প্রত্যহ কুরআন পাঠের গুরুত্ব
এই বিষয়ে আলোচনা করতে হলে প্রথমেই আমাদের কে জানতে হবে কুরআন কি? এটি মুসলমান ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ যাঁহা হযরত মুহাম্মদ সা. এর উপর সূদীর্ঘ ২৩ বৎসরে নাযিল হয়েছিল। নবুওয়াতের শুরুর দিকেই মহান আল্লাহ তা’লা হজরত মুহাম্মদ (স.) কে বলেন ইন্না সানুলক্বি আলায়কা ক্বাওলাং সাক্বিলা, অর্থঃ আমরা তোমার উপর নিশ্চয়ই এক গুরুভার বানী অবতীর্ণ করবো। সুরা মুজ্জাম্মেল-৬। এখানে ‘গুরুভার’ বানী বলতে মহান আল্লাহ বুঝাতে চাচ্ছেন যে, ইহা এতই গুরুত্ববহ যে দুনিয়ার কোন শক্তিবলে এর একটি শব্দ বা অক্ষরের সংশোধন, পরিবর্তন বা স্থানান্তর সম্ভব নয়। এই সুন্দরতম শব্দমালা বিগত ১৫শত বৎসর যাবত সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। এর নিশ্চয়তা মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনেই ঘোষনা দিয়ে বলেছেন ইন্না নাহনু নাযযালনায জিকরা ওয়া ইন্না লাহু লা হাফিযুন, অর্থঃ নিশ্চয়ই আমরা এই কুরআন নাযেল করেছি এবং আমরাই এর সংরক্ষন করবো। সুরা হিজর-১০।
বিখ্যাত দার্শনিক বসওয়ার্থ স্মিথ তাহার বিখ্যাত “মুহাম্মদ ও মুহাম্মদিজম” পুস্তকে লিখেছেন কুরআনে সম্ভাব্য সকল প্রকারের সন্দেহের উর্ধ্বে উঠে কোন প্রকার সংযোজন ও বিয়োজন ছাড়াই মুহাম্মদের সেই হুবহু শব্দসমূহ বর্ণিত আছে।
সুন্দরতম পবিত্র এই কুরআনের পরিচয় মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের কাছে এভাবে দিয়েছেন যালিকাল কিতাবু লা রাইবাফি হুদাল্লিল মুত্তাক্বিন, অর্থঃ ইহা সেই কামেল কিতাব যাতে কোন সন্দেহ নাই আর ইহা মুত্তাক্বিগনের জন্য পথপ্রদর্সক। সুরা বাকারা-৩। মহান রাব্বুল আলামিন আরোও বলেন কিতাবুন আংযালনাহু ইলাইকা মুবারাকুল লিয়াদ্দাব্বারু আয়াতিহি ওয়ালিয়া তাযাক্কারা উলুল আলবাব, অর্থঃ এটি একটি কল্যাণময় কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যেন মানুষ এর আয়াতসমূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে। সুরা ছোয়াদ -৩০।
মানব সৃষ্টির প্রকৃত উদ্দ্যেশ্য সম্পর্কে এই জগতের প্রতিপালক মহান সৃষ্টিকর্তা পবিত্র কুরআনে বলেন ওয়ামা খালাক্তুল জিন্না ওয়াল ইনসা ইল্লা লিয়া’বুদু অর্থঃ আর আমি জ্বিন ও ইনসানকে কেবল আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। সুরা আয যারিয়াত-৫৭।
মানব সৃষ্টির চুড়ান্ত উদ্দ্যেশ্যই হলো আল্লাহর ইবাদত করা। আর এই কথার অর্থ শুধু আল্লাহর নিকট সেজদা করাই নয় বরং পবিত্র কুরআনের শিক্ষা অনুযায়ি তার সাথে সাথে আল্লাহর গুনাবলীও নিজেদের মাঝে অর্জন করা যাতে মানুষ এই দুনিয়াতে আল্লাহর প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। এর একমাত্র উপায় হলো এই মহাগ্রন্থ পবিত্র কুরআনের সঠিক অনুশীলন ও হৃদয়ঙ্গম করে এর পবিত্র শিক্ষামালার সঠিক বাস্তবায়ন করা। কেননা এই কুরআনের শিক্ষার মাঝেই মানব জীবনের সকল স্বার্থ ও যাবতীয় কর্মকান্ড এবং দুনিয়া ও আখেরাতের ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ সকল সমস্যার সমাধান বিদ্যমান রয়েছে। আর তাই এই কুরআনকে বলা হয় পরিপূর্ণ জীবন বিধান।
মহান রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে আদেশ করেছেন আক্বিমুসসালাতা লিদুলুকিশ শামসি ইলা গাসাক্বিল্লায়লি ওয়া কুরআনাল ফাজরি ইন্না কুরআনাল ফাজরি কানা মাশহুদা অর্থঃ তোমরা সূর্য্য হেলে যাওয়ার পর থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম কর আর ফযরের পর কুরআন পাঠ করো, নিশ্চয়ই ফযরের পর কুরআন পাঠ অধিক গ্রহনিয়। সুরা বনি ঈস্রাঈল-৭৯। মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে আরোও বলেন উতলু মা উ’হিয়া ইলায়কা মিনাল কিতাবি ওয়া আক্বিমিস সালাতা অর্থঃ তুমি পাঠ করো এই কুরআন থেকে যাহা তোমার উপর প্রত্যাদিষ্ট করা হয়েছে এবং নামায কায়েম কর। সুরা আনকাবুত-৪৬।
মহাগ্রন্থ এই পবিত্র কুরআনের গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝাতে গিয়ে রহমানুর রাহিম মহান আল্লাহ বলেন লাও আনযালনা হাযাল কুরআনা আলা জাবালিল্লারা আয়তাহু খাশিয়াম মুতাসাদ্দিয়াম মিন খাশইয়াতিল্লাহ, ওয়াতিলকাল আমসালু নাদরিবুহালিন্নাসি লা'আল্লাহুম ইয়াতাফাক্কারুন অর্থঃ যদি আমি এই কোরআন কোন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তা'আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। সুরা হাসর-২২।
সর্বদা আল্লাহর স্মরণ করা, কুরআন পাঠ করা ও নামাজ কায়েম করা এই সব গুলো বিষয়ের উদ্দ্যেশ্য একই আর তা হলো মহান আল্লাহর সান্যিধ্য পাওয়া। আল্লাহর আদেশ পালন করা আমাদের প্রত্যেক নর-নারীর জন্য ফরজ। আর উপরুক্ত আয়াত সমূহে রাব্বুল আলামিন নামায কায়েম করার সাথে সাথে আমাদেরকে কুরআন পড়ার আদেশ করেছেন। এই আদেশ আমাদের জন্য এক অসীম নিয়ামত। এই নিয়ামতের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
হযরত মুহাম্মদ সা. এর জীবনি সম্পর্কে কিছু বলতে বললে উম্মুল মোমেনীন হযরত আয়েসা সিদ্দিকা রা. বলেছিলেন তোমরা কি কুরআন পড়োনা? সম্পূর্ণ কুরআনই হলো হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনি।
হযরত মসিহ মাওউদ (আ.) তাঁর এক বিখ্যাত কবিতায় লিখেছেন দিলমে মেরা এহিহে তেরা সহিফা চুঁমু, কুরআনকি গিরদ ঘুমু কাবা মেরা এহিহে অর্থঃ আমার ইচ্ছা করে তোমার এই কুরআনকে বার বার চুম্বন করি, সারাক্ষন এই কুরআনের মাঝেই ডুবে থাকি ও একেই প্রদক্ষিন করি যেন এটিই আমার কাবা। তিনি (আ.) আরো বলেন তোমরা কুরআন শরীফকে পরিত্যক্ত বস্তুর মত ফেলে রেখো না, কারণ এতেই তোমাদের জীবন নিহিত রয়েছে। যারা কুরআনকে সম্মান দান করবে তারা আকাশে সম্মান লাভ করবে। কিশতিয়ে নূহ, পৃষ্ঠা-২৫।
পবিত্র কুরআনের সকল শিক্ষামালা পূর্ববর্তী সমস্ত নবী ও রাসুলগনের শিক্ষার নির্যাস। তাই আল্লাহ বলেন ইন্না হাযা লাফি সুখুফিল উলা, সুখুফি ঈব্রাহীমা ওয়া মূসা, অর্থঃ নিশ্চয়ই এই শিক্ষা পূর্ববর্তী ঐশি কিতাবগুলোতেও লিপিবদ্ধ আছে যেমন ঈব্রাহীমা এবং মূসার কিতাব গুলোতে। সুরা আলা-১৯-২০।
মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআন পাঠের সময় এর আদব ও গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে বলেছেন ওয়া ইজা কুরিয়াল কুরআনু ফাস্তামিউ লাহু ওয়া আংসিতু লাআল্লাকুম তুরহামূন অর্থঃ আর যখন তোমাদের মাঝে কুরআন পাঠ করা হয় তখন তা মনযোগ দিয়ে শোন এবং চুপ থাকো যেন তোমাদের উপর রহম করা যায়। সুরা আল আরাফ-২০৫।
এই কুরআন নিয়ে মহান আল্লাহ তা’লা আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে সতর্ক করেছেন যেমন তিনি বলেন ইন্নাহু লা কুরআনুল কারিম, ফি কিতাবিম মাকনুন, লা ইয়া মাসসুহু ইল্লাল মুতাহহারুন, অর্থঃ নিশ্চয়ই ইহা মহা সম্মানীত কুরআন যাহা এক গুপ্ত সুরক্ষিত কিতাবে আছে। পবিত্র লোকগন ব্যাতিত কেহ ইহা স্পর্শ করতে পারেনা। সুরা আল ওয়াকেয়া-৭৮-৮০। এমনকি কুরআন কিভাবে পাঠ করতে হবে তাও মহান আল্লাহ আমাদেরকে বলে দিয়েছেন। যেমন তিনি বলেন ওয়া রাত্তিলিল কুরআনা তারতিলা, অর্থঃ এবং তুমি শুদ্ধরূপে ও সুললিত কন্ঠে কুরআন পড়ো। সুরা মুজ্জাম্মেল-৫।
উক্ত সতর্কবাণী অনুযায়ী মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য আমাদেরকে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় দিক থেকে পবিত্রতা অর্জনকারী হয়ে এই সুমহান গ্রন্থ কুরআনকে প্রত্যহ অনুশীলন ও হৃদয়ঙ্গম করে নিজেদের জীবনে এর সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন করতে হবে।
সবশেষে আমরা যেন আমাদের জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দেওয়া এই বিশেষ নিয়ামতের সঠিক অনুশিলন ও মুল্যায়ন করতে পারি এর জন্য সকলের নিকট দোয়া চেয়ে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
****
বিখ্যাত দার্শনিক বসওয়ার্থ স্মিথ তাহার বিখ্যাত “মুহাম্মদ ও মুহাম্মদিজম” পুস্তকে লিখেছেন কুরআনে সম্ভাব্য সকল প্রকারের সন্দেহের উর্ধ্বে উঠে কোন প্রকার সংযোজন ও বিয়োজন ছাড়াই মুহাম্মদের সেই হুবহু শব্দসমূহ বর্ণিত আছে।
সুন্দরতম পবিত্র এই কুরআনের পরিচয় মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের কাছে এভাবে দিয়েছেন যালিকাল কিতাবু লা রাইবাফি হুদাল্লিল মুত্তাক্বিন, অর্থঃ ইহা সেই কামেল কিতাব যাতে কোন সন্দেহ নাই আর ইহা মুত্তাক্বিগনের জন্য পথপ্রদর্সক। সুরা বাকারা-৩। মহান রাব্বুল আলামিন আরোও বলেন কিতাবুন আংযালনাহু ইলাইকা মুবারাকুল লিয়াদ্দাব্বারু আয়াতিহি ওয়ালিয়া তাযাক্কারা উলুল আলবাব, অর্থঃ এটি একটি কল্যাণময় কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যেন মানুষ এর আয়াতসমূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে। সুরা ছোয়াদ -৩০।
মানব সৃষ্টির প্রকৃত উদ্দ্যেশ্য সম্পর্কে এই জগতের প্রতিপালক মহান সৃষ্টিকর্তা পবিত্র কুরআনে বলেন ওয়ামা খালাক্তুল জিন্না ওয়াল ইনসা ইল্লা লিয়া’বুদু অর্থঃ আর আমি জ্বিন ও ইনসানকে কেবল আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। সুরা আয যারিয়াত-৫৭।
মানব সৃষ্টির চুড়ান্ত উদ্দ্যেশ্যই হলো আল্লাহর ইবাদত করা। আর এই কথার অর্থ শুধু আল্লাহর নিকট সেজদা করাই নয় বরং পবিত্র কুরআনের শিক্ষা অনুযায়ি তার সাথে সাথে আল্লাহর গুনাবলীও নিজেদের মাঝে অর্জন করা যাতে মানুষ এই দুনিয়াতে আল্লাহর প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। এর একমাত্র উপায় হলো এই মহাগ্রন্থ পবিত্র কুরআনের সঠিক অনুশীলন ও হৃদয়ঙ্গম করে এর পবিত্র শিক্ষামালার সঠিক বাস্তবায়ন করা। কেননা এই কুরআনের শিক্ষার মাঝেই মানব জীবনের সকল স্বার্থ ও যাবতীয় কর্মকান্ড এবং দুনিয়া ও আখেরাতের ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ সকল সমস্যার সমাধান বিদ্যমান রয়েছে। আর তাই এই কুরআনকে বলা হয় পরিপূর্ণ জীবন বিধান।
মহান রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে আদেশ করেছেন আক্বিমুসসালাতা লিদুলুকিশ শামসি ইলা গাসাক্বিল্লায়লি ওয়া কুরআনাল ফাজরি ইন্না কুরআনাল ফাজরি কানা মাশহুদা অর্থঃ তোমরা সূর্য্য হেলে যাওয়ার পর থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম কর আর ফযরের পর কুরআন পাঠ করো, নিশ্চয়ই ফযরের পর কুরআন পাঠ অধিক গ্রহনিয়। সুরা বনি ঈস্রাঈল-৭৯। মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে আরোও বলেন উতলু মা উ’হিয়া ইলায়কা মিনাল কিতাবি ওয়া আক্বিমিস সালাতা অর্থঃ তুমি পাঠ করো এই কুরআন থেকে যাহা তোমার উপর প্রত্যাদিষ্ট করা হয়েছে এবং নামায কায়েম কর। সুরা আনকাবুত-৪৬।
মহাগ্রন্থ এই পবিত্র কুরআনের গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝাতে গিয়ে রহমানুর রাহিম মহান আল্লাহ বলেন লাও আনযালনা হাযাল কুরআনা আলা জাবালিল্লারা আয়তাহু খাশিয়াম মুতাসাদ্দিয়াম মিন খাশইয়াতিল্লাহ, ওয়াতিলকাল আমসালু নাদরিবুহালিন্নাসি লা'আল্লাহুম ইয়াতাফাক্কারুন অর্থঃ যদি আমি এই কোরআন কোন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তা'আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। সুরা হাসর-২২।
সর্বদা আল্লাহর স্মরণ করা, কুরআন পাঠ করা ও নামাজ কায়েম করা এই সব গুলো বিষয়ের উদ্দ্যেশ্য একই আর তা হলো মহান আল্লাহর সান্যিধ্য পাওয়া। আল্লাহর আদেশ পালন করা আমাদের প্রত্যেক নর-নারীর জন্য ফরজ। আর উপরুক্ত আয়াত সমূহে রাব্বুল আলামিন নামায কায়েম করার সাথে সাথে আমাদেরকে কুরআন পড়ার আদেশ করেছেন। এই আদেশ আমাদের জন্য এক অসীম নিয়ামত। এই নিয়ামতের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
হযরত মুহাম্মদ সা. এর জীবনি সম্পর্কে কিছু বলতে বললে উম্মুল মোমেনীন হযরত আয়েসা সিদ্দিকা রা. বলেছিলেন তোমরা কি কুরআন পড়োনা? সম্পূর্ণ কুরআনই হলো হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনি।
হযরত মসিহ মাওউদ (আ.) তাঁর এক বিখ্যাত কবিতায় লিখেছেন দিলমে মেরা এহিহে তেরা সহিফা চুঁমু, কুরআনকি গিরদ ঘুমু কাবা মেরা এহিহে অর্থঃ আমার ইচ্ছা করে তোমার এই কুরআনকে বার বার চুম্বন করি, সারাক্ষন এই কুরআনের মাঝেই ডুবে থাকি ও একেই প্রদক্ষিন করি যেন এটিই আমার কাবা। তিনি (আ.) আরো বলেন তোমরা কুরআন শরীফকে পরিত্যক্ত বস্তুর মত ফেলে রেখো না, কারণ এতেই তোমাদের জীবন নিহিত রয়েছে। যারা কুরআনকে সম্মান দান করবে তারা আকাশে সম্মান লাভ করবে। কিশতিয়ে নূহ, পৃষ্ঠা-২৫।
পবিত্র কুরআনের সকল শিক্ষামালা পূর্ববর্তী সমস্ত নবী ও রাসুলগনের শিক্ষার নির্যাস। তাই আল্লাহ বলেন ইন্না হাযা লাফি সুখুফিল উলা, সুখুফি ঈব্রাহীমা ওয়া মূসা, অর্থঃ নিশ্চয়ই এই শিক্ষা পূর্ববর্তী ঐশি কিতাবগুলোতেও লিপিবদ্ধ আছে যেমন ঈব্রাহীমা এবং মূসার কিতাব গুলোতে। সুরা আলা-১৯-২০।
মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআন পাঠের সময় এর আদব ও গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে বলেছেন ওয়া ইজা কুরিয়াল কুরআনু ফাস্তামিউ লাহু ওয়া আংসিতু লাআল্লাকুম তুরহামূন অর্থঃ আর যখন তোমাদের মাঝে কুরআন পাঠ করা হয় তখন তা মনযোগ দিয়ে শোন এবং চুপ থাকো যেন তোমাদের উপর রহম করা যায়। সুরা আল আরাফ-২০৫।
এই কুরআন নিয়ে মহান আল্লাহ তা’লা আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে সতর্ক করেছেন যেমন তিনি বলেন ইন্নাহু লা কুরআনুল কারিম, ফি কিতাবিম মাকনুন, লা ইয়া মাসসুহু ইল্লাল মুতাহহারুন, অর্থঃ নিশ্চয়ই ইহা মহা সম্মানীত কুরআন যাহা এক গুপ্ত সুরক্ষিত কিতাবে আছে। পবিত্র লোকগন ব্যাতিত কেহ ইহা স্পর্শ করতে পারেনা। সুরা আল ওয়াকেয়া-৭৮-৮০। এমনকি কুরআন কিভাবে পাঠ করতে হবে তাও মহান আল্লাহ আমাদেরকে বলে দিয়েছেন। যেমন তিনি বলেন ওয়া রাত্তিলিল কুরআনা তারতিলা, অর্থঃ এবং তুমি শুদ্ধরূপে ও সুললিত কন্ঠে কুরআন পড়ো। সুরা মুজ্জাম্মেল-৫।
উক্ত সতর্কবাণী অনুযায়ী মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য আমাদেরকে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় দিক থেকে পবিত্রতা অর্জনকারী হয়ে এই সুমহান গ্রন্থ কুরআনকে প্রত্যহ অনুশীলন ও হৃদয়ঙ্গম করে নিজেদের জীবনে এর সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন করতে হবে।
সবশেষে আমরা যেন আমাদের জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দেওয়া এই বিশেষ নিয়ামতের সঠিক অনুশিলন ও মুল্যায়ন করতে পারি এর জন্য সকলের নিকট দোয়া চেয়ে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
****
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ইসমাইল জসীম ১৪/০৫/২০২০একজন মুসলমান হিসাবে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত প্রতিদিন কোরআন পড়া। বাংলা অর্থসহ।
-
ফয়জুল মহী ১৪/০৫/২০২০লেখা পড়ে বিমোহিত হলাম।