একটি বাড়ি
বাংলা ও বাঙালির গৌরবের ঐতিহাসিক জমজমাট বাড়িটা আবারো পরাজিত শকুনদের আঘাতে বদ্ধ ভূমির মতো আজ শুনশান নিথর হয়ে আছে। চারিদিকে কাঁটাতার দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। বাড়িতে ঢোকার মূল ফটক আটোসাটো করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
১৯৭৫ সালেও একবার আক্রান্ত হয়েছিল এই বাড়িটি। সেদিন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে বাংলা ও বাঙালির ইতিহাসকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। দেশের বাহিরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যায় দুই কন্যা।
তাদের হাত ধরেই সেখান থেকে এই জাতি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সমগ্র বিশ্ব জানতে পেরেছে আমাদের প্রকৃত ইতিহাস। দারিদ্রতার সীমারেখা পার করে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পৌঁছেছে লাল সবুজের এই বাংলাদেশ। আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, দারিদ্রতা, কৃষি, যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত অভূতপূর্ব উন্নয়ন নিয়ে বিশ্ব দরবারে এই লাল সবুজের পতাকা সগৌরবে উড্ডিন হয়েছে।
তবুও কেনো এই বাড়িটির দিকেই স্বার্থান্বেষী শকুনদের তীক্ষ্ণ নজর! কোন স্বার্থে কিসের লোভে তারা ধ্বংস করতে চায় বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্যের আতুর ঘর এই বাড়িটিকে?
এ কথা ভাবতেই যেন হৃদয়ের রক্তক্ষরণ আর থামছেই না। উত্তপ্ত হৃদয়কে একটু শান্তনা দিতে আজ গিয়েছিলাম সেই বাড়িটির একটু পরশ নিতে যেখানে আপন মনে নিয়মিত হাঁটতেন, ঘুরে বেড়াতেন, বাংলা ও বাঙালির ভাগ্য বদলের চিন্তা করতেন, রাষ্ট্র ও জাতি গঠনের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আগুনের লেলিহান শিখায় কালচে হয়ে থাকা বারান্দাটায় চোখ পড়তেই মনে হল এই বুঝি বঙ্গবন্ধু এসে হাত নাড়বেন আর সবাইকে শুভেচ্ছা জানাবেন। ভাবতে ভাবতেই মনের অজান্তে দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল মাটিতে।
অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম কতো মানুষ সেখানে অহেতুক কোনো কাজ ছাড়াই বসে আছে কেউ বাদাম খাচ্ছে কেউ অপলক তাকিয়ে পোড়া বাড়ি দেখছে কেউ গল্প করছে কেউবা এমনি এমনিই বসে আছে। হয়তো আমার মতো তাদেরও চোখের জলে সিক্ত স্নিগ্ধ হয়েছে সেই বাড়ির মাটি তাই ভষ্মিভূত গাছগুলোতেও আজ আবার নতুন কুঁড়ি দেখা দিচ্ছে। পোড়ে যাওয়া দুর্বা ঘাসের জমিন আবার সবুজ হয়ে উঠছে। সেদিনের সেই বর্বরতার সাক্ষী কবুতর গুলো ধ্বংসস্তূপের উপর বসে তাদের পোড়া ঘরগুলো দেখছে।
হয়তো এভাবেই আবার কোনো দিন বাংলা ও বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রদীপ হয়ে ঝলমল করে উঠবে এই বাড়িটি, পাখ পাখালির কিচিরমিচিরে ভরে উঠবে সবুজ এই অভয়ারণ্য, কবুতরগুলো পাবে তাদের নিশ্চিত আবাস। হয়তো সেদিন বেশি দূরে নয়। নতুন সূর্য আবার উঠবেই আজ কাল পরশু না হয় আগত কোনো এক নতুন দিনে। ইতিহাস তার আপন ঠিকানা চিনে নিবেই।
*****
তারিখ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪
১৯৭৫ সালেও একবার আক্রান্ত হয়েছিল এই বাড়িটি। সেদিন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে বাংলা ও বাঙালির ইতিহাসকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। দেশের বাহিরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যায় দুই কন্যা।
তাদের হাত ধরেই সেখান থেকে এই জাতি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সমগ্র বিশ্ব জানতে পেরেছে আমাদের প্রকৃত ইতিহাস। দারিদ্রতার সীমারেখা পার করে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পৌঁছেছে লাল সবুজের এই বাংলাদেশ। আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, দারিদ্রতা, কৃষি, যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত অভূতপূর্ব উন্নয়ন নিয়ে বিশ্ব দরবারে এই লাল সবুজের পতাকা সগৌরবে উড্ডিন হয়েছে।
তবুও কেনো এই বাড়িটির দিকেই স্বার্থান্বেষী শকুনদের তীক্ষ্ণ নজর! কোন স্বার্থে কিসের লোভে তারা ধ্বংস করতে চায় বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্যের আতুর ঘর এই বাড়িটিকে?
এ কথা ভাবতেই যেন হৃদয়ের রক্তক্ষরণ আর থামছেই না। উত্তপ্ত হৃদয়কে একটু শান্তনা দিতে আজ গিয়েছিলাম সেই বাড়িটির একটু পরশ নিতে যেখানে আপন মনে নিয়মিত হাঁটতেন, ঘুরে বেড়াতেন, বাংলা ও বাঙালির ভাগ্য বদলের চিন্তা করতেন, রাষ্ট্র ও জাতি গঠনের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আগুনের লেলিহান শিখায় কালচে হয়ে থাকা বারান্দাটায় চোখ পড়তেই মনে হল এই বুঝি বঙ্গবন্ধু এসে হাত নাড়বেন আর সবাইকে শুভেচ্ছা জানাবেন। ভাবতে ভাবতেই মনের অজান্তে দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল মাটিতে।
অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম কতো মানুষ সেখানে অহেতুক কোনো কাজ ছাড়াই বসে আছে কেউ বাদাম খাচ্ছে কেউ অপলক তাকিয়ে পোড়া বাড়ি দেখছে কেউ গল্প করছে কেউবা এমনি এমনিই বসে আছে। হয়তো আমার মতো তাদেরও চোখের জলে সিক্ত স্নিগ্ধ হয়েছে সেই বাড়ির মাটি তাই ভষ্মিভূত গাছগুলোতেও আজ আবার নতুন কুঁড়ি দেখা দিচ্ছে। পোড়ে যাওয়া দুর্বা ঘাসের জমিন আবার সবুজ হয়ে উঠছে। সেদিনের সেই বর্বরতার সাক্ষী কবুতর গুলো ধ্বংসস্তূপের উপর বসে তাদের পোড়া ঘরগুলো দেখছে।
হয়তো এভাবেই আবার কোনো দিন বাংলা ও বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রদীপ হয়ে ঝলমল করে উঠবে এই বাড়িটি, পাখ পাখালির কিচিরমিচিরে ভরে উঠবে সবুজ এই অভয়ারণ্য, কবুতরগুলো পাবে তাদের নিশ্চিত আবাস। হয়তো সেদিন বেশি দূরে নয়। নতুন সূর্য আবার উঠবেই আজ কাল পরশু না হয় আগত কোনো এক নতুন দিনে। ইতিহাস তার আপন ঠিকানা চিনে নিবেই।
*****
তারিখ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সুসঙ্গ শাওন ২৭/১১/২০২৪ইতিহাস পরিহাস হয়ে যায় সময়ে
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২৭/১১/২০২৪অসামান্য ভাবনা
-
ফয়জুল মহী ২৭/১১/২০২৪অসাধারণ লিখেছেন প্রিয় ।