শুকনো পাতা
শোনো অনিল, তোমাকে ছাড়া আমি আমার অস্তিত্ব কল্পনাই করতে পারি না। আর তুমি কিনা বলছো, আমার পাশে তুমি ছাড়া অন্য কেউ...? ছি... ছি... ছি! এটা তোমার একটি অসম্ভব কল্পনা।
-তাই যেন হয় লতা।
-হঠাৎ আজ তুমি এভাবে কথা বলছো কেন? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না!
-গতরাতে একটি স্বপ্ন দেখেছিলাম। স্বপ্ন ঠিক নয়- দুঃস্বপ্ন।
-বলো শুনি।
-বলবো ঠিক আছে। কিন্তু এটা বলার পর তোমাকে একটি প্রশ্ন করবো, উত্তর টা কিন্তু দিতে হবে?
-সম্ভব হলে দিবো ; এখন বলো।
-তুমি আর আমি একটি গহিন বনের মধ্য দিয়ে আঁকাবাঁকা সরু পথ ধরে হাঁটছি। পাশাপাশি। চারদিকে নিস্তব্ধ পরিবেশ। মাঝেমাঝে তোমার আমার কথা বিনিময় আর দু'জনার পায়ের শব্দ ছাড়া অন্য কোনো শব্দ নেই। অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ ; যেন গা ছমছম করে। দুজনে হাঁটছি। হঠাৎ একটি গাছের ডাল হেলে এসে আমার শরীরে লেগে গেলো! ধিরেধিরে ডালটি উপরে উঠছে ; অমনি তুমি আমাকে টেনে ধরলে। ডালটি আর উপরে উঠতে পারছে না। কিন্তু তুমি একটু ছাড়তেই ডালটি উপরে উঠতে চায়; আবার তুমি ধরে ফেলো। তখন আমি মনেমনে চাচ্ছি, তুমি আমাকে ধরে থাকো। কিন্তু ধরে রাখতে তোমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো।
-তারপর?
-তারপর, ফোন বেজে উঠলো, ঘুম ভেঙে গেলো। দেখি তুমি ফোন দিয়েছো। ভোর হয়ে গেছে ; তোমার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করলাম। ফোন দিয়ে খুব ভালো করেছো।
-কেন?
-আমি তো ঘুমের মধ্যে হাঁফিয়ে উঠেছিলাম! তুমি ফোন না দিলে যে কী হতো?
-খুব সুন্দর স্বপ্ন তো; এর সঙ্গে তোমার ঐসব কথা বলার সম্পর্ক কী?
-তেমন কিছু না। একটি প্রশ্ন করতে চেয়েছিলাম?
-করো।
-প্রশ্ন হলো, বাস্তবে যদি এমনটি হয়, তাহলে তুমি কী করবে? আমাকে ধরে রাখবে নাকি ছেড়ে দিবে?
-ধ্যাত! তুমি একটা আজব মানুষ। বাস্তবে কখনো এমন হয় নাকি? ঠিক আছে রাখলাম, পরে কথা হবে। মা রুমে আসছে।
-উত্তর টা দাও।
-বললাম তো, মা রুমে আসছে, পরে হবে ওসব।
-ঠিক আছে।
এতক্ষণ লতা শুয়েশুয়ে অনিলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিল। পুরো নাম হেমলতা। সবাই ডাকে লতা বলে।
লতার মা রুমে ঢুকলেন।
-লতা, বিছানা থেকে না উঠতেই এতো সকালবেলা কার সঙ্গে ফোনে কথা?
-না মা, তেমন কেউ না। আমার বান্ধবী উর্মি। গতকাল কলেজে যাই নি তো, তাই জেনে নিলাম আজ কলেজ বন্ধ না খোলা।
-কলেজ যাওনি মানে! তুমি তো গতকাল কলেজ যাওয়ার জন্য বের হলে?
-কলেজ তো গেছলাম। কিন্তু দেখলে না একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরলাম। শেষের ক্লাসটি করি নি; এবার বুঝেছ?
-হ্যাঁ, সব বুঝেছি! এখন উঠে নাস্তা করে কলেজ যাও। আজ যেন সব ক্লাস করা হয়।
হেমলতার মা চলে গেলেন রুম থেকে। হেমলতা নাস্তা সেরে কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো। সে কলেজ নাকি পার্কে গেলো নিজেই ভালো জানে!
এভাবে দিন যায়। কখনো কলেজ কিংবা কখনো পার্কে সময় কেটে যায় অনিল ও হেমলতার। দুজনের সম্পর্ক আরো গভীর থেকে গভীরতর হয়ে উঠে। জীবন বয়ে চলে প্রবাহমান নদীর মতো।
হঠাৎ একদিন, সড়ক দূর্ঘটনায় পায়ে প্রচণ্ড আঘাত পায় অনিল! ফলে সে পায়ে হাঁটার ক্ষমতাটুকু হারিয়ে ফেলে। অনিলের এই অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনার পর হেমলতার মানসিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো। ফলে ওর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলো দিনে দিনে। মেয়ের এ অবস্থা দেখে ওর মা'র ভালো ঠেকছে না।
-লতা, কী হয়েছে তোমার?
-কই কিছু হয় নি তো মা।
-কিছু হয় নি বললেই হলো। আমি তোমার মা, তোমার সবকিছু বুঝতে পারি। বলো তোমার কী সমস্যা?
-মা, আমার একী হলো?
-কাঁদছো কেন? খুলে বলো কী হয়েছে তোমার?
-অনিল হাঁটতে পারে না।
-অনিল? হাঁটতে পারে না! কী বলছো এসব? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। বলো অনিল কে?
-আমার বন্ধু। আমি ওকে খুব ভালোবাসি, মা। কিন্তু সে সড়ক দূর্ঘটনায় পায়ে আঘাত পেয়ে, আর হাঁটতে পারে না। আমি এখন কী করবো, মা?
-তোমাকে কিছুই করতে হবে না। কাঁদছো কেন? চুপ করো। একটি বিকলাঙ্গ ছেলেকে নিয়ে জীবনে সুখী হতে পারবে না। এটুকু তো তুমি বুঝো। অতএব ওকে ভুলে যাও লতা।
-একি সম্ভব মা?
-হ্যাঁ, সম্ভব। একজন নারীর জীবনে এরকম অনেক কিছুই ঘটে, আমি জানি এটা অনেক কঠিন। কিন্তু এটা তোমাকে মেনে নিতেই হবে। তোমার মামার ছেলে বিলাস, লন্ডনে থাকে। এবার দেশে ফিরে বিয়ে করে, বউ নিয়ে লন্ডনে চলে যাবে।
এই বলে হেমলতাকে বুকে টেনে নিয়ে চোখের পানি মুছে দিলেন ওর মা।
এজগতে মনেহয় সব কিছুই পরিবর্তনশীল। খুব সম্ভবত মানুষের মনটাও এর বাইরে নয়। হেমলতা আর অনিলের সঙ্গে যোগাযোগ করে না। হয়তো একটু আধটু মনে পড়ে মাঝেমাঝে, তবে তা ভুলে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছের কাছে খুবই কিঞ্চিৎ।
কিছুদিন পর। হেমলতার ফোন বেজে উঠলো। অনিল ফোন করেছে। ইচ্ছে অনিচ্ছের মাঝে ফোনটা রিসিভ করলো হেমলতা। হেমলতাকে একটিবারের জন্য অনিল ওর বাসায় ডাকলো। হেমলতা একটু ভেবে অনিলের সে ডাকে সাড়া দিলো।
অনিল ওর বাসার বারান্দায় হুইল চেয়ারে বসে আছে। মুখোমুখি একটি চেয়ারে হেমলতা বসে। দুজনই নীরব। অনিল নীরবতা ভাঙলো।
-মনেহয় আমাকে ছেড়ে দিতে...
-মানে?
-সেদিনের স্বপ্নের কথা বলছি। প্রশ্ন করেছিলাম, আমাকে ছেড়ে দিবে নাকি ধরে রাখবে? যদিও উত্তর সেদিন দাও নি। তবে আজ মনে হচ্ছে তুমি ছেড়ে দিতে।
হেমলতা মাথা নিচু করে নীরবে বসে আছে। কোনো কথা বলছে না, অনিলই আবার বলতে লাগলো।
-সেদিন ফোনে বলেছিলে, আমাকে ছাড়া তোমার অস্তিত্ব অকল্পনীয়। কিন্তু আজ? এতো দ্রুত ভুলতে পারলে? কেন ভুলে গেলে?
-বলতে পারবো না। আমাকে দেখা হয়ে গেছে? এখন আমি চললাম।
এই বলে হেমলতা চেয়ার থেকে উঠলো।
-দাঁড়াও! আমি তোমার রূপ দেখতে এখানে ডাকি নি। এই প্রশ্নের উত্তরটা জানার জন্য ডেকেছি। উত্তরটা বলে যাও, কেন ভুলে গেলে?
-বললাম তো জানি না।
-তুমি জানো। প্লিজ উত্তরটা দিয়ে যাও।
কিছুক্ষণ ওদের মাঝে ছোটখাটো তর্ক হচ্ছিল। অনিলের বাসার সামনে বকুল ফুলের গাছ। হঠাৎ বকুলের একটি শুকনো পাতা অনিলের সামনে এসে পড়লো। পাতাটি অনিল হাতে নিয়ে কী যেন ভাবতে লাগলো। হঠাৎ অনিল চিৎকার করে উঠলো, উত্তর পেয়েছি লতা। তুমি এখন যেতে পারো।
হেমলতা চমকে উঠে বললো, 'কী পেয়েছ?'
-তুমি কেন আমাকে ভুলে গেছো। এ প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি।
-বলো শুনি, কেনো ভুলে গেলাম?
অনিল শুকনো বকুল পাতাটি হেমলতার সামনে তুলে ধরল।
-তাই যেন হয় লতা।
-হঠাৎ আজ তুমি এভাবে কথা বলছো কেন? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না!
-গতরাতে একটি স্বপ্ন দেখেছিলাম। স্বপ্ন ঠিক নয়- দুঃস্বপ্ন।
-বলো শুনি।
-বলবো ঠিক আছে। কিন্তু এটা বলার পর তোমাকে একটি প্রশ্ন করবো, উত্তর টা কিন্তু দিতে হবে?
-সম্ভব হলে দিবো ; এখন বলো।
-তুমি আর আমি একটি গহিন বনের মধ্য দিয়ে আঁকাবাঁকা সরু পথ ধরে হাঁটছি। পাশাপাশি। চারদিকে নিস্তব্ধ পরিবেশ। মাঝেমাঝে তোমার আমার কথা বিনিময় আর দু'জনার পায়ের শব্দ ছাড়া অন্য কোনো শব্দ নেই। অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ ; যেন গা ছমছম করে। দুজনে হাঁটছি। হঠাৎ একটি গাছের ডাল হেলে এসে আমার শরীরে লেগে গেলো! ধিরেধিরে ডালটি উপরে উঠছে ; অমনি তুমি আমাকে টেনে ধরলে। ডালটি আর উপরে উঠতে পারছে না। কিন্তু তুমি একটু ছাড়তেই ডালটি উপরে উঠতে চায়; আবার তুমি ধরে ফেলো। তখন আমি মনেমনে চাচ্ছি, তুমি আমাকে ধরে থাকো। কিন্তু ধরে রাখতে তোমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো।
-তারপর?
-তারপর, ফোন বেজে উঠলো, ঘুম ভেঙে গেলো। দেখি তুমি ফোন দিয়েছো। ভোর হয়ে গেছে ; তোমার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করলাম। ফোন দিয়ে খুব ভালো করেছো।
-কেন?
-আমি তো ঘুমের মধ্যে হাঁফিয়ে উঠেছিলাম! তুমি ফোন না দিলে যে কী হতো?
-খুব সুন্দর স্বপ্ন তো; এর সঙ্গে তোমার ঐসব কথা বলার সম্পর্ক কী?
-তেমন কিছু না। একটি প্রশ্ন করতে চেয়েছিলাম?
-করো।
-প্রশ্ন হলো, বাস্তবে যদি এমনটি হয়, তাহলে তুমি কী করবে? আমাকে ধরে রাখবে নাকি ছেড়ে দিবে?
-ধ্যাত! তুমি একটা আজব মানুষ। বাস্তবে কখনো এমন হয় নাকি? ঠিক আছে রাখলাম, পরে কথা হবে। মা রুমে আসছে।
-উত্তর টা দাও।
-বললাম তো, মা রুমে আসছে, পরে হবে ওসব।
-ঠিক আছে।
এতক্ষণ লতা শুয়েশুয়ে অনিলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিল। পুরো নাম হেমলতা। সবাই ডাকে লতা বলে।
লতার মা রুমে ঢুকলেন।
-লতা, বিছানা থেকে না উঠতেই এতো সকালবেলা কার সঙ্গে ফোনে কথা?
-না মা, তেমন কেউ না। আমার বান্ধবী উর্মি। গতকাল কলেজে যাই নি তো, তাই জেনে নিলাম আজ কলেজ বন্ধ না খোলা।
-কলেজ যাওনি মানে! তুমি তো গতকাল কলেজ যাওয়ার জন্য বের হলে?
-কলেজ তো গেছলাম। কিন্তু দেখলে না একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরলাম। শেষের ক্লাসটি করি নি; এবার বুঝেছ?
-হ্যাঁ, সব বুঝেছি! এখন উঠে নাস্তা করে কলেজ যাও। আজ যেন সব ক্লাস করা হয়।
হেমলতার মা চলে গেলেন রুম থেকে। হেমলতা নাস্তা সেরে কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো। সে কলেজ নাকি পার্কে গেলো নিজেই ভালো জানে!
এভাবে দিন যায়। কখনো কলেজ কিংবা কখনো পার্কে সময় কেটে যায় অনিল ও হেমলতার। দুজনের সম্পর্ক আরো গভীর থেকে গভীরতর হয়ে উঠে। জীবন বয়ে চলে প্রবাহমান নদীর মতো।
হঠাৎ একদিন, সড়ক দূর্ঘটনায় পায়ে প্রচণ্ড আঘাত পায় অনিল! ফলে সে পায়ে হাঁটার ক্ষমতাটুকু হারিয়ে ফেলে। অনিলের এই অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনার পর হেমলতার মানসিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো। ফলে ওর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলো দিনে দিনে। মেয়ের এ অবস্থা দেখে ওর মা'র ভালো ঠেকছে না।
-লতা, কী হয়েছে তোমার?
-কই কিছু হয় নি তো মা।
-কিছু হয় নি বললেই হলো। আমি তোমার মা, তোমার সবকিছু বুঝতে পারি। বলো তোমার কী সমস্যা?
-মা, আমার একী হলো?
-কাঁদছো কেন? খুলে বলো কী হয়েছে তোমার?
-অনিল হাঁটতে পারে না।
-অনিল? হাঁটতে পারে না! কী বলছো এসব? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। বলো অনিল কে?
-আমার বন্ধু। আমি ওকে খুব ভালোবাসি, মা। কিন্তু সে সড়ক দূর্ঘটনায় পায়ে আঘাত পেয়ে, আর হাঁটতে পারে না। আমি এখন কী করবো, মা?
-তোমাকে কিছুই করতে হবে না। কাঁদছো কেন? চুপ করো। একটি বিকলাঙ্গ ছেলেকে নিয়ে জীবনে সুখী হতে পারবে না। এটুকু তো তুমি বুঝো। অতএব ওকে ভুলে যাও লতা।
-একি সম্ভব মা?
-হ্যাঁ, সম্ভব। একজন নারীর জীবনে এরকম অনেক কিছুই ঘটে, আমি জানি এটা অনেক কঠিন। কিন্তু এটা তোমাকে মেনে নিতেই হবে। তোমার মামার ছেলে বিলাস, লন্ডনে থাকে। এবার দেশে ফিরে বিয়ে করে, বউ নিয়ে লন্ডনে চলে যাবে।
এই বলে হেমলতাকে বুকে টেনে নিয়ে চোখের পানি মুছে দিলেন ওর মা।
এজগতে মনেহয় সব কিছুই পরিবর্তনশীল। খুব সম্ভবত মানুষের মনটাও এর বাইরে নয়। হেমলতা আর অনিলের সঙ্গে যোগাযোগ করে না। হয়তো একটু আধটু মনে পড়ে মাঝেমাঝে, তবে তা ভুলে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছের কাছে খুবই কিঞ্চিৎ।
কিছুদিন পর। হেমলতার ফোন বেজে উঠলো। অনিল ফোন করেছে। ইচ্ছে অনিচ্ছের মাঝে ফোনটা রিসিভ করলো হেমলতা। হেমলতাকে একটিবারের জন্য অনিল ওর বাসায় ডাকলো। হেমলতা একটু ভেবে অনিলের সে ডাকে সাড়া দিলো।
অনিল ওর বাসার বারান্দায় হুইল চেয়ারে বসে আছে। মুখোমুখি একটি চেয়ারে হেমলতা বসে। দুজনই নীরব। অনিল নীরবতা ভাঙলো।
-মনেহয় আমাকে ছেড়ে দিতে...
-মানে?
-সেদিনের স্বপ্নের কথা বলছি। প্রশ্ন করেছিলাম, আমাকে ছেড়ে দিবে নাকি ধরে রাখবে? যদিও উত্তর সেদিন দাও নি। তবে আজ মনে হচ্ছে তুমি ছেড়ে দিতে।
হেমলতা মাথা নিচু করে নীরবে বসে আছে। কোনো কথা বলছে না, অনিলই আবার বলতে লাগলো।
-সেদিন ফোনে বলেছিলে, আমাকে ছাড়া তোমার অস্তিত্ব অকল্পনীয়। কিন্তু আজ? এতো দ্রুত ভুলতে পারলে? কেন ভুলে গেলে?
-বলতে পারবো না। আমাকে দেখা হয়ে গেছে? এখন আমি চললাম।
এই বলে হেমলতা চেয়ার থেকে উঠলো।
-দাঁড়াও! আমি তোমার রূপ দেখতে এখানে ডাকি নি। এই প্রশ্নের উত্তরটা জানার জন্য ডেকেছি। উত্তরটা বলে যাও, কেন ভুলে গেলে?
-বললাম তো জানি না।
-তুমি জানো। প্লিজ উত্তরটা দিয়ে যাও।
কিছুক্ষণ ওদের মাঝে ছোটখাটো তর্ক হচ্ছিল। অনিলের বাসার সামনে বকুল ফুলের গাছ। হঠাৎ বকুলের একটি শুকনো পাতা অনিলের সামনে এসে পড়লো। পাতাটি অনিল হাতে নিয়ে কী যেন ভাবতে লাগলো। হঠাৎ অনিল চিৎকার করে উঠলো, উত্তর পেয়েছি লতা। তুমি এখন যেতে পারো।
হেমলতা চমকে উঠে বললো, 'কী পেয়েছ?'
-তুমি কেন আমাকে ভুলে গেছো। এ প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি।
-বলো শুনি, কেনো ভুলে গেলাম?
অনিল শুকনো বকুল পাতাটি হেমলতার সামনে তুলে ধরল।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সীমা সান্যাল ১৫/০১/২০১৬হৃদয় ছুঁয়ে গেলো।।।
-
ধ্রুব রাসেল ১২/০১/২০১৬অনেক ভাল লিখলেন।
-
দেবব্রত সান্যাল ১২/০১/২০১৬তারুণ্যে স্বাগত। ভালো গল্পের অপেক্ষায় থাকবো।