মৃত্যুকে চিঠি
(সম্পূর্ণ নেগেটিভ ধারায় এটি লেখা হয়েছে)
খামখা ভয় দিও নাতো, এই বলে
মৃত্যুকে চিঠি লিখেছিলাম গত রাতে।
করোনার জন্য লক ডাউন, আইসোলেশন, ভেন্টিলেটর, হোম কোয়ারেন্টাইন।
এক একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানেই
সুবর্ণ সুযোগ আখের গোছানোর।
এমন মুহুর্তে কেন অহেতুক ভয় দেখাও, বলো তো?
জানো তো, আমি হলাম পাতি নেতা,
সেদিন যখন প্রথম কলেজে রেখেছিলাম পা
গিয়েছিলাম নেতার সাথে দেখা করতে
বিশেষ প্রয়োজনে।
নেতার পাশে দাঁড়ানো লোকটা
কি যেনো কানেকানে বলে
মুহুর্ত ভাবেন নেতা,তারপর বললেন-
'কাজ হয়ে যাবে।'
স্থান ত্যাগ করছি, পিছন থেকে বললেন-'শোন'
পিছন ফিরলাম,তিনি বললেন-' হাদিয়া দিবিনা?
মাথা চুলকাতে থাকলাম, কী হাদিয়া দিবো।
আমার করুণ চাহনি দেখে মুচকি হেসে বলেন
-এখন থেকে আমার পিছুপিছু থাকবি কেমন।'
ফুর্তিতে নেচে ওঠে মন,
মনে মনে লাফিয়ে নাচতে শুরু করলাম।
নেতার পিছনে থাকবো, খুলে যাবে ভাগ্য!
যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়ে গেলাম।
সেই থেকে ঘুরতে থাকি তাঁর পিছুপিছু
একদিন সে তাঁর সন্তানকে পাঠালেন বিদেশে
দেশে থাকলে লেখাপড়া হবে না, বকে যাবে।
নিজের সন্তান মানুষ করতে পাঠালেন প্রবাসে
আর আমি মাইনকার চিপায় ফেসে গিয়ে
নেতার ডানহাত বাহাত হয়ে
করাতে থাকি বৈধ-অবৈধ সব কাজ।
সারা বছর নেতার চামচামি করি
লেখাপড়া শিখে মানুষ হবার একবুকে স্বপ্ন নিয়ে
গ্রাম থেকে শহরে আসা একটা তরুণ
পেয়ে গেছে পাতি নেতার খেতাব।
লেখাপড়া সব উঠেছে তুঙ্গে।
আহা, নিজেকে ধন্য ও গর্বিত ভাবি।
মনে মনে বাসনা জাগে অস্ত্র ছুঁয়ে দেখার
একদিন তাও হাতে পেলাম,গা বেশ গরম হলো।
এখন আমার পিছেও চামচা ঘোরে
তাদের অর্ডার করি, ডানহাত বাহাতও আছে।
মৃত্যুকে চিঠি লিখেছিলাম গত রাতে
এখন আমার নেতা এমপি, মন্ত্রী,
ইউ মেম্বর, চেয়ারম্যান।
অধম আমি চামচা মদ গিলি মাতাল হই মাতলামি করি,পথে পড়ে থাকি।
কোনো মেয়ে নজরে ধরলে, লেহালুয়া,
ভেতরের আদিম পশুটা জেগে ওঠে
ঝাপিয়ে পড়ে একটু আধটু ফুর্তি করে নেই।
বাতাসে ভাসে অরণ্য পোড়া গন্ধ, আমার কী!
যখন গায় পাতিনেতার সার্টিফিকেট লাগানো ।
বিশ্বজুড়ে কোভিট নাইনটিন বিরাজ করছে
ত্রাণ আসেছে, রিলিফ দিচ্ছে সরকার,
এই তো সুযোগ এদিক সেদিক করার।
রাত গভীরে অর্ধেক যাবে নেতার বাড়ি
বাকি অর্ধেক থেকে অর্ধেক যাবে আমার বাড়ি।
সে থেকে অর্ধেক থেকে অর্ধেক যাবে আমার চামচার ঘরে
সে থেকে অর্থেক তার চামচা, তার চামচা,তার...
যে তরুণ আলোকিত সকাল দেখার স্বপ্ন দেখে
তাকে দেখাতে হবে আঁধারের বুকের অন্ধ গলি।
যে নারীর প্রসববেদনা ছটফট করছে
এখনো তার সাথে করা হয়নি মাংসাশী উল্লাস
যে যুবক এখনো পায়নি পথের ঠিকানা
তার হাতে দিতে হবে কার্তুজ ভর্তি রিভলবার
তার আদিম বুকে উঠবে উদোম রক্তের পাল !
কঠিন ঘোষণা মৃত্যুর বিরুদ্ধে !
এখনও যখন এত কাজ অসম্পর্ণ
তখন সে কোন আক্কেলে দ্বারে এসে কড়া নাড়ছে!
যে গোলাপ কলিটি এখনো শান্তিতে ঘুমিয়ে আছে
তার পতিত জমিনে দেওয়া হয়নি নৃশংস হাল।
যে সত্য ময়ূরের মতো পেখম মেলেতে চায়
মেতে উঠতে চায় অদম্য জয়যাত্রা
জনসম্মুখে, রাজপথে করতে চায় বিজয় মিছিল
তার উপর এখনো দাঙ্গা চালানো হয়নি
আগে এই সকল কাজ সম্পন্ন হোক !
তারপর সময় নিয়ে এসো,
চলে যাবো ভরা অমাবস্যা শেষে তোমার দেশে।
মৃত্যুকে চিঠি লিখেছিলাম গত রাতে।
হাতে সময় নিয়ে এসো, এখানে এখনও অনেক অপকর্ম রয়েছে বাকি।
৫/৪/২১
খামখা ভয় দিও নাতো, এই বলে
মৃত্যুকে চিঠি লিখেছিলাম গত রাতে।
করোনার জন্য লক ডাউন, আইসোলেশন, ভেন্টিলেটর, হোম কোয়ারেন্টাইন।
এক একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানেই
সুবর্ণ সুযোগ আখের গোছানোর।
এমন মুহুর্তে কেন অহেতুক ভয় দেখাও, বলো তো?
জানো তো, আমি হলাম পাতি নেতা,
সেদিন যখন প্রথম কলেজে রেখেছিলাম পা
গিয়েছিলাম নেতার সাথে দেখা করতে
বিশেষ প্রয়োজনে।
নেতার পাশে দাঁড়ানো লোকটা
কি যেনো কানেকানে বলে
মুহুর্ত ভাবেন নেতা,তারপর বললেন-
'কাজ হয়ে যাবে।'
স্থান ত্যাগ করছি, পিছন থেকে বললেন-'শোন'
পিছন ফিরলাম,তিনি বললেন-' হাদিয়া দিবিনা?
মাথা চুলকাতে থাকলাম, কী হাদিয়া দিবো।
আমার করুণ চাহনি দেখে মুচকি হেসে বলেন
-এখন থেকে আমার পিছুপিছু থাকবি কেমন।'
ফুর্তিতে নেচে ওঠে মন,
মনে মনে লাফিয়ে নাচতে শুরু করলাম।
নেতার পিছনে থাকবো, খুলে যাবে ভাগ্য!
যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়ে গেলাম।
সেই থেকে ঘুরতে থাকি তাঁর পিছুপিছু
একদিন সে তাঁর সন্তানকে পাঠালেন বিদেশে
দেশে থাকলে লেখাপড়া হবে না, বকে যাবে।
নিজের সন্তান মানুষ করতে পাঠালেন প্রবাসে
আর আমি মাইনকার চিপায় ফেসে গিয়ে
নেতার ডানহাত বাহাত হয়ে
করাতে থাকি বৈধ-অবৈধ সব কাজ।
সারা বছর নেতার চামচামি করি
লেখাপড়া শিখে মানুষ হবার একবুকে স্বপ্ন নিয়ে
গ্রাম থেকে শহরে আসা একটা তরুণ
পেয়ে গেছে পাতি নেতার খেতাব।
লেখাপড়া সব উঠেছে তুঙ্গে।
আহা, নিজেকে ধন্য ও গর্বিত ভাবি।
মনে মনে বাসনা জাগে অস্ত্র ছুঁয়ে দেখার
একদিন তাও হাতে পেলাম,গা বেশ গরম হলো।
এখন আমার পিছেও চামচা ঘোরে
তাদের অর্ডার করি, ডানহাত বাহাতও আছে।
মৃত্যুকে চিঠি লিখেছিলাম গত রাতে
এখন আমার নেতা এমপি, মন্ত্রী,
ইউ মেম্বর, চেয়ারম্যান।
অধম আমি চামচা মদ গিলি মাতাল হই মাতলামি করি,পথে পড়ে থাকি।
কোনো মেয়ে নজরে ধরলে, লেহালুয়া,
ভেতরের আদিম পশুটা জেগে ওঠে
ঝাপিয়ে পড়ে একটু আধটু ফুর্তি করে নেই।
বাতাসে ভাসে অরণ্য পোড়া গন্ধ, আমার কী!
যখন গায় পাতিনেতার সার্টিফিকেট লাগানো ।
বিশ্বজুড়ে কোভিট নাইনটিন বিরাজ করছে
ত্রাণ আসেছে, রিলিফ দিচ্ছে সরকার,
এই তো সুযোগ এদিক সেদিক করার।
রাত গভীরে অর্ধেক যাবে নেতার বাড়ি
বাকি অর্ধেক থেকে অর্ধেক যাবে আমার বাড়ি।
সে থেকে অর্ধেক থেকে অর্ধেক যাবে আমার চামচার ঘরে
সে থেকে অর্থেক তার চামচা, তার চামচা,তার...
যে তরুণ আলোকিত সকাল দেখার স্বপ্ন দেখে
তাকে দেখাতে হবে আঁধারের বুকের অন্ধ গলি।
যে নারীর প্রসববেদনা ছটফট করছে
এখনো তার সাথে করা হয়নি মাংসাশী উল্লাস
যে যুবক এখনো পায়নি পথের ঠিকানা
তার হাতে দিতে হবে কার্তুজ ভর্তি রিভলবার
তার আদিম বুকে উঠবে উদোম রক্তের পাল !
কঠিন ঘোষণা মৃত্যুর বিরুদ্ধে !
এখনও যখন এত কাজ অসম্পর্ণ
তখন সে কোন আক্কেলে দ্বারে এসে কড়া নাড়ছে!
যে গোলাপ কলিটি এখনো শান্তিতে ঘুমিয়ে আছে
তার পতিত জমিনে দেওয়া হয়নি নৃশংস হাল।
যে সত্য ময়ূরের মতো পেখম মেলেতে চায়
মেতে উঠতে চায় অদম্য জয়যাত্রা
জনসম্মুখে, রাজপথে করতে চায় বিজয় মিছিল
তার উপর এখনো দাঙ্গা চালানো হয়নি
আগে এই সকল কাজ সম্পন্ন হোক !
তারপর সময় নিয়ে এসো,
চলে যাবো ভরা অমাবস্যা শেষে তোমার দেশে।
মৃত্যুকে চিঠি লিখেছিলাম গত রাতে।
হাতে সময় নিয়ে এসো, এখানে এখনও অনেক অপকর্ম রয়েছে বাকি।
৫/৪/২১
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আব্দুর রহমান আনসারী ০৭/০৪/২০২১ভালো লেখা
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ০৭/০৪/২০২১beautiful...
-
মাহতাব বাঙ্গালী ০৭/০৪/২০২১সুন্দর কাব্যিক ভাবপ্রকাশের উপস্থাপনা ///
আসবেনা, আসবেনা সে এখন
অনুরোধ করো; অনুরোধে আসবেনা সে
করো, যা কাজ বাকী, সব করে ফ্যালো।...
তবে, মনে রেখো- যেদিন আসবে, আর অনুরোধ শুনবেনা সেদিন ! -
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ০৭/০৪/২০২১পেতি নেতার দল
করে শুধু কোলাহল,
নেই কোন কাজ
শুধু খই ভাজ আর ভাজ। -
ফয়জুল মহী ০৭/০৪/২০২১মনোযোগ আকর্ষণ করা লেখা