www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

অনুভূতি

- Shunno
গল্প - অনুভূতি
শূন্য হৃদয়


প্রতিদিন ঈমার সাথে চার পাঁচ ঘন্টা কথা না হলে যেন লিমনের দিনটাই ভাল যায় না। এতো কথা বলে মোবাইলে তবু যেন কথা ফুরায় না।
হঠাৎ একদিন মোবাইলে ব্যালেন্স না থাকলে লিমন ফোন করে না। কিন্তু ঈমা কথা না বলে থাকতে পারে না। নিজের ফোনে ব্যালেন্স না থাকলে, কখনো বাবার মোবাইল থেকে কখনো মায়ের মোবাইল থেকে ফোন দেয়।
অথচো দুইজনের দেখা হলে যেন নির্বাক হয়ে যায়। কোন কথায় বের হয়না মুখ থেকে। ঈমার নীল চোখের দিকে দৃষ্টি পরতেই হারিয়ে যায় লিমন। নিজের মাঝে আর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। কি পার্ক কি ছাঁদ। ওয়েস্ট্রাণ লাভ কালচার শুরু হয় দু'জনের মাঝে। ঈমাও লিমনের আমন্ত্রণ বাঁধা দিতে পারে না। লিমনের বাহুবন্ধনে যেন সর্গসুখ খুঁজে পায় সে। লিমনের প্রতিটা নিঃস্বাস আষ্টে পিষ্টে বেঁধে রাখে তাকে।
রাত ১২টার পর খুব একটা কথা হয়না তাদের। হঠাৎ এক মধ্য রাতে দুঃস্বপ্নে ঘুম ভেংগে যায় লিমনের। স্বপ্নটা ছিল ঈমাকে ঘিরেই। মোবাইলে দেখে ব্যালেন্স নেই। কিন্তু ঈমাকে ফোন করতেই হবে। ভাগ্নার মোবাইল থেকে ফোন করে। রিসিভ করে না ঈমা। লিমন ভাবে মধ্যরাতে অপরিচিত নাম্বার দেখে ভদ্র মেয়েরা কখনো রিসিভ করেনা এসব ভাবতে ভাবতে দ্বিতীয়বার ফোন করতেই ঈমা ঘুম কাতর কন্ঠে বলে হ্যালো-
লিমন চুপ করে থাকে। দেখাযাক ঈমা কি বলে!
ঈমা আবার বলে
: হ্যালো কে বলছেন?
লিমন তখনো চুপ। জোরে জোরে নিঃস্বাস ছাড়ে।
ঈমা: প্লিজ কথা বলুন, নয়তো ফোন রাখব কিন্তু
লিমন শিঁশ বাজায়
ঈমা: প্লিজ....
লিমন উনুচ্চরে হাসে
ঈমা এবার বিছানায় উঠে বসে বলে
: এই মধ্য রাতে ফাজলামী করার কারণ কী লিমন?
লিমন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে
: কী ভাবে বুঝলে আমি?
ঈমা: হি হি হি। তুমি যে নাম্বার থেকেই ফোন কর আমি বুঝতে পারব।
লিমন: কি ভাবে?
ঈমা: হুম তা তো বলা যাবে না!
আচ্ছা ঠিক আছে দেখা যাবে.....
এরপর লিমন যতবার যে নাম্বার থেকেই ফোন করুক না কেন ঈমা কিভাবে যেন বুঝতে পারে। অনেক ভাবে পরীক্ষা করে দেখেছে। আর লিমনের যখনই মন খারাপ থাকে কিংবা কোন বিপদে থাকে তা কিভাবে যেন ঈমা টের পায়। লিমন ফোন করার আগেই ঈমার এসএমএস চলে আসে, "আমার লিমনের মন খারাপ কেন?"
ঈমা লিমনকে ছেড়ে চলেগেছে আজ দু'বছর। আজ বিকালে হঠাৎ করেই ঈমার স্মৃতিগুলো বার বার কেন যেন খুব মনে পরছিল। খুব কষ্ট লাগছিল। খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছিল ঈমার সাথে। যে লিমনের দেখা একসপ্তাহ না হলে আঁধারে ডুবে যেত ঈমার পৃথিবী, সেই ঈমা লিমনকে ছেড়ে অন্যের প্রেমের তরিতে কেমন করে ভাসছে, কত সুখে আছে........... লিমনকে কী সত্যি ভুলতে পেরেছে...?
ফোন করতে যেয়ে মনে পরে ঈমার শেষ কথাগুলো-
"তুমি যদি আমার ভাল চাও, তবে আর কখনো আমার সাথে যোগাযোগ করনা, যদি সত্যি আমায় ভালবেসে থাক, তবে আমার পৃথিবীতে আর বাঁধা হয়ে দাঁড়িও না। আমাকে আমার মতো থাকতে দাও........... তোমার ছায়া তো দূরের কথা তোমার কন্ঠও আর শুনতে চাই না প্লিজ...........পারলে অন্য কাউকে খুঁজে নাও, তোমাকে আমার আর ভাল লাগছে না.....!!"
সমস্ত সংকোচ উপেক্ষা করে অফিসের টেলিফোন থেকে ঈমার মোবাইলে ফোন দেয় লিমন। ঈমা ফোন ধরেই বলে হ্যালো-
সেই মিষ্টি সূর, সেই চেনা মিষ্টি কন্ঠ। আজও যেন আগের মতোই আছে কিছুই পাল্টায় নি। লিমন কোন কথা বলতে পারে না। দু'চোখ দিয়ে অঝড়ে ঝরে পড়ছে টুপ টুপ করে জল। আজ হ্যালো বলার মতো শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছে। লিমন শিঁশ বাঁজায়, বড় বড় নিঃস্বাস ফেলে......কিন্তু কিছুতেই ঈমা চিনতে পারে না। শুধু বার বার বিরক্তি মূলক উক্তি করে যায় একজন সত্যিকারের অপরিচতের মতো.......!!

(গল্পটি শুধুই আমার কল্পনা। তবু কারো জীবনের সাথে মিলেগেলে ক্ষমা করবেন। ভাললাগলে লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার করতে পারেন। কপি পেষ্ট করা নিষধ এবং অবৈধ। ধন্যবাদন্তে শূন্য হৃদয়)
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮৯৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৫/০২/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast