www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মিরক্যাটদের গল্প

খাবারের খোঁজে বের হয়েছে একদল কিন্তু
নিজেদের নিরাপত্তার
কথা না ভেবে যদি শুধু খাবার সন্ধান করেই
যায় তাহলে তারা নিজেরাই অন্য
কারো শিকারে পরিণত হয়ে খাবার হয়ে যেতে পারে।
তাই সর্বপ্রথম ভাবতে হয় নিজেদের নিরাপত্তার কথা আর এই
নিরাপত্তার কথা ভেবে দলনেতা দলের
আকার বুঝে একজন বা দুইজনকে ঠিক করে দেন
দলের নিরাপত্তার কাজটি করার জন্য।

নিরাপত্তা প্রহরী উঁচু
টিলা বা গাছে উঠে যায় যাতে মাথা ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে চারদিক ভাল
করে নজর রাখতে পারে। প্রশিক্ষিত
কড়া প্রহরী তার দলের নিরাপত্তায় কাজ
করে যায় পরবর্তী প্রহরী তার
স্থানে না আসা পর্যন্ত।  যতক্ষণ
এলাকা বিপদমুক্ত থাকে ততক্ষণ মৃদু শব্দ করতে করতে জানিয়ে দেয় সব কিছু ঠিক
আছে তোমরা খাবারের সন্ধান
চালিয়ে যাও।
কখনো যদি সামান্যতম
বিপদের গন্ধ পাওয়া যায় বেজে উঠে তীব্র
হুইসিল দলের সবাই আশ্রয় নেয় নিরাপদ স্হানে। নির্দিষ্ট সময় পর পর পরিবর্তন হয় প্রহরী কিন্তু এক সেকেন্ডের জন্যও
পাহারা দেওয়ার এই নিয়ম পরিবর্তন হয়
না।
এটা কোন প্রশিক্ষিত সেনা বাহিনীর
কথা বা গল্প নয় এটা একটা প্রাণীর
প্রতিদিনের জীবন কথা আর এই প্রাণীটির
নাম হল “মিরক্যাট।”

মিরক্যাটরা আমাদের দেশের
বেজী গোত্রীয় এক ধরণের
স্তন্যপায়ী প্রাণী। এদের পাওয়া যায়
আফ্রিকা মহাদেশের বোতসোয়ানার
কালাহারি মরুভূমি, নামিবিয়ার
নামিবিয়া মরুভূমি, এঙ্গোলা ও দক্ষিণ আফ্রিকাতে। এরা দলবদ্ধ হয়ে থাকে এক
একটা দলে প্রায় ২০-৫০ জনের মত সদস্য
থাকে। এদের দলকে মব বা গ্যাং বলা হয়।

প্রকৃতিতে এরা ১২ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত
বাঁচে। এরা মূলত পতঙ্গ-ভোজী বা পোকামাকড় খায়
তারপরেও কিছু সরীসৃপ, সাপ, ছোট
স্তন্যপায়ী, বিচ্ছু, মাকড়সা, ছোট পাখি ও
শিকার করে। এদের শরীরে কিছু বিষ
নিরোধক কিছু এন্টিবডি আছে যা মরুভূমির
বিষাক্ত বিচ্ছু বা স্করপিয়নের কামড়ের বিরুদ্ধে কাজ করে।

এদের
শরীরে চর্বি বা খাদ্য সঞ্চয়ের কোন
ব্যবস্থা নাই মানুষের মত তাদেরও
প্রতিদিনের খাবার প্রতিদিন
খুঁজে খেতে হয়। এক বছর বয়সেই এরা প্রজনন-ক্ষম হয়ে যায়
এবং বছরের যেকোনো সময়ই এরা সন্তান
জন্ম দিতে পারে। এরা সাধারণত একসাথে ৩
টি বাচ্চা প্রসব করে যদিও মাঝেমাঝে ৫
টি বাচ্চা ও দেখা যায়।

জন্মের তিন
সপ্তাহ পর্যন্ত বাচ্চারা গর্তের বাইরে আসার অনুমতি পায় না। আর যে দিনটিতে বাচ্চারা প্রথম
বাইরে আসে সেটা হয় একটা উৎসবের মত।

দলের সব সদস্য বাচ্চাদের ঘিরে দাঁড়ায়
এবং নবাগত অতিথিকে এই ভুবনে স্বাগত
জানায়। দলের তরুণ ও দক্ষ শিকারীরা তাদের
প্রশিক্ষণের দায়িত্ব নেয় যাতে এই নতুন
শিশুরাও একদিন ভাল
শিকারি হয়ে উঠতে পারে।

তাদের
শিখানো হয় কি করে কামড় না খেয়ে বিচ্ছুর
বিষাক্ত লেজ কেটে তাদের হত্যা করতে হয়, কি করে সাপের ডিম চুরি করে খেতে হয়,
কি করে শত্রুর
চোখে ধূলা দিয়ে আত্মরক্ষা করতে হয়।
কি করে একজন ভাল
সেন্ট্রি বা নিরাপত্তা প্রহরী হতে হয়।

শিখানো হয় নানান কলাকৌশল যা তাদের এই দয়া মায়া হীন ও সার্বক্ষণিক
প্রতিযোগিতার
পৃথিবীতে টিকে থাকতে সবচেয়ে বেশী
প্রয়োজন।
বিষয়শ্রেণী: ফটোব্লগ
ব্লগটি ১৮৬৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১২/০৮/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সোলাইমান ২৮/০৯/২০১৬
    আমি আগে কখনও এই প্রাণীদদের দেখিনি।এদের গল্প বা এই ব্লগটি পড়ে এদের সম্পর্কে জানলাম।এরা কি কোন উপকারী প্রাণী।
    • নাবিক ২২/০৭/২০১৭
      পৃথিবীর সব প্রাণীরই কোনো না কোনো উপকারিতা আছে ভাই 😊
  • পরিতোষ ভৌমিক ২ ১২/১২/২০১৫
    এ তো দেখছি আম্নুষের সাথে পাল্লা দেওয়ার মতো বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন প্রাণী, সত্যিই সেলুকাস......বিচিত্র এই জগৎ ।
  • ভাল লেগেছে। এই প্রাণিকে আমি চিনতাম, কিন্তু নামটা মনে করতে পারছিলাম না অনেক দিন। এ কারণে লেখিয়েকে অনেক ধন্যবাদ।
  • সূত্র সহ লিখলে আওর ভালো হত।
  • মাহফুজুর রহমান ০৮/১০/২০১৫
    ছবি সংগ্রহ সহ লেখাটি তথ্যবহুল ।
  • ভালো লাগলো
  • অভিজিৎ দাস ২১/০৮/২০১৫
    অসাধারণ সংগ্রহ
  • সাইদুর রহমান ১৩/০৮/২০১৫
    খুব সুন্দর ফটোগুলো।
  • ঘোস্ট রাইডার ১২/০৮/২০১৫
    বাহ বেশ মজার প্রাণী তো!
 
Quantcast