বিপন্ন অস্তিত্বের ঠাঁই (পর্ব চার)
অফিসে ঢুকেই বিউটির মালাটি ছুঁড়ে ফেললেন অফিস ডাষ্টবিনে। যা তার নিয়মিত কাজেরই একটি অংশ। যেখানে তার স্ত্রীর রোমন্টিকতার ঘাটতি রয়েছে সেখানে এমন মালা তার পছন্দ হবারই কথা নয়। তবুও শরীফ সাহেব নিয়মিত মালা কিনে আসছেন বিউটির থেকে। কিন্তু কেন.? দয়া দেখাতে ? নাহ তা কখনোই নয়। ঐযে পরিকল্পনা। সেই পরিকল্পনারই একটি অংশ এই মালা। বেশ কবার পরিকল্পনা নিয়েও তা ভেস্তে গেছে। কিন্তু আর অপেক্ষা করা নয়। আজই কিছু একটা করতে হবে।
আজ অফিসে সারাটি সময় খুবই ফুরফুরে আমেজে কাটালেন শরীফ সাহেব। খুবই প্রফুল্ল চিত্তে সময় পার করছেন। সেই সাথে আগত মহেন্দ্রক্ষণের জন্য উশখুশ করছে তার মন। কিছু একটা মজা পাওয়ার আশায় তিনি খুবই উৎফুল্ল। অফিসে সবার সাথে অগ্রিম বিদায়ও নিয়ে নিলেন। যেহেতু কাল বাদে এক লম্বা ছুটিতে যাচ্ছেন।
অফিসে সবাই তাকে তার নামের মতোই শরীফ মানুষ হিসেবেই জানে। তিনি সবার কাছে যথেষ্ট প্রিয়। তার অমায়িক ব্যবহার সবাইকে আকৃষ্ট করে। সবাই তাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে। তবে তিনি মাঝে মাঝে নিজেকে অন্যরকম মানুষ রূপে কল্পনা করেন। যেখানে তিনি নিজেই নিজেকে ধিক্কার দেন। কিন্তু কেন?
না, তিনি আর ভাবতে চান না। আজই তিনি তার কাজ সেরে ফেলবেন। তাই তিনি আজ একটু সময়ে নিয়ে অফিস থেকে বের হলেন। কিছু ফলমূল কিনলেন। পরিচিত একটি হোটেল থেকে বিয়ার কিনলেন। অনেক দিন খাওয়া হয় না। বাসায় বাচ্চা কাচ্চার সামনে কখনও খেতে পারেন তিনি এইসব। তাই আজ নেওয়া। যেহেতু বাসা খালি। সেই সাথে একটা ডিসপেনসারিতেও গেলেন। কিছু কিনলেন। তারপর সোজা এলেন।
না, বাসায় আসলেন না তিনি। তিনি প্রথমে গেলেন বিউটির সাথে দেখা করতে। কিন্তু এখন পড়ন্ত বিকেল। এই বিকেল বেলা শরীফ সাহেব বিউটিকে পাবেন কোথায়? তাছাড়া তিনি কখনো এই সময় এখানে আসেননি। তাই তিনি বুঝতে পারছেন না তিনি কি করবেন। বা কাকে জিজ্ঞাসা করবেন তার কথা। তাছাড়া কি উপায়ে তিনি তার খোঁজ করবেন।
তারপরও কিসের এক অদম্য স্পৃহায় তিনি উত্তেজিত। তাই তিনি কোন কিছুই মনে নিতে চান না যে করেই হোক বিউটিকে তার এই মুহূর্তে চাই ই চাই। তিনি এখন আর অন্য কোন কিছু চিন্তা করতে পারছেন না। তার সমস্ত শুভবুদ্ধি কোন এক কারণে লোপ পেয়েছে।
এই সময় বিউটি অবশ্য এই সিগন্যালের কাছে থাকে না। এখানে তার কাজ সকাল বেলা। এখানকার কাজ সেরেই অর্থাৎ তার মালা বিক্রি হয়ে গেলে, সে কাগজ কুড়াতে চলে যায়। অবশ্য সব সময় যায় না। মাঝে মাঝে গ্যাপ দেয়। আজ সে কাগজের কাজে যায় নি। তাই ওখানকার আশেপাশেই রহিমা বুড়ির ভাসমান দোকানে সাহায্য করছে তাকে।
যখন অন্য কোন কাজ করে না তখন সে এখানেই থাকে। শরীফ সাহেব গাড়ি রাস্তার একপাশে পার্কিং করে এদিক ওদিক ওকে খুঁজতে থাকে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে তার চোখ পড়ে রহিমা বুড়ির দোকানে। দেখেই তার চোখ চকচক করে উঠে। তার চোখেমুখে একপ্রকার আনন্দের ঝিলিক বইতে থাকে। বিউটিকে দেখতে পেয়ে শরীফ সাহেব খুশিতে বলে উঠে,
আরে বিউটি তুমি এখানে?
রহিমা বুড়ি এক পলক শরীফ সাহেবকে দেখে। শরীফ সাহেবের অতি উৎসাহী দৃষ্টি তার অভিজ্ঞ চোখ এড়িয়ে যেতে পারে না। এই সাহেব মানুষ বিউটির মতো রাস্তার মেয়ের জন্য এতো আগ্রহী কেন?
জ্বী স্যার, আমি মাঝে মাঝে এই নানীর এখানে বসি। খুবই খুশি হয়ে বলল বিউটি। আবার পরক্ষণেই একটু চিন্তিত মুখে বলল,
তই স্যার আফনে এই অসময়ে?
না মানে, তোকে বলেছিলাম না তোর খালাম্মা তোকে দেখতে চেয়েছে।
হ কইছেন তো। এইবলে আবার লজ্জা গলায় বলে, হে তো আফনে হগল সময়ইই কন।
না না আজ তোমাকে নিতে এসেছি।
সত্যিই! বিউটি খুবই উৎফুল্ল হয়।
এতক্ষণ রহিমা বুড়ি তাদের কথা মনযোগ দিয়ে শুনছিলেন। তার এক ধরনের মনে মনে খটকা লাগলো। তাছাড়া এই সাহেবের চোখে একধরনের কু মতলবের আভাস পাচ্ছেন তিনি। বিউটির বয়স কম। তাই সে এই জগৎসংসারের অনেক কিছুই বুঝে না। তার সেই অভিজ্ঞতা নেই যা রহিমা বুড়ির আছে।
তাই রহিমা বুড়ি দোকান থেকে একটু তফাতে গিয়ে ডাক দেয় বিউটিকে,
কই বিউটি একটু একে আয় তো বুবু ।
বিউটি সাথে সাথেই জবাব দেয়, আইতাছি নানি। সেই সাথে শরীফ সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলে , স্যার একটু খাড়ান। আমি নানী কি কয় হুইন্যা আহি।
আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে। তবে একটু তাড়াতাড়ি কর। দেরী করোনা। আমার তাড়া আছে। শরীফ সাহেবের অস্থির জবাব।
বিউটি নানীর কাছে গিয়েই বলে, কই নানী কি অইছে? আমি কিন্তু আর থাকতে পারুম না। সাহেব আইছে আমারে নেওনের লাইগ্গা।
রহিম বুড়ি গলার স্বর একদম নিচুতে নামিয়ে ফেলে। আর খুবই সন্দেহ কণ্ঠে বলে, ঐ বেটি কই যাস তুই এই ব্যাটার লগে? রহিমা বুড়ির চোখেমুখে সন্দেহের কালো ছাপ।
ছিঃ নানী তুমি ঐ সাহেবরে ব্যাটা কও ক্যা। বিউটির তাচ্ছিল্য উক্তি।
বুবুরে আমি যা দ্যাখী তুই তা দ্যাখছ না। এই ব্যাটা তো সুবিধার না।
তুমার খালি মাইষ্যের সন্দ। হেই সাহেব রে আমি চিনি। বহুত বালা মানুষ।
হায়রে বেটি, হগলেই পরথম পরথম বালা তাহে। তই পুরুষ মানুষ খারাপ অইতে কতক্ষণ।
ছিঃ নানী তুমার খালি কু কতা। হইছে হইছে তুমি দোকান সামলাও। আমি গেলাম।
চলমান..........
আজ অফিসে সারাটি সময় খুবই ফুরফুরে আমেজে কাটালেন শরীফ সাহেব। খুবই প্রফুল্ল চিত্তে সময় পার করছেন। সেই সাথে আগত মহেন্দ্রক্ষণের জন্য উশখুশ করছে তার মন। কিছু একটা মজা পাওয়ার আশায় তিনি খুবই উৎফুল্ল। অফিসে সবার সাথে অগ্রিম বিদায়ও নিয়ে নিলেন। যেহেতু কাল বাদে এক লম্বা ছুটিতে যাচ্ছেন।
অফিসে সবাই তাকে তার নামের মতোই শরীফ মানুষ হিসেবেই জানে। তিনি সবার কাছে যথেষ্ট প্রিয়। তার অমায়িক ব্যবহার সবাইকে আকৃষ্ট করে। সবাই তাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে। তবে তিনি মাঝে মাঝে নিজেকে অন্যরকম মানুষ রূপে কল্পনা করেন। যেখানে তিনি নিজেই নিজেকে ধিক্কার দেন। কিন্তু কেন?
না, তিনি আর ভাবতে চান না। আজই তিনি তার কাজ সেরে ফেলবেন। তাই তিনি আজ একটু সময়ে নিয়ে অফিস থেকে বের হলেন। কিছু ফলমূল কিনলেন। পরিচিত একটি হোটেল থেকে বিয়ার কিনলেন। অনেক দিন খাওয়া হয় না। বাসায় বাচ্চা কাচ্চার সামনে কখনও খেতে পারেন তিনি এইসব। তাই আজ নেওয়া। যেহেতু বাসা খালি। সেই সাথে একটা ডিসপেনসারিতেও গেলেন। কিছু কিনলেন। তারপর সোজা এলেন।
না, বাসায় আসলেন না তিনি। তিনি প্রথমে গেলেন বিউটির সাথে দেখা করতে। কিন্তু এখন পড়ন্ত বিকেল। এই বিকেল বেলা শরীফ সাহেব বিউটিকে পাবেন কোথায়? তাছাড়া তিনি কখনো এই সময় এখানে আসেননি। তাই তিনি বুঝতে পারছেন না তিনি কি করবেন। বা কাকে জিজ্ঞাসা করবেন তার কথা। তাছাড়া কি উপায়ে তিনি তার খোঁজ করবেন।
তারপরও কিসের এক অদম্য স্পৃহায় তিনি উত্তেজিত। তাই তিনি কোন কিছুই মনে নিতে চান না যে করেই হোক বিউটিকে তার এই মুহূর্তে চাই ই চাই। তিনি এখন আর অন্য কোন কিছু চিন্তা করতে পারছেন না। তার সমস্ত শুভবুদ্ধি কোন এক কারণে লোপ পেয়েছে।
এই সময় বিউটি অবশ্য এই সিগন্যালের কাছে থাকে না। এখানে তার কাজ সকাল বেলা। এখানকার কাজ সেরেই অর্থাৎ তার মালা বিক্রি হয়ে গেলে, সে কাগজ কুড়াতে চলে যায়। অবশ্য সব সময় যায় না। মাঝে মাঝে গ্যাপ দেয়। আজ সে কাগজের কাজে যায় নি। তাই ওখানকার আশেপাশেই রহিমা বুড়ির ভাসমান দোকানে সাহায্য করছে তাকে।
যখন অন্য কোন কাজ করে না তখন সে এখানেই থাকে। শরীফ সাহেব গাড়ি রাস্তার একপাশে পার্কিং করে এদিক ওদিক ওকে খুঁজতে থাকে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে তার চোখ পড়ে রহিমা বুড়ির দোকানে। দেখেই তার চোখ চকচক করে উঠে। তার চোখেমুখে একপ্রকার আনন্দের ঝিলিক বইতে থাকে। বিউটিকে দেখতে পেয়ে শরীফ সাহেব খুশিতে বলে উঠে,
আরে বিউটি তুমি এখানে?
রহিমা বুড়ি এক পলক শরীফ সাহেবকে দেখে। শরীফ সাহেবের অতি উৎসাহী দৃষ্টি তার অভিজ্ঞ চোখ এড়িয়ে যেতে পারে না। এই সাহেব মানুষ বিউটির মতো রাস্তার মেয়ের জন্য এতো আগ্রহী কেন?
জ্বী স্যার, আমি মাঝে মাঝে এই নানীর এখানে বসি। খুবই খুশি হয়ে বলল বিউটি। আবার পরক্ষণেই একটু চিন্তিত মুখে বলল,
তই স্যার আফনে এই অসময়ে?
না মানে, তোকে বলেছিলাম না তোর খালাম্মা তোকে দেখতে চেয়েছে।
হ কইছেন তো। এইবলে আবার লজ্জা গলায় বলে, হে তো আফনে হগল সময়ইই কন।
না না আজ তোমাকে নিতে এসেছি।
সত্যিই! বিউটি খুবই উৎফুল্ল হয়।
এতক্ষণ রহিমা বুড়ি তাদের কথা মনযোগ দিয়ে শুনছিলেন। তার এক ধরনের মনে মনে খটকা লাগলো। তাছাড়া এই সাহেবের চোখে একধরনের কু মতলবের আভাস পাচ্ছেন তিনি। বিউটির বয়স কম। তাই সে এই জগৎসংসারের অনেক কিছুই বুঝে না। তার সেই অভিজ্ঞতা নেই যা রহিমা বুড়ির আছে।
তাই রহিমা বুড়ি দোকান থেকে একটু তফাতে গিয়ে ডাক দেয় বিউটিকে,
কই বিউটি একটু একে আয় তো বুবু ।
বিউটি সাথে সাথেই জবাব দেয়, আইতাছি নানি। সেই সাথে শরীফ সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলে , স্যার একটু খাড়ান। আমি নানী কি কয় হুইন্যা আহি।
আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে। তবে একটু তাড়াতাড়ি কর। দেরী করোনা। আমার তাড়া আছে। শরীফ সাহেবের অস্থির জবাব।
বিউটি নানীর কাছে গিয়েই বলে, কই নানী কি অইছে? আমি কিন্তু আর থাকতে পারুম না। সাহেব আইছে আমারে নেওনের লাইগ্গা।
রহিম বুড়ি গলার স্বর একদম নিচুতে নামিয়ে ফেলে। আর খুবই সন্দেহ কণ্ঠে বলে, ঐ বেটি কই যাস তুই এই ব্যাটার লগে? রহিমা বুড়ির চোখেমুখে সন্দেহের কালো ছাপ।
ছিঃ নানী তুমি ঐ সাহেবরে ব্যাটা কও ক্যা। বিউটির তাচ্ছিল্য উক্তি।
বুবুরে আমি যা দ্যাখী তুই তা দ্যাখছ না। এই ব্যাটা তো সুবিধার না।
তুমার খালি মাইষ্যের সন্দ। হেই সাহেব রে আমি চিনি। বহুত বালা মানুষ।
হায়রে বেটি, হগলেই পরথম পরথম বালা তাহে। তই পুরুষ মানুষ খারাপ অইতে কতক্ষণ।
ছিঃ নানী তুমার খালি কু কতা। হইছে হইছে তুমি দোকান সামলাও। আমি গেলাম।
চলমান..........
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মুজিবুর রহমান মুনীর ১৮/১২/২০১৩
-
אולי כולנו טועים ১৮/১২/২০১৩ভালো লাগলো।
বেশ প্রাণ আছে গল্পটিতে। -
জি,মাওলা ১৮/১২/২০১৩চ্লুক
ভাল লাগল।