্থ করে দেয়। রাজনৈতিক অঙ্গনের অনৈক্য, রাজনীতিবিদদের বংশপরানুক্রমিক শত্র“তা, অযাচিত সমালোচনা, প্রতিপক্ষ ঘায়েলের নির্লজ্জ-নগ্ন অপচেষ্টার ফল ভোগ করতে হয় দেশের কোটি কোটি আপামর জনতাকে। রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনেও অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এতদিন এই অনৈক্য ও হানাহানি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরের মধ্যে সংঘটিত হলেও বর্তমানে পরিদৃষ্ট হচ্ছে আরও ভয়াবহ চিত্র। সম্প্রতি দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারের কারণে নিজ দলের নেতাকর্মীকেই নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনা ঘটছে। আধিপত্য বিস্তারের নগ্ন নেশায় দেশব্যাপী যে আতঙ্কের জন্ম দেয়া হচ্ছে তার কুফলে জনগণ দুদণ্ড স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারছে না। অজানা ভয় তাড়া করে বেড়াচ্ছে সর্বব্যাপী। নিজেদের হাতে গড়ে তোলা মাতৃভূমিকে যেন আমরা নিজেরাই গলা টিপে মারছি। আমাদের বর্তমান অবস্থা যতটা হাস্যকর ও নিন্দনীয়, ততটাই করুণ।
আজ পত্রিকার পাতা খুললেই তাজা রক্তের গন্ধ পাওয়া যায়, হুদয়কুঠোরে বেজে ওঠে স্বজন হারানো মানুষদের অসহায় কান্নার প্রতিধ্বনি; জীবন প্রদীপ নির্বাপিত সন্তানের জন্য মায়ের আকাশ-বাতাস ভারী করা হাহাকার, বাবার জন্য সন্তানের নিস্ফল চিৎকার, স্বামী হারানো কোনো ভগিনীর দিশাহারা অপলক দৃষ্টি। এই দৃশ্য আমরা আর কত দেখবো? আমাদের আর কতকাল এই বদ্ধভূমির মধ্যে আটকে রাখা হবে? মুক্ত বাতাসে মুক্ত নিঃশ্বাস নেওয়ার স্বপ্ন কি চিরকাল স্বপ্নই থেকে যাবে?
সেই দিনগুলোকে হৃদয়ে ধারণ করে আমরা সম্মুখপানে এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা লাভ করি। শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসে আমাদের ঐক্যবদ্ধ অতীতকে স্মরণ করে পুলকিত হই, আমাদের জড়-স্থবির দেহে প্রাণের সঞ্চার হয়। আমরা জেগে উঠি। কিন্তু আজ সেই ঐক্য কোথায়? নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে যে স্বাধীন দেশটি বিশ্ব দরবারে গৌরবের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল, আজ বিশ্ব দরবারে সেই দেশটির অবস্থান কোথায়? আবেগ নয়, আসুন যুক্তি দিয়ে নিরূপণ করি। আমরা স্বীকার করতে বাধ্য যে, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪২ বছর অন্তে এসে বিশ্ব দরবারে আমাদের যে স্থানটি অধিকার করা উচিত ছিল তা থেকে আমরা এখন যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছি। আরও ভয়াবহ ব্যাপার হলো দিন দিন আমাদের অগ্রগতি সাধন তো হচ্ছেই না, বরং অধঃপতন হচ্ছে। বিশ্ব যখন দুর্বার গতিতে সামনে এগিয়ে চলছে, আমরা তখন আটকে রয়েছি আমাদের অভ্যন্তরীণ হানাহানি-দ্বন্দ্ব-সংঘাতের জালে। সর্বোতভাবে আজ আমরা পক্ষাঘাতগ্রস্ত। যতো দলে-উপদলে, শাখা-উপশাখায় বিভক্ত হওয়া সম্ভব আমরা হয়েছি। আমাদের জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকার মতো কোনো প্লাটফর্ম নেই। নেই শক্তভাবে এই অনৈক্য-হানাহানিতে লিপ্ত জাতিটিকে একটি প্লাটফর্মে এনে ঐক্যবদ্ধ করার মতো কোনো দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতৃত্ব। বরং কঠিন বাস্তবতা হলো, রাজনীতির নামে আমাদের দেশে যে সংস্কৃতিটি চালু রয়েছে সেটাই আমাদের মধ্যে অনৈক্যের বীজ বপন করে চলেছে প্রতিনিয়ত। আমরা যতোই চেষ্টা করি ঐক্যবদ্ধ হবো, প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমাদের ব্যর্থ করে দেয়। রাজনৈতিক অঙ্গনের অনৈক্য, রাজনীতিবিদদের বংশপরানুক্রমিক শত্র“তা, অযাচিত সমালোচনা, প্রতিপক্ষ ঘায়েলের নির্লজ্জ-নগ্ন অপচেষ্টার ফল ভোগ করতে হয় দেশের কোটি কোটি আপামর জনতাকে। রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনেও অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এতদিন এই অনৈক্য ও হানাহানি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরের মধ্যে সংঘটিত হলেও বর্তমানে পরিদৃষ্ট হচ্ছে আরও ভয়াবহ চিত্র। সম্প্রতি দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারের কারণে নিজ দলের নেতাকর্মীকেই নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনা ঘটছে। আধিপত্য বিস্তারের নগ্ন নেশায় দেশব্যাপী যে আতঙ্কের জন্ম দেয়া হচ্ছে তার কুফলে জনগণ দুদণ্ড স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারছে না। অজানা ভয় তাড়া করে বেড়াচ্ছে সর্বব্যাপী। নিজেদের হাতে গড়ে তোলা মাতৃভূমিকে যেন আমরা নিজেরাই গলা টিপে মারছি। আমাদের বর্তমান অবস্থা যতটা হাস্যকর ও নিন্দনীয়, ততটাই করুণ।
আজ পত্রিকার পাতা খুললেই তাজা রক্তের গন্ধ পাওয়া যায়, হুদয়কুঠোরে বেজে ওঠে স্বজন হারানো মানুষদের অসহায় কান্নার প্রতিধ্বনি; জীবন প্রদীপ নির্বাপিত সন্তানের জন্য মায়ের আকাশ-বাতাস ভারী করা হাহাকার, বাবার জন্য সন্তানের নিস্ফল চিৎকার, স্বামী হারানো কোনো ভগিনীর দিশাহারা অপলক দৃষ্টি। এই দৃশ্য আমরা আর কত দেখবো? আমাদের আর কতকাল এই বদ্ধভূমির মধ্যে আটকে রাখা হবে? মুক্ত বাতাসে মুক্ত নিঃশ্বাস নেওয়ার স্বপ্ন কি চিরকাল স্বপ্নই থেকে যাবে?
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শূন্য ১৫/০৯/২০১৪অসাধারন।
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ১৫/০৯/২০১৪তবে কি দরকার আর একটি ৫২ কিংবা ৭১? বাংলার জনতা সময় থাকতে সাবধান।
-
একনিষ্ঠ অনুগত ১০/০৯/২০১৪একাত্বতা পোষণ করছি।।
-
মঞ্জুর হোসেন মৃদুল ০৯/০৯/২০১৪চমৎকার লিখেছেন।