প্রেয়সী
বাজল বিয়ের বাঁশি
ফুটল বিয়ের ফুল,
নতুন জীবন গড়তে গিয়ে
করো নাকো ভুল।।
প্রিয় প্রেয়সী,
শুনলাম বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে ফেলেছে তোমার অভিভাবকেরা। “অভিভাবক” শব্দটি মনে রেখ। নতুন জীবনের কোন এক প্রা্ন্তে পুরাতন হয়ে পড়ে আছে নিরব এই শব্দটি। নতুন জীবনের সাথে সাথে তাকেও নতুন করে তুলো।
কি আজে বাজে লিখছি আমি। হঠাৎ কবিতারা পালালো তাই চার লাইনের একটি ছোট পঙতি পাঠিয়ে দিলাম। কিছু মনে করো না।
হয়ত আমি তোমাকে মনে করি। তোমার হয়ত সময় হয়ে উঠেনা।
“হয়ত” শব্দটি তোমার নতুন জীবনের কোথাও স্থান দিও না। হয়ত, যদিও, কিন্তু, ভাবছিলাম বা ভাবছি এসব ছোট ছোট শব্দগুলি নতুন জীবনকে বিদির্ণ করে দিতে সক্ষম।
তোমার জীবনে বিয়ে তোমার একটা নতুন আবিষ্কার। সত্যিই আবিষ্কারের এই নেশায় না জানি কতনা রোমান্স তোমার ভেতরে কাজ করছে। শিউলী ফুলের মত রোমা্ন্সগুলি ঝরে ঝরে শিশির স্নাতহচ্ছে। সকালের মিষ্টি রোদে শিশির কণাগুলি কেমন হিরের মত চকচক করছে। তোমার ভেতরের হিরক্জ্জল শিশির কণাগুলিকে কখনো নিঃশেষ হয়ে যেতে দিও না। তাকে ভালবেস, যত্ন করে রেখ তোমার অন্তরের অন্তস্থলে রাখা সিন্ধুকের মাঝে। মনের খেয়ালে কখনো অযত্নে রেখনা।
একটা কথা, কখনো তুমি শেষ মেনে নিওনা। যেখাসে শেষ, সেখান থেকে তুমি শুরু করবে।
চিঠি পড়া হয়ে গেলে তার মূল্য কমে যায়,থাকে শুধু একটু ভাবনা। সেটাও এক সময় বিলিন হয়ে যায়। কেউ কেউ যত্ন করে তুলে রাখে। কিন্তু বের করে দেখার আর সুযোগ হয়ে উঠে না।
এটিও অমনই একটি চিঠি, পড়া শেষ হলে টেবিলের নিচে রাখা ছোট্ট পাত্রে ফেলে দিও যেন সহজে ডাষ্টবিনে জায়গা করে নিতে পারে।
ভাল থেকো, সুখি থেকো, সুন্দর এই ভূবনে নতুন আবিষ্কারের মাঝে নিজেকে সুখি করে তুলো অনন্ত কালের জন্য।
ইতি-----
(একসময়ের) তোমার শিমুদা
শিমুদার প্রেরিত পত্র খানি প্রেয়সী পড়েছে কি না তা জানা যায়নি। হয়ত পড়ে নি অথবা এমন ও হতে পারে প্রেয়সী পত্র খানি আদৌ পায়নি । যদি পড়ত অন্তত কেমন আছ কথাটি লিখে পাঠাত। শিমুদার এ ছো্ট্ট বিশ্বাস টুকু ছিল। শিমুদার চোখ দুটোর দিকে তাকালে মনে হয় সে বিশ্বাস এখনো আছে।
শিমুদা শোভার দুটি চোখের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে। শোভা লজ্জিত হয়ে বলে দাদা, তুই আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কি দেখিস। শিমুদা দুচোখের অশ্রু ছেড়ে দিয়ে বলে তোর চোখের তাঁরা দেখি। দাদা, তোকে আরো কতক বার দেখেছি তুই একা একা কাঁদিস, কেন কাঁদিস বল তো? কিসের দুঃখ তোর?
শিমুদার ছোট বোন শোভা। সহজ সরল একেবারে শান্ত স্বভাবের মেয়ে। শোভার দুটি মায়া ভরা চোখ প্রেয়সীর চোখের মায়াকে আকড়ে ধরে আছে। তাই শিমুদা শোভার দুটি চোখের তাঁরায় প্রেয়সীকে খুঁজে।
প্রেয়সীকে শোভা ভাল রকম চেনে। প্রেয়সী যেন শোভার খেলার সাথী ছিল। একেবারে আপনের আপন।
কতবার দাদা বলেছে- প্রেয়সী শোভা কি তোমার যমজ বোন।
দুষ্টুমিতে ফেটে পড়ে শোভা বলে- তু্ই যে কি বলিস দাদা?
-কেন রে ভাল করে আয়নায় দেখ তোর দুটি চোখ আর প্রেয়সীর চোখ এক কিনা?
প্রেয়সী লজ্জাবনত হয়ে লম্বা চুলের ফাকে মিটি মিটি হাসত। ভারি সুন্দর লাগে প্রেয়সীকে, ও যখন হাসে।
শোভা প্রেয়সীকে পেলে একেবারে নাওয়া খাওয়া ভুলে যেত। দিদি এদিকে এস তো তোমার মুখ খানা একটু এঁকে দেই। কাজলটা হাতে নিয়ে দিদির লাল ঠোঁটের নিচে তিল এঁকে আয়নাটা সামনে ধরে বলত- দেখ দিদি তোমাকে কত সুন্দর লাগছে।
যা, পাগলি। আয় তোর হাতে নেল পলিশ লাগিয়ে দেই। তোর মত আমার যদি চাঁপা ফুলের আঙ্গুল হতরে।
টুপ করে শিমুদা বলে উঠে- কেন? তোমার হাতে কি টগর ফুলের আঙ্গুল?
প্রেয়সী একবার চোখ তুলে তাকাতো। তারপর সামনের চুল গুলো মুখে এসে পড়ত । কিছু বলত না। আপন মনে একটু মিষ্টি করে হাসত।শিমুদার চোখ এড়াতো না ।
প্রেয়সী এখন আর নেই এখানে। অনেক কাল পর প্রেয়সীরা এসেছিল বেড়াতে।শিমুদাদের পাশের প্রতিবেশিই ওর মামা বাড়ী।প্রেয়সীর বাবা কোলকাতায় থাকে।প্রেয়সীরাও এবার স্থায়ী ভাবে চলে যাবে বলে স্থীর করেছে প্রেয়সীর বাবা।সেখানে গিয়ে প্রেয়সী নতুন করে পড়ালেখা শুরুকরবে।এইটুকু জেনেছিল শিমুদা।
কিন্তু বিষয়টা মোটেই সেরকম ছিল না। প্রেয়সী কলকাতায় যেতে চাইত না, চায় ও না।তাই তার বাবা এফন্দিটুকু করেছিল। সেখানে গিয়ে ডাক্তারী পাশ ভাল ছেলের সাথে বিয়ে দেবে বলে সেখানেও কথা হয়েছে।
প্রেয়সীর চলে যাওয়ার কথা শুনে শোভা অনেক কেঁদেছিল -দিদি তুমি চলে গেলে আমাদের ভুলে যাবে না তো? যেও না দিদি।
-নারে শোভা তোকে কি ভুলে থাকতে পারি? দেখিস আমি খুশব তাড়াতাড়ি ফিরে আসব।শিমুদাকে বলিস প্রেয়সী তাড়াতাড়িই ফিরে আসবে।যাওয়ার বেলায় তো দেখা হলনা।শোভা, কখনো মন খারাপ করবি না কিন্তু।
ফুটল বিয়ের ফুল,
নতুন জীবন গড়তে গিয়ে
করো নাকো ভুল।।
প্রিয় প্রেয়সী,
শুনলাম বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে ফেলেছে তোমার অভিভাবকেরা। “অভিভাবক” শব্দটি মনে রেখ। নতুন জীবনের কোন এক প্রা্ন্তে পুরাতন হয়ে পড়ে আছে নিরব এই শব্দটি। নতুন জীবনের সাথে সাথে তাকেও নতুন করে তুলো।
কি আজে বাজে লিখছি আমি। হঠাৎ কবিতারা পালালো তাই চার লাইনের একটি ছোট পঙতি পাঠিয়ে দিলাম। কিছু মনে করো না।
হয়ত আমি তোমাকে মনে করি। তোমার হয়ত সময় হয়ে উঠেনা।
“হয়ত” শব্দটি তোমার নতুন জীবনের কোথাও স্থান দিও না। হয়ত, যদিও, কিন্তু, ভাবছিলাম বা ভাবছি এসব ছোট ছোট শব্দগুলি নতুন জীবনকে বিদির্ণ করে দিতে সক্ষম।
তোমার জীবনে বিয়ে তোমার একটা নতুন আবিষ্কার। সত্যিই আবিষ্কারের এই নেশায় না জানি কতনা রোমান্স তোমার ভেতরে কাজ করছে। শিউলী ফুলের মত রোমা্ন্সগুলি ঝরে ঝরে শিশির স্নাতহচ্ছে। সকালের মিষ্টি রোদে শিশির কণাগুলি কেমন হিরের মত চকচক করছে। তোমার ভেতরের হিরক্জ্জল শিশির কণাগুলিকে কখনো নিঃশেষ হয়ে যেতে দিও না। তাকে ভালবেস, যত্ন করে রেখ তোমার অন্তরের অন্তস্থলে রাখা সিন্ধুকের মাঝে। মনের খেয়ালে কখনো অযত্নে রেখনা।
একটা কথা, কখনো তুমি শেষ মেনে নিওনা। যেখাসে শেষ, সেখান থেকে তুমি শুরু করবে।
চিঠি পড়া হয়ে গেলে তার মূল্য কমে যায়,থাকে শুধু একটু ভাবনা। সেটাও এক সময় বিলিন হয়ে যায়। কেউ কেউ যত্ন করে তুলে রাখে। কিন্তু বের করে দেখার আর সুযোগ হয়ে উঠে না।
এটিও অমনই একটি চিঠি, পড়া শেষ হলে টেবিলের নিচে রাখা ছোট্ট পাত্রে ফেলে দিও যেন সহজে ডাষ্টবিনে জায়গা করে নিতে পারে।
ভাল থেকো, সুখি থেকো, সুন্দর এই ভূবনে নতুন আবিষ্কারের মাঝে নিজেকে সুখি করে তুলো অনন্ত কালের জন্য।
ইতি-----
(একসময়ের) তোমার শিমুদা
শিমুদার প্রেরিত পত্র খানি প্রেয়সী পড়েছে কি না তা জানা যায়নি। হয়ত পড়ে নি অথবা এমন ও হতে পারে প্রেয়সী পত্র খানি আদৌ পায়নি । যদি পড়ত অন্তত কেমন আছ কথাটি লিখে পাঠাত। শিমুদার এ ছো্ট্ট বিশ্বাস টুকু ছিল। শিমুদার চোখ দুটোর দিকে তাকালে মনে হয় সে বিশ্বাস এখনো আছে।
শিমুদা শোভার দুটি চোখের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে। শোভা লজ্জিত হয়ে বলে দাদা, তুই আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কি দেখিস। শিমুদা দুচোখের অশ্রু ছেড়ে দিয়ে বলে তোর চোখের তাঁরা দেখি। দাদা, তোকে আরো কতক বার দেখেছি তুই একা একা কাঁদিস, কেন কাঁদিস বল তো? কিসের দুঃখ তোর?
শিমুদার ছোট বোন শোভা। সহজ সরল একেবারে শান্ত স্বভাবের মেয়ে। শোভার দুটি মায়া ভরা চোখ প্রেয়সীর চোখের মায়াকে আকড়ে ধরে আছে। তাই শিমুদা শোভার দুটি চোখের তাঁরায় প্রেয়সীকে খুঁজে।
প্রেয়সীকে শোভা ভাল রকম চেনে। প্রেয়সী যেন শোভার খেলার সাথী ছিল। একেবারে আপনের আপন।
কতবার দাদা বলেছে- প্রেয়সী শোভা কি তোমার যমজ বোন।
দুষ্টুমিতে ফেটে পড়ে শোভা বলে- তু্ই যে কি বলিস দাদা?
-কেন রে ভাল করে আয়নায় দেখ তোর দুটি চোখ আর প্রেয়সীর চোখ এক কিনা?
প্রেয়সী লজ্জাবনত হয়ে লম্বা চুলের ফাকে মিটি মিটি হাসত। ভারি সুন্দর লাগে প্রেয়সীকে, ও যখন হাসে।
শোভা প্রেয়সীকে পেলে একেবারে নাওয়া খাওয়া ভুলে যেত। দিদি এদিকে এস তো তোমার মুখ খানা একটু এঁকে দেই। কাজলটা হাতে নিয়ে দিদির লাল ঠোঁটের নিচে তিল এঁকে আয়নাটা সামনে ধরে বলত- দেখ দিদি তোমাকে কত সুন্দর লাগছে।
যা, পাগলি। আয় তোর হাতে নেল পলিশ লাগিয়ে দেই। তোর মত আমার যদি চাঁপা ফুলের আঙ্গুল হতরে।
টুপ করে শিমুদা বলে উঠে- কেন? তোমার হাতে কি টগর ফুলের আঙ্গুল?
প্রেয়সী একবার চোখ তুলে তাকাতো। তারপর সামনের চুল গুলো মুখে এসে পড়ত । কিছু বলত না। আপন মনে একটু মিষ্টি করে হাসত।শিমুদার চোখ এড়াতো না ।
প্রেয়সী এখন আর নেই এখানে। অনেক কাল পর প্রেয়সীরা এসেছিল বেড়াতে।শিমুদাদের পাশের প্রতিবেশিই ওর মামা বাড়ী।প্রেয়সীর বাবা কোলকাতায় থাকে।প্রেয়সীরাও এবার স্থায়ী ভাবে চলে যাবে বলে স্থীর করেছে প্রেয়সীর বাবা।সেখানে গিয়ে প্রেয়সী নতুন করে পড়ালেখা শুরুকরবে।এইটুকু জেনেছিল শিমুদা।
কিন্তু বিষয়টা মোটেই সেরকম ছিল না। প্রেয়সী কলকাতায় যেতে চাইত না, চায় ও না।তাই তার বাবা এফন্দিটুকু করেছিল। সেখানে গিয়ে ডাক্তারী পাশ ভাল ছেলের সাথে বিয়ে দেবে বলে সেখানেও কথা হয়েছে।
প্রেয়সীর চলে যাওয়ার কথা শুনে শোভা অনেক কেঁদেছিল -দিদি তুমি চলে গেলে আমাদের ভুলে যাবে না তো? যেও না দিদি।
-নারে শোভা তোকে কি ভুলে থাকতে পারি? দেখিস আমি খুশব তাড়াতাড়ি ফিরে আসব।শিমুদাকে বলিস প্রেয়সী তাড়াতাড়িই ফিরে আসবে।যাওয়ার বেলায় তো দেখা হলনা।শোভা, কখনো মন খারাপ করবি না কিন্তু।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আবু সাহেদ সরকার ২০/০৮/২০১৪প্রেয়সীর কাছে সুন্দর একটি চিঠি! পড়লাম বেশ ভালো লাগলো। ভালো থাকুন।
-
মঞ্জুর হোসেন মৃদুল ১৯/০৮/২০১৪বেশ ভাল লাগল।
-
শিমুল শুভ্র ১৯/০৮/২০১৪চলছে চলুক ম ছোট গল্প বেশ লাগলো কিন্তু ।