অশ্রু
অল্প বয়সী একটা মেয়ে, কত হবে বয়স, চৌদ্দ কি পনের। মেয়েটের কোলে ৪/৫ মাসের একটা বাচ্চা। এবং মেয়েটার সাথে আছে ৩০/৩২ বছরের একজন নারী। তার ‘বা’ বগলে বিছানা বাঁলিশের পুটলি। ‘ডান’ হাতে একটা ট্রাবল ব্যাগ। ওরা দাঁড়িয়ে আছে একটা ওষুধের দোকানের সামনে। মনে হচ্ছে দীর্ঘদিন কোনো কঠিন রোগে ভুগে সবে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে। বাচ্চাটাও বেশ অসুস্থ তবে দেখতে ভীষণ কিউট। কিউট বাচ্চাটা দেখে খুব কোলে নিতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু বলতে পারছি না। বাবুটা ঘুমিয়ে আছে পরম শান্তিতে ছোট মেয়েটার কোলে। ঘুমন্ত বাচ্চাটাকে কি সুন্দর লাগছে। আহা বাচ্চারা ঘুমালে বুঝি এমন সুন্দরই লাগে। আমাকেও কি এমন সুন্দর লাগতো! আচ্ছা ঘুমন্ত বাবু বেশি কিউট হয় না কি জাগ্রত বাবু!
নিজেকে নিজেই এইসব হাবিজাবি প্রশ্ন করে চলেছি। হঠাৎ বাবুটা জেগে উঠল। তারপর মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে একটা বিশ্বজয় করা হাসি দিল। মেয়েটা তার কপালে ও হাতে চুমু এঁকে একটু নাড়াচাড়া করলো। আমি অবাক হলাম। বাচ্চারা ঘুম থেকে উঠে কাঁদে, কিন্তু বাচ্চা এ হাসছে ! তাও আবার ওই ছোট্ট মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে। বাবুটার হাসি দেখে মনে হচ্ছে ও যেনো ওর মায়ের পরম মমতার আঁচলে আছে। কিন্তু বাচ্চাটার মা তো পাশের ওই নারী। তবে ওকে দেখে কেন অমন তৃপ্ত হলো বাবুটা? বাবুটার চোখে একটা দারুণ যাদু আছে।
এর মাঝে দোকানের ভীড় কিছুটা কমে গেছে । ভীড় কমতেই মেয়েটা এগিয়ে যায়। মেয়েটার চোখেমুখে এক চাপা উৎকন্ঠা কাজ করছে। দোকানী বললেন কিছু বলবা তুমি? খানিকক্ষণ চুপ থেকে দোকানীর সাথে কথা বলতে শুরু করল। বলে রাখি ওই দোকানী আমার কাক্কু। আমি আমার কাকাদের কাক্কু বলি। এতক্ষণ বাবুটা বা হাতে ধরা ছিলো। এবার ডান হাতে ঘুরিয়ে নিয়ে বাঁ হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলছে। মনে ইচ্ছে ওদের কাছে কোনো টাকা পয়সা নেই। বাকিতে ওষুধ নেবে বলে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছে। মনে হয় হাত নেড়ে নেড়ে কারো রেফারেন্স দিচ্ছে।
হুম ঠিক তাই। সে কারো রেফারেন্সি দিলো। মেয়েটা যার রেফারেন্স দিল সে ব্যাটা একটা বাটপার। তার খাতিরে কাক্কু ওকে ঔষধ দিবে এটা চিন্তা করাই বৃথা। যার কথা বলেছে তার নাম শুনলেই কাক্কু তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। কিন্তু আজ জ্বলে উঠলো না। বরণ অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বলল, ' ওই হারামজাদাই তো একটা ছেচ্চড়া- বাটপার । ও নিজেই তো বাকি নিয়ে টাকা দেয় না। আজ না কাল, কাল না পর্শু, এভাবে ঘুরায়। টাকা দেওয়ার ভয়ে অনেক সময় অন্য পথে হাঁটে। তোমরা এসেছ তার রেফারেন্সে বাকিতে ওষুধ নিতে। বলি এটা কি নোঙ্গরখানা? যাও, যাও তো এখান থেকে ঝামেলা কোরো না। অন্য কাস্টমার আসতে দাও। মেয়েটা বলল শুনুন...
বিনয়ের সাথেও যে মানুষকে এতোটা ডাবিয়ে দেওয়া যায় আজ এখানে না থাকলে জান্তেই পারতাম না। মেয়েটাকে থামিয়ে দিয়ে কাক্কু বলল কে তুমি? তুমি তো এর আগে পরে কখনো আমাদের এখান থেকে ঔষধ নেও নি। তোমাকে তো আমি চিনিও না। কোন বিশ্বাসে তোমাকে বাকিতে ওষুধ দিব?
মেয়েটা মনে মনে হয়তো ভাবছে আসলেই তো, উনি তো আমাকে চেনেন না। তবে কেন আমাকে বাকিতে ওষুধ দেবে। আর যিনি এখানে পাঠিয়েছেন তিনি নিজেই নাকি একটা বাটপার। নিজের বাকিই নিজে শোধ করে না। তাহলে আমার বাকি কি ভাবে সে শোধ করবে! উনার কথায় আমার এখানে আসা ঠিক হয়নি। কিন্তু এখন আমি কি করবো! কি ভাবে এই ওষুধগুলো কিনবো! আমাকে তো নিয়ে আমি ভাবিনা। আমার বাচ্চাটাকে তো আমাকে বাঁচাতেই হবে। মেয়েটা কোন কথা বলছে না। দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে মাটির দিকে তাকিয়ে আছে। নিশ্চয়ই মেয়েটার খুব কান্না আসছে। কিন্তু চোখে তার এক বিন্দু পানি নেই। কান্না আটকে রাখতে সম্ভবত দাঁত আর ঠোঁটের এই কৌশল।
চেহারা দেখে মনে হচ্ছে সে আগে কখনো এ রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি। ছোট্ট এই মাসুম বাচ্চার ওষুধ তার কাছে সেটা বিরাট ব্যাপার। সে কিছু করতে পারছে না। ওষুধ না পেলে বাবুটার প্রাণ সংশয় পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু কি করে সে ওষুধ নেবে! তার হাতে যে একটি কানাকড়িও নেই। মেয়েটা পাথরের মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছে। মানুষ তো তাই মাঝে মাঝে এক পায়ের ভর পাল্টে অন্য পায়ে ভর দিচ্ছে। বাবুটা থেকে থেকে কেঁদে উঠছে। ওর মা ওকে লোকজনের আনাগোনা আর দোকানের ঔষধপত্র দেখিয়ে থামাতে চেষ্টা করছে। মাঝে মাঝে তা দেখে বেশ মজা পাচ্ছে এবং তখন অনবরত হাত পা নেড়ে সেই আনন্দ প্রকাশ করে চলেছে। ছোট্ট এই বাবুটা জানেনা সে কতটা অসুস্থ। আমার যদি সামর্থ থাকতো তবে আমিই মেয়েটাকে ওষুধগুলো কিনে দিতাম। বাকিতেও যে কিনে দেবো সে উপায়ও নেই। কারণ এটা কাক্কুর দোকান। কাক্কুকে যদি মেয়েটাকে ঔষুধগুলো দিতে বলি তবে আমাকে হাজার প্রশ্নে জর্জরিত করবে।
কিছু কাস্টমারকে বিদায় করে কাক্কু ফের মেয়েটার দিকে নজর দিলেন। এবং জিজ্ঞেস করলেন, অসুখ কার? কার জন্য ওষুধ নিতে এসেছো? নীরবতা ভেঙে মেয়েটা বলল, আমি ও আমার বাচ্চা দুজনেই অসুস্থ কিন্তু আমার ওষুধ লাগবে না। আপনি যদি দয়া করে আমার বাবুর এই ওষুধগুলো দিতেন বড্ড উপকার হতো। ওষুধগুলো পেলে বাবুটা প্রাণে বেঁচে যাবে। আমি আপনার কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবো। কোনো মায়ের কোলে তার নাড়িছেঁড়া ধন মরে যাক আমি মানুষ হয়ে সেটা মেনে নিতে পারবেন কি?
আমি অবাক হলাম। এই বাচ্চাটার বাচ্চা ওই বাবুটা। এ আমি কি শুনছি! ভুল শুনছি না তো! নিজের কানকে নিজে বিশ্বাস করতে পারছি না। এতটুকু মেয়ে ও মা হয় কি ভাবে! ওর তো এখন পুতুল খেলার বয়স! আমি তো এতক্ষণ ওই মহিলাকে বাবুটার মা ভেবেছি। তবে ওই মহিলা কে!
কাক্কুও অবাক হয়ে বললেন, বলো কি এ বাচ্চা তোমার!
মেয়েটা বলল জ্বি। চিন্তা করবেন না আঙ্কেল উনি আপনার টাকা নিয়ে ঘুরাঘুরি করলেও আমি করবো না। আমি যদি বেঁচে থাকি তবে ২৫ তারিখ আপনার ওষুদের দাম দিয়ে যাবো। আর যদি মরে যাই তো মাফ করে দিয়েন। এতক্ষণ মেয়েটা মুখে কোনো কথাই বলছিল না। হঠাৎ যেনো পাথর মুর্তি প্রাণ ফিরে পেলো । আগের কথাগুলো কেমন জড়তা থাকলেও এখন খুব তড়িঘড়ি করে
এবং স্পষ্ট করে কথা বলছে। কাক্কু জিজ্ঞেস করলো কি ভাবে তুমি এই ওষুধের টাকা শোধ করবা? মেয়েটা জবাব দিলো '' বাবুর আব্বুর বেতন আটকে গেছে ২৫ তারিখ বেতন পাবে। তখন আপনার টাকা দিয়ে যাবো।
কাক্কু বলল ‘শোনো তোমার বাচ্চাটার অসুখ তাই ওর মুখের দিকে তাকিয়ে ঔষধ দিলাম। নয়তো দিতাম না। তোমরা থাকো কোথায়? বাচ্চার বাবা কি করে? নাম কি তার? হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মেয়েটি তার স্বামীর নাম এবং বাসার ঠিকানা বলছে। এমন ভাবে হাত নাড়ছে মনে হচ্ছে যেনো এখান থেকে বাড়িটা সুন্দর ভাবে পুরোপুরি দেখা যাচ্ছে। আসলে কিন্তু তা না। পাশের মহিলাটি কোন কথা বলছে না। সেও বাবুর মতো মাঝে মাঝে কচলে কচলে উঠছে এবং লোকজনের যাওয়া আসা আর ওষুধ-টষুধ দেখছে। উচ্ছ্বাস বা দুঃখ কোনো কিছুই যেনো নেই তার নেই। সে একদম ভাবলেশহীন।
মেয়েটার কথা শুনে কাক্কু বলল " শোনো মেয়ে তোমার স্বামী বেতন পাক আর না পাক সেটা আমার দেখার বিষয় না। সময় মত যদি টাকা না দিতে পারো তবে মনে রেখো আর কোনো দিনও আমার কাছ থেকে কোনো উপোকার পাবে না আর যদি পারো তবে আবারও পাবে। মহিলাটিকে দেখিয়ে কাক্কু প্রশ্ন করলো- ও কে?
-আমার মা।
ও তোমার মা! বয়স কত ওর?
কত আর হবে, এই ধরেন আটাশ কি ত্রিশ।
বলো কি ওরই তো এখনো বিয়ের বয়স হয়নি। অথচ তার মেয়ে তুমি। আর তুমি নিজেও একজন মা, হায় কপাল আমার! দেখে মনে হচ্ছে উনিও বেশ অসুস্থ? তুমিও অসুস্থ। তোমাদের ওষুধ না নিলে তোমরা সুস্থ হবা কি ভাবে?
গরিব ঘরের বউদের ওষুধ লাগে না আঙ্কেল । তারা এমনি এমনি সুস্থ হয়ে যায়।
কি বলছ তুমি? অসুখ কখনো গরিব বড়লোক দেখে আসে নাকি! আর এমনি এমনি সারে কখনো? ছোট্ট অসুখ সময়মত চিকিৎসা না হলে পরে তো এ থেকে অনেক বড় কোনো অসুখ হতে পারে?
হয় তো পারে? কিন্তু গরিবের দুঃখের কথা কেন শোনেন আর। ওষুধ কিনতে টাকা লাগে তা কি আর আমাদের আছে। ছোট্ট এই বাঁচ্চাটার ওষুধ কেনার সামর্থ যাদের নেই তারা নিজের ওষুধ কিনে খাবে কি করে? গরিবের জন্ম নেওয়া যে আজন্মের পাপ। আমরা বাবার সংসারে ঝাটা-লাথি খেয়ে বেড়ে উঠি। ১২/১৩ বছর কোনো রকম সেখানে ঠাই মেলে। তারপর ছেলে একটা পেলেই হয়। ব্যাস সব মামলা শেষ।হোক সে ছেলে বয়স্ক, হোক সে মাতাল, হোক সে লুচ্চা-বদমাশ তাতে কিচ্ছু এসে যায় না। মেয়ে তো বিদায় হয়েছে। মাথা থেকে বোঝা নেমেছে। এটাই অনেক বড় ব্যপার। এবার মেয়ে তুই তোর জীবন দিয়ে টান সংসার নামে ঘানি।
মেয়েটির কথা শুনতে শুনতে ভুলেই গেছি আমি যে মায়ের জন্য ওষুধ নিতে এসেছি। অবাক হয়ে শুনছি এতটুকু মেয়ে এত ভালো কথা শিখলো কোথা থেকে? এমন করে অনেক শিক্ষিত মানুষও কথা বলতে পারে না। কাক্কু বললেন তোমাদের প্রেসক্রিপশন দাও তো। দেখি কি ওষুধ দিয়েছে ডাক্তার। কাক্কু লোকটা উপরে কঠিন হলেও ভীতরটা তার খুব নরম। সে সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। আজ এই মেয়েটির পাশেও দাঁড়াবে সে।
মেয়েটার কথা শুনে আর কাক্কুর উদরতা দেখে নিজের অজান্তেই চোখের কোণে পানি চলে আসলো। চোখের পানিটা বুড়ি আঙ্গুলে টেনে ছিটিয়ে দিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করলাম আমি কবে বড় হবো আর কবে কাক্কুর মত এমন করে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারবো। মেয়েটার এই বিপদে তার পাশে থাকতে পেরে কাক্কুর ঠোঁটের কোণে ভেসে উঠলো এক স্নিগ্ধ হাসির ঝিলিক।
মেয়েটার প্রেসক্রিপশন দেখে খুঁজে খুঁজে কাক্কু ওষুধগুলো বের করে তার হাতে দিলো। মেয়েটা বলল আমার ওষুধ আবার কেন দিচ্ছেন? এ ওষুধের টাকা কোথায় পাবো আমি?
বাকির কোনো কাস্টমার এলে কাক্কু প্রথম কঠিন কঠিন সব কথা বলে। কিন্তু যদি মনে হয় আসলেই সে বিপদে পড়ে এসেছে তখন একটা অজুহাত বের করে বাকিতেই ঔষধ দিয়ে দেয়। আজ ও তাই করলেন। আজকের অজুহাত, " তোমার বাবুর অসুখ। বাবুকে সুস্থ রাখতে হলে আগে তোমাকে সুস্থ থাকতে হবে তাই দিলাম।"
আর এখানে শুধু তোমার ওষুধ না তোমার বাবুর নানির ওষুধও আছে। এমনি শত শত অজুহাত কাক্কু আমারই সামনে তৈরি করেছে।
উপকারভোগীরা অনেক সময় তার মর্যাদা রেখেছে অনেক সময় রাখে নি। তাই বলে কাক্কু তার কর্তব্য থেকে এক তিলও সরে আসেননি। আমি তাকিয়ে আছি মেয়েটার চোখের দিকে। ভীষণ মায়াময় ওর দুটি চোখ। ওর যা বুদ্ধি আর কথা বলার যে ভঙ্গি তাতে ও যদি লেখাপড়া করার সুযোগ পেতো তবে ও হয়তো সমাজকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারতো। মেয়েটার চোখে এখন আর আগের মতো সেই উৎকন্ঠা নেই। তবে চোখে পানি জমেছে। সে এবারও মনে মনে পানি আটকে রাখার চেষ্টা করছে। যাতে সবার সামনে কান্নার মতো একটা বিশ্রী ঘটনা না ঘটে। কিন্তু কিছুতেই পারছে না। ও এখন আর আগের মতো ঠোঁটে ঠোঁট টিপছে না এবং পাথরও হচ্ছে না। উচ্ছলতায় ভরা মুখ, তবু চোখে জমেছে পানি। কিন্তু না এ পানি কোনো কষ্টের পানি নয় এরকম পরিস্থিতিতে চোখে পানি আসাকে "আনন্দ অশ্রু" বলে। প্রবল আনন্দে এই ধরনের অশ্রুর বের হয় মানুষের চোখ থেকে। ওর জীবনেও সেরকম কিছু ঘটেছে এখন? না হলে এভাবে চোখ ভর্তি পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কেন!! শুধু মেয়েটি নয় চোখের কোণে পানি জমেছে ওর মায়েরও।
ওর মা কাঁথা বাঁলিশের পুটলি আর ট্যাবল ব্যাগ নামিয়ে রেখে দু’হাত উঠালো আল্লাহর দরবারে। আর বলতে লাগলো হে আল্লাহ্ আমি মা হয়ে আমার মেয়ে ও তার বাচ্চার জন্য কিছুই করতে পারিনি। অথচ আজ অজানা-অচেনা এই আমাদের বিপদে যে মানুষটা আমাদের পাশে দাঁড়ালো তাকে তুমি হায়াত দারাজ করো। তার আয় বরকত বৃদ্ধি করে দাও । তাকে তুমি সব সময় সুস্থ সুন্দর রেখো খোদা, তার পরিবার-পরিজনকে তুমি ছহিছালামতে রেখো।আর আমাদের তৌফিক দাও আমরা যেনো সময় মত উনার দিনা শোধ করে দিতে পারি, আমিন
কাক্কু বললেন শোনো “ এই ওষুধের টাকা তোমাদের দিতে হবে না, তোমরা বাসায় ফিরে যাও। আর বাচ্চাটাকে সময় মত ওষুধ খাওয়াও। মনে রেখো এ বাচ্চার জীবনের ঝুকি আছে। ওষুধ খাওয়াতে কোনো রকম অবহেলা করবা না। আমার চোখ দুটি তো আগেই নোনা পদার্থে ভরে উঠেছে। কিন্তু কি আশ্চর্য এবার আমার কাক্কুর চোখ ও টলমলো করছে।
সমাপ্ত
নিজেকে নিজেই এইসব হাবিজাবি প্রশ্ন করে চলেছি। হঠাৎ বাবুটা জেগে উঠল। তারপর মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে একটা বিশ্বজয় করা হাসি দিল। মেয়েটা তার কপালে ও হাতে চুমু এঁকে একটু নাড়াচাড়া করলো। আমি অবাক হলাম। বাচ্চারা ঘুম থেকে উঠে কাঁদে, কিন্তু বাচ্চা এ হাসছে ! তাও আবার ওই ছোট্ট মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে। বাবুটার হাসি দেখে মনে হচ্ছে ও যেনো ওর মায়ের পরম মমতার আঁচলে আছে। কিন্তু বাচ্চাটার মা তো পাশের ওই নারী। তবে ওকে দেখে কেন অমন তৃপ্ত হলো বাবুটা? বাবুটার চোখে একটা দারুণ যাদু আছে।
এর মাঝে দোকানের ভীড় কিছুটা কমে গেছে । ভীড় কমতেই মেয়েটা এগিয়ে যায়। মেয়েটার চোখেমুখে এক চাপা উৎকন্ঠা কাজ করছে। দোকানী বললেন কিছু বলবা তুমি? খানিকক্ষণ চুপ থেকে দোকানীর সাথে কথা বলতে শুরু করল। বলে রাখি ওই দোকানী আমার কাক্কু। আমি আমার কাকাদের কাক্কু বলি। এতক্ষণ বাবুটা বা হাতে ধরা ছিলো। এবার ডান হাতে ঘুরিয়ে নিয়ে বাঁ হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলছে। মনে ইচ্ছে ওদের কাছে কোনো টাকা পয়সা নেই। বাকিতে ওষুধ নেবে বলে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছে। মনে হয় হাত নেড়ে নেড়ে কারো রেফারেন্স দিচ্ছে।
হুম ঠিক তাই। সে কারো রেফারেন্সি দিলো। মেয়েটা যার রেফারেন্স দিল সে ব্যাটা একটা বাটপার। তার খাতিরে কাক্কু ওকে ঔষধ দিবে এটা চিন্তা করাই বৃথা। যার কথা বলেছে তার নাম শুনলেই কাক্কু তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। কিন্তু আজ জ্বলে উঠলো না। বরণ অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বলল, ' ওই হারামজাদাই তো একটা ছেচ্চড়া- বাটপার । ও নিজেই তো বাকি নিয়ে টাকা দেয় না। আজ না কাল, কাল না পর্শু, এভাবে ঘুরায়। টাকা দেওয়ার ভয়ে অনেক সময় অন্য পথে হাঁটে। তোমরা এসেছ তার রেফারেন্সে বাকিতে ওষুধ নিতে। বলি এটা কি নোঙ্গরখানা? যাও, যাও তো এখান থেকে ঝামেলা কোরো না। অন্য কাস্টমার আসতে দাও। মেয়েটা বলল শুনুন...
বিনয়ের সাথেও যে মানুষকে এতোটা ডাবিয়ে দেওয়া যায় আজ এখানে না থাকলে জান্তেই পারতাম না। মেয়েটাকে থামিয়ে দিয়ে কাক্কু বলল কে তুমি? তুমি তো এর আগে পরে কখনো আমাদের এখান থেকে ঔষধ নেও নি। তোমাকে তো আমি চিনিও না। কোন বিশ্বাসে তোমাকে বাকিতে ওষুধ দিব?
মেয়েটা মনে মনে হয়তো ভাবছে আসলেই তো, উনি তো আমাকে চেনেন না। তবে কেন আমাকে বাকিতে ওষুধ দেবে। আর যিনি এখানে পাঠিয়েছেন তিনি নিজেই নাকি একটা বাটপার। নিজের বাকিই নিজে শোধ করে না। তাহলে আমার বাকি কি ভাবে সে শোধ করবে! উনার কথায় আমার এখানে আসা ঠিক হয়নি। কিন্তু এখন আমি কি করবো! কি ভাবে এই ওষুধগুলো কিনবো! আমাকে তো নিয়ে আমি ভাবিনা। আমার বাচ্চাটাকে তো আমাকে বাঁচাতেই হবে। মেয়েটা কোন কথা বলছে না। দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে মাটির দিকে তাকিয়ে আছে। নিশ্চয়ই মেয়েটার খুব কান্না আসছে। কিন্তু চোখে তার এক বিন্দু পানি নেই। কান্না আটকে রাখতে সম্ভবত দাঁত আর ঠোঁটের এই কৌশল।
চেহারা দেখে মনে হচ্ছে সে আগে কখনো এ রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি। ছোট্ট এই মাসুম বাচ্চার ওষুধ তার কাছে সেটা বিরাট ব্যাপার। সে কিছু করতে পারছে না। ওষুধ না পেলে বাবুটার প্রাণ সংশয় পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু কি করে সে ওষুধ নেবে! তার হাতে যে একটি কানাকড়িও নেই। মেয়েটা পাথরের মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছে। মানুষ তো তাই মাঝে মাঝে এক পায়ের ভর পাল্টে অন্য পায়ে ভর দিচ্ছে। বাবুটা থেকে থেকে কেঁদে উঠছে। ওর মা ওকে লোকজনের আনাগোনা আর দোকানের ঔষধপত্র দেখিয়ে থামাতে চেষ্টা করছে। মাঝে মাঝে তা দেখে বেশ মজা পাচ্ছে এবং তখন অনবরত হাত পা নেড়ে সেই আনন্দ প্রকাশ করে চলেছে। ছোট্ট এই বাবুটা জানেনা সে কতটা অসুস্থ। আমার যদি সামর্থ থাকতো তবে আমিই মেয়েটাকে ওষুধগুলো কিনে দিতাম। বাকিতেও যে কিনে দেবো সে উপায়ও নেই। কারণ এটা কাক্কুর দোকান। কাক্কুকে যদি মেয়েটাকে ঔষুধগুলো দিতে বলি তবে আমাকে হাজার প্রশ্নে জর্জরিত করবে।
কিছু কাস্টমারকে বিদায় করে কাক্কু ফের মেয়েটার দিকে নজর দিলেন। এবং জিজ্ঞেস করলেন, অসুখ কার? কার জন্য ওষুধ নিতে এসেছো? নীরবতা ভেঙে মেয়েটা বলল, আমি ও আমার বাচ্চা দুজনেই অসুস্থ কিন্তু আমার ওষুধ লাগবে না। আপনি যদি দয়া করে আমার বাবুর এই ওষুধগুলো দিতেন বড্ড উপকার হতো। ওষুধগুলো পেলে বাবুটা প্রাণে বেঁচে যাবে। আমি আপনার কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবো। কোনো মায়ের কোলে তার নাড়িছেঁড়া ধন মরে যাক আমি মানুষ হয়ে সেটা মেনে নিতে পারবেন কি?
আমি অবাক হলাম। এই বাচ্চাটার বাচ্চা ওই বাবুটা। এ আমি কি শুনছি! ভুল শুনছি না তো! নিজের কানকে নিজে বিশ্বাস করতে পারছি না। এতটুকু মেয়ে ও মা হয় কি ভাবে! ওর তো এখন পুতুল খেলার বয়স! আমি তো এতক্ষণ ওই মহিলাকে বাবুটার মা ভেবেছি। তবে ওই মহিলা কে!
কাক্কুও অবাক হয়ে বললেন, বলো কি এ বাচ্চা তোমার!
মেয়েটা বলল জ্বি। চিন্তা করবেন না আঙ্কেল উনি আপনার টাকা নিয়ে ঘুরাঘুরি করলেও আমি করবো না। আমি যদি বেঁচে থাকি তবে ২৫ তারিখ আপনার ওষুদের দাম দিয়ে যাবো। আর যদি মরে যাই তো মাফ করে দিয়েন। এতক্ষণ মেয়েটা মুখে কোনো কথাই বলছিল না। হঠাৎ যেনো পাথর মুর্তি প্রাণ ফিরে পেলো । আগের কথাগুলো কেমন জড়তা থাকলেও এখন খুব তড়িঘড়ি করে
এবং স্পষ্ট করে কথা বলছে। কাক্কু জিজ্ঞেস করলো কি ভাবে তুমি এই ওষুধের টাকা শোধ করবা? মেয়েটা জবাব দিলো '' বাবুর আব্বুর বেতন আটকে গেছে ২৫ তারিখ বেতন পাবে। তখন আপনার টাকা দিয়ে যাবো।
কাক্কু বলল ‘শোনো তোমার বাচ্চাটার অসুখ তাই ওর মুখের দিকে তাকিয়ে ঔষধ দিলাম। নয়তো দিতাম না। তোমরা থাকো কোথায়? বাচ্চার বাবা কি করে? নাম কি তার? হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মেয়েটি তার স্বামীর নাম এবং বাসার ঠিকানা বলছে। এমন ভাবে হাত নাড়ছে মনে হচ্ছে যেনো এখান থেকে বাড়িটা সুন্দর ভাবে পুরোপুরি দেখা যাচ্ছে। আসলে কিন্তু তা না। পাশের মহিলাটি কোন কথা বলছে না। সেও বাবুর মতো মাঝে মাঝে কচলে কচলে উঠছে এবং লোকজনের যাওয়া আসা আর ওষুধ-টষুধ দেখছে। উচ্ছ্বাস বা দুঃখ কোনো কিছুই যেনো নেই তার নেই। সে একদম ভাবলেশহীন।
মেয়েটার কথা শুনে কাক্কু বলল " শোনো মেয়ে তোমার স্বামী বেতন পাক আর না পাক সেটা আমার দেখার বিষয় না। সময় মত যদি টাকা না দিতে পারো তবে মনে রেখো আর কোনো দিনও আমার কাছ থেকে কোনো উপোকার পাবে না আর যদি পারো তবে আবারও পাবে। মহিলাটিকে দেখিয়ে কাক্কু প্রশ্ন করলো- ও কে?
-আমার মা।
ও তোমার মা! বয়স কত ওর?
কত আর হবে, এই ধরেন আটাশ কি ত্রিশ।
বলো কি ওরই তো এখনো বিয়ের বয়স হয়নি। অথচ তার মেয়ে তুমি। আর তুমি নিজেও একজন মা, হায় কপাল আমার! দেখে মনে হচ্ছে উনিও বেশ অসুস্থ? তুমিও অসুস্থ। তোমাদের ওষুধ না নিলে তোমরা সুস্থ হবা কি ভাবে?
গরিব ঘরের বউদের ওষুধ লাগে না আঙ্কেল । তারা এমনি এমনি সুস্থ হয়ে যায়।
কি বলছ তুমি? অসুখ কখনো গরিব বড়লোক দেখে আসে নাকি! আর এমনি এমনি সারে কখনো? ছোট্ট অসুখ সময়মত চিকিৎসা না হলে পরে তো এ থেকে অনেক বড় কোনো অসুখ হতে পারে?
হয় তো পারে? কিন্তু গরিবের দুঃখের কথা কেন শোনেন আর। ওষুধ কিনতে টাকা লাগে তা কি আর আমাদের আছে। ছোট্ট এই বাঁচ্চাটার ওষুধ কেনার সামর্থ যাদের নেই তারা নিজের ওষুধ কিনে খাবে কি করে? গরিবের জন্ম নেওয়া যে আজন্মের পাপ। আমরা বাবার সংসারে ঝাটা-লাথি খেয়ে বেড়ে উঠি। ১২/১৩ বছর কোনো রকম সেখানে ঠাই মেলে। তারপর ছেলে একটা পেলেই হয়। ব্যাস সব মামলা শেষ।হোক সে ছেলে বয়স্ক, হোক সে মাতাল, হোক সে লুচ্চা-বদমাশ তাতে কিচ্ছু এসে যায় না। মেয়ে তো বিদায় হয়েছে। মাথা থেকে বোঝা নেমেছে। এটাই অনেক বড় ব্যপার। এবার মেয়ে তুই তোর জীবন দিয়ে টান সংসার নামে ঘানি।
মেয়েটির কথা শুনতে শুনতে ভুলেই গেছি আমি যে মায়ের জন্য ওষুধ নিতে এসেছি। অবাক হয়ে শুনছি এতটুকু মেয়ে এত ভালো কথা শিখলো কোথা থেকে? এমন করে অনেক শিক্ষিত মানুষও কথা বলতে পারে না। কাক্কু বললেন তোমাদের প্রেসক্রিপশন দাও তো। দেখি কি ওষুধ দিয়েছে ডাক্তার। কাক্কু লোকটা উপরে কঠিন হলেও ভীতরটা তার খুব নরম। সে সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। আজ এই মেয়েটির পাশেও দাঁড়াবে সে।
মেয়েটার কথা শুনে আর কাক্কুর উদরতা দেখে নিজের অজান্তেই চোখের কোণে পানি চলে আসলো। চোখের পানিটা বুড়ি আঙ্গুলে টেনে ছিটিয়ে দিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করলাম আমি কবে বড় হবো আর কবে কাক্কুর মত এমন করে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারবো। মেয়েটার এই বিপদে তার পাশে থাকতে পেরে কাক্কুর ঠোঁটের কোণে ভেসে উঠলো এক স্নিগ্ধ হাসির ঝিলিক।
মেয়েটার প্রেসক্রিপশন দেখে খুঁজে খুঁজে কাক্কু ওষুধগুলো বের করে তার হাতে দিলো। মেয়েটা বলল আমার ওষুধ আবার কেন দিচ্ছেন? এ ওষুধের টাকা কোথায় পাবো আমি?
বাকির কোনো কাস্টমার এলে কাক্কু প্রথম কঠিন কঠিন সব কথা বলে। কিন্তু যদি মনে হয় আসলেই সে বিপদে পড়ে এসেছে তখন একটা অজুহাত বের করে বাকিতেই ঔষধ দিয়ে দেয়। আজ ও তাই করলেন। আজকের অজুহাত, " তোমার বাবুর অসুখ। বাবুকে সুস্থ রাখতে হলে আগে তোমাকে সুস্থ থাকতে হবে তাই দিলাম।"
আর এখানে শুধু তোমার ওষুধ না তোমার বাবুর নানির ওষুধও আছে। এমনি শত শত অজুহাত কাক্কু আমারই সামনে তৈরি করেছে।
উপকারভোগীরা অনেক সময় তার মর্যাদা রেখেছে অনেক সময় রাখে নি। তাই বলে কাক্কু তার কর্তব্য থেকে এক তিলও সরে আসেননি। আমি তাকিয়ে আছি মেয়েটার চোখের দিকে। ভীষণ মায়াময় ওর দুটি চোখ। ওর যা বুদ্ধি আর কথা বলার যে ভঙ্গি তাতে ও যদি লেখাপড়া করার সুযোগ পেতো তবে ও হয়তো সমাজকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারতো। মেয়েটার চোখে এখন আর আগের মতো সেই উৎকন্ঠা নেই। তবে চোখে পানি জমেছে। সে এবারও মনে মনে পানি আটকে রাখার চেষ্টা করছে। যাতে সবার সামনে কান্নার মতো একটা বিশ্রী ঘটনা না ঘটে। কিন্তু কিছুতেই পারছে না। ও এখন আর আগের মতো ঠোঁটে ঠোঁট টিপছে না এবং পাথরও হচ্ছে না। উচ্ছলতায় ভরা মুখ, তবু চোখে জমেছে পানি। কিন্তু না এ পানি কোনো কষ্টের পানি নয় এরকম পরিস্থিতিতে চোখে পানি আসাকে "আনন্দ অশ্রু" বলে। প্রবল আনন্দে এই ধরনের অশ্রুর বের হয় মানুষের চোখ থেকে। ওর জীবনেও সেরকম কিছু ঘটেছে এখন? না হলে এভাবে চোখ ভর্তি পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কেন!! শুধু মেয়েটি নয় চোখের কোণে পানি জমেছে ওর মায়েরও।
ওর মা কাঁথা বাঁলিশের পুটলি আর ট্যাবল ব্যাগ নামিয়ে রেখে দু’হাত উঠালো আল্লাহর দরবারে। আর বলতে লাগলো হে আল্লাহ্ আমি মা হয়ে আমার মেয়ে ও তার বাচ্চার জন্য কিছুই করতে পারিনি। অথচ আজ অজানা-অচেনা এই আমাদের বিপদে যে মানুষটা আমাদের পাশে দাঁড়ালো তাকে তুমি হায়াত দারাজ করো। তার আয় বরকত বৃদ্ধি করে দাও । তাকে তুমি সব সময় সুস্থ সুন্দর রেখো খোদা, তার পরিবার-পরিজনকে তুমি ছহিছালামতে রেখো।আর আমাদের তৌফিক দাও আমরা যেনো সময় মত উনার দিনা শোধ করে দিতে পারি, আমিন
কাক্কু বললেন শোনো “ এই ওষুধের টাকা তোমাদের দিতে হবে না, তোমরা বাসায় ফিরে যাও। আর বাচ্চাটাকে সময় মত ওষুধ খাওয়াও। মনে রেখো এ বাচ্চার জীবনের ঝুকি আছে। ওষুধ খাওয়াতে কোনো রকম অবহেলা করবা না। আমার চোখ দুটি তো আগেই নোনা পদার্থে ভরে উঠেছে। কিন্তু কি আশ্চর্য এবার আমার কাক্কুর চোখ ও টলমলো করছে।
সমাপ্ত
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আব্দুর রহমান আনসারী ৩০/০৭/২০২৩খুব সুন্দর
-
শাকিল আহমেদ তৌফিক ১২/০১/২০২২আবেগাপ্লুত হয়ে গেলাম। ধন্যবাদ এতো চমৎকার একটি লেখা উপহার দেওয়ার জন্য
-
ফয়জুল মহী ০৮/০১/২০২২মনোমুগ্ধকর ,
শুভ কামনা রইল নিরন্তর । -
শুভজিৎ বিশ্বাস ০৮/০১/২০২২খুব সুন্দর বাস্তবধর্মী লেখা। এই ঘটনা বাংলাদেশ নয়, ভারতবর্ষে প্রতিটি গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়।
একটা কথা বলতে খুব ইচ্ছা করছে, লেখায় এক জায়গায় সম্ভবত 'কাক্কু' লিখতে গিয়ে 'আক্কু' লিখেছেন।
ভালো থাকবেন। আমার লেখা পড়বেন। মন্তব্য করবেন। ধন্যবাদ।