চয়নিকার ঈদ
ভেবেছিলাম আজকে হয়তো কিছুটা ভিড় কম থাকবে নিউ মার্কেটে। তাই ঈদের মার্কেট করার জন্য আব্বুর সাথে আজকের দিনটাকে বেছে নিলাম। আব্বু একজন সরকারী চাকুরীজীবী। সারাক্ষণ দেখি উনি খুব ব্যস্ত থাকেন। যদিও এখন আপিস বন্ধ কিন্তু উনার ব্যস্ততার কোন কমতি নেই।
ভিড়ের মধ্যে আমার আব্বু একদমই আসতে চান না, আমারও ভালো লাগেনা। আগামীকাল ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাই বাবা ভাবলেন আজকে অন্যদিনের তুলনায় কিছুটা ভিড় কম হতে পারে। তাছাড়া এখনো গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। তাই আব্বু আমাকে নিয়ে এলেন নিউ মার্কেটে, ঈদের জন্য কিছু জামা কিনবো বলে।
মার্কেটে ঢুকেই মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো। কীসের কি!! ভিড়তো আগের মতোই। গত ২দিন মার্কেটে এসেছিলাম কিন্তু ভিড়ের কারণে চলে গিয়েছি। আজ আর চলে গেলে তো হবে না, আগামীকাল ঈদ হবার সম্ভাবনা বেশী। আমার জন্য এ পর্যন্ত কিছুই কেনা হয়নি। তাই অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও একপ্রকার জোর করেই ঈদের পোশাক কিনতে হল।
সন্ধ্যার পর টেলিভিশন দেখে বুঝতে পারলাম আগামীকাল ঈদ। আকাশে চাঁদ দেখার খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু মেঘ জমে থাকার কারণে দেখতে পারিনি। আম্মুকে বললাম হাতে মেহেদি লাগিয়ে দিতে। আম্মু খুব সুন্দর করে আমার হাতে মেহেদি লাগিয়ে দিলেন। শারারাত্র আব্বু-আম্মুর সাথে গল্প করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি তা টেরই পাইনি।
সকালবেলা আজে-বাজে স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙল। ঈদের খুশিতে রাতে মনে হয় ভালো ঘুমাতে পারিনি, চোখ দুটো যেন টলছে। তারাতারি বিছানা ছেড়ে উঠে ফ্রেশ হয়ে প্রতিবেশিদের ডাকতে লাগলাম। আম্মু আমাকে নতুন জামা পড়িয়ে দিয়েছেন। নতুন জামা পড়ে আমাদের ফ্ল্যাটে থাকা সকল বান্ধবীদের বাসায় গিয়ে তাদের সাথে গল্প করতে লাগলাম। গল্পের এক পর্যায়ে জানালা দিয়ে হঠাৎ চোখ পড়লো পাশের ফ্ল্যাটের ঐ চিকন গলির একেবারে মুখের দিকে। মনে হল আমার বয়সী কেউ একজন ওখানে বসে কাঁদছে।
আমি নিচে গিয়ে ওর সামনে দাঁড়ালাম। হাতে থাকা রুমাল দিয়ে ওর অশ্রু মুছতে মুছতে ওর নাম জানতে চাইলাম। ও কাঁদতে কাঁদতে বলল, চয়নিকা। আজকের এই খুশির দিনে তুমি কাঁদছো কেন বোন? এরকম পরিচিত একটা প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হল, কিন্তু করলাম না। বিভিন্ন বিষয়ে খানিক্ষন কথা বলার পর জানতে পারলাম ও বড় দুঃখিনী। গত দুমাস হল ওর বাবা রিকশা চালাতে গিয়ে রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছে। জন্মের পর কোনদিন ও ওর আম্মুকে দেখেছি কিনা তা জানা নেই বা জানা থাকলেও মনে নেই। ও কমলাপুর বস্তিতে ওর ফুফির সাথে থাকে। গতরাতে ফুফিকে ঈদের পোশাক কিনে দিতে বলায় ফুফি তা না পারার অপারগতা জানায়। তখন নিজেকে মানালেও এখন বড় কান্না পাচ্ছে। বাবা বেঁচে থাকলে অবশ্যই কোন না কোন জামা কিনে দিত। সারাক্ষন ছিঁড়ে একটা জামা পড়ে থাকতে আর ভাললাগেনা। তাই বাবার কথা মনে করে ও কাঁদছে।
ওর এরকম কথা শোনার পর আমিও কেঁদে উঠলাম। ওর ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ আমার চোখের অশ্রু হয় বেরিয়ে এল। আমি ওকে আমাদের বাসায় নিয়ে এলাম। সমস্ত ঘটনা আব্বু-আম্মুকে খুলে বলার পর তারা চয়নিকাকে সাদরে আমন্ত্রণ জানালো। আম্মুকে দেখলাম আলমারি থেকে ঈদের জন্য কেনা আমার আরেকটি জামা বের করে ওকে পড়িয়ে দিলেন। তারপর আমরা দুজন সেমাই খেয়ে আমার সকল বান্ধবীদের সাথে ওকে পরিচয় করিয়ে দিলাম।।
ভিড়ের মধ্যে আমার আব্বু একদমই আসতে চান না, আমারও ভালো লাগেনা। আগামীকাল ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাই বাবা ভাবলেন আজকে অন্যদিনের তুলনায় কিছুটা ভিড় কম হতে পারে। তাছাড়া এখনো গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। তাই আব্বু আমাকে নিয়ে এলেন নিউ মার্কেটে, ঈদের জন্য কিছু জামা কিনবো বলে।
মার্কেটে ঢুকেই মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো। কীসের কি!! ভিড়তো আগের মতোই। গত ২দিন মার্কেটে এসেছিলাম কিন্তু ভিড়ের কারণে চলে গিয়েছি। আজ আর চলে গেলে তো হবে না, আগামীকাল ঈদ হবার সম্ভাবনা বেশী। আমার জন্য এ পর্যন্ত কিছুই কেনা হয়নি। তাই অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও একপ্রকার জোর করেই ঈদের পোশাক কিনতে হল।
সন্ধ্যার পর টেলিভিশন দেখে বুঝতে পারলাম আগামীকাল ঈদ। আকাশে চাঁদ দেখার খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু মেঘ জমে থাকার কারণে দেখতে পারিনি। আম্মুকে বললাম হাতে মেহেদি লাগিয়ে দিতে। আম্মু খুব সুন্দর করে আমার হাতে মেহেদি লাগিয়ে দিলেন। শারারাত্র আব্বু-আম্মুর সাথে গল্প করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি তা টেরই পাইনি।
সকালবেলা আজে-বাজে স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙল। ঈদের খুশিতে রাতে মনে হয় ভালো ঘুমাতে পারিনি, চোখ দুটো যেন টলছে। তারাতারি বিছানা ছেড়ে উঠে ফ্রেশ হয়ে প্রতিবেশিদের ডাকতে লাগলাম। আম্মু আমাকে নতুন জামা পড়িয়ে দিয়েছেন। নতুন জামা পড়ে আমাদের ফ্ল্যাটে থাকা সকল বান্ধবীদের বাসায় গিয়ে তাদের সাথে গল্প করতে লাগলাম। গল্পের এক পর্যায়ে জানালা দিয়ে হঠাৎ চোখ পড়লো পাশের ফ্ল্যাটের ঐ চিকন গলির একেবারে মুখের দিকে। মনে হল আমার বয়সী কেউ একজন ওখানে বসে কাঁদছে।
আমি নিচে গিয়ে ওর সামনে দাঁড়ালাম। হাতে থাকা রুমাল দিয়ে ওর অশ্রু মুছতে মুছতে ওর নাম জানতে চাইলাম। ও কাঁদতে কাঁদতে বলল, চয়নিকা। আজকের এই খুশির দিনে তুমি কাঁদছো কেন বোন? এরকম পরিচিত একটা প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হল, কিন্তু করলাম না। বিভিন্ন বিষয়ে খানিক্ষন কথা বলার পর জানতে পারলাম ও বড় দুঃখিনী। গত দুমাস হল ওর বাবা রিকশা চালাতে গিয়ে রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছে। জন্মের পর কোনদিন ও ওর আম্মুকে দেখেছি কিনা তা জানা নেই বা জানা থাকলেও মনে নেই। ও কমলাপুর বস্তিতে ওর ফুফির সাথে থাকে। গতরাতে ফুফিকে ঈদের পোশাক কিনে দিতে বলায় ফুফি তা না পারার অপারগতা জানায়। তখন নিজেকে মানালেও এখন বড় কান্না পাচ্ছে। বাবা বেঁচে থাকলে অবশ্যই কোন না কোন জামা কিনে দিত। সারাক্ষন ছিঁড়ে একটা জামা পড়ে থাকতে আর ভাললাগেনা। তাই বাবার কথা মনে করে ও কাঁদছে।
ওর এরকম কথা শোনার পর আমিও কেঁদে উঠলাম। ওর ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ আমার চোখের অশ্রু হয় বেরিয়ে এল। আমি ওকে আমাদের বাসায় নিয়ে এলাম। সমস্ত ঘটনা আব্বু-আম্মুকে খুলে বলার পর তারা চয়নিকাকে সাদরে আমন্ত্রণ জানালো। আম্মুকে দেখলাম আলমারি থেকে ঈদের জন্য কেনা আমার আরেকটি জামা বের করে ওকে পড়িয়ে দিলেন। তারপর আমরা দুজন সেমাই খেয়ে আমার সকল বান্ধবীদের সাথে ওকে পরিচয় করিয়ে দিলাম।।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাইদুর রহমান ০৫/০৮/২০১৫খুব সুন্দর গল্পটি।
-
অভিষেক মিত্র ০৫/০৮/২০১৫বাঃ
-
কল্লোল বেপারী ৩১/০৭/২০১৫খুব ভালো গল্প।
-
অ ২৯/০৭/২০১৫ভালো লাগল ।
-
সমরেশ সুবোধ পড়্যা ২৮/০৭/২০১৫অপরের দুঃখে - দুঃখী,
অপরের সুখে সুখী।
সেই তো সমাজকে ভালবাসে,
তারে সকলে ভালবাসে।
এইরকম সুন্দর একটা গল্প লেখার জন্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। -
T s J ২৮/০৭/২০১৫অপরের সুখই পরিপূর্ণ আনন্দ পাওয়া যায়,ধন্যবাদ কবি।