www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ভিকটিম –২য় ও শেষ অংশ

ভিকটিম –২য় অংশ
বোনের মলিন মুখ দেখে মনটা খুব খারাপ হয় মনে মনে বলে এই কি আমার সেই আপা!
-তমাল তুই?

কাল বিকেলে একটা চিঠি এসেছে। চিঠিটা লন্ডন থেকে এসেছে । তমালের বড় ভাই ছাব্বির লিখেছে ওর বড় ভাবি বিপাশাকে। পিয়ন এসে চিঠি দিয়ে যায় বিপাশার হাতে। বিপাশা সেটা এনে টি টেবিলের উপর রেখে চায়ের কাপে চুমুক দেয় বিপাশা। দেবর তমাল এসে ছোঁমেরে নিয়ে নেয় সেটা। খামটার মাথা ছিড়ে ফেলে তমাল।
স্থির নয়নে সেটা দেখছিল বিপাশা। যখন দেখল তমাল খামের মুখ ছিড়ে ফেলেছে তখন বলল বিপাশা এটা কি হচ্ছে তমাল ? ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
-না ভাবি তেমন কিছু না । শুধু একটু ঘুষ ... ।
একটু বিস্মিত নয়নে প্রশ্ন করে ঘুষ মানে!
-ঘুষ মানে ঘুষ।
-এই তুমি ঘুষ খাও। দাঁড়াও তোমার ভাইয়াকে বলছি।
-এটা তো ভাইয়ার চিঠি তাই না ভাবি?
-হ্যাঁ তো। আর এজন্যই তো ঘুষটা বেশি করে খাব।
-বুঝলাম না?
-ভাইয়া চিঠিটা কাকে লিখেছে নিশ্চই তোমাকে?
- আমার নামে যখন তখন তো আমাকেই। আমার চিঠি আমাকে দাও না ভাই ।
- তা হবে না।
-দাও না ভাই।
- দিতে পারি । কিন্তু...
-কিন্তু কি?
- কিন্তু কিছু ছাড়তে হবে ।
-কি ছাড়তে হবে ?
-ভাবি তোমার ঘটে দেখি মোটেও বুদ্ধি নেই । টাকা – টাকা –টাকা ছাড় আর সেটাই হল ঘুষ।
- আচ্ছা এই কথা, তো ঠিক আছে তোমার ভাইয়াকে বলে দেব যে তার ভাই এখন ঘুষ খায়,বলে মিটি মিটি হাসলো বিপাশা ।
-শোন ভাবি ভাইয়ার কাছে তুমি যত খুশি নালিশ করো তাতে আমার কিছুই হবে না। এই এই আমি চিঠি পড়তে শুরু করলাম। দেখি দেখি কি লিখেছে। হুম পেয়েছি প্রিয়তমা...।
-এই এই তমাল ভালো হচ্ছে না কিন্তু আমার চিঠি আমাকে দিয়ে দাও।
নতুন বউ ঘরে রেখে ছাব্বির আর্থিক অভাব অনাটন ঘুচাতে বিদেশ পাড়ি দিয়েছে প্রায় বছর চারেক হলো। ফোনে কথা হয় নিয়মিত তবু সাব্বির মাঝে মাঝে মিষ্টি মিষ্টি চিঠি লেখে বউকে খুশি করতে। ভাবির যেন মন খারাপ না হয় তাই তমাল ও ভাবিকে মাতিয়ে রাখে সারাক্ষণ। চিঠিটা হাতে নিয়ে সারা বাড়ি দৌড়ে ফেরে তমাল। কিছু দূরে দাঁড়িয়ে চিঠিটা নাড়ে আর বলে কই ভাবি ঘুষটা দাও আর চিঠিটা নিয়ে নাও।
- এই যে দেওরা তুমি কি বলোতো?
- ভাবি তুমি জানোনা আমি কি?
- হুম জানি তুমি নাছর বান্দা ঘুষ না দিলে ছড়বে না। এই নাও তোমার ঘুষ এবার চিঠিটা তো দাও।
- এই নাও দেখো কি লিখেছে ভাইয়া। আমি বেরুলাম।
- হুররে।
-কি হলো ভাবি?
-তমাল তোমার ভাইয়া আগামি সপ্তাহে দেশে ফিরছে।
- সত্যি?
- সত্যি এই দেখো তোমার ভাইয়া লিখেছে।
- ভাবি ঘুষ তো আবারও পাওনা হলো।
- হুম তুমি তো ভি অফিসার হায় ।
- না, না ভাবি, আমার ভাবি, ভি ঘুষ দেতা হায় ,বলে মিটি মিটি হাসতে লাগলো তমাল ।
বিস্ময় ভরা চোখে তমালের দিকে তাকিয়ে বিপাশা । ভাবে আমাকে একটুখানি খুশি রাখতে কি না করে তমাল। সত্যি ওর মত একটা দেবর পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।
- -ভাবি কি ভাবছ অত?
-, ভাবি ভি ঘুষ দেতা হায় তাই না ?
-হুম।
-দাঁড়াও তোমার ভাইয়া আগে দেশে ফিরুক, তোমার কাঁধে এবার আমি বোঝা চাপাচ্ছি।
-সে তো পরের কথা, এখন দাওনা ভাবি।
ছোট বোন দিপালী বলে কি রে ছোট ভাই ভি অফিসার, ভি ঘুষ দাতা কি বলছিস তোরা। আমি কি তোদের সাথে সরিক হতে পারি?
- ভাবি বহুত জানতা গা গিয়া ।
- বসো দিপালী
- -ভাবি তোমার মনে আছে তোমার ভাই তোমাকে দিয়ে একটা চিঠি পাঠিয়েছিলো তার প্রেমিকাকে দিতে আর তোমাকে ঘুষ দিয়েছিলো চকোলেট । তুমি বলেছিলে এসব কাজে চকলেট ঘুষ চলবে না। মাল ছাড় তানা হলে মা-কে বলে দিবো।গল্পটা কি তোমার ভাই আমাকে বলেছেন ।
- সে তো অনেক বছর আগের কথা ।
- তারপর আর কি কি ঘুষ খেয়েছো শুনি ?
=তাহলে শোনো , মার কাছ থেকে ও ঘুষ নিয়েছি ।
-যেমন ?
তাহলে শোনো বলে এক পসলা হেসে বললো , একবার বাপী একটা নতুন ডিনার সেট কিনে এনেছিলেন । কেনার পর পরই মার হাত ফসকে একটা কাপ ভেঙ্গে যায় ।মা বললেন , তোর বাপীকে বলবি না ।
-বললাম বলবো না, কিন্তু তুমি আমাকে কি দেবে বলো? মা তো প্রথমে চটে গেলেন ।পরে যখন টের পেলেন আমি বাপীকে বলে দেব তখন মা ঘুষ দিতে বাধ্য হলেন ।
-হুম তাহলে এই তোমার ঘুষ খাওয়ার ইতিহাস আছে?
- -হুম বাবুর যা মুরদ ঘুষ ছাড়া কিছুই বোঝেন না । তা এবার কি ঘুষ চান বাবু ?
- ধরো দুই জনের উপযোগী রেস্টুরেন্টে খাওয়ার টাকা ।
- তো সে দুই জনটা কে শুনি ?
-এই ধর একজন বান্ধবী আর আমি ।
-হুম বুঝতে পারছি তলে তলে এতো দূর, তোমাকে ঘুষ আমি কোন দিনও দেব না ।
- দেবে না তাইনা। এই যে চিঠি হচ্ছে এই খানে।
-তমাল দাও না ভাই প্লিজ দাও।
- ঘুষটা দিয়ে দাও।
-ঠিক আছে বাবা দিচ্ছি এই নাও ।
-ভাবি আমি আপার বাসায় যাচ্ছি।
আজ বোন ভাগ্নিকে নিয়ে কিছুটা সময় ঘুরবে, অনেক মজা করবে। চাইনিজ খাবে। আর এই জন্য ভাবিকে ইচ্ছা মত খসিয়েছে। কিন্তু মাতালটা আজ অসময় বাসায় ওদিকে জানিনা আপার কি হয়েছে। আর এই হলুদ খামেই বা কি আছে। মাতালটা ওঘরে বেশামাল চিঠিটা দেখা যায় এবার।
রিয়া আমার জান, এই কদিনে অনেক কষ্ট তোমাকে আমি দিয়েছি। তোমাকে কষ্ট দিয়ে আমিও কম কষ্ট পাচ্ছিনা। আর সব থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছে মুনা মনি। আমি চেয়েছিলাম আমি তোমার পথ থেকে সরে যাব চির তরে দূরে বহুদূরে তোমার দৃষ্টির সীমানা থেকে। এই ক’দিন নিজের সঙ্গে অনেক লড়াই করছি। চেয়েছিলাম তুমি তোমার স্বামী, সংসার, সন্তান নিয়ে ভালো থাকি কিন্তু আজ মুনার ফোন পাওয়ার পর থেকে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। আমি আর দূরে থাকতে পারলাম না। তোমাকে বারবার ফোন দিয়েছি কিন্তু তুমি ফোন ধরনি, ফোনটা বন্ধ করে রেখেতাই একেবারে তোমার ঘরের দুয়ারে এসে হাজির হয়েছিলাম কিন্তু সেখানে এসেও তোমাকে পেলাম না। তাই চিঠিটা রেখে গেলাম। আমি জানিনা কার হাতে পড়বে এটা, যার হাতেই পড়ুক না কেন। ভয় নেই তোমার আমি আছি তোমার আশে-পাশেই আছি আজ এ ঘর থেকে তোমাকে আমি নিয়ে যাব অন্য কোথাও সেখানে হবে আমাদের সুখের নীড়।
তোমার মুন
রিয়া বাসায় ফিরে কলিং বেল চাপে। কলিং বেলের শব্দে অভি উঠে এসে দরজার কাছে দাঁড়ায়। হাত তার ইসপিস করছে রিয়া ঘরে ঢুকলেই ওর পিঠে পড়াবে দু’চার ঘা। হলোও তাই ঘরে ঢুকতেই অভি রিয়ার চুলগুলো হাতে পেচিয়ে স্বজোরে টান মার আর বলে শালি এতোক্ষণ কোথায় ছিলি আমি সেই কখন এসে বসে আছি খাব বলে আর তোর আসার খবর নেই। আমার টাকা নিয়ে তুই বাইরে গিয়ে ফুর্তি করিস তাই না। তোর ফুর্তি আজ ঘোচাচ্ছি আমি,
-আহ লাগছে তো চুল ছাড় অভি।
-চুল তো ছাড়ার জন্য ধরিনি শালি। কাইচিটা গেলো কোথায় আজ তোর চুল আমি কেটে নেব।
-অভি চুল ছাড় বলছি। খুব লাগছে আমার।


কেনি দিয়ে রিয়ের পিঠে গুতাতে থাকে অভি। মুনা ছুটে গিয়ে তমালকে জড়িয়ে ধরে। ভয়ে থরথর করে কাঁপতে থাকে। মুনাকে শান্তনা দেয় তমাল।তারপর বেরিয়ে আসে রুম থেকে। চোখের সামনে বোনটার এ নির্জাত মেনে নেওয়া কি ভাবে সম্ভব। এত অত্যাচার সহ্য করে আপা এখানে কেন পড়ে আছে আজো। অভি রিয়ার চুল ধরে টানতে টানতে বেড রুমের দিকে নিয়ে যায়। ওয়ারড্রুয়ারের উপরে রাখা কাইচিটির দিকে চোখ চলে যায়। অভি লাফিয়ে ওঠে পাইছি কাইচি পাইছি। রিয়ে বা হাত দিয়ে চল ধরে ডান হাত দিয়ে অভির হাত ছাড়াতে চেষ্টা করে আর বলে না অভি না। আমার চুল কেটোনা। চুল ছাড় অভি চুল ছাড় খুব লাগছে আমার। তমাল এগিয়ে এসে বলে বলি হচ্ছেটা কি এসব। ছাড়ুন আপাকে, ওর চুল কেন কাটবেন আপনি?
-শালা বাবু তুমি এখন এখানে পড়ে আছ? তুমি চলে যাও এখান থেকে। আমার বউ এর চুল কাটব না বাল কাটব সেটা আমার ব্যপার তুমি আমাদের পারিবারিক ব্যপারে নাক কলাবার কে?
- আমি আপনার বউ এর ভাই। কি ভেবেছেন আপনি আমার সামনে আমার বোনকে মারছেন আমি মুখ বুজে সহ্য করবো? আমার বোনের মাথার চুল কেটে নেবেন তাও আমি নীরবে সইবো? আমরা গরিব বলে খুব ছোট বয়সে আমার বাবা আপাকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছিল আর সেই থেকে গাধার মত নীরবে মার খেয়ে যাচ্ছে কাউকে কিছুই বলেনা। আজ নিজের চোখে না দেখলে তো কোন দিন জানতেই পারতামনা। এ ভাবেই
-হ্যা আপা আমি। আমি তোর ছোট ভাই। ক্যান তুই পড়ে পড়ে এভাবে মার খাস? চল আমার সাথে চল এখানে আর এক মুহুর্ত না।
-কোথায় যাব আমি।
-আমাদের বাড়িতে।
-না তমাল, তা হয় না। আমি আমার বাবা-মায়ের বোঝা ছিলাম।
-আপারে তোর কোন কথার উত্তর আমার জানা নেই।
-চুপ, চুপ, মুনা কার সাথে ফোনে কথা বলছেরে।
-সেটা তো তু আর মুনা ভালো জানিস।
-দাঁড়া তো দেখি। মুনা এই মুনা।
মায়ের ডাকে চমকে ওঠে মুনা ফোনটা পিছনে লুকিয়ে রাখে। কার সাথে কথা বলছ তুমি?
-কারো সাথে না মামনি।
-মা কাছে মিথ্যা বলো না মুনা। দাও ফোনটা এদিকে দাও।
চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে মুনা। কি হলো দাও। না দিবো না। ঠিক আছে দিতে হবে না। যার সাথে কথা বলছ তার নাম বলো।
-মারবে না তো?
-না মারব না বলো।
-মুন আংকেরলের সাথে।
-কেন?
-বাপী বিনাকারণে তোমাকে মারলো তাই।
-তাই বলে...
-হ্যাঁরে আপা এই মুনটা কে?
-কেউ না।
-আমার কাছে লুকাশ না আপা। দেখ এই হলুদ খামটা তোর ঘরের দরজায় পেয়েছি আমি এটা মুনের লেখা চিঠি।
-চিঠিটা আমাকে দিয়ে দে তমাল
-না তা হবে না। আগে বলতে হবে কে এই মুন।
-তোর অতো জেনে কাজ নেই তুই চিঠিটা দে।
-আপারে আর কতকাল দিন -রাত কেঁদে কেটে যাবে তোর । জানিস ভাইয়া দেশে ফিরছে, সে আনন্দে আজ ভাবিকে খুব করে খসিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম তোকে নিয়ে আজ চাইজে যাব। কিছুটা সময় কাটাব আজ তোর সাথে। কিন্তু তা আর হলো না।
জানিস আপা চিঠিটা হাতে পেয়ে অনেক বার ভেবেছি এর মধ্যে আজ তোর কাছ থেকেও ঘুষ খাব। কিন্তু কিছুই আর হলোনা।

নে তোর চিঠি তুই রেখে দে । এবার আমি উঠছি ।
-দাঁড়া তলাম
না আপা আমার অনেক কাজ আছে বলে উঠতে যাচ্ছিল তমাল। মুন এসে পথ আটকে দিয়ে বললো , কোথায় যাবে, ঘুষ যখন খেতে চেয়েছ তখন নিশ্চই ঘুষ খাবে। বলো কত টাকা চাই তোমার ঘুষ?
-কে আপনি?
-আমার পরিচয় না হয় পরি দিচ্ছি। তুমি তো তমাল তাই না?
-হ্যাঁ কিন্তু...
-তুমি কেন এসেছ?
-এসেছি তোমাকে এখান থেকে নিয়ে যেতে।
-মানে!
-মানে খুব সোজা।
-তোমার এখানে আসা ঠিক হয়নি।
-কোনটা ঠিক কোনটা বেঠিক তার আর ভাবার সময় নেই আমার। আমি তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি আজ নিয়ে যাবই
-তা হয় না মুন।
-কি হয় কি হয় না। সে কথা আজ আর ভাবার সময় নেই । মানুষ মানুষকে কিভাবে এমন করে মারতে পারে?
তমাল মনে মনে বলে হুম এই তাহলে মুন। দেখতে তো দারুণ। আপার পাশে মানাবে বেশ। এই ছেলেকে ভালোবেসে আপা কেন এখন এই মাতালের ঘরে পড়ে আছে আমার মাতায় আসছে না।
-আংকেল তুমি এসেছ?
-হ্যাঁ মা আমি এসেছি।
-আমার মামনীকে তুমি এই নরকপুরী থেকে উদ্ধার করতে পারবে কি? গল্পে শুনেছি রাজ কন্যাকে রাক্ষস বন্দী করে আর রাজা কুমার বীর বেশে এসে তাকে উদ্ধার করে। তুমি পারবে না আমার মাকে উদ্ধার করতে।
-মুনা, কি বলছিস তুই এসব?
-মামনী আমি অনেক ছোট কিন্তু তোমার কষ্ট আমি বুঝি। যাও তুমি আংকেলের সাথে চলে যাও।
-মানে কি বলতে চাইছিস তুই।
-হে খোদা তুমি কেন মানুষের এমন জীবন দাও? আমার বাপীও তো মুন আংকেলের মত হতে পারতো। মা-বাপী-আমি অনেক সুখে থাকতে পারতাম। আমি তো অনেক ছোট আমার ও তো সাধ হয়। বাবা-মায়ের হাসিমাখা মুখটা দেখতে। মায়ের আদর নিতে, বাবার ভালোবাসা নিতে। বাবারা কেন এমন হয়? কেন মায়েদের এত কষ্ট দেয়। নারী তো তোমার সৃষ্টি, কেন তুমি তাকে এতো কষ্টের জীবন দিয়েছ।
এতোটুকু মেয়ে কি বা বোঝে ও তবু মায়ের ব্যথায় ব্যথিত। মন মুনাকে জড়িয়ে ধরে বলে কাঁদিস না মা কাঁদিস না। আমি তোকে অনেক অনেক ভালোবাসা দিবো। মায়ের আঁচল ছায়ায় অনেক বড় হবি তুই।
আর অভির নির্জাতন রিয়ার পক্ষে হজম করা সম্ভব না। অভি ইদানিং এতোটাই নিশাগ্রস্থ থাকে যে রিয়া কে তো মারেই। এতোটুকু মেয়ে মুনার গায়েও হাত তুলতে দ্বিধা করেনা। আবির রাঙা আকাশ সন্ধ্যার আকাশের সাথে মিশে গেছে বহু আগে। অভির সাথে এতোটা বছর পার করে কি ভাবে সে সংসার ছেড়ে চলে যাবে রিয়া। যদিও একবিন্দু সুখ খুঁজে পেতে মুনের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে ফেলেছে নিজেকে। মুন ভেবেছিলো এভাবে একদিন কেতে পড়বে রিয়ার জীবন থেকে কিন্তু মাঝখানে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ছোট্ট মুনা। ওর মায়ের সাথে প্রতারণা করা গেলেও এতোটুকু মেয়ের সাথে কি ভাবে প্রতারণা করবে মুন। তাছাড়া রিয়াকেও মুন অনেক অনেক ভালোবাসে। রিয়ার জন্য সারা রাত ছটফট করে। ওর সুখ দুঃখ ভাগ করে নিতে চায় কিন্তু রিয়া বার বার বাঁধা দেয়। দেখতে বেশ খানিকটা রাত হয়ে গেছে। তিয়া বলে মুন তুমি চলে যাও অভি যেকোন মুহুর্তে ঘরে ফিরবে তোমাকে দেখলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।
মুন ও তমাল বেরিয়ে যাবে বলে পা বাড়িয়েছে। এর মধ্যে অভি মাতলামি করতে করতে বাসায় এসে কলিং বেল দেয়। মুনা ছুটে গিয়ে দরজা খুলে দেয়। এক মহিলার কাঁধে ভর করে ঘরে ঢোকে অভি।রিয়া প্রশ্ন করে অভি এ তুমি কাকে ঘরে এনেছ?
-ও ও ও আমার ডার্লিং, ওকে আজ আমি বিয়ে করেছি। তুই বেরিয়ে যা বেরিয়ে যা আমার ঘর থেকে। তোর জন্য আজ আমি মাতাল। আমি তোর মুখ আর দেখতে চাই না। আর শোন যাবার সময় তোর মেয়ে যেন তুই নিয়ে যাস।
কথা বলতে বলতে টলতে থাকে অভি। রিয়া ওকে ধরে খাটে তুলতে যায়। অভি বলে খবরদার খবরদার আমাকে তুই ছুবিনা, বেরিয়ে যা বেরিয়ে যা হারামজাদী।
-আপা তুই কি এখনও পড়ে থাকবি এখানে। এই মাতালটা মেরে ফেলবে যে তোকে।
-রিয়া চলো আর এক মুহুর্ত এখানে নয়। আমার ছোট্ট কুঁড়ে আজ থেকে তোমার সুখের স্বর্গ। সমাপ্ত
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮৯২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৪/১০/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • পারভেজ এ রহমান ১০/১০/২০১৭
    অসাধারণ লিখেছেন
  • সাঁঝের তারা ০৫/১০/২০১৭
    বেশ ভাল
  • পারভেজ এ রহমান ০৫/১০/২০১৭
    দারুণ লিখেছেন
  • Tanju H ০৪/১০/২০১৭
    মুগ্ধতা রেখে গেলাম।।
  • দীপঙ্কর বেরা ০৪/১০/২০১৭
    ভাল
  • সমির প্রামাণিক ০৪/১০/২০১৭
    ভাল হয়েছে তবে, একটু ছোট হলে ভাল হত। শুভেছ্ছা রইল।
  • আব্দুল হক ০৪/১০/২০১৭
    বেশ সুন্দর লিখনী!!ধন্যবাদ!!!
  • মধু মঙ্গল সিনহা ০৪/১০/২০১৭
    সুন্দর লেখা,ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা
  • মোঃওবায় দুল হক ০৪/১০/২০১৭
    সুন্দর লিখছেন, আপু
 
Quantcast