সুখ ও প্রেম
দ্বিতীয় তলায় থাকতাম। পূবের ঝুলবারান্দায় বসে আকাশের দিকে চেয়ে রোজ বিকেলে আকাশ দেখতাম । সূর্যহীন ক্ষিপ্রতাশূন্য আকাশ । একদিন সেই চোখ পড়লো সামনের পাঁচতল ভবনের ছাদে। একটি বালিকা। রেলিং এ দু'হাত চেপে চেয়ে ছিলো । হয়তো সেও আকাশ দেখতো। পশ্চিম আকাশের শেষ বিকেলের লাল সূর্য টা হয়তো ওর পছন্দ। এরপর রোজ আকশ দেখতে এসে রেলিং এ হাত চাপা বালিকা দেখতাম। সে কি এতো নিচের এই যুবক কে দেখতো? এভাবে নিয়ম করে রোজ বিকেলে মুখোমুখি দুই ভবনের দুইজোড়া চোখ আকাশ দেখতো।
সময়ের সাধনে দূর থেকেই বালিকার প্রতি ভালোলাগা শুরু। ভালোলাগা থেকে প্রাত্যহিক প্রাপ্ত সুখগুলো জমাতে থাকি। এক বিকেলে। সুখগুলো কিছু একটা পাওয়ার তাগিদে আড়মোড়া দেয়া শুরু করলে, বুক পকেটে মাটির হাতি ভাঙা খুচরো কিছু সুখ নিয়ে ভালোবাসতে গিয়েছিলাম সদ্য নাবালিকা ছেড়ে আসা সেই বালিকার কাছে, সেই ছাদে। বালিকা ছাদে এসে আমাকে দেখে প্রশ্নবোধক চাহনিতে মায়া ছড়ালো; আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়! দূরের ছাদে রেলিং ধরে দাঁড়ানো সব বালিকাই সুন্দর, কিন্তু এ যে সমান্তরাল সুন্দর কাছে থেকেও কে জানতো! আমি সুখপূর্ণ বুক নিয়ে বললাম, 'সামনের ভবনের দ্বিতীয় তলার বিকেল বেলার ...'
আমার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বললো, 'যুবক, চিনতে পেরেছি, কী চাও?'
-প্রেম।
-বিনিময়ে কী দিবে?
-সুখ।
বালিকা স্মিত হাসি মুখে মাখিয়ে বললো, 'সুখ আর প্রেম এক পৃথিবীর দুই মেরু; এ দুইয়ে বিনিময় চলে না, যুবক।'
বালিকা দাম্ভিকতা দেখিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিল সেদিন। আমি আনতবদনে ফিরে এসেছিলাম। ভবনের অনতিদূরে একটি বাঁকা নদী ছিলো, নদীটির প্রচলিত নাম 'সমুদ্দুর'। বাঁকা নদীটির ডিঙি-মাঝি শূন্য এক মোহনায় সেদিন সব সুখ ভাসিয়ে দিয়েছিলাম।
গত সোমবার শেষ বিকেল। যথাস্থানে বসে আকাশ দেখেছিলাম। ছোট বোন অথৈ ওর নবম শ্রেণির ব্যাকরণ প্রশ্নপত্র নিয়ে উপস্থিত, 'দাদা, পটল তোলা বাগধারাটির অর্থ কী?'
পরদিন বিকেলেও বসেই ছিলাম। ভিতর থেকে অথৈ, 'দাদা, তোর বন্ধু এসেছে।'
ভাবলাম অসময়ে কোন বন্ধু, বললাম, 'এখানে পাঠিয়ে দে।'
-কী করো, যুবক? মন খারাপ?
আমি চকিত চাহনিতে তাকালাম, রোদ্দুর মাখা কচি সবুজ শাড়ি পরনে জড়িয়ে আর খোঁপায় কৃষ্ণচূড়া গুঁজে সেই বালিকা এসেছে আমার পূবমুখী ঝুলবারান্দায়! ওদিকে বালিকাশূন্য ছাদ আর নিরেট নীল পূবের আকাশ!
সে মুখে কিঞ্চিৎ বিস্ময় আর হাসি মেখে বললো, 'মেয়েটি তাহলে তোমার ছোট বোন?'
আমি কণ্ঠে অবান্তর রাগ চড়িয়ে বললাম, 'কী চাও?'
-যুবক, একমুঠো সুখ দাও, প্রেম দিবো । আমি বললাম, 'সে তো সেদিনই ঐ সমুদ্দুরের মোহনায় ভাসিয়েছি, চলে যাও।' মুহূর্তেই চাঁদমুখে গ্রহণ লাগলো। বালিকা বেরিয়ে গেলো। আমি গ্রিলের ফাঁকে দেখলাম, একহাতে শাড়ি সামলিয়ে উল্টো পথে দৌড়াচ্ছে সে । চোখে পড়লো, লাল আলতার আলপনা আঁকা বালিকার পাদুকাশূন্য দু'পায়ের রূপোর পায়েল।
পরদিন প্রভাতে বিছানা ছেড়ে একটু বাইরে দাঁড়াতেই সমুদ্দুর তীরে জনকোলাহল শুনতে পেলাম। ছুটে গিয়ে সেই বাঁকা নদীর ডিঙি-মাঝি শূন্য মোহনার জলে ভাসতে দেখলাম, সুখ আর প্রেমের মিলনোৎসব!
সেই ঝুলবারান্দায় বসে আজও পূবের ক্ষিপ্রতাশূন্য আকাশ দেখি। ওদিকে বালিকাশূন্য ছাদ আর নিরেট নীল পূবের আকাশ।
সময়ের সাধনে দূর থেকেই বালিকার প্রতি ভালোলাগা শুরু। ভালোলাগা থেকে প্রাত্যহিক প্রাপ্ত সুখগুলো জমাতে থাকি। এক বিকেলে। সুখগুলো কিছু একটা পাওয়ার তাগিদে আড়মোড়া দেয়া শুরু করলে, বুক পকেটে মাটির হাতি ভাঙা খুচরো কিছু সুখ নিয়ে ভালোবাসতে গিয়েছিলাম সদ্য নাবালিকা ছেড়ে আসা সেই বালিকার কাছে, সেই ছাদে। বালিকা ছাদে এসে আমাকে দেখে প্রশ্নবোধক চাহনিতে মায়া ছড়ালো; আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়! দূরের ছাদে রেলিং ধরে দাঁড়ানো সব বালিকাই সুন্দর, কিন্তু এ যে সমান্তরাল সুন্দর কাছে থেকেও কে জানতো! আমি সুখপূর্ণ বুক নিয়ে বললাম, 'সামনের ভবনের দ্বিতীয় তলার বিকেল বেলার ...'
আমার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বললো, 'যুবক, চিনতে পেরেছি, কী চাও?'
-প্রেম।
-বিনিময়ে কী দিবে?
-সুখ।
বালিকা স্মিত হাসি মুখে মাখিয়ে বললো, 'সুখ আর প্রেম এক পৃথিবীর দুই মেরু; এ দুইয়ে বিনিময় চলে না, যুবক।'
বালিকা দাম্ভিকতা দেখিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিল সেদিন। আমি আনতবদনে ফিরে এসেছিলাম। ভবনের অনতিদূরে একটি বাঁকা নদী ছিলো, নদীটির প্রচলিত নাম 'সমুদ্দুর'। বাঁকা নদীটির ডিঙি-মাঝি শূন্য এক মোহনায় সেদিন সব সুখ ভাসিয়ে দিয়েছিলাম।
গত সোমবার শেষ বিকেল। যথাস্থানে বসে আকাশ দেখেছিলাম। ছোট বোন অথৈ ওর নবম শ্রেণির ব্যাকরণ প্রশ্নপত্র নিয়ে উপস্থিত, 'দাদা, পটল তোলা বাগধারাটির অর্থ কী?'
পরদিন বিকেলেও বসেই ছিলাম। ভিতর থেকে অথৈ, 'দাদা, তোর বন্ধু এসেছে।'
ভাবলাম অসময়ে কোন বন্ধু, বললাম, 'এখানে পাঠিয়ে দে।'
-কী করো, যুবক? মন খারাপ?
আমি চকিত চাহনিতে তাকালাম, রোদ্দুর মাখা কচি সবুজ শাড়ি পরনে জড়িয়ে আর খোঁপায় কৃষ্ণচূড়া গুঁজে সেই বালিকা এসেছে আমার পূবমুখী ঝুলবারান্দায়! ওদিকে বালিকাশূন্য ছাদ আর নিরেট নীল পূবের আকাশ!
সে মুখে কিঞ্চিৎ বিস্ময় আর হাসি মেখে বললো, 'মেয়েটি তাহলে তোমার ছোট বোন?'
আমি কণ্ঠে অবান্তর রাগ চড়িয়ে বললাম, 'কী চাও?'
-যুবক, একমুঠো সুখ দাও, প্রেম দিবো । আমি বললাম, 'সে তো সেদিনই ঐ সমুদ্দুরের মোহনায় ভাসিয়েছি, চলে যাও।' মুহূর্তেই চাঁদমুখে গ্রহণ লাগলো। বালিকা বেরিয়ে গেলো। আমি গ্রিলের ফাঁকে দেখলাম, একহাতে শাড়ি সামলিয়ে উল্টো পথে দৌড়াচ্ছে সে । চোখে পড়লো, লাল আলতার আলপনা আঁকা বালিকার পাদুকাশূন্য দু'পায়ের রূপোর পায়েল।
পরদিন প্রভাতে বিছানা ছেড়ে একটু বাইরে দাঁড়াতেই সমুদ্দুর তীরে জনকোলাহল শুনতে পেলাম। ছুটে গিয়ে সেই বাঁকা নদীর ডিঙি-মাঝি শূন্য মোহনার জলে ভাসতে দেখলাম, সুখ আর প্রেমের মিলনোৎসব!
সেই ঝুলবারান্দায় বসে আজও পূবের ক্ষিপ্রতাশূন্য আকাশ দেখি। ওদিকে বালিকাশূন্য ছাদ আর নিরেট নীল পূবের আকাশ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শান্তনু ব্যানার্জ্জী ১৪/০১/২০১৬ভালো লাগল ।
-
মনিরুজ্জামান জীবন ০৯/০১/২০১৬অসাধারণ লেখা!
মুগ্ধতা একরাশ!
সুন্দর অভিব্যক্তির প্রকাশ!!! -
জুনায়েদ বি রাহমান ০৭/০১/২০১৬বেশ
-
ধ্রুব রাসেল ০৭/০১/২০১৬ভাল লেখনী।
-
জে এস সাব্বির ০৭/০১/২০১৬তারুণ্যে স্বাগত । দুটি মনের মিলন না হলে সুইসাইড! গল্পের এই ধারাটা ছিড়তে চেষ্টা করুণ ।গতানুগতিক ধারার লিখাটা পাঠক চাইবে না ।ডিফারেন্ট কিছু দিবেন ।। এমনিতে খুব ভালই হয়েছে ।
-
পরশ ০৬/০১/২০১৬ভালো