ঘাতক নয়নের মৃত্যুতেই কি সব শেষ হলো
রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা ঘাতক নয়নের মৃত্যুটা ছিলো প্রয়োজন, কারন নয়ন হলো ভাইরাল অপরাধী, নয়নের মৃত্যুতে এখন শান্ত হবে আবেগী বাঙ্গালী, শান্ত হবে ফেইসবুকিয় সাহসী স্টেটাসদাতারা, নয়নের মৃত্যুতে এখন আর কোন ক্লু নেই, বন্দুকযুদ্ধে হত্যা কিংবা বলা যায় ক্রসফায়ারে হত্যাটা ছিলো একটা লিগ্যাল তরিকায় হত্যা, আর এই কাজটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনি না করলে নয়নের শেল্টারদাতারাই করিয়ে ফেলতো, কারন কান টানলে যেমন মাথা আসে তেমনি নয়ন গ্রেফতার হলে তদন্তে বেরিয়ে আসতো নয়নের শেল্টারদাতাদের নামের লম্বা তালিকা। এ দেশে প্রকাশ্যে রিফাত হত্যাটা নতুন কিছু নয়, আগেও এমন অনেক ঘটনা আমরা দেখেছি, তারপর সেই একই সিস্টেম তদন্ত কমিটি গঠন, গ্রেফতার এবং দিন কয়েকবাদে শেল্টার দাতাদের তোপে জামিন নামক অঘোষিত মুক্তি।
এটা আমাদের দেশের সিস্টেম, এবার অবশ্য তার ব্যাতিক্রম হয়েছে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনি সাহসীকতার পরিচয় দিয়েছে, ঘাতক নয়নকে বুলেটের যন্ত্রণায় বুঝিয়েছে রিফাতের যন্ত্রণা নিয়ে মৃত্যু হওয়াটা কতটা কষ্টের ছিলো, এর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনির প্রসংসা করতেই হয়।
আমরা জাতী হিসেবে যতটা আবেগ প্রবণ ততটাই ভিতু কারন এদেশে প্রকাশ্য কুপিয়ে হত্যা, জখম করার ঘটনা পত্রিকার শিরোনাম হতে প্রতিনিয়ত দেখি কিন্তু এসব কান্ডে কারো বাধা দেওয়ার সংবাদ আমরা কখনো পত্রিকার কোন চিপাতেও খুজে পাইনা, জাতীকে ভিতু হিসেবে আক্ষায়িত করার কারন হলো যখন প্রকাশ্যে এমন ঘটনা ঘটে তখন আমরা মোবাইল বের করে হয়ত ভিডিও শুরু করি না হয় কয়েকটি ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে লাখ লাখ লাইক কমেন্ট ভিউস নিয়ে নেই, আমরা ভিতু জন্য এগিয়ে গিয়ে সেই আক্রমণ থামাতে পারিনা, এক জন কিংবা এক দল যখন প্রকাশ্যে এমন অপরাধে ব্যাস্ত হয় তখন আমরা কিন্তু চাইলেই পারি আশে পাশে থাকা লাঠিশোটা ইট পাথর নিয়ে তাদের কেও আক্রমণ করা, আমরা আক্রমণ করতে পারিনা কারন আমাদের বিবেকে লাগে যে কেনো একজন মানুষ কে আমি আক্রমণ করব অথচ চোখের সামনে নিরিহ আরেকটি মানুষের আঘাত সহ্য করতে দেখাতে আমাদের বিবেক আমাদের একটুও খোচা দেয় না।
আমাদের দেশে অপরাধ অনেক কমে যেতো যদি আমরা সোচ্চার হতাম ওই সকল স্পটে, মনে করুন বদরুলের কথা, ঘাতক যখন প্রকাশ্য রাস্তায় লোকচক্ষুর সামনে খাদিজাকে কুপাচ্ছিলো তখন কিন্তু কেউ সামনে যায়নি কিসের ভয় ছিলো আমাদের দা'য়ের কোপের নাকি বদরুলের ক্ষমতার যে বদরুল পরে প্রতিবাদ করতে আসা সাহসী মানুষগুলোকে মার্ক করে রেখে প্রতিশোধ নিবে, একটা ঘাতক কে সবাই মিলে রুখে দেওয়া কোন ব্যাপার না, কিন্ত আমরা দশে মিলে করি কাজে বিশ্বাসি না হয়ে লেজগুটিয়ে নিয়ে দূরে সরে নাই, আর এতেই আমাদের কি দোষ আমরা ত জন্মের পর থেকেই মুখস্ত করে এসেছি নিজে বাচলে বাপের নাম।
বাংলাদেশে প্রকাশ্য হত্যা, ধর্ষণ, চাদাবাজী, ছিনতাই এসব আমরা সাধারণ জনগচাইলেই আটকিয়ে দিতে পারি কিন্তু আমরা এসবে এগিয়ে যাইনা এই ঘটনায় জড়াবো না জন্য কিংবা আমাদের সাহস কুলিয়ে উঠেনা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করি এসব ত আমাদের গ্রন্থগত বিদ্যা যার বুলি আমরা আওরাতে পারি কিন্তু বাস্তবিকে প্রয়োগ করতে পারিনা।
এদেশে যারা এমন বড় বড় অপরাধ করে বিশেষ করে যারা ভাইরাল হয় তারা হতে পারে কোন রাজনৈতিক দলের ক্ষমতাশালীর সেল্টার প্রাপ্ত কিন্তু আমরা যদি অপরাধে প্রতিবাদ করি তবে কেউ আমাদের কোন কিছুই ছিড়তে পারবেনা কারন কোন রাজনৈতিক দলই অপরাধ কে সমর্থন করেনা।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কথাই বলি, কোন আওয়ামীলীগ কর্মি কিংবা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সহ অন্যনা সকল সহযোগী সংগঠনের কোন কর্মি কোন অপরাধ করলে তা আওয়ামীলীগ কখনো সমর্থন করবেনা বরং সেই অপরাধী কে আইনের আওতায় আনতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করবে যেমনটাই এই দীর্ঘসময়ে ক্ষমতায় থাকা মুজিব কন্যা সাহসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়ে এসেছেন, কিন্তু তবুও যারা অপরাধে যুক্ত হয় তাদের কে শুধু বিচারেও আওতায় এনে তাদের মদদদাতাদের রেহাই দেওয়া হয়।
নয়নের বন্দুক যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছে, আমি ব্যাক্তিগত ভাবে সাময়িক খুশি কিন্তু নয়নের মদদাদাতারা যতক্ষন তাদের নিজেদের আড়ালে রাখবে এবং কোন রাজনৈতিক দলকে ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করবে ততক্ষণ আমাদের জন্য সেই রাজনৈতিক দল লজ্জার কারন ই হয়ে থাকবে।
নয়নের মৃত্যুতে অপরাধীদের মুখে চপেটাঘাত করে যতটা প্রসংসনীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনি হয়েছে নয়নের সাথে রিফাত ফরাজী সহ নয়নের স্ত্রীর গ্রেফতার করে বাকিদের সন্ধান বের করা এবং কারা নয়নদের আশ্রয় দিয়েছিলো, কাদের অনুপ্রেরনায় নয়ন অস্ত্র হাতে তুলছিলো, তার হদিস খুজে বের করার পর ততটাই বীরত্ব নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনি আমাদের সামনে নিজেদের অস্তিত্ব প্রকাশ করবে, সেই আশাই করছি আমরা।
লেখকঃ শামিম ইশতিয়াক
কলামিস্ট ও সাংবাদিক
এটা আমাদের দেশের সিস্টেম, এবার অবশ্য তার ব্যাতিক্রম হয়েছে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনি সাহসীকতার পরিচয় দিয়েছে, ঘাতক নয়নকে বুলেটের যন্ত্রণায় বুঝিয়েছে রিফাতের যন্ত্রণা নিয়ে মৃত্যু হওয়াটা কতটা কষ্টের ছিলো, এর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনির প্রসংসা করতেই হয়।
আমরা জাতী হিসেবে যতটা আবেগ প্রবণ ততটাই ভিতু কারন এদেশে প্রকাশ্য কুপিয়ে হত্যা, জখম করার ঘটনা পত্রিকার শিরোনাম হতে প্রতিনিয়ত দেখি কিন্তু এসব কান্ডে কারো বাধা দেওয়ার সংবাদ আমরা কখনো পত্রিকার কোন চিপাতেও খুজে পাইনা, জাতীকে ভিতু হিসেবে আক্ষায়িত করার কারন হলো যখন প্রকাশ্যে এমন ঘটনা ঘটে তখন আমরা মোবাইল বের করে হয়ত ভিডিও শুরু করি না হয় কয়েকটি ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে লাখ লাখ লাইক কমেন্ট ভিউস নিয়ে নেই, আমরা ভিতু জন্য এগিয়ে গিয়ে সেই আক্রমণ থামাতে পারিনা, এক জন কিংবা এক দল যখন প্রকাশ্যে এমন অপরাধে ব্যাস্ত হয় তখন আমরা কিন্তু চাইলেই পারি আশে পাশে থাকা লাঠিশোটা ইট পাথর নিয়ে তাদের কেও আক্রমণ করা, আমরা আক্রমণ করতে পারিনা কারন আমাদের বিবেকে লাগে যে কেনো একজন মানুষ কে আমি আক্রমণ করব অথচ চোখের সামনে নিরিহ আরেকটি মানুষের আঘাত সহ্য করতে দেখাতে আমাদের বিবেক আমাদের একটুও খোচা দেয় না।
আমাদের দেশে অপরাধ অনেক কমে যেতো যদি আমরা সোচ্চার হতাম ওই সকল স্পটে, মনে করুন বদরুলের কথা, ঘাতক যখন প্রকাশ্য রাস্তায় লোকচক্ষুর সামনে খাদিজাকে কুপাচ্ছিলো তখন কিন্তু কেউ সামনে যায়নি কিসের ভয় ছিলো আমাদের দা'য়ের কোপের নাকি বদরুলের ক্ষমতার যে বদরুল পরে প্রতিবাদ করতে আসা সাহসী মানুষগুলোকে মার্ক করে রেখে প্রতিশোধ নিবে, একটা ঘাতক কে সবাই মিলে রুখে দেওয়া কোন ব্যাপার না, কিন্ত আমরা দশে মিলে করি কাজে বিশ্বাসি না হয়ে লেজগুটিয়ে নিয়ে দূরে সরে নাই, আর এতেই আমাদের কি দোষ আমরা ত জন্মের পর থেকেই মুখস্ত করে এসেছি নিজে বাচলে বাপের নাম।
বাংলাদেশে প্রকাশ্য হত্যা, ধর্ষণ, চাদাবাজী, ছিনতাই এসব আমরা সাধারণ জনগচাইলেই আটকিয়ে দিতে পারি কিন্তু আমরা এসবে এগিয়ে যাইনা এই ঘটনায় জড়াবো না জন্য কিংবা আমাদের সাহস কুলিয়ে উঠেনা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করি এসব ত আমাদের গ্রন্থগত বিদ্যা যার বুলি আমরা আওরাতে পারি কিন্তু বাস্তবিকে প্রয়োগ করতে পারিনা।
এদেশে যারা এমন বড় বড় অপরাধ করে বিশেষ করে যারা ভাইরাল হয় তারা হতে পারে কোন রাজনৈতিক দলের ক্ষমতাশালীর সেল্টার প্রাপ্ত কিন্তু আমরা যদি অপরাধে প্রতিবাদ করি তবে কেউ আমাদের কোন কিছুই ছিড়তে পারবেনা কারন কোন রাজনৈতিক দলই অপরাধ কে সমর্থন করেনা।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কথাই বলি, কোন আওয়ামীলীগ কর্মি কিংবা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সহ অন্যনা সকল সহযোগী সংগঠনের কোন কর্মি কোন অপরাধ করলে তা আওয়ামীলীগ কখনো সমর্থন করবেনা বরং সেই অপরাধী কে আইনের আওতায় আনতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করবে যেমনটাই এই দীর্ঘসময়ে ক্ষমতায় থাকা মুজিব কন্যা সাহসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়ে এসেছেন, কিন্তু তবুও যারা অপরাধে যুক্ত হয় তাদের কে শুধু বিচারেও আওতায় এনে তাদের মদদদাতাদের রেহাই দেওয়া হয়।
নয়নের বন্দুক যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছে, আমি ব্যাক্তিগত ভাবে সাময়িক খুশি কিন্তু নয়নের মদদাদাতারা যতক্ষন তাদের নিজেদের আড়ালে রাখবে এবং কোন রাজনৈতিক দলকে ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করবে ততক্ষণ আমাদের জন্য সেই রাজনৈতিক দল লজ্জার কারন ই হয়ে থাকবে।
নয়নের মৃত্যুতে অপরাধীদের মুখে চপেটাঘাত করে যতটা প্রসংসনীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনি হয়েছে নয়নের সাথে রিফাত ফরাজী সহ নয়নের স্ত্রীর গ্রেফতার করে বাকিদের সন্ধান বের করা এবং কারা নয়নদের আশ্রয় দিয়েছিলো, কাদের অনুপ্রেরনায় নয়ন অস্ত্র হাতে তুলছিলো, তার হদিস খুজে বের করার পর ততটাই বীরত্ব নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনি আমাদের সামনে নিজেদের অস্তিত্ব প্রকাশ করবে, সেই আশাই করছি আমরা।
লেখকঃ শামিম ইশতিয়াক
কলামিস্ট ও সাংবাদিক
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০২/০৭/২০১৯তবুও নয়নদের মৃত্যু হোক।