বোকা প্রেমিকা
টাউনহল দাঁড়িয়ে ছিল নীলাভ্র , নীলাময়ী কে একটা জুরুরী কল দিতে হবে,
নীলাময়ী বসে আছে পার্কে, মেরুন রঙের শাড়ি আর গোলাপি রজ্ঞের ব্লাউজ পরে, আজ নীলাভ্রই তাকে ড্রেসকোর্ট টা দিয়েছে, মেরুন শাড়িতে কেমন লাগে তাকে তা দেখতে খুব ইচ্ছা করছিল।
ফোনে ব্যালেন্স নাই পকেটও ফাকা, ১৫ টাকা ছিল পকেটে চায়ের দোকানে বসে বেনসন এর ধোয়ার সাথে তাও উড়ে গেলো এখন পকেটে কেবল দুই টাকা আর একটা চকলেট আছে, আজকাল দোকানদারেরাও পেয়েছে এক নিয়ম এক টাকার বদল চকলেট ধরিয়ে দেয়।
অদূরেই এক মেয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, হাতে দুটি মোবাইল, নীলাভ্র কাছে এগিয়ে গিয়ে বলল
- এক্সকিউজ মি আপু একটা ফোন দেয়া যাবে?
- হোয়াট? আপনাকে ফোন দিব কেন?
- ইয়ে আপু একটা কল দিব, আমার ফোনে ব্যালেন্স নাই,
- সরি আমার ফোনেও ব্যালেন্স নাই,
- ওহ, আপনার আছে ২০ টাকা হবে?
- কেন?
- ২০ টাকা আপনার নাম্বারে রিচার্জ করব, তারপর ফোন দিব,
মেয়েটি নীলাভ্রের দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো, নীলাভ্রের লজ্জা পাওয়া উচিত, কিন্তু তার লজ্জা হচ্ছেনা, অভাব থাকলে মানুষের লজ্জা থাকেনা, কি এক নিয়ম! অভাবের স্রোতে লজ্জা ধুয়ে যায়।
- এই নিন তারাতারি কথা বলবেন,
মেয়েটির কথায় নীলাভ্র মুচকি হাসলো, ফোন হাতে নিয়ে নীলাময়ী কে ফোন দিল, রিং বাজছে ফোন তুলল নীলাময়ী,
- হ্যালো নীলাময়ী কি করো?
- কি করি মানে? জানোনা কি করি? বসে আছি পার্কে তুমি কই আসবা কখন?
- শুনো নীলাময়ী আমি আসতে পারবোন আমার এক আত্ত্বিয় মারা গেছে, আমি ওই বাড়িতেই আছি, এক বড় ভাইয়ের ফোন থেকে তোমাকে ফোন দিলাম, আর শুনো বলছিলাম যে তোমাকে রেস্টুরেন্ট এ খাওয়াবো তা আর হচ্ছেনা, তুমি বাসায় খেয়ে নিও,
বলেই সোজা ফোন রেখে দিল নীলাভ্র,
-আপনি মিথ্যা বললেন কেন?
মেয়েটি বলে উঠলো,
-আপনি ফোনে ব্যালেন্স রেখেও আমাকে মিথ্যা বলছিলেন কেন? মিথ্যা মিথ্যা কাটাকাটি,
মেয়েটি কথা বাড়ালো না নীলাভ্রও কথা বাড়ালো না, সোজা হাটা দিল সে,
পকেটে টাকা নাই পার্কে গেলে হয়ত জমিয়ে গল্প করা যেতো নীলাময়ীর সাথে কিন্তু রেস্টুরেন্ট এ গেলে ত ইজ্জতের ফালুদ হতো, অবশ্য বিলটা শেষে নীলাময়ীই দিত কিন্তু আত্তসম্মান বলে ত কিছু আছে তার,
পকেটে ফোন ব্রাইবেট করছে, নীলাভ্র জানে নীলাময়ী ফোন দিচ্ছে, ফোন দিয়ে ইচ্ছা মত জাড়ি দিবে, ন্যাকা কান্নার সুরে বলবে আসবাইনা যখন আমাকে সাজাইলা কেন? আসলেও তুমি অকর্মা, তোমাকে ভালোবাসাটাই আসলে ভুল, মেয়েটার এই এক সমস্যা কথা বললে আর থামতে চায়না, মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় দর্জির কাছে নিয়ে মেয়েটার মুখে ইচ্ছামত সেলাই দিয়ে দেই.
না এবার রিসিভ করতেই হবে লাগাতার কল দিচ্ছে,
- হ্যালো আমি ত মৃত বেক্তির বাড়িতে আছি পরে ফোন দেও, আর শুনো রাগ কইরোনা তুমি বাসায় চলে যাও,
- আমাকে নিয়ে না ভাবলেও হবে, এখন বলো খাইছো দূপুরে?
- হুম খেয়েই ত আসছি,
- তুমি ত বলছিলা খাইবা দূপুরে, এক সাথে রেস্টুরেন্ট এ খাইবা আমার সাথে
- হুম ইয়ে মানে খেয়ে বের হইছি, পরে ফোন দেও আমি ব্যাস্ত আছি,
- আর কত নীলাভ্র! বিকাশে কত টাকা আছে?
- ২টাকা আছে,
- খরচের টাকাটাও রাখতে পারোনা, আসলেও তুমি অকর্মা,
বলে ফোন রেখে দিল নীলাময়ী,
যাক আপাতত বাচা গেলো রাগ টা জাড়েনাই, তবে শিউর রাতে জাড়বে.
আবারো হাটা দিল নীলাভ্র, অযথাই হাটতে হবে এখন, দুপুরে খাওয়া হয়নি, মেসের টাকা দেয়া হওনি তাই খাওয়াও হচ্ছেনা, বাইরেই খেতে হচ্ছে, এখন সেই পথটাও শেষ খরচের টাকাটাও আজ শেষ হলো।
পরপর দুটি মেসেজ আসলো নীলাভ্রের ফোনে একটা বিকাশ থেকে you have recive 1000 BDT from নীলাময়ীর নাম্বার,
আরেকটা মেসেজ আসলো নীলাময়ীর নাম্বার থেকে, আমি জানতাম তুমি আসবানা, তোমার কাছে ত মেসে দেয়ার টাকাই নাই, তোমার মেসের ছোট ভাই সকালে বলল মেসে টাকা দাওনাই তার খাবার বন্ধ তোমার, তাই আমিও যাইনাই আমি বাসাতেই আছি, মেসে টাকা দিবা ১হাজার আর রাস্তায় মেয়ে ছাড়া কি কোন পুরুষের থেকে ফোন নিয়ে কল দেয়া যায়না??
মেয়েটির মুখ টা মনে করতে চেষ্টা করছে নীলাভ্র, আরেকদিন মেয়েটাকে দেখলে কয়েকটা কঠিন কথা শুনিয়ে দিতে হবে, সব বলে দিল নীলাময়ীকে,
নীলাময়ীকে কোন কিছু জানায় না নীলাভ্র, জানাতে ইচ্ছা করেনা, জানালেই হলো বোকা মেয়েটা কিভাবে যেনো টাকা ম্যানেজ করে তাকে দিয়ে দেয়, ৫০,১০০ টাকা থেকে শুরু করে যত লাগে ততই দেয়, কত বোকা প্রেমিকা হলে এভাবে বেকার এক প্রেমিকের পাশে দাঁড়ায় তা বোধ্যগম্য হয়না তার.
নীলাময়ী কে একটা থেনক্স দেয়া দরকার মেসেজের রিপ্লাই এ thanx লিখেও কেটে দিল নীলাভ্র, না দিবনা থ্যানক্স, কিছু কিছু খুশির কৃতজ্ঞতা না করতে বড্ড তৃপ্তি লাগে তার....
শামিম ইশতিয়াক
আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ ।
নীলাময়ী বসে আছে পার্কে, মেরুন রঙের শাড়ি আর গোলাপি রজ্ঞের ব্লাউজ পরে, আজ নীলাভ্রই তাকে ড্রেসকোর্ট টা দিয়েছে, মেরুন শাড়িতে কেমন লাগে তাকে তা দেখতে খুব ইচ্ছা করছিল।
ফোনে ব্যালেন্স নাই পকেটও ফাকা, ১৫ টাকা ছিল পকেটে চায়ের দোকানে বসে বেনসন এর ধোয়ার সাথে তাও উড়ে গেলো এখন পকেটে কেবল দুই টাকা আর একটা চকলেট আছে, আজকাল দোকানদারেরাও পেয়েছে এক নিয়ম এক টাকার বদল চকলেট ধরিয়ে দেয়।
অদূরেই এক মেয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, হাতে দুটি মোবাইল, নীলাভ্র কাছে এগিয়ে গিয়ে বলল
- এক্সকিউজ মি আপু একটা ফোন দেয়া যাবে?
- হোয়াট? আপনাকে ফোন দিব কেন?
- ইয়ে আপু একটা কল দিব, আমার ফোনে ব্যালেন্স নাই,
- সরি আমার ফোনেও ব্যালেন্স নাই,
- ওহ, আপনার আছে ২০ টাকা হবে?
- কেন?
- ২০ টাকা আপনার নাম্বারে রিচার্জ করব, তারপর ফোন দিব,
মেয়েটি নীলাভ্রের দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো, নীলাভ্রের লজ্জা পাওয়া উচিত, কিন্তু তার লজ্জা হচ্ছেনা, অভাব থাকলে মানুষের লজ্জা থাকেনা, কি এক নিয়ম! অভাবের স্রোতে লজ্জা ধুয়ে যায়।
- এই নিন তারাতারি কথা বলবেন,
মেয়েটির কথায় নীলাভ্র মুচকি হাসলো, ফোন হাতে নিয়ে নীলাময়ী কে ফোন দিল, রিং বাজছে ফোন তুলল নীলাময়ী,
- হ্যালো নীলাময়ী কি করো?
- কি করি মানে? জানোনা কি করি? বসে আছি পার্কে তুমি কই আসবা কখন?
- শুনো নীলাময়ী আমি আসতে পারবোন আমার এক আত্ত্বিয় মারা গেছে, আমি ওই বাড়িতেই আছি, এক বড় ভাইয়ের ফোন থেকে তোমাকে ফোন দিলাম, আর শুনো বলছিলাম যে তোমাকে রেস্টুরেন্ট এ খাওয়াবো তা আর হচ্ছেনা, তুমি বাসায় খেয়ে নিও,
বলেই সোজা ফোন রেখে দিল নীলাভ্র,
-আপনি মিথ্যা বললেন কেন?
মেয়েটি বলে উঠলো,
-আপনি ফোনে ব্যালেন্স রেখেও আমাকে মিথ্যা বলছিলেন কেন? মিথ্যা মিথ্যা কাটাকাটি,
মেয়েটি কথা বাড়ালো না নীলাভ্রও কথা বাড়ালো না, সোজা হাটা দিল সে,
পকেটে টাকা নাই পার্কে গেলে হয়ত জমিয়ে গল্প করা যেতো নীলাময়ীর সাথে কিন্তু রেস্টুরেন্ট এ গেলে ত ইজ্জতের ফালুদ হতো, অবশ্য বিলটা শেষে নীলাময়ীই দিত কিন্তু আত্তসম্মান বলে ত কিছু আছে তার,
পকেটে ফোন ব্রাইবেট করছে, নীলাভ্র জানে নীলাময়ী ফোন দিচ্ছে, ফোন দিয়ে ইচ্ছা মত জাড়ি দিবে, ন্যাকা কান্নার সুরে বলবে আসবাইনা যখন আমাকে সাজাইলা কেন? আসলেও তুমি অকর্মা, তোমাকে ভালোবাসাটাই আসলে ভুল, মেয়েটার এই এক সমস্যা কথা বললে আর থামতে চায়না, মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় দর্জির কাছে নিয়ে মেয়েটার মুখে ইচ্ছামত সেলাই দিয়ে দেই.
না এবার রিসিভ করতেই হবে লাগাতার কল দিচ্ছে,
- হ্যালো আমি ত মৃত বেক্তির বাড়িতে আছি পরে ফোন দেও, আর শুনো রাগ কইরোনা তুমি বাসায় চলে যাও,
- আমাকে নিয়ে না ভাবলেও হবে, এখন বলো খাইছো দূপুরে?
- হুম খেয়েই ত আসছি,
- তুমি ত বলছিলা খাইবা দূপুরে, এক সাথে রেস্টুরেন্ট এ খাইবা আমার সাথে
- হুম ইয়ে মানে খেয়ে বের হইছি, পরে ফোন দেও আমি ব্যাস্ত আছি,
- আর কত নীলাভ্র! বিকাশে কত টাকা আছে?
- ২টাকা আছে,
- খরচের টাকাটাও রাখতে পারোনা, আসলেও তুমি অকর্মা,
বলে ফোন রেখে দিল নীলাময়ী,
যাক আপাতত বাচা গেলো রাগ টা জাড়েনাই, তবে শিউর রাতে জাড়বে.
আবারো হাটা দিল নীলাভ্র, অযথাই হাটতে হবে এখন, দুপুরে খাওয়া হয়নি, মেসের টাকা দেয়া হওনি তাই খাওয়াও হচ্ছেনা, বাইরেই খেতে হচ্ছে, এখন সেই পথটাও শেষ খরচের টাকাটাও আজ শেষ হলো।
পরপর দুটি মেসেজ আসলো নীলাভ্রের ফোনে একটা বিকাশ থেকে you have recive 1000 BDT from নীলাময়ীর নাম্বার,
আরেকটা মেসেজ আসলো নীলাময়ীর নাম্বার থেকে, আমি জানতাম তুমি আসবানা, তোমার কাছে ত মেসে দেয়ার টাকাই নাই, তোমার মেসের ছোট ভাই সকালে বলল মেসে টাকা দাওনাই তার খাবার বন্ধ তোমার, তাই আমিও যাইনাই আমি বাসাতেই আছি, মেসে টাকা দিবা ১হাজার আর রাস্তায় মেয়ে ছাড়া কি কোন পুরুষের থেকে ফোন নিয়ে কল দেয়া যায়না??
মেয়েটির মুখ টা মনে করতে চেষ্টা করছে নীলাভ্র, আরেকদিন মেয়েটাকে দেখলে কয়েকটা কঠিন কথা শুনিয়ে দিতে হবে, সব বলে দিল নীলাময়ীকে,
নীলাময়ীকে কোন কিছু জানায় না নীলাভ্র, জানাতে ইচ্ছা করেনা, জানালেই হলো বোকা মেয়েটা কিভাবে যেনো টাকা ম্যানেজ করে তাকে দিয়ে দেয়, ৫০,১০০ টাকা থেকে শুরু করে যত লাগে ততই দেয়, কত বোকা প্রেমিকা হলে এভাবে বেকার এক প্রেমিকের পাশে দাঁড়ায় তা বোধ্যগম্য হয়না তার.
নীলাময়ী কে একটা থেনক্স দেয়া দরকার মেসেজের রিপ্লাই এ thanx লিখেও কেটে দিল নীলাভ্র, না দিবনা থ্যানক্স, কিছু কিছু খুশির কৃতজ্ঞতা না করতে বড্ড তৃপ্তি লাগে তার....
শামিম ইশতিয়াক
আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
বেগম সেলিনা খাতুন ২৪/০৩/২০১৯প্রিয় কবি ভাল লাগল। ধন্যবাদ আরো এই ধরনের লেখার আশায় রইলাম।
-
সৌরভ তালুকদার ০৭/০৩/২০১৯বা
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২০/০২/২০১৯গল্পটি মৌলিক কিনা?
-
মোঃ নূর ইমাম শেখ বাবু ২০/০২/২০১৯💚আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন প্রিয়
-
আব্দুল হক ২০/০২/২০১৯বেশ লিখেছেন।