নাম তার অধরা
'অধরা' শব্দটিই কেমন যেনো অদ্ভুত। কোনো কিছু না পাওয়ার এক রকম প্রতিচ্ছবি। কিন্তু, একটা ব্যাপার মানতে হবে, শব্দটির মাঝে লুকিয়ে আছে প্রকৃতির এক রকম ছোয়া। 'অধরা' শব্দটির মাঝে লুকিয়ে আছে সুন্দর, শালীনতা, ভদ্রতা, মেধাবী, অকপটে, আরোও ভালো লাগার মতো অনেক প্রতিরূপকে। অধরা, আমার কোনো সপ্নের নায়িকা নয়। নয় কোনো কল্পকাহিনীর রাজকুমারী। আমার চোখে সে শুধুই একজন আকাশপরী। তার মায়াবী নীল দুটি চোখ, তার ঠোঁট, তার অকপটে চলার ধরন, সবকিছুতেই যেনো এক রকম মায়াবী ভাব। সে কি সত্যিই কোনো মানবী নাকি অদৃশ্যপরী তা নিয়ে আমার এখনো সন্দেহ আছে। তারপরেও, সেই সন্দেহকে প্রতিহত করে আমি তার দেখা পেয়েছি অনেকবার। পেয়েছি তার সাথে কথা বলার সুযোগ, তার হাতে হাত রেখে একসাথে হাঁটার সুযোগ।একসাথে পাশে বসে ফুচকা খাওয়া। শুধু তাই নয়, তাকে ভালোবাসার সুযোগটাও আমি পেয়েছি। হয়তো তার ভালোবাসার জন্যই এসেছিলাম এই ত্রিভূবনে। ধন্য আমি তাকে ভালোবাসতে পেরে।
আমি কি বলবো সেই কথা গুলো? অনেক কথা জমা পড়ে আছে কিন্তু এই হৃদয়ের ক্যানভাসে। আপনি শুনবেন কথাগুলো সব? আগ্রহ করে শোনার কোনো আপনজন আমার হয়নি। বোঝে না কেউ এই হৃদয়ের ব্যাথা। বুঝবোই বা ক্যমনে, সবাই তো আর গাজী না। মনের মানুষের দেখা আমি পাইনি এখনও তবুও আমি কবি। আমার মনে যা আসে, তাই আমি লিখি। আমার লেখা প্রতিটি লাইনে রহস্য লুকায়িত আছে যা কেউ বুঝলো না, বোঝার চেষ্টাও করলো না। তার পরেও আমি লিখি নিজের একান্ত ইচ্ছা শক্তির কলমে। সেই কবি ভাব থেকেই বলছি,
তোমরা কি কেউ শুনবে
আমার কিছু কথা,
আমার ভালো-মন্দ লাগা
কিংবা দুঃখ ব্যাথা।
মাঝে মাঝে নিজেকে
লাগে বড় একা,
মনের মতো বন্ধুর দেখা
পাবো আমি কোথা?
চুপচাপ বসে থাকি
কিছুই লাগে না ভালো,
অবচেতন মন বলে ওঠে
কিছু একটা কর।
কিন্তু কি করবো আমি?
পাইনা তো কোনো কাজ,
কখন যে পার হয়
আমার সকাল সাঁঝ।
একা একা কোনো কিছুতেই
সময় আর না কাটে,
ইশ! একটা কাজ এখন যদি
থাকতো আমার হাতে।
ভালো কিছু যখন আর
করার না থাকে,
উদ্ভত কিছু চিন্তা-ভাবনা
মাথায় চলে আসে।
সেই সব চিন্তা ভাবনার
কোনো আগা মাথা নাই,
চিন্তার সাগরে ডুবে আমি
অনেক জল খাই।
মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে
বই নিয়ে বসি,
কি আর পড়বো এখন তো
লাগছে সবই বাসি!
কখনো কখনো মনে হয়
কিছু একটা লেখি,
কখনো বা জানালা দিয়ে
দূরে তাকায়ে দেখি।
চোখের দৃষ্টি মাঝে মাঝে
সুদূরে হারিয়ে যায়,
মনের গভীর কল্পনা ছেড়ে
অনন্ত নিলীমায়।
আমাকে হয়তোবা আপনি চিনেন না। কিভাবেই বা চিনবেন? আমার নিজের পরিচয় দেওয়ার মতো নিজস্ব কোনো গুন নেই। পরিচয় দিতে গেলে তো অনেক গুনের মালিক হতে হয়, আমি তো সেদিক দিয়ে দিন ভিখারী। কি পরিচয় দেবো আমি? বাংলার মানুষ কি মেনে নেবে আমায়?
আমি একজন ছাত্র
বুদ্ধি নাই মাত্র,
পড়া লেখায় কাচা
সবাই ডাকে চাচা।
বিজ্ঞানেতে ছয় পেয়েছি
ইংরেজীতে নয়,
অঙ্কতে জিরো পেয়ে
ব্রেন করলাম ক্ষয়।
পরীক্ষা দিয়েছি সাতবার
ফেল করেছি প্রতিবার,
এবার পেয়েছি শিক্ষা
তাই আর দেবো না পরীক্ষা।
একটা কথা শুনে রাখেন, যতই আমি ফেল করি, যতই ছাত্র আমি খারাপ হয়, একটা গর্বের বিষয় কিন্তু আমার আছে। আপনি জানতে চান কি সেটা? আমি পারি কিংবা না পারি, আমি কিন্তু সাইন্সের ছাত্র। সাইন্সের ছাত্র বলে কি আমার কোনো মন নাই? অবশ্যই মন আছে। আর, এ মনেও প্রেম ভালোবাসা আছে। শুধু নাই যে এ হৃদয়ের মনপাখিটা।
ইচ্ছে হলো পুষবো পাখি
রাখবো ধরে মস্ত খাঁচায়,
সকাল বিকাল কিচির মিচির
আসবে কানে ভরবে হৃদয়।
বাজার থেকে খুঁজে খুঁজে
হরেক রকম কিনছি পাখি,
যে কটা ভাই বাজারে নাই
ঝোপঝাড়ে ফাঁদ পেতে রাখি।
এমনি করেই ক্রমে ক্রমে
মস্ত খাঁচা উঠলো ভরে,
নানান জাতে নানান রঙে
যে দেখে সে হিংস্বা করে।
তবুও তো মন মানে না
আরো আরো চাই যে আরো,
শুধায় তোমায় নতুন নতুন
পাখির খবর দিতে পারো?
কোকিল দোয়েল ময়না টিয়া
চন্দনা আর কাকাতুয়া,
যত্ন করে হিসাব রাখি
মন পাখিটাই ধরতে বাকি।
তখন, আমার সমবয়সী বন্ধুরা সবাই প্রেম করতো। আমার কোনো খারাপ লাগতো না। কারন, আমি ছিলাম সাদা-সিদা টাইপের একটা ছেলে। বয়সটা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছিলো। আমি এমন একটা সময়ে ছিলাম যে সময়ে অনেকেই তিনটা চারটা করে প্রেম করতো। কিন্তু, আমার ঐ যে মনপাখিটাই ধরা বাকি ছিলো তো। কারন, আমি জানতাম কোনোদিন এক অদেখাপরী আমার জীবনে আসবেই আসবে।
অদেখা এক পরী আমার
মনে করে ভীড়,
অজানা তার ভিতর বাহির
অচেনা তার নীড়।
অধরা সে থাকে সদাই
ধরা দিয়েও দেয় না,
স্বপ্নে খুব কাছে থাকে
জেগে কাছে পাই না।
দূর থেকে সে দিচ্ছে সাড়া
কাছা যেতে আছে মানা,
কাছে গেলেই উড়ে যাবে
মেলে তার দুটি ডানা।
তাইতো তাকে ইচ্ছে হলেও
কাছে নাহি ডাকি,
কাছে গেলেই হারিয়ে যাবে
আমায় দিয়ে ফাঁকি।
এ ভয়েতে কভু কি তার
দেখা নাহি পাবো?
দেখা যদি না পাই তবে
সত্যি আমি মরেই যাবো।
সপ্ন তো সবাই দেখে। আমিও দেখতাম সপ্ন। আমার সপ্নে প্রতিদিন কোনো এক অচেনা অজানা সবুজ পরী এসে জ্বালাতন করতো। তার পরিচয় আমি জানতাম না। জানতাম শুধু এতটুকুই যে, নাম না জানা সেই অচীনপরীটা সর্বক্ষন আমার চিন্তা-ভাবনা জুড়ে থাকতো।
নয়ন তাহার কাজল মাখা
কেশ যেনো তাহার বটের ঝড়ি,
আমার মনের মধ্যে থাকা
নাম না জানা এক অচিনপরী।
কল্পনাতে আসে সে যে
ডাক না দিয়েই ফুরুৎ করে,
উড়ে সে যায় গগন মাঝে
নিশি দুপুর কিংবা সাঁঝে।
ভাবি তারে প্রতিটা ক্ষনের
অজানা এক নতুন গানে,
আঁকিই তারে কেবল মনের
রামধনুর ঐ রঙের টানে।
তারই দোলা সদায় যেনো
সুধায় কেনো? কেউ কি জানো?
সময়টা ছিলো তখন ঋতুরাজ বসন্তের, যেইবার আমি আমার সপ্নে দেখা সেই অচেনা পরীকে বাস্তবে দেখি। ফাল্গুনের শেষের দিকে। বৃষ্টিময় দিনের পড়ন্ত বিকালে দাড়িয়ে কোনো এক অজানা এলাকায়। মুহুর্তের মধ্যেই পাল্টে গেলো আমার সমস্ত মনের ভাবনা। আমি আমার নিজের চোখে দেখলাম সবুজ পরীটারে। বালিকা তার চপল পায়ে হেটে যাচ্ছিলো অজানা কোনো এক উদ্দেশ্যে। আমি সপ্নে যেমন দেখতাম, বাস্তবেও ঠিক একই রকম দেখলাম। একই রকম নীল দুটি চোখ, মায়াবী সেই মুখ যা আমাকে পাগল করে দিয়েছিলো। মনে তবুও সন্দেহ জাগলো, সপ্নে সে কাছে এসে এতো জ্বালাতন করতো কিন্তু এখন সে কাছে আসলো না কেনো? কে সে তাহলে?
এই মনের অন্ধকার কুটিরে
জ্বালালি তুই অগ্নি মশাল
হয়ে গেলি প্রেমের বাতি
কে তুই বল?
এই মনের তরিহীন খেয়াঘাটে
ভাসাইলি প্রেমের তরী
নিয়ে গেলি এক সপ্নরাজ্যে
কে তুই বল?
এই মনের উজাড় বিরানভূমিতে
তুই কোন সুস্বাদু ফল
দিয়ে গেলি অপূর্ব স্বাদ
কে তুই বল?
এই মনের শূন্য মরূভূমিট
করে তুই সবুজ শ্যামল
চলে গেলি না জানিয়ে
কে তুই বল?
আমার হৃদয়ের উষ্ম গলিতে
তুই কোন হিমাচল
করে গেলি নিথর দেহ
কে তুই বল?
চলে গেলো বালিকাটি। কি নাম? কি পরিচয়? কিছুই জানা হলো না। মূহুর্তের মাঝে আমাকে করে দিয়ে গেলো চঞ্চল। দিবা নিশি সব সময়েই সে আমাকে যেনো আবদ্ধ করে রেখেছিলো। সে আমার ঘুম কেড়ে নিয়েছিলো।
আমার ঘুম কেড়েছো তুুমি
তোমায় ভালোবেসে কি
ভুল করেছি আমি?
কি যে এক নেশা
চেপে ধরেছে আমায়,
তোমার কথা না ভাবলে
ঘুম জানি কোথায় পালায়।
তোমায় নিয়ে সারারাত জেগে থাকা
কল্পনার জ্বলে কেমন আবদ্ধ থাকা
কলম ধরে আঁকি তোমার ছবি,
তবে শেষে পাই ঘুমের রাত্রি
এ যে মিথ্যা নয়, শতভাগ সত্যি।
ইতিহাসের পাতায় লিখিত লাইলি-মজনু, শিরিন-ফরহাদ, মমতাজ-শাহজানের ভালোবাসার কথা আমি শুনেছিলাম।ভালোবাসা কি আমি বুঝেছিলাম। হ্যা, আমি বালিকারে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলেছিলাম। মনে যে এক সংকল্পের ভীত গড়ে উঠেছিলো হৃদয় গহীনে। হৃদয় বলে সে শুধুই আমার।
জীবন একসময় আমার
ছিলো মরুভূমি,
সেই জীবনে হঠাৎ করে
দেখা দিলে তুমি।
প্রতিদিন মুখটা তোমার
দেখতে চায় মন,
হঠাৎ করেই হয়েছো তুমি
আমার প্রিয়জন।
খালি খালি লাগে যখন
দেখিনা তোমায় আমি,
তুমিই হলে আমার কাছে
এখন অনেক দামী।
ঘুরতে গেলে যখন দেখি
তোমার মিষ্টি হাসি,
বলতে থাকি প্রান খুলে
তোমায় ভালোবাসি।
রাখবো আমি নজরে তোমায়
দেবো না কোথাও যেতে,
দুজন মিলে প্রেমের খেলায়
থাকবো শুধুই মেতে।
যতই আসুক বাধা অনেক
চলবে প্রেমের তরী,
তুমিই হলে আমার জীবনে
অদেখা সেই অচীনপরী।
ফুটবে শুধু মধুর হাসি
মিষ্টি মুখে তোমার,
জেনে রেখো এতোটুকুই
তুমি শুধু আমার।
বালিকারে মাঝে মাঝেই দেখতাম। আবার হঠাৎ করেই যেনো অদৃশ্য পরীর মতো হারিয়ে যেতো। পাগল হয়েছিলাম আমি তার নীল দুটি চোখের জাদুতে। কিন্তু, প্রথম প্রেম, যতই বুকের পাটা থাকুক না কেনো, যতই সাধ থাকুক না কেনো বলতে পারতাম না মনের না বলা কথাগুলো।
অনেকবার দেখেছি তোমায়
এমন তো কখনো হয়নি,
মনের অজান্তেই কখন যে
তোমায় ভালোবেসে ফেলেছি।
আল্লাহ স্বয়ং নিজেই দিয়েছে
তোমাকে ভালোবাসার অধিকার,
আমার সাধ ছিলো অনেক বেশী
সাধ্য ছিলো না হায়!
ভালোবাসি কথাটি বলতে
শুধুই যে তোমায়।
তারপরে ধীরে ধীরে বালিকার বাড়ি, নাম, পরিচয় সব পেয়ে গেলাম। সে অচিন পরীটা এখন পরিচিত হয়ে গেলো। তার ঠোঁটের মিষ্টি হাসিতে পাগল থেকে অধিকতর পাগল হতে লাগলাম। চেষ্টা করতে থাকলাম তাকে মনের কথাটা জানানোর।
বৃষ্টিতে ভিজি না এখন
ঠান্ডা লাগার ডরে,
চাঁদ এখন দেখি না আমি
তোমার দাদা যে ঘরে।
ছাদে এখন উঠি না যে
শিকারী কুকুর বাঁধা,
চশমা এখন পড়িনা
তাও বলো কেনো গাঁধা?
চা কফি খাইনা এখন
বাইরে বেলকুনীতে বসি,
তাও কেনো হাদারাম ডাকা
মুখে দিয়ে বাঁকা হাসি।
তোমার বাড়ির কাজের মেয়ে
ভীষন রকম কালো,
আমায় দেখে ঠোট চিবায় সে
কি জানি কি হলো?
তোমার বাড়ির দাড়োয়ান সেতো
বদ মেজাজের হাড়ি,
বাঁশের লাঠির তাড়া খেলে
আঁতকে ওঠে নাড়ী।
গভীর রাতে ভাবছি একা
ফুলিয়ে বুকের পাটা,
তোমার দাদা এমন কি আর
বাহাদুরের ব্যাটা!
পাশের বাড়ির ছাগল পিটিয়ে
জানান দিলো রাগ,
আমার বুকের সাহসগুলো
বলছে রে ভাই ভাগ।
চলার পথে দেখলে আমায়
তুমি মিষ্টি করে হাসো,
তবুও কেনো হয়নি বলা
আমায় ভালোবাসো?
সব বাধা-বিপত্তি ছাড়িয়ে, একদিন সকালে চলার পথে বালিকারে আমার মনের কথা গুলো জানিয়ে দিলাম। এখন বুঝতে পারছি, সেদিন যদি আমি আমার মনের না বলা কথা গুলো না জানাতে পারতাম, তাহলে হয়তো সারজীবনেও আমি তা বলতে পারতাম না। দুঃখ-কষ্ট গুলো চাপা পড়ে থাকতো চিরদিন এ হৃদয়ের গহীনে। মহান আল্লাহর দয়াই বলেছিলাম সেদিন, অধরা আমি তোমাকে ভালোবাসি।
অধরা,
তোমাকে ভালোবাসি
তাইতো চেয়ে থাকি
শুধুই তোমাকে,
আমার অপলোক দুই নয়নে
তোমাকে ভালোবাসি।
তাইতো কাছে ডাকি
নির্জন দুপুরে,
একাকী মনের গহীনে।
তোমাকে ভালোবাসি
তাইতো পেতে চায়
স্পর্শ তোমার,
হয়তো তাতেই এ হৃদয়
তপ্ত হবে আমার।
তোমাকে ভালোবাসি
তাইতো ভালোবাসি কল্পনাকে
কল্পনার আকাশে,
তোমায় জড়িয়ে
তোমাকে ভালোবাসি।
তাইতো একেছি তোমায়
একান্ত আমার করে,
আমার হৃদয়ের ক্যানভাসে।
সে গ্রহন করেছিলো আমার ভালোবাসা। হাতে হাত রেখে আমরা হারিয়ে যেতাম অচেনা কোনো এক দেশে। গল্প করতাম,একসাথে বসে বাদাম খেতাম, আরো কতোকিছু সুখময় স্মৃতি ছিলো।
তখন বুঝি নি যে সে অভিনয় করেছিলো। কিন্তু, পরক্ষনে তা ঠিকই বুঝতে পারি। হয়তো কোনো গুনীজন বলে গেছেন, তোমার মনের কথা অন্যকে বলো না, সে তোমার মনের কথাটা জানলে পরক্ষনে কষ্ট দিতে থাকবে। কারন, মানুষ কোনো কিছুর মূল্য দিতে পারে না। আমি জানতাম না যে বালিকা অন্য কাউকে ভালোবাসে। তার সম্পর্কে কোনোকিছু না জেনেই তাকে আমি ভালোবাসে ফেলেছিলাম। এটাই ছিলো আমার বড় অপরাধ। আর এই অপরাধের শাস্তি হিসাবে বালিকা আমারে ছেড়ে চলে গেলো বহুদূর।
শুধুই আমার প্রিয়
এতোটুকুই জেনো,
তোমার কথাই ভাবি,
আর তা ভাবতে গিয়ে
হারায় মনের চাবি।
মনে কি পড়ে সখা
তোমার সঙ্গে দেখা,
প্রথমবার হয়েছিলো রাস্তার পাশে
আর তারপর আরও কতবার,
হলো সাক্ষাৎ সেটাই নেহাৎ
গেথে আছে মনে।
একসাথে কথা বলা
হাতে হাত রেখে পথ চলা,
দারুণ সে এক অভিজ্ঞতা।
যদিও মনে হয় লেগেছিলো সময়
কাটাতে ভয় আর জড়তা।
আর এখন আমি ভাবি
এতো কাছে পেয়েও
পেলাম না তোমায় সহজে,
সীমাবদ্ধ থাকলে কাব্যি কথাতেই
চলে গেলে কেবলি দূরে যে।
বসন্তের হাওয়ায় আমার এ হৃদয়ে এসেছিলো বালিকাটি। পাগল হয়ে গিয়েছিলাম তার প্রেমে। কিন্তু, এই আধুনিক যুগে প্রকৃত ভালোবাসার দাম নাই। সবই যেনো লোক দেখানো প্রেম-পিরিতি আর নষ্টামি। আর সে জন্যেই হয়তো সে আমার সাথে ভালোবাসার নাটক করেছিলো। বিশ্বাস জাগিয়েছিলো আমার মনে। কিন্তু, সেই বিশ্বাসকেই সে একদিন চূর্ন বিচূর্ন করে চলে গিয়েছিলো। মহান আল্লাহ তায়ালা জানে, কতো কিছুই না করলাম তার জন্য। বিনিময়ে পেলাম শুধুই তার অবহেলা। বিশ্বাস ঘাতকতা করলো সে আমার সাথে।
তোমার জন্য নির্ঘুম কাটায়
কতো যে দীঘল রাত,
জমাই সপ্ন মনের গহীনে
পেয়েও হাজার ঘাত।
তোমার জন্য দুর্গম পথটা
কতো যে দিয়েছি পাড়ি,
বাঁধার শত প্রাচীর ভাঙ্গিয়া
এসেছি ব্যাস্ততা ছাড়ি।
তোমার জন্য অপেক্ষা করেছি
ধীরতা রাখিয়া বুকে,
বেদনা চিত্তে লুকিয়ে রেখেছি
শুধুই তোমার সুখে।
তোমার জন্য লড়াই করেছি
প্রানটা রাখিয়া হাতে,
করেছি শত ঝগড়া-ফ্যাসাদ
নেহাত গুন্ডার সাথে।
তোমার জন্য অজস্র কবিতা
লিখেছি হাজার গল্প,
তবুও প্রিয়া দাও নি আমায়
প্রেমের মূল্যটা অল্প।
তোমার কাছে আমার প্রেমটা
আজকে শুধুই পাপ,
সকল সপ্ন বৃথা যে আমার
করিও প্রিয়সী মোরে মাফ।
আজকে তুমি খুঁজে পেয়েছো
মনের মানুষ কাছে,
বুঝেছি আজ প্রেমটা আমার
শুধুই ছিলো যে মিছে।
অধরা এ হৃদয় থেকে চলে যাবার পর জীবনটা আমার অচল হয়ে গিয়েছিলো। ভালো লাগতো না কিছু। মনকে সামলাতে পারতাম না। সে তার সামনে আমাকে যেতে নিষেধ করেছিলো।সে আমাকে আমার ভালোবাসার কসম দিয়ে বলেছিলো, আমি যেনো তার সামনে আর না যায়। নিজেকে বোঝালাম আমি, হয়তোবা এটাই ছিলো আমার ভালোবাসার পরিনতি। সরিয়ে নিলাম নিজেকে তার জীবন থেকে। মন তো তবুও মানতো না। গভীর রাতে মনের অজান্তেই কেঁদে ফেলতাম আবার।
স্মৃতির দ্বীপেতে নিজে হতে
আজ নিলাম নির্বাসন,
আলতো আদরে বাধছে না কেউ
করছে না আর শাসন!
মনে করি যত করবো না মনে
মন তবু মানে না বারন,
ক্ষুধা আর তৃষ্মা যেতাম যে ভুলে
অনায়াস ছিলো রাত জাগরন।
রাত্রি গুলো ঘুমায় না আজও
মাথার মধ্যে স্মৃতির পোকা,
গন্ধটা তোর লেগে আছে আজও
চোখ বুজলেই যায় যে শোঁকা।
ঠোটের কাপুনি, গভীর শ্বাস
বুকের কাঁপনে আঁকা আল্পনা,
বাড়াবাড়ি হলো ঠিক কতোক্ষনি
সেই নিয়ে ছিলো যতো জল্পনা।
তোর চোরাস্রোতে ভাসলাম আমি
তুই গাঁ ভাসালি অস্য স্রোতে,
ডুবে যেতে দে, মরে যেতে দে
ডাকিস না আর পেছন হতে।
ভুলে যায়নি সেই তীক্ষ্ম চাহনী
ভুলিনি ঠোঁটের কোনের আঁচিল,
মিলেমিশে মোরা হতাম একাকার
কেন বল তুই তুললি পাঁচিল।
সবটাই অভিনয় তোর জানি
স্রোতে ভেসে তুই আর কতদূর যাবি?
কান্নাগুলো যে আজ গেছে হারিয়ে
চোখ ছুঁয়ে বল তুই কি
আমায় আবার কাঁদাবি?
আমি কোনো দিনও ভেবেছিলাম না যে তার ভালোবাসা মিথ্যা হবে। সে সত্যিই প্রশংসার পাত্রী ছিলো তার নিখুঁত অভিনয়ের জন্য, আমার সাথে বেঈমানী করার জন্য। সত্যিই, তার নিখুঁত অভিনয়ের কাছে আমি হেরে গিয়েছি।
ভালোবেসে কেনো শেষে
ভুলে যেতে চাও,
হৃদয় নিয়ে কেনো
ভেঙে দিয়ে যাও।
ভুল করে কি তুমি
ভুলে যেতে চাও,
কেনো অধরা তুমি
আমাকে কঁদাও।
ভুলে যাবে আমাকে
কাছে এসে ভালোবেসে,
কেনো এমন হয়
হৃদয় ভেঙে যায়।
তবুও অবুঝ হৃদয়
কেনো যে বোঝে না,
ভালোবাসা শুধুই জাতনা?
মন ভেঙে দেয় মৌনতা।
মিথ্যা ভালোবাসা দেবে
কখনও ভাবি নি!
তোমাকে ভালোবেসে
তবে কি আমি হেরেছি?
"মনে কি পড়ে তোমার? বলেছিলে আমায় হৃদয়হীন রাস্তার বাঁকে দাড়িয়ে।" এখোনো ভুলি নি আমি তার বলা শেষ কথাগুলো। হয়তো ঐ কথাগুলোর জন্যই বেঁচে আছি আজ পর্যন্ত। এতো ভালোবাসলাম তাও তুমি বুঝলে না অধরা আমার অবুঝ ভালোবাসা। চলে গেলে তুমি আমাকে একা ফেলে তোমার প্রিয় জানপাখির কাছে। ধন্য হও তুমি, খুশি হও তুমি। সুখে থেকো হে প্রিয়।
হৃদয়ে আমার নীরব বেদনা
গুমরে কাঁদে নিশীদিন,
তোমারে হৃদয়ের সবটুকু দিয়ে
আমি হয়েছি হৃদঢহীন।
যতবার তুমি হেসেছিলে এসে
সাথে এনেছিলে সখীরে,
বোঝোনি তুমি আমার হৃদয়
ও আমার প্রান প্রিয়ারে।
তোমার নয়নে চেয়েছি যখনই
নয়ন দুটি করেছো নিচু,
সখিরে সদায় সামনে এগিয়ে
নিজেরে রেখেছো পিছু।
যতটুকু আমি হেসেছি, গেয়েছি
তা ছিলো তোমারই তরে,
তার সব তোমার সখীরে দিয়েছি
তুমি বুঝলে কেমন করে?
একদিন তুমি নিয়েছো বিদায়
এ হৃদয় থেকে নীরবে।
বোঝোনো তুমি অন্যের হলে
আমার এ হৃদয় রবে কি তবে?
চাতক হৃদয়ে যখন শুধুই
তোমার প্রেমের পিপাসা,
কেমনে বলো মিটাই তখন
তোমার সখীর প্রেমাশা।
আমার হৃদয়ের অক্ষমতাকে
করেছিলে না তাই ক্ষমা।
অবুঝ হৃদয়ে কি ছিলো জমা?
আমার চোখে রেখে চোখ বলেছিলে
আমি নাকি হৃদয়হীন পাষান,
বোঝোনি সেদিন মারিলে আবার
অনেক আগেই মরেছিলো যে প্রান।
বাতাসে একলা বসে
সোনালী অন্তের দিকে চেয়ে,
হৃদয়ের কাছে প্রশ্ন রাখো
ওগো ও সোনার মেয়ে।
যা কিছু বুঝিলে অনন্তকাল
সত্যি তা তুমি বোঝোনি,
নাকি সেইদিন গন্ধবিহীন
হৃদয়টা এ ফুলে খোঁজো নি।
আমি জানি জনম জনম
যদি এ ধরনীতে ফিরে আসি,
বারবার যেনো হৃদয় হারায়
অধরা,তোমারেই ভালোবাসি।
দেখতে দেখতে একটি বছর পেরিয়ে গেলো। তার দেখা আমি পেলাম না। তার নাম্বারটি মোবাইলে 'জান' বলে সেভ করা ঠিকই ছিলো কিন্তু তাতে কল দেওয়ার অধিকারটা আমার ছিলো না। মনটা বড় খারাপ ছিলো। ভালো লাগতো না কিছু। তার সাথে কাটানো প্রিয় মূহুর্তগুলোর স্মৃতি জুড়ে থাকতাম আমি। হঠাৎ একদিন সকালে শুনলাম সে চলে যাচ্ছে অন্যের ঘরে। তার গায়ে হলুদ হয়েছে, সেদিন তার বিয়ে। কেদেঁছিলাম সেই রাতে খুব। পারি নি তার কাছে দেওয়া কথাগুলো রাখতে। "মনে কি পড়ে তোমার, ফোন করেছিলে সেই রাতে? কথা বলতে পেরেছিলাম না আমি। কিভাবে বলবো বলো, তখন যে আমি ঐপারেতে যাওয়ার নৌকাতে উঠে পড়েছিলাম। তবুও তুমি আবার ভুল বুঝেছিলে।" খোঁজ নেয়নি সে তারপর আর একটি বারও। মনে প্রশ্ন জাগতো, জানার খুব ইচ্ছাও ছিলো, কেনো অধরা! কেনো?
অধরা, তুমি কভু কবুল
কবুল বলো না,
এভাবে তুমি আমাকে
একা ছেড়ে যেও না।
কালকে হয়েছে তোমার গায়ে হলুদ
আজ যে হলো তোমার বিয়ে,
বর আসিলো টোপর মাথায়
সাজানো গাড়ি বহর নিয়ে।
লাল শাড়ীতে সেঁজেছো তুমি
পড়েছো গহনা দামী দামী,
বর করেছে লক্ষ টাকা কাবিন
তুমি বলেছো আড়ালে বসে আমিন।
তোমার মুখে হাসি দেখে
বেদনার মাঝে দিলাম হাসি,
তোমার হাসিতে ছিলো দুষ্টুমি
অধরা তুমি কেনো বলোনি।
অধরা তোমার কবুল বলা শুনে
বাবা-মা আজ হয়েছে খুব খুশি,
একবারোও কি ভাবলে তুমি
এ হৃদয়ে বাজে কিসের ধ্বনি?
ভেঙে পড়েছিলাম খুব। পাশে দাড়ানোর মতো আপনজন তেমন কেউ ছিলো না তখন। কারন, আমি তো সবার চোখে খারাপ ছিলাম। শুধু সে আমাকে ভালো বলতো। "ভালোবাসা শেখালে তুমি, নামটাও দিলে তুমি। তবে, একা কেনো রেখে চলে গেলে?"
আমার কোনো নাম ছিলো না
তুমি আমার নাম দিলে,
আমার প্রানে গান ছিলো যে
তুমি তাতে সুর দিলে।
তুলির রঙে রঙিন ছিলাম
ক্যাসভাসে তা অাঁকলো কে?
বিশ্বে আমার কেউ ছিলো না
আপন হতে ডাকলো কে?
আমি যখন সজাগ হলাম
তুমি তখন কই গেলে?
পথের মাঝে দাঁড় করিয়ে
তুমি এখন ঐ কূলে।
সুর হারালাম, গান হারালাম
বাঁচবো আমি কি নিয়ে?
নামটি শুধু রেখে দিলে
হৃদয় তুমি আমায় জানিয়ে।
আমার জীবনে কোনোদিনও সুখ ছিলো না। ছিলো ক্ষনিকের জন্য বিন্দুমাত্র প্রশান্তি আর সেটা সম্ভব হয়েছিলো অধরার ভালোবাসার আলতো পরশে।এছাড়া আমি সুখের কোনো সন্ধান পায় নি। হয়তবা এটা আমার কপাল। তাছাড়া অন্য কিছু আবার কি?
সুখ নামেরই ছোট্ট নৌকায়
আমি দু্ঃখের মাঝি,
আমার কষ্ট ভাগ করতে
কেউ হয় নি রাজী।
এ জীবনে চলতে গিয়ে
পায় নি সুখের দেখা,
শান্ত নদীর মাঝে তাই
চলছি আমি একা।
দুঃখ আছে অনেক মনে
কইবো আমি কার শনে?
শোনার মতো মানুষ নাই
নিজের দুঃখ নিজেই পাই।
দুঃখ নামের স্টেশনে
থামলো জীবন গাড়ি,
আজও খুজে পেলাম না
কোথায় সুখের বাড়ি?
তবুও মনে একটা আশা
অধরার সাথে আবার হবেই দেখা।
নির্জনে একাকী তাকে রেখে পাশে
বলবো আমার সব কথা।
বিধাতার কলমে বুঝি হায়
ছিলো না আর কালি,
তাই, সুখ নামেরই জায়গাটা
পড়ে আছে আজও খালি।
এরপর থেকেই চলে যাচ্ছে জীবন প্রকৃতির নিয়মেই। তার জন্য হয়তো এখন আর কাঁদি না। কাঁদতেও চাই না। তাকে ভালোবাসে লিখতে শিখেছিলাম। সেই লেখার ধারা আমার এখনো অব্যহত আছে, শুধু নেই তখনকার মতো ছন্দ। কিন্তু, একটাই আপসোস আমার, আমি তোমাকে নিয়ে কোনো দিন লিখতে পারলাম না। অধরা আমি তোমাকে নিয়ে লিখতে চাই।
'অধরা' নামে কবিতা লিখেছি
এইতো কিছুদিন আগে,
মাঝে মাঝে কবিতা লিখতে
বেশ ভালই তো লাগে।
ক্লাসের মাঝে কবিতাটা আমি
দিলাম বন্ধুর হাতে,
কেউ আবার জানতে চাইল
কি লিখেছিস ওতে?
লেখাটুকু পড়া হলে পরে
বন্ধু আমাকে শুধায়,
লেখার মধ্যে কেমন যেন
দুখী লাগলো তোমায়?
আমি বলি, ‘হঠাৎ কেন
এরূপ মনে হল তোমার?
সত্যি বলছি এখন আর
কোন দুঃখ নেই আমার।
অতীতে আমি করেছিলাম
ভীষণ একটা ভুল,
চড়া মুল্যে আজও দিচ্ছি
সেই ভুলের মাশুল।
কি হয়েছিলো, যদিও তোমরা
সকলেই তা জানো,
এরপরও দু’একটা কথা
বলছি তবে শোনো।
ভালোবাসার হৃদয়টা বাড়িয়ে দিয়ে
করে ফেলেছিলাম পাপ,
বিবেককে আজ দংশন করে
সেই মহা অভিশাপ।
শুধুই ভালোবাসতে চেয়েছিলাম
স্বার্থ ছিলনা কোন,
সে তো ভেবেছিল, আমি এক
প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলাম যেন!
মিথ্যার আড়ালে বাস করে
সে নিদারুণ স্বার্থপর,
স্বার্থের মোহে আজ সে
আপনকেই করেছে পর।
একদিন যাকে না দেখলে
কিছুই লাগতো না ভালো,
আজ আমার তাকে দেখলেই
মুখ হয়ে যায় কালো।
ভালোবাসার সেই মধুর সম্পর্ক
সে করেছে কলঙ্কিত,
বিষাক্ত ছোবলে সে করেছে
বন্ধুত্ব প্রশমিত।
ছদ্মবেশের আড়ালে সে
খুঁজে নিয়েছে স্বজন,
আমাদের মাঝে তৈরি করেছে
দূরত্ব হাজার যোজন।
কত দক্ষতায় করেছে সে
হিসাব লাভ আর ক্ষতি,
সে কি ভেবেছে তাকে ছাড়া
নাই আমার কোনো গতি?
সে ভেবেছে করে ফেলেছি
দারুণ বাজিমাত,
নিজের কাজে একদিন সে
হবেই কুপোকাত।
বহুদিন থেকে সে আমাকে
দিয়ে এসেছে ধোঁকা,
তখন বুঝিনি, আজ বুঝেছি
আমি ছিলাম বড়ই বোকা।
তোরা ভেবেছিস হয়ত আমি
কিছুটা বদলে গিয়েছি,
আগেও যেমন ছিলাম আমি
এখনও তেমনি আছি!
জীবনে যখন ঘনিয়ে এল
দুঃখের কালো রাত,
তোরাই তখন বাড়িয়ে দিলি
বন্ধুত্বের সেই হাত।
বর্তমানকে সাথে করে
অতীত গিয়েছি ভুলে,
মনে করতে চাই না কিছু
এত ভাবলে কি আর চলে।
উল্টা-পাল্টা প্যাঁচাল পেড়ে
নষ্ট করলাম সময়,
লেখাটা পড়া হলে পরে
মারবি না তো আমায়?
আমাকে তোরা বন্ধু করে
তোদের কাছেই রাখিস,
তোরাই আমার বন্ধু ছিলি
তোরাই বন্ধু থাকিস।
সে আমার কল্পনাতে নয়, বাস্তবেও দেখা দিয়েছিলো। এসেছিলো অনেকটা সময় নিয়ে কিন্তু, যাবার বেলায় কেনো জানি একটু তাড়াতারিই গেলো। এমন কথা ছিলো না তার সাথে। সে আমাকে বলেছিলো, "আমরা আগামী পাঁচ বছর পর কেমন থাকবো জানি না, আগামী পাঁচ বছর পর আমাদের কি অবস্থা হবে জানি না। তবে আমি এইটুকুই জানি যে, আমি যদি এখন তোমাকে কথাগুলো না বলতে পারি, তবে হয়তো আর পারবো না। আমি তোমাকে ভালোবাসি হৃদয়" সময়তো পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। সে এখন অপর মেরুতে দাড়িয়ে সুখের সংসার করছে। আর এইদিকে, সেই অচেনা প্রেমটা আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।
সে এক অচেনা প্রেম
যেনো অন্ধকারে ভেসে ওঠা
আলোর রুপকথা,
গোপন রাখা মনের মাঝে
শত শত ব্যাথা।
সে এক অচেনা প্রেম
যেনো মনের ঘরে বসে থাকা
অচেনা কোনো পাখি,
ভোরের আলো দেখবে বলে
করছে ডাকাডাকি।
সে এক অচেনা প্রেম
যেন করুন চোখের ইসারাতে
তোমায় ডেকে যায়,
উষ্ম প্রেমের জোয়ার ভাটায়
ভেসে যেতে চায়।
সে এক অচেনা প্রেম
তোমায় ভালোবাসবে বলে
জেগেছে কতো রাত,
হাসির আড়ালে লুকিয়ে
রেখেছে কত শত আঘাত।
এই তো কিছুদিন আগে চলার পথে তার সাথে দেখা হয়েছিলো আমার। দীর্ঘ দিন পর আমি নির্লজ্জের মত তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম কেমন আছে সে। না, কোনো জবাব সে দিলো না। চাঁদ মুখের হাসির শেষ রেশটুকুও কেটে গিয়েছিলো।কত দিন তার সাথে কথা হয় নি তা কেউ বলতে পারবে না। যেন কয়েক শত যুগ পেরিয়ে গেছে। তাকে জানাতে চেয়েছিলাম, "জানো,কেউ আর খবর নেয় না আমার। তুমি যখন ছিলে তখন সব ছিল আমার। তুমি চলে যাওয়াতে সব ছেড়ে গেছে। আমি নীরবে কাঁদি আজও।জানো, আমার চোখের জল মুছিয়ে কেউ দেয় না।" কিন্তু, পারলাম না বলতে। সে চলে গেলো তার রাস্তা দিয়ে। আমিও চলে আসলাম নীরবে আমার রাস্তা ধরে। সত্যিই অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। সে এখন দুই সন্তানের জননী। তার সন্তানদেরকে তার মতোন করেই মানুষ করছে যেমনটা করেছিলো কার মা।
অনেক বছর হয়ে গেলো
হারিয়ে গেছি আমি,
চলার পথে সপ্নেরা আজ
অনেকখানি দামী।
অনেক বছর হয়ে গেলো
হয় না পুতুল খেলা,
মায়ের স্নেহের আঁচলখানি
করলো অবহেলা।
অনেক বছর হয়ে গেলো
রুপকথা আর নেই,
চোখের নদী ভাঙে দু'কূল
এই কথা ভাবতেই।
অনেক বছর হয়ে গেলো
কোথায় চাঁদের বুড়ি?
সন্ধ্যা রাতে উড়ে না আজ
রুপকথারই ঘুড়ি।
অনেক বছর হয়ে গেলো
ছোট্ট বেলার সাথী,
পরের ঘরে চলে গেছে
জ্বেলে সুখের বাতি।
অনেক বছর হয়ে গেছে
হারিয়ে গেছি আমি,
চলার পথে সুখেরা আজ
মৃত্যু পথগামী।
আমার জীবনটা এমন হয়তোবা নাও হতে পারতো। এই সমাজ, এর নিয়মকানুনের বাইরে যদি একটি জগৎ পাইতাম, তাহলে হয়তো অধরাকে হারাতে হতো না আমায়।
আমি কি বলবো সেই কথা গুলো? অনেক কথা জমা পড়ে আছে কিন্তু এই হৃদয়ের ক্যানভাসে। আপনি শুনবেন কথাগুলো সব? আগ্রহ করে শোনার কোনো আপনজন আমার হয়নি। বোঝে না কেউ এই হৃদয়ের ব্যাথা। বুঝবোই বা ক্যমনে, সবাই তো আর গাজী না। মনের মানুষের দেখা আমি পাইনি এখনও তবুও আমি কবি। আমার মনে যা আসে, তাই আমি লিখি। আমার লেখা প্রতিটি লাইনে রহস্য লুকায়িত আছে যা কেউ বুঝলো না, বোঝার চেষ্টাও করলো না। তার পরেও আমি লিখি নিজের একান্ত ইচ্ছা শক্তির কলমে। সেই কবি ভাব থেকেই বলছি,
তোমরা কি কেউ শুনবে
আমার কিছু কথা,
আমার ভালো-মন্দ লাগা
কিংবা দুঃখ ব্যাথা।
মাঝে মাঝে নিজেকে
লাগে বড় একা,
মনের মতো বন্ধুর দেখা
পাবো আমি কোথা?
চুপচাপ বসে থাকি
কিছুই লাগে না ভালো,
অবচেতন মন বলে ওঠে
কিছু একটা কর।
কিন্তু কি করবো আমি?
পাইনা তো কোনো কাজ,
কখন যে পার হয়
আমার সকাল সাঁঝ।
একা একা কোনো কিছুতেই
সময় আর না কাটে,
ইশ! একটা কাজ এখন যদি
থাকতো আমার হাতে।
ভালো কিছু যখন আর
করার না থাকে,
উদ্ভত কিছু চিন্তা-ভাবনা
মাথায় চলে আসে।
সেই সব চিন্তা ভাবনার
কোনো আগা মাথা নাই,
চিন্তার সাগরে ডুবে আমি
অনেক জল খাই।
মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে
বই নিয়ে বসি,
কি আর পড়বো এখন তো
লাগছে সবই বাসি!
কখনো কখনো মনে হয়
কিছু একটা লেখি,
কখনো বা জানালা দিয়ে
দূরে তাকায়ে দেখি।
চোখের দৃষ্টি মাঝে মাঝে
সুদূরে হারিয়ে যায়,
মনের গভীর কল্পনা ছেড়ে
অনন্ত নিলীমায়।
আমাকে হয়তোবা আপনি চিনেন না। কিভাবেই বা চিনবেন? আমার নিজের পরিচয় দেওয়ার মতো নিজস্ব কোনো গুন নেই। পরিচয় দিতে গেলে তো অনেক গুনের মালিক হতে হয়, আমি তো সেদিক দিয়ে দিন ভিখারী। কি পরিচয় দেবো আমি? বাংলার মানুষ কি মেনে নেবে আমায়?
আমি একজন ছাত্র
বুদ্ধি নাই মাত্র,
পড়া লেখায় কাচা
সবাই ডাকে চাচা।
বিজ্ঞানেতে ছয় পেয়েছি
ইংরেজীতে নয়,
অঙ্কতে জিরো পেয়ে
ব্রেন করলাম ক্ষয়।
পরীক্ষা দিয়েছি সাতবার
ফেল করেছি প্রতিবার,
এবার পেয়েছি শিক্ষা
তাই আর দেবো না পরীক্ষা।
একটা কথা শুনে রাখেন, যতই আমি ফেল করি, যতই ছাত্র আমি খারাপ হয়, একটা গর্বের বিষয় কিন্তু আমার আছে। আপনি জানতে চান কি সেটা? আমি পারি কিংবা না পারি, আমি কিন্তু সাইন্সের ছাত্র। সাইন্সের ছাত্র বলে কি আমার কোনো মন নাই? অবশ্যই মন আছে। আর, এ মনেও প্রেম ভালোবাসা আছে। শুধু নাই যে এ হৃদয়ের মনপাখিটা।
ইচ্ছে হলো পুষবো পাখি
রাখবো ধরে মস্ত খাঁচায়,
সকাল বিকাল কিচির মিচির
আসবে কানে ভরবে হৃদয়।
বাজার থেকে খুঁজে খুঁজে
হরেক রকম কিনছি পাখি,
যে কটা ভাই বাজারে নাই
ঝোপঝাড়ে ফাঁদ পেতে রাখি।
এমনি করেই ক্রমে ক্রমে
মস্ত খাঁচা উঠলো ভরে,
নানান জাতে নানান রঙে
যে দেখে সে হিংস্বা করে।
তবুও তো মন মানে না
আরো আরো চাই যে আরো,
শুধায় তোমায় নতুন নতুন
পাখির খবর দিতে পারো?
কোকিল দোয়েল ময়না টিয়া
চন্দনা আর কাকাতুয়া,
যত্ন করে হিসাব রাখি
মন পাখিটাই ধরতে বাকি।
তখন, আমার সমবয়সী বন্ধুরা সবাই প্রেম করতো। আমার কোনো খারাপ লাগতো না। কারন, আমি ছিলাম সাদা-সিদা টাইপের একটা ছেলে। বয়সটা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছিলো। আমি এমন একটা সময়ে ছিলাম যে সময়ে অনেকেই তিনটা চারটা করে প্রেম করতো। কিন্তু, আমার ঐ যে মনপাখিটাই ধরা বাকি ছিলো তো। কারন, আমি জানতাম কোনোদিন এক অদেখাপরী আমার জীবনে আসবেই আসবে।
অদেখা এক পরী আমার
মনে করে ভীড়,
অজানা তার ভিতর বাহির
অচেনা তার নীড়।
অধরা সে থাকে সদাই
ধরা দিয়েও দেয় না,
স্বপ্নে খুব কাছে থাকে
জেগে কাছে পাই না।
দূর থেকে সে দিচ্ছে সাড়া
কাছা যেতে আছে মানা,
কাছে গেলেই উড়ে যাবে
মেলে তার দুটি ডানা।
তাইতো তাকে ইচ্ছে হলেও
কাছে নাহি ডাকি,
কাছে গেলেই হারিয়ে যাবে
আমায় দিয়ে ফাঁকি।
এ ভয়েতে কভু কি তার
দেখা নাহি পাবো?
দেখা যদি না পাই তবে
সত্যি আমি মরেই যাবো।
সপ্ন তো সবাই দেখে। আমিও দেখতাম সপ্ন। আমার সপ্নে প্রতিদিন কোনো এক অচেনা অজানা সবুজ পরী এসে জ্বালাতন করতো। তার পরিচয় আমি জানতাম না। জানতাম শুধু এতটুকুই যে, নাম না জানা সেই অচীনপরীটা সর্বক্ষন আমার চিন্তা-ভাবনা জুড়ে থাকতো।
নয়ন তাহার কাজল মাখা
কেশ যেনো তাহার বটের ঝড়ি,
আমার মনের মধ্যে থাকা
নাম না জানা এক অচিনপরী।
কল্পনাতে আসে সে যে
ডাক না দিয়েই ফুরুৎ করে,
উড়ে সে যায় গগন মাঝে
নিশি দুপুর কিংবা সাঁঝে।
ভাবি তারে প্রতিটা ক্ষনের
অজানা এক নতুন গানে,
আঁকিই তারে কেবল মনের
রামধনুর ঐ রঙের টানে।
তারই দোলা সদায় যেনো
সুধায় কেনো? কেউ কি জানো?
সময়টা ছিলো তখন ঋতুরাজ বসন্তের, যেইবার আমি আমার সপ্নে দেখা সেই অচেনা পরীকে বাস্তবে দেখি। ফাল্গুনের শেষের দিকে। বৃষ্টিময় দিনের পড়ন্ত বিকালে দাড়িয়ে কোনো এক অজানা এলাকায়। মুহুর্তের মধ্যেই পাল্টে গেলো আমার সমস্ত মনের ভাবনা। আমি আমার নিজের চোখে দেখলাম সবুজ পরীটারে। বালিকা তার চপল পায়ে হেটে যাচ্ছিলো অজানা কোনো এক উদ্দেশ্যে। আমি সপ্নে যেমন দেখতাম, বাস্তবেও ঠিক একই রকম দেখলাম। একই রকম নীল দুটি চোখ, মায়াবী সেই মুখ যা আমাকে পাগল করে দিয়েছিলো। মনে তবুও সন্দেহ জাগলো, সপ্নে সে কাছে এসে এতো জ্বালাতন করতো কিন্তু এখন সে কাছে আসলো না কেনো? কে সে তাহলে?
এই মনের অন্ধকার কুটিরে
জ্বালালি তুই অগ্নি মশাল
হয়ে গেলি প্রেমের বাতি
কে তুই বল?
এই মনের তরিহীন খেয়াঘাটে
ভাসাইলি প্রেমের তরী
নিয়ে গেলি এক সপ্নরাজ্যে
কে তুই বল?
এই মনের উজাড় বিরানভূমিতে
তুই কোন সুস্বাদু ফল
দিয়ে গেলি অপূর্ব স্বাদ
কে তুই বল?
এই মনের শূন্য মরূভূমিট
করে তুই সবুজ শ্যামল
চলে গেলি না জানিয়ে
কে তুই বল?
আমার হৃদয়ের উষ্ম গলিতে
তুই কোন হিমাচল
করে গেলি নিথর দেহ
কে তুই বল?
চলে গেলো বালিকাটি। কি নাম? কি পরিচয়? কিছুই জানা হলো না। মূহুর্তের মাঝে আমাকে করে দিয়ে গেলো চঞ্চল। দিবা নিশি সব সময়েই সে আমাকে যেনো আবদ্ধ করে রেখেছিলো। সে আমার ঘুম কেড়ে নিয়েছিলো।
আমার ঘুম কেড়েছো তুুমি
তোমায় ভালোবেসে কি
ভুল করেছি আমি?
কি যে এক নেশা
চেপে ধরেছে আমায়,
তোমার কথা না ভাবলে
ঘুম জানি কোথায় পালায়।
তোমায় নিয়ে সারারাত জেগে থাকা
কল্পনার জ্বলে কেমন আবদ্ধ থাকা
কলম ধরে আঁকি তোমার ছবি,
তবে শেষে পাই ঘুমের রাত্রি
এ যে মিথ্যা নয়, শতভাগ সত্যি।
ইতিহাসের পাতায় লিখিত লাইলি-মজনু, শিরিন-ফরহাদ, মমতাজ-শাহজানের ভালোবাসার কথা আমি শুনেছিলাম।ভালোবাসা কি আমি বুঝেছিলাম। হ্যা, আমি বালিকারে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলেছিলাম। মনে যে এক সংকল্পের ভীত গড়ে উঠেছিলো হৃদয় গহীনে। হৃদয় বলে সে শুধুই আমার।
জীবন একসময় আমার
ছিলো মরুভূমি,
সেই জীবনে হঠাৎ করে
দেখা দিলে তুমি।
প্রতিদিন মুখটা তোমার
দেখতে চায় মন,
হঠাৎ করেই হয়েছো তুমি
আমার প্রিয়জন।
খালি খালি লাগে যখন
দেখিনা তোমায় আমি,
তুমিই হলে আমার কাছে
এখন অনেক দামী।
ঘুরতে গেলে যখন দেখি
তোমার মিষ্টি হাসি,
বলতে থাকি প্রান খুলে
তোমায় ভালোবাসি।
রাখবো আমি নজরে তোমায়
দেবো না কোথাও যেতে,
দুজন মিলে প্রেমের খেলায়
থাকবো শুধুই মেতে।
যতই আসুক বাধা অনেক
চলবে প্রেমের তরী,
তুমিই হলে আমার জীবনে
অদেখা সেই অচীনপরী।
ফুটবে শুধু মধুর হাসি
মিষ্টি মুখে তোমার,
জেনে রেখো এতোটুকুই
তুমি শুধু আমার।
বালিকারে মাঝে মাঝেই দেখতাম। আবার হঠাৎ করেই যেনো অদৃশ্য পরীর মতো হারিয়ে যেতো। পাগল হয়েছিলাম আমি তার নীল দুটি চোখের জাদুতে। কিন্তু, প্রথম প্রেম, যতই বুকের পাটা থাকুক না কেনো, যতই সাধ থাকুক না কেনো বলতে পারতাম না মনের না বলা কথাগুলো।
অনেকবার দেখেছি তোমায়
এমন তো কখনো হয়নি,
মনের অজান্তেই কখন যে
তোমায় ভালোবেসে ফেলেছি।
আল্লাহ স্বয়ং নিজেই দিয়েছে
তোমাকে ভালোবাসার অধিকার,
আমার সাধ ছিলো অনেক বেশী
সাধ্য ছিলো না হায়!
ভালোবাসি কথাটি বলতে
শুধুই যে তোমায়।
তারপরে ধীরে ধীরে বালিকার বাড়ি, নাম, পরিচয় সব পেয়ে গেলাম। সে অচিন পরীটা এখন পরিচিত হয়ে গেলো। তার ঠোঁটের মিষ্টি হাসিতে পাগল থেকে অধিকতর পাগল হতে লাগলাম। চেষ্টা করতে থাকলাম তাকে মনের কথাটা জানানোর।
বৃষ্টিতে ভিজি না এখন
ঠান্ডা লাগার ডরে,
চাঁদ এখন দেখি না আমি
তোমার দাদা যে ঘরে।
ছাদে এখন উঠি না যে
শিকারী কুকুর বাঁধা,
চশমা এখন পড়িনা
তাও বলো কেনো গাঁধা?
চা কফি খাইনা এখন
বাইরে বেলকুনীতে বসি,
তাও কেনো হাদারাম ডাকা
মুখে দিয়ে বাঁকা হাসি।
তোমার বাড়ির কাজের মেয়ে
ভীষন রকম কালো,
আমায় দেখে ঠোট চিবায় সে
কি জানি কি হলো?
তোমার বাড়ির দাড়োয়ান সেতো
বদ মেজাজের হাড়ি,
বাঁশের লাঠির তাড়া খেলে
আঁতকে ওঠে নাড়ী।
গভীর রাতে ভাবছি একা
ফুলিয়ে বুকের পাটা,
তোমার দাদা এমন কি আর
বাহাদুরের ব্যাটা!
পাশের বাড়ির ছাগল পিটিয়ে
জানান দিলো রাগ,
আমার বুকের সাহসগুলো
বলছে রে ভাই ভাগ।
চলার পথে দেখলে আমায়
তুমি মিষ্টি করে হাসো,
তবুও কেনো হয়নি বলা
আমায় ভালোবাসো?
সব বাধা-বিপত্তি ছাড়িয়ে, একদিন সকালে চলার পথে বালিকারে আমার মনের কথা গুলো জানিয়ে দিলাম। এখন বুঝতে পারছি, সেদিন যদি আমি আমার মনের না বলা কথা গুলো না জানাতে পারতাম, তাহলে হয়তো সারজীবনেও আমি তা বলতে পারতাম না। দুঃখ-কষ্ট গুলো চাপা পড়ে থাকতো চিরদিন এ হৃদয়ের গহীনে। মহান আল্লাহর দয়াই বলেছিলাম সেদিন, অধরা আমি তোমাকে ভালোবাসি।
অধরা,
তোমাকে ভালোবাসি
তাইতো চেয়ে থাকি
শুধুই তোমাকে,
আমার অপলোক দুই নয়নে
তোমাকে ভালোবাসি।
তাইতো কাছে ডাকি
নির্জন দুপুরে,
একাকী মনের গহীনে।
তোমাকে ভালোবাসি
তাইতো পেতে চায়
স্পর্শ তোমার,
হয়তো তাতেই এ হৃদয়
তপ্ত হবে আমার।
তোমাকে ভালোবাসি
তাইতো ভালোবাসি কল্পনাকে
কল্পনার আকাশে,
তোমায় জড়িয়ে
তোমাকে ভালোবাসি।
তাইতো একেছি তোমায়
একান্ত আমার করে,
আমার হৃদয়ের ক্যানভাসে।
সে গ্রহন করেছিলো আমার ভালোবাসা। হাতে হাত রেখে আমরা হারিয়ে যেতাম অচেনা কোনো এক দেশে। গল্প করতাম,একসাথে বসে বাদাম খেতাম, আরো কতোকিছু সুখময় স্মৃতি ছিলো।
তখন বুঝি নি যে সে অভিনয় করেছিলো। কিন্তু, পরক্ষনে তা ঠিকই বুঝতে পারি। হয়তো কোনো গুনীজন বলে গেছেন, তোমার মনের কথা অন্যকে বলো না, সে তোমার মনের কথাটা জানলে পরক্ষনে কষ্ট দিতে থাকবে। কারন, মানুষ কোনো কিছুর মূল্য দিতে পারে না। আমি জানতাম না যে বালিকা অন্য কাউকে ভালোবাসে। তার সম্পর্কে কোনোকিছু না জেনেই তাকে আমি ভালোবাসে ফেলেছিলাম। এটাই ছিলো আমার বড় অপরাধ। আর এই অপরাধের শাস্তি হিসাবে বালিকা আমারে ছেড়ে চলে গেলো বহুদূর।
শুধুই আমার প্রিয়
এতোটুকুই জেনো,
তোমার কথাই ভাবি,
আর তা ভাবতে গিয়ে
হারায় মনের চাবি।
মনে কি পড়ে সখা
তোমার সঙ্গে দেখা,
প্রথমবার হয়েছিলো রাস্তার পাশে
আর তারপর আরও কতবার,
হলো সাক্ষাৎ সেটাই নেহাৎ
গেথে আছে মনে।
একসাথে কথা বলা
হাতে হাত রেখে পথ চলা,
দারুণ সে এক অভিজ্ঞতা।
যদিও মনে হয় লেগেছিলো সময়
কাটাতে ভয় আর জড়তা।
আর এখন আমি ভাবি
এতো কাছে পেয়েও
পেলাম না তোমায় সহজে,
সীমাবদ্ধ থাকলে কাব্যি কথাতেই
চলে গেলে কেবলি দূরে যে।
বসন্তের হাওয়ায় আমার এ হৃদয়ে এসেছিলো বালিকাটি। পাগল হয়ে গিয়েছিলাম তার প্রেমে। কিন্তু, এই আধুনিক যুগে প্রকৃত ভালোবাসার দাম নাই। সবই যেনো লোক দেখানো প্রেম-পিরিতি আর নষ্টামি। আর সে জন্যেই হয়তো সে আমার সাথে ভালোবাসার নাটক করেছিলো। বিশ্বাস জাগিয়েছিলো আমার মনে। কিন্তু, সেই বিশ্বাসকেই সে একদিন চূর্ন বিচূর্ন করে চলে গিয়েছিলো। মহান আল্লাহ তায়ালা জানে, কতো কিছুই না করলাম তার জন্য। বিনিময়ে পেলাম শুধুই তার অবহেলা। বিশ্বাস ঘাতকতা করলো সে আমার সাথে।
তোমার জন্য নির্ঘুম কাটায়
কতো যে দীঘল রাত,
জমাই সপ্ন মনের গহীনে
পেয়েও হাজার ঘাত।
তোমার জন্য দুর্গম পথটা
কতো যে দিয়েছি পাড়ি,
বাঁধার শত প্রাচীর ভাঙ্গিয়া
এসেছি ব্যাস্ততা ছাড়ি।
তোমার জন্য অপেক্ষা করেছি
ধীরতা রাখিয়া বুকে,
বেদনা চিত্তে লুকিয়ে রেখেছি
শুধুই তোমার সুখে।
তোমার জন্য লড়াই করেছি
প্রানটা রাখিয়া হাতে,
করেছি শত ঝগড়া-ফ্যাসাদ
নেহাত গুন্ডার সাথে।
তোমার জন্য অজস্র কবিতা
লিখেছি হাজার গল্প,
তবুও প্রিয়া দাও নি আমায়
প্রেমের মূল্যটা অল্প।
তোমার কাছে আমার প্রেমটা
আজকে শুধুই পাপ,
সকল সপ্ন বৃথা যে আমার
করিও প্রিয়সী মোরে মাফ।
আজকে তুমি খুঁজে পেয়েছো
মনের মানুষ কাছে,
বুঝেছি আজ প্রেমটা আমার
শুধুই ছিলো যে মিছে।
অধরা এ হৃদয় থেকে চলে যাবার পর জীবনটা আমার অচল হয়ে গিয়েছিলো। ভালো লাগতো না কিছু। মনকে সামলাতে পারতাম না। সে তার সামনে আমাকে যেতে নিষেধ করেছিলো।সে আমাকে আমার ভালোবাসার কসম দিয়ে বলেছিলো, আমি যেনো তার সামনে আর না যায়। নিজেকে বোঝালাম আমি, হয়তোবা এটাই ছিলো আমার ভালোবাসার পরিনতি। সরিয়ে নিলাম নিজেকে তার জীবন থেকে। মন তো তবুও মানতো না। গভীর রাতে মনের অজান্তেই কেঁদে ফেলতাম আবার।
স্মৃতির দ্বীপেতে নিজে হতে
আজ নিলাম নির্বাসন,
আলতো আদরে বাধছে না কেউ
করছে না আর শাসন!
মনে করি যত করবো না মনে
মন তবু মানে না বারন,
ক্ষুধা আর তৃষ্মা যেতাম যে ভুলে
অনায়াস ছিলো রাত জাগরন।
রাত্রি গুলো ঘুমায় না আজও
মাথার মধ্যে স্মৃতির পোকা,
গন্ধটা তোর লেগে আছে আজও
চোখ বুজলেই যায় যে শোঁকা।
ঠোটের কাপুনি, গভীর শ্বাস
বুকের কাঁপনে আঁকা আল্পনা,
বাড়াবাড়ি হলো ঠিক কতোক্ষনি
সেই নিয়ে ছিলো যতো জল্পনা।
তোর চোরাস্রোতে ভাসলাম আমি
তুই গাঁ ভাসালি অস্য স্রোতে,
ডুবে যেতে দে, মরে যেতে দে
ডাকিস না আর পেছন হতে।
ভুলে যায়নি সেই তীক্ষ্ম চাহনী
ভুলিনি ঠোঁটের কোনের আঁচিল,
মিলেমিশে মোরা হতাম একাকার
কেন বল তুই তুললি পাঁচিল।
সবটাই অভিনয় তোর জানি
স্রোতে ভেসে তুই আর কতদূর যাবি?
কান্নাগুলো যে আজ গেছে হারিয়ে
চোখ ছুঁয়ে বল তুই কি
আমায় আবার কাঁদাবি?
আমি কোনো দিনও ভেবেছিলাম না যে তার ভালোবাসা মিথ্যা হবে। সে সত্যিই প্রশংসার পাত্রী ছিলো তার নিখুঁত অভিনয়ের জন্য, আমার সাথে বেঈমানী করার জন্য। সত্যিই, তার নিখুঁত অভিনয়ের কাছে আমি হেরে গিয়েছি।
ভালোবেসে কেনো শেষে
ভুলে যেতে চাও,
হৃদয় নিয়ে কেনো
ভেঙে দিয়ে যাও।
ভুল করে কি তুমি
ভুলে যেতে চাও,
কেনো অধরা তুমি
আমাকে কঁদাও।
ভুলে যাবে আমাকে
কাছে এসে ভালোবেসে,
কেনো এমন হয়
হৃদয় ভেঙে যায়।
তবুও অবুঝ হৃদয়
কেনো যে বোঝে না,
ভালোবাসা শুধুই জাতনা?
মন ভেঙে দেয় মৌনতা।
মিথ্যা ভালোবাসা দেবে
কখনও ভাবি নি!
তোমাকে ভালোবেসে
তবে কি আমি হেরেছি?
"মনে কি পড়ে তোমার? বলেছিলে আমায় হৃদয়হীন রাস্তার বাঁকে দাড়িয়ে।" এখোনো ভুলি নি আমি তার বলা শেষ কথাগুলো। হয়তো ঐ কথাগুলোর জন্যই বেঁচে আছি আজ পর্যন্ত। এতো ভালোবাসলাম তাও তুমি বুঝলে না অধরা আমার অবুঝ ভালোবাসা। চলে গেলে তুমি আমাকে একা ফেলে তোমার প্রিয় জানপাখির কাছে। ধন্য হও তুমি, খুশি হও তুমি। সুখে থেকো হে প্রিয়।
হৃদয়ে আমার নীরব বেদনা
গুমরে কাঁদে নিশীদিন,
তোমারে হৃদয়ের সবটুকু দিয়ে
আমি হয়েছি হৃদঢহীন।
যতবার তুমি হেসেছিলে এসে
সাথে এনেছিলে সখীরে,
বোঝোনি তুমি আমার হৃদয়
ও আমার প্রান প্রিয়ারে।
তোমার নয়নে চেয়েছি যখনই
নয়ন দুটি করেছো নিচু,
সখিরে সদায় সামনে এগিয়ে
নিজেরে রেখেছো পিছু।
যতটুকু আমি হেসেছি, গেয়েছি
তা ছিলো তোমারই তরে,
তার সব তোমার সখীরে দিয়েছি
তুমি বুঝলে কেমন করে?
একদিন তুমি নিয়েছো বিদায়
এ হৃদয় থেকে নীরবে।
বোঝোনো তুমি অন্যের হলে
আমার এ হৃদয় রবে কি তবে?
চাতক হৃদয়ে যখন শুধুই
তোমার প্রেমের পিপাসা,
কেমনে বলো মিটাই তখন
তোমার সখীর প্রেমাশা।
আমার হৃদয়ের অক্ষমতাকে
করেছিলে না তাই ক্ষমা।
অবুঝ হৃদয়ে কি ছিলো জমা?
আমার চোখে রেখে চোখ বলেছিলে
আমি নাকি হৃদয়হীন পাষান,
বোঝোনি সেদিন মারিলে আবার
অনেক আগেই মরেছিলো যে প্রান।
বাতাসে একলা বসে
সোনালী অন্তের দিকে চেয়ে,
হৃদয়ের কাছে প্রশ্ন রাখো
ওগো ও সোনার মেয়ে।
যা কিছু বুঝিলে অনন্তকাল
সত্যি তা তুমি বোঝোনি,
নাকি সেইদিন গন্ধবিহীন
হৃদয়টা এ ফুলে খোঁজো নি।
আমি জানি জনম জনম
যদি এ ধরনীতে ফিরে আসি,
বারবার যেনো হৃদয় হারায়
অধরা,তোমারেই ভালোবাসি।
দেখতে দেখতে একটি বছর পেরিয়ে গেলো। তার দেখা আমি পেলাম না। তার নাম্বারটি মোবাইলে 'জান' বলে সেভ করা ঠিকই ছিলো কিন্তু তাতে কল দেওয়ার অধিকারটা আমার ছিলো না। মনটা বড় খারাপ ছিলো। ভালো লাগতো না কিছু। তার সাথে কাটানো প্রিয় মূহুর্তগুলোর স্মৃতি জুড়ে থাকতাম আমি। হঠাৎ একদিন সকালে শুনলাম সে চলে যাচ্ছে অন্যের ঘরে। তার গায়ে হলুদ হয়েছে, সেদিন তার বিয়ে। কেদেঁছিলাম সেই রাতে খুব। পারি নি তার কাছে দেওয়া কথাগুলো রাখতে। "মনে কি পড়ে তোমার, ফোন করেছিলে সেই রাতে? কথা বলতে পেরেছিলাম না আমি। কিভাবে বলবো বলো, তখন যে আমি ঐপারেতে যাওয়ার নৌকাতে উঠে পড়েছিলাম। তবুও তুমি আবার ভুল বুঝেছিলে।" খোঁজ নেয়নি সে তারপর আর একটি বারও। মনে প্রশ্ন জাগতো, জানার খুব ইচ্ছাও ছিলো, কেনো অধরা! কেনো?
অধরা, তুমি কভু কবুল
কবুল বলো না,
এভাবে তুমি আমাকে
একা ছেড়ে যেও না।
কালকে হয়েছে তোমার গায়ে হলুদ
আজ যে হলো তোমার বিয়ে,
বর আসিলো টোপর মাথায়
সাজানো গাড়ি বহর নিয়ে।
লাল শাড়ীতে সেঁজেছো তুমি
পড়েছো গহনা দামী দামী,
বর করেছে লক্ষ টাকা কাবিন
তুমি বলেছো আড়ালে বসে আমিন।
তোমার মুখে হাসি দেখে
বেদনার মাঝে দিলাম হাসি,
তোমার হাসিতে ছিলো দুষ্টুমি
অধরা তুমি কেনো বলোনি।
অধরা তোমার কবুল বলা শুনে
বাবা-মা আজ হয়েছে খুব খুশি,
একবারোও কি ভাবলে তুমি
এ হৃদয়ে বাজে কিসের ধ্বনি?
ভেঙে পড়েছিলাম খুব। পাশে দাড়ানোর মতো আপনজন তেমন কেউ ছিলো না তখন। কারন, আমি তো সবার চোখে খারাপ ছিলাম। শুধু সে আমাকে ভালো বলতো। "ভালোবাসা শেখালে তুমি, নামটাও দিলে তুমি। তবে, একা কেনো রেখে চলে গেলে?"
আমার কোনো নাম ছিলো না
তুমি আমার নাম দিলে,
আমার প্রানে গান ছিলো যে
তুমি তাতে সুর দিলে।
তুলির রঙে রঙিন ছিলাম
ক্যাসভাসে তা অাঁকলো কে?
বিশ্বে আমার কেউ ছিলো না
আপন হতে ডাকলো কে?
আমি যখন সজাগ হলাম
তুমি তখন কই গেলে?
পথের মাঝে দাঁড় করিয়ে
তুমি এখন ঐ কূলে।
সুর হারালাম, গান হারালাম
বাঁচবো আমি কি নিয়ে?
নামটি শুধু রেখে দিলে
হৃদয় তুমি আমায় জানিয়ে।
আমার জীবনে কোনোদিনও সুখ ছিলো না। ছিলো ক্ষনিকের জন্য বিন্দুমাত্র প্রশান্তি আর সেটা সম্ভব হয়েছিলো অধরার ভালোবাসার আলতো পরশে।এছাড়া আমি সুখের কোনো সন্ধান পায় নি। হয়তবা এটা আমার কপাল। তাছাড়া অন্য কিছু আবার কি?
সুখ নামেরই ছোট্ট নৌকায়
আমি দু্ঃখের মাঝি,
আমার কষ্ট ভাগ করতে
কেউ হয় নি রাজী।
এ জীবনে চলতে গিয়ে
পায় নি সুখের দেখা,
শান্ত নদীর মাঝে তাই
চলছি আমি একা।
দুঃখ আছে অনেক মনে
কইবো আমি কার শনে?
শোনার মতো মানুষ নাই
নিজের দুঃখ নিজেই পাই।
দুঃখ নামের স্টেশনে
থামলো জীবন গাড়ি,
আজও খুজে পেলাম না
কোথায় সুখের বাড়ি?
তবুও মনে একটা আশা
অধরার সাথে আবার হবেই দেখা।
নির্জনে একাকী তাকে রেখে পাশে
বলবো আমার সব কথা।
বিধাতার কলমে বুঝি হায়
ছিলো না আর কালি,
তাই, সুখ নামেরই জায়গাটা
পড়ে আছে আজও খালি।
এরপর থেকেই চলে যাচ্ছে জীবন প্রকৃতির নিয়মেই। তার জন্য হয়তো এখন আর কাঁদি না। কাঁদতেও চাই না। তাকে ভালোবাসে লিখতে শিখেছিলাম। সেই লেখার ধারা আমার এখনো অব্যহত আছে, শুধু নেই তখনকার মতো ছন্দ। কিন্তু, একটাই আপসোস আমার, আমি তোমাকে নিয়ে কোনো দিন লিখতে পারলাম না। অধরা আমি তোমাকে নিয়ে লিখতে চাই।
'অধরা' নামে কবিতা লিখেছি
এইতো কিছুদিন আগে,
মাঝে মাঝে কবিতা লিখতে
বেশ ভালই তো লাগে।
ক্লাসের মাঝে কবিতাটা আমি
দিলাম বন্ধুর হাতে,
কেউ আবার জানতে চাইল
কি লিখেছিস ওতে?
লেখাটুকু পড়া হলে পরে
বন্ধু আমাকে শুধায়,
লেখার মধ্যে কেমন যেন
দুখী লাগলো তোমায়?
আমি বলি, ‘হঠাৎ কেন
এরূপ মনে হল তোমার?
সত্যি বলছি এখন আর
কোন দুঃখ নেই আমার।
অতীতে আমি করেছিলাম
ভীষণ একটা ভুল,
চড়া মুল্যে আজও দিচ্ছি
সেই ভুলের মাশুল।
কি হয়েছিলো, যদিও তোমরা
সকলেই তা জানো,
এরপরও দু’একটা কথা
বলছি তবে শোনো।
ভালোবাসার হৃদয়টা বাড়িয়ে দিয়ে
করে ফেলেছিলাম পাপ,
বিবেককে আজ দংশন করে
সেই মহা অভিশাপ।
শুধুই ভালোবাসতে চেয়েছিলাম
স্বার্থ ছিলনা কোন,
সে তো ভেবেছিল, আমি এক
প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলাম যেন!
মিথ্যার আড়ালে বাস করে
সে নিদারুণ স্বার্থপর,
স্বার্থের মোহে আজ সে
আপনকেই করেছে পর।
একদিন যাকে না দেখলে
কিছুই লাগতো না ভালো,
আজ আমার তাকে দেখলেই
মুখ হয়ে যায় কালো।
ভালোবাসার সেই মধুর সম্পর্ক
সে করেছে কলঙ্কিত,
বিষাক্ত ছোবলে সে করেছে
বন্ধুত্ব প্রশমিত।
ছদ্মবেশের আড়ালে সে
খুঁজে নিয়েছে স্বজন,
আমাদের মাঝে তৈরি করেছে
দূরত্ব হাজার যোজন।
কত দক্ষতায় করেছে সে
হিসাব লাভ আর ক্ষতি,
সে কি ভেবেছে তাকে ছাড়া
নাই আমার কোনো গতি?
সে ভেবেছে করে ফেলেছি
দারুণ বাজিমাত,
নিজের কাজে একদিন সে
হবেই কুপোকাত।
বহুদিন থেকে সে আমাকে
দিয়ে এসেছে ধোঁকা,
তখন বুঝিনি, আজ বুঝেছি
আমি ছিলাম বড়ই বোকা।
তোরা ভেবেছিস হয়ত আমি
কিছুটা বদলে গিয়েছি,
আগেও যেমন ছিলাম আমি
এখনও তেমনি আছি!
জীবনে যখন ঘনিয়ে এল
দুঃখের কালো রাত,
তোরাই তখন বাড়িয়ে দিলি
বন্ধুত্বের সেই হাত।
বর্তমানকে সাথে করে
অতীত গিয়েছি ভুলে,
মনে করতে চাই না কিছু
এত ভাবলে কি আর চলে।
উল্টা-পাল্টা প্যাঁচাল পেড়ে
নষ্ট করলাম সময়,
লেখাটা পড়া হলে পরে
মারবি না তো আমায়?
আমাকে তোরা বন্ধু করে
তোদের কাছেই রাখিস,
তোরাই আমার বন্ধু ছিলি
তোরাই বন্ধু থাকিস।
সে আমার কল্পনাতে নয়, বাস্তবেও দেখা দিয়েছিলো। এসেছিলো অনেকটা সময় নিয়ে কিন্তু, যাবার বেলায় কেনো জানি একটু তাড়াতারিই গেলো। এমন কথা ছিলো না তার সাথে। সে আমাকে বলেছিলো, "আমরা আগামী পাঁচ বছর পর কেমন থাকবো জানি না, আগামী পাঁচ বছর পর আমাদের কি অবস্থা হবে জানি না। তবে আমি এইটুকুই জানি যে, আমি যদি এখন তোমাকে কথাগুলো না বলতে পারি, তবে হয়তো আর পারবো না। আমি তোমাকে ভালোবাসি হৃদয়" সময়তো পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। সে এখন অপর মেরুতে দাড়িয়ে সুখের সংসার করছে। আর এইদিকে, সেই অচেনা প্রেমটা আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।
সে এক অচেনা প্রেম
যেনো অন্ধকারে ভেসে ওঠা
আলোর রুপকথা,
গোপন রাখা মনের মাঝে
শত শত ব্যাথা।
সে এক অচেনা প্রেম
যেনো মনের ঘরে বসে থাকা
অচেনা কোনো পাখি,
ভোরের আলো দেখবে বলে
করছে ডাকাডাকি।
সে এক অচেনা প্রেম
যেন করুন চোখের ইসারাতে
তোমায় ডেকে যায়,
উষ্ম প্রেমের জোয়ার ভাটায়
ভেসে যেতে চায়।
সে এক অচেনা প্রেম
তোমায় ভালোবাসবে বলে
জেগেছে কতো রাত,
হাসির আড়ালে লুকিয়ে
রেখেছে কত শত আঘাত।
এই তো কিছুদিন আগে চলার পথে তার সাথে দেখা হয়েছিলো আমার। দীর্ঘ দিন পর আমি নির্লজ্জের মত তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম কেমন আছে সে। না, কোনো জবাব সে দিলো না। চাঁদ মুখের হাসির শেষ রেশটুকুও কেটে গিয়েছিলো।কত দিন তার সাথে কথা হয় নি তা কেউ বলতে পারবে না। যেন কয়েক শত যুগ পেরিয়ে গেছে। তাকে জানাতে চেয়েছিলাম, "জানো,কেউ আর খবর নেয় না আমার। তুমি যখন ছিলে তখন সব ছিল আমার। তুমি চলে যাওয়াতে সব ছেড়ে গেছে। আমি নীরবে কাঁদি আজও।জানো, আমার চোখের জল মুছিয়ে কেউ দেয় না।" কিন্তু, পারলাম না বলতে। সে চলে গেলো তার রাস্তা দিয়ে। আমিও চলে আসলাম নীরবে আমার রাস্তা ধরে। সত্যিই অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। সে এখন দুই সন্তানের জননী। তার সন্তানদেরকে তার মতোন করেই মানুষ করছে যেমনটা করেছিলো কার মা।
অনেক বছর হয়ে গেলো
হারিয়ে গেছি আমি,
চলার পথে সপ্নেরা আজ
অনেকখানি দামী।
অনেক বছর হয়ে গেলো
হয় না পুতুল খেলা,
মায়ের স্নেহের আঁচলখানি
করলো অবহেলা।
অনেক বছর হয়ে গেলো
রুপকথা আর নেই,
চোখের নদী ভাঙে দু'কূল
এই কথা ভাবতেই।
অনেক বছর হয়ে গেলো
কোথায় চাঁদের বুড়ি?
সন্ধ্যা রাতে উড়ে না আজ
রুপকথারই ঘুড়ি।
অনেক বছর হয়ে গেলো
ছোট্ট বেলার সাথী,
পরের ঘরে চলে গেছে
জ্বেলে সুখের বাতি।
অনেক বছর হয়ে গেছে
হারিয়ে গেছি আমি,
চলার পথে সুখেরা আজ
মৃত্যু পথগামী।
আমার জীবনটা এমন হয়তোবা নাও হতে পারতো। এই সমাজ, এর নিয়মকানুনের বাইরে যদি একটি জগৎ পাইতাম, তাহলে হয়তো অধরাকে হারাতে হতো না আমায়।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মধু মঙ্গল সিনহা ০৩/১০/২০১৭মানবতার পথে, ধন্যবাদ.
-
ফয়জুল মহী ০৩/১০/২০১৭প্রীতিকর শব্দ প্রয়োগে লেখাটি স্মার্ট হয়েছে
-
আজাদ আলী ০৩/১০/২০১৭শুভকামনা
-
কামরুজ্জামান সাদ ০৩/১০/২০১৭ছন্দময় গল্প!