www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বাঁশ দেওয়া বাঙালির ধর্ম ও কর্ম এখন।

বাঁশ দেওয়া বাঙালির ধর্ম ও কর্ম এখন।
Md Shahin Akter
___=___=___ © __=__=___
(ক)বাঁশ এখন খুব ব্যবহৃত বস্তু,কথা তে নয় এখন দেশের উন্নয়নেও বাঁশ ব্যবহার করা হয় বাস্তবে।রাস্থা-ঘাট,বিল্ডিং এমনকি সরকারি যেকোন প্রজেক্ট এ আপনি খুঁজলে বাঁশ পাবেন।
মানুষ আজ কাল সত্যি সত্যি বাঁশ ব্যবহার করতে শিখেছে,এই দেখে আমার খুব গর্ব করতে ইচ্ছে হয়।শুধু দেশে নয় সারা বিশ্বে এই বাঙালি বাঁশ ব্যবহার করে চলেছে।মাফ করবেন আমি নিজেও একজন বাঙালি। তাতে বলতে কোন লজ্জা নেই।সত্য বললে দোষ কিসের?

যাইহোক মূল আলোচনা তে আসি....
(খ)যশোর পলিটেকনিক এ পড়ার সময় নিজের হাত খরচের জন্য পার্ট টাইম একটা কাজ খুঁজতে কার না হাত পা ধরেছি!কিন্তু কোন কাজ হলো না।অবশেষে আমার গ্রামের এক চাচার মাধ্যমে আমার ডিপার্টমেন্ট এর এক বড় ভাই এর সাথে পরিচয় হয়(নাম বলা নিষেধ!)।চাচা অনেক দিন ধরে যশোরে থাকে,এখানেই তার এখন সব।আব্বু তার (চাচার) সাথে আমার পরিচয় করে দিলো একদিন সাথে নিয়ে তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে।আর বললো," ছেলেটা তোমার এলাকাতে রেখে গেলাম একটু দেখা শুনা করো।"

(গ)পরিচয়ের পর নিয়মিত যশোর পলিটেকনিক এর সেই বড় ভাই এর সাথে ফোনে কথা বলি একটা পার্ট টাইম কাজের জন্য। বলে, আমি দেখছি হলে জানাবো।আমি মাঝে মাঝে ছেলেটাকে কত না ডিস্টার্ব করেছি একটা কাজের জন্য!হঠাৎ একদিন আমাকে তিনিই ফোন করে বললো," শাহীন আমার সাথে একটু এক জায়গাতে যেতে হবে, তুমি না একটা পার্ট টাইম কাজের কথা বলেছিলে?আমি আনন্দে শুধু বললাম কোথায়, কখন?আর কোন প্রশ্ন করেনি।
সময় আর জায়গার নাম বলে দিলো সোজা চলে গেলাম।
যেয়ে দেখি পার্ট টাইম জবের নাম হলো:-
"ডেসটিনি ২০০০লি: কোম্পানি "
আমি এটাকে "ডেসটিনি ২০০০আনলিমেটেড চিটারি কোম্পানি" নাম রেখেছি অনেক আগে থেকে সেটা তিনি জানেন না।নাম রাখার কারণ অনেক গুলোর মধ্য একটা বলি,(১)আমার গ্রামে আমারই এক ক্লাসমেট সে ক্লাস সেভেন পাস(এর পরে আর সে পড়াশুনা করি নাই) করে ডেসটিনিতে ডুকে গলাই টাই(!) পরে ঘুরাতে এলাকায় চরম বিনোদন আর আলোচনার ঝড় উঠে ছিলো সেই সময়।তাকে জিজ্ঞাস করাতে সে বললো, "আমি একটা জব করি তাই সেখানে এইভাবে চলা ফেরা করতে বলেছে।তাই আমিও করছি।"

(ঘ)বড় ভাই তার অফিসে
আমাকে যত রকম বুঝানোর চেষ্টা করা হলো আমি ইচ্ছা করে বুঝতে চাইছি না।অনেক লাভ আর কোটি কোটি টাকার মালিক আমাকে বানিয়ে দিলো ওখানে (তার অফিসে)বসে।আমার গাড়ি হলো,বাড়ি হলো ব্যাংকে টাকা হলো,বিদেশ ঘুরার জন্য ভিসা হলো!আমি তখন স্বপ্নের মধ্যে কিন্তু ইচ্ছা করেই বুঝতে চাইলাম না(কারণ আগেই বলেছি)।শেষ মেশ তার অফিস থেকে বের হয়ে পায়ে হাটছি আর ভাবছি এইটাই হলো আমার চরম বাস্তব......
আগে যা বললো ওটা স্বপ্ন আর চিটারি করে লোক ঠকানো ব্যবসা ছাড়া আর কিছুই না। ওখানে সহজ সরল মানুষের স্বপ্নকে পুঁজি করে তারা বড় লোক হয়।আর আমি এখন রাস্তা দিয়ে রোদে পুড়ে হেটে যাচ্ছি এটাই হলো বাস্তব, আর যে মানুষ গুলো মাথার ঘাম পায়ে ফেলে একটা টাকা রোজগার করে সেটাই হলো উত্তম ও হালাল আয়।
আর এই টাকা দিয়ে আপনি পৃথিবীর যত হালাল বস্তু কিনে খাবেন মনে হবে বেহেশত থেকে আল্লাহ প্রদত্ত পাঠানো।
আর হারাম টাকা দিয়ে যদি গরুর কলিজাও খান সেটা হবে আপনার জন্য রোজ কেয়ামতের জন্য গলার কাটা।
কয়েকদিন পরে শুনি ডেসটিনি উদাও(দেশের সকলের তা জানা)..
ভাই এখন নিজ একটা প্রতিষ্ঠানের মালিক।কিন্তু কখনো ডেকে আর বলেনি শাহীন তুমি আমার প্রতিষ্ঠানে একটা কাজ করো আর আমার প্রতিষ্টানকে বড় করার চিন্তা ভাবনা করো।বলেনি হয় তো আমাকে দিয়ে তার ওই ব্যবসার ধান্দা হবে না বা আমি তার প্রতিষ্ঠানের জব করার সুযোগ্য নয়।হতে পারে কোন একটা।
মা বলতো," বাবা বিনা লাভে কেউ তুলাও বহন করে না।"ঘটনা তা সেদিন প্রমাণিত।

শেষ করবো বাস্তবতা দিয়েঃ-
(ঙ)বিদেশে বসবাস করছি ১লা ডিসেম্বর মাস আসলে এক বছর হবে। অনেক লোকের সাথে পরিচয়, জানা শুনা এক বছরে কম হলো না।
এখানেও ডেসটিনির মত অনেক ব্যবসা বাঙালি করছে।সেটা হোক হালাল বা হারাম।
তাদের কাছে জব চাওয়া মানে ওই ডেসটিনি অফিসে নিয়ে ব্রেইন ওয়াশ করা আর স্বপ্ন দেখানো ছাড়া কিছু নয়।শরীর খাটিয়ে রোজগার করা আর ধান্দাবাজি করে এসি ঘরে বসবাস করা এক নয়।দালাল আর তেল মন্দন লোক বাদ দিলে বিদেশে আর লোক পাওয়া অনেক মুশকিল।আমার এক ভাই বলে,"যত সব পাপী বান্দা নিজ দেশ ছেড়ে পরদেশে বসবাস করে"। তাই সাবধানে ধ্যান জ্ঞান হবে নিজের চরকায় নিজে তেল দেওয়া।
তবে একটা জিনিস ভালো ভাবে বুঝলাম বাঙালি বাঁশ ব্যবসায়ে অনেক উন্নতি লাভ করছে বা করবে আশা করি।কে কাকে কত বেশি বাঁশ দিতে হয় সে বাঙালি ছাড়া জানে না অন্য জাতি।তাই বাঁশ দেওয়া এখন বাঙালির ধর্ম ও কর্ম হয়ে গেছে।
এই উপলক্ষ্যে বাঁশ প্রকল্প হাতে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে আমাদের।।।
জয় বাঙালী, জয় বাঁশ প্রকল্প।
জিন্দাবাদ বাঁশ প্রকল্প।

#প্রবাস_ডায়েরি।
#বাঙালি।
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ১৩৫৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২০/১১/২০১৭

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast