সবুজ বাংলা চাই উপন্যাস-২য় পর্ব
**********************
কলেজ পড়ুয়ে ছেলে ফয়সাল আহমেদ মাহিন এসে হাজির হয় ওদের মাঝ। সাব্বির তুমি বলেছ তোমার বন্ধুদের।
সাব্বির- ছেলামালেকুম ভাইজান।ভাইজান আপনে আইসা পড়ছেন? না ভাইজান কাউরে কই নাই।
মাহিন- এইটা তুমি কেমন করে সালাম দিচ্ছ সাব্বির? বলো আসসালামুআলাইকুম
সাব্বিস-আস আস আসসা আসসা
মাহিম- কি হলো, তোললাচ্ছ কেন? হচ্ছেতো বলো আসসালামুআলাইকুম।
সাব্বির ঢোক গিলতে গিলতে বলে আস সা লা মু আ লা ই কুউউউম। যেন দাঁত ভেঙ্গে যেতে থাকে ওর।
মাহিন- গুড, এই তো হয়েছে। আরো চেষ্টা করো দেখো পারবে তুমি। এখন বলো কাউকে বলো নাই কেন?
সাব্বির-কবারই তো চাইছিলাম। কিন্তু কেমনে কমু। ওই যে পাতা ওই তোই সব গন্ডুগলটা পাকাইলো।
মাহিন- কেন পাতা আমার কি করলো?
সাব্বির- ও কয় এই পাকুইড় গাছডা কারা জানি কাইটা ফালাইব।
মাহিন- বলো কি কারা কেটে ফেলবে?
সাব্বির- জানিনা তয় পাতায় যদি কইতে পারে। অয় মাঝে মাঝে এমন দুই একখান কতা কয় না ভাইজান সব অক্ষরে অক্ষরে খাইটা যায়।
মাহিন-তাই নাকি দেখি দেখি সরতো আমি একটু যাই ওর কাছে।
সবাইকে সরিয়ে দিয়ে মাহিন পাতার কাছে যায়।পাতার পাশে বসে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে-পাতা কি হয়েছে তোমার বোন, আমাকে খুলে বলো তো।
পাতা-আপনে ক্যাডা?
মাহিন- আমি মাহিন, আমি এখন থেকে রোজ এই টাইমে এই পাকুড় গাছের নিচে তোমাদের লেখা পড়া শেখাব। আমাকে ভাইয়া বলে ডেকো কেমন।
পাতা- জ্বে ভাইয়া আমরাও লেখাপড়া শিখবার মন চাই কিন্তু এই পাকুইড় কাছের নিচে আপনে কেমনে শিখাইবেন। আমার বন্ধুরে তো কাইটা ফালাব।
মাহিন- হ্যা সাব্বিরও এই কথা বলছিলো কিন্তু কে কাটবে এই পাকুইড় গাছ? কেন কাটবে?
পাতা-ভাইয়া, কারা জানি এই হানে বস্ত বড় বেল্ডিং বানাইব।আরো কি সব বানাইব বন্ধুরে কাইটা ফালাইব।
মাহিন- বিল্ডিং বানাবে! কারা বানাবে? এটা তো সরকারের জায়গা।এই গাছটাও সরকারের।
পাতা- সামনের সাত দিনের ভিতরে ঘটব এই ঘটনা।
মাহিন- বলো কী? তুমি তাও বলতে পারছ? আর কি বলতে পার তুমি?
পাতা- ভাইজান গাছটা কাটা হইব নিশি রাইতে। যহন সব মানুষ ঘুমাইয়া থাকব।গাছ কাটার কিছু দিনের মাথায় এই হানে বিশাল বিশাল ম্যশিং আইনা কি সব জানি করব।
মাহিন-চিন্তার বিষয়। আচ্ছা এ নিয়ে আমি আমার বন্ধুদের মাঝে আলাপ করব দেখি কি করা যায়। তোমার কথা যদি সত্যি হয় তবে তার জন্য তো আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। এখন চলো ওখানটায় গিয়ে বসি।
পাতা তুমি এখানে বসো সাব্বির এখান। তোমরা সবাই গোল হয়ে বসো। এবং সবাই সবার নামটা বলো।
ওরা গোল হয়ে বসে একে একে বলতে থাকে। আমার নাম পাপড়ী, আমি পরাগ,আমি মরিয়ম,আমি রেদুয়ান, আমি... এভাবে একে একে সবাই সবার নাম বলার পর্ব শেষ করে।
মাহিন বলে- খুব সুন্দর তোমাদ নাম। আমি আজ তোমাদের সাথে পরিচিত হলাম কাল থেকে ক্লাস শুরু কেমন আজ উঠি তাহলে।হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ে সবাই। সামনে পা বাড়ায় মাহিন। পাতা পেছন থেকে ডাক দেয়- ভাইয়া ও ভাইয়া খা্রান
মাহিন- কি হয়েছে পাতা থামালে কেন?
পাতা- কারা জানি আপনারে খুঁজতাছে, আপনি এই ভাবে জাইয়েন না।
মাহিন- এই ভাবে জাবো না? তো কি ভাবে যাব?
পাতা- আপনের চেহারা পালটাইতে হইবো।
মাহিন-চেহারা পালটাব কিন্তু কি ভাবে এবং কেন?
পাতা-কয়েকটা পোলা আপনেরে মারতে চায়। চেহারা পালটাইলে আপনেরে চিনতে পারবো না ওরা, তাই মারতেও পারবোনা।
মাহিন হেসে বলে আমাকে মারতে কারা মারবে আমাকে?
পাতা- ৫/৬ ডা পোলা, তারাও আপনের মত কলেজে পড়ে তয় তারা খুব খারাপ।
মাহিন- কিন্তু তারা আমাকে কেন মারবে? আমি তো কোনো অপরাধ করিনাই।
পাতা-করছেন ভাইয়া।
মাহিন- করেছি কই আমার তো মনে পড়ছে না।
পাতা-ভাইয়া আপন এডডা মাইয়ারে ভালোপান।
অবাক হয়ে যায় মাহিন। আমি যে জয়ীতাকে পছন্দ করি তা ও জানলো কেমন করে। বিষয়টা তো খতাতে হয়। পাতা বলেই চলে এই মাইয়ারে আর এডডা পোলায় ভালোপায় হেই পোলায় তার বন্ধুদের লইয়া বইসা আছে। আপনে জামা খুইলা ফালান আমরা আপনের গায় মাথায় ধুলি কাঁদা মাখাইয়া আমাগো মত চেহারা বানাইয়া দিমু।
মাহিন- কিন্তু...
পাতা- আমি জানি আপনের ঘেণ্যা করবো তবু কইতাছি
মাহিন- হুম ঠিক আছে শুনি তোমার কথা দেখি কেমন লাগে।
পাতা- ভাইয়া আমরা আপনেরে হাসপাতাল পর্যন্ত আগাইয়া দিয়া আসমুনি।
মাহিন-হাসপাতালে কেন?
পাতা-ওই হানে একটা রোগী আইবো তার রক্তের দরকার হইবো তার যে রক্ত আপনের গায়ে সেই রক্ত। আর যারা আমনেরে মারতে চায় তারাও হেই পথেই আছে আমি ঈশারায় হ্যাগোরে দেহাইয়া দিমুনি। আপনে তাগোরে চিনতেও পারেন।
মাহিন- আচ্ছা ঠিক আছে।
পাতা- আপনে কি আপনার বাড়িতে খবর দিবার পারবেন? কেউ আইসা আগাইয়া নিয়া যাক।
মাহিন- হুম তা পারব।
মাহিকে কাঁদা মাটি মাখিয়ে পাতাকুড়ানী দলের একজন সাজিয়ে নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে ওরা। কিছু পথ যেতেই একটা মন্দীর বাধে সামনে। মন্দীরের পাশে দাঁড়িয়ে চার পাঁচটি ছেলে। হাতে তাদের হকিস্টিক। পাতা মাহিনের হাত ধরাই ছিলো সে টান দেয় । মাহিন পাতার দিকে তাকায়। পাতা ঈশারা করে।ছেলেগুলোকে চিনতে এতটুকু কষ্ট হয় না মাহিনের। মাহিনের খুব কাছের বন্ধু অভি ও তার বন্ধুরা দাঁড়িয়ে আছে। তবে কি জয়ীতাকে অভি... ওতো আমাকে বলতে পারতো। আচ্ছা জয়ীতাও কি...কয়েকটা দিন আমাকে দূর থেকে ফলো করতে হবে।
মন্দীর কোরাস করে সামনে আগায় ওরা। ভয়ে দুরু দুরু কাঁপছে মাহিনের বুক। মনে মনে বলছে মেয়েটার জন্য আজ জোর বাঁচা বেঁচে গেলাম।কিন্তু হাসপাতালে মুমুর্ষ রোগী...
পাতা ডাক দেয়- ভাইয়া ও ভাইয়া আপনের মোবাই্ল বাজতাছে আপনি বুঝবার পারতাছেন না?
মাহিন- ফোন বাজছে কই নাতো।
বলে প্যান্টের পকেটে হাত দেয় মাহিন। -সর্বনাশ আমি কখন মোবাইল সাইলেন্ট করেছি আমার তো খেয়ালই নেই। এত্তগুলো ফোন এসেছে। না জানি কী জরুরী ফোন ছিলো।
আবার বেজে ওঠে ফোন।
মাহিন- হ্যালো।
অপর প্রান্ত- হ্যালো কোথায় তুই? এতো ফোন দিচ্ছি তবু ফোন ধরছিস না কেন?
মাহিন- এই তো পথে আছি, ফোন সাইলেন্ট ছিলো, কেন কি হয়েছে?
অপর প্রান্ত- শোন আমার ভাবী খুব আসুস্থ। ভাবীর বাচ্চা হবে সিজার করা লাগবে ওটিতে ভাবী। রক্তের প্রয়োজন ভাবীর গ্রুপের রক্ত পাচ্ছি না যা আছে তোর শরীরে...
মাহিন-ঠিক আছে কোথায় তোরা এখন?
অপর প্রান্ত- হাসপাতালে।
চমকে ওঠে মাহিন। মেয়েটা তো আমাকে এই কথাটাও বলেছিলো। দুইটা প্রমান তো পেলাম। কালই বন্ধুদের সাথে আলাপ করতেই হবে বাঁচাতে হবে পাকুইড় গাছটি। আমাদের খেলার মত মাঠ কোথাও নেই এটাও যদি বেদখল হয়ে যায় কোথায় একটু খেলাধুলা করব আমরা। পাখিগুলো বা যাবে কোথায়!
মাহিনের সাথে ওরা হাসপাতাল পর্যন্ত যায়।মানহিনের বন্ধু রাকেশ হাসপাতালের গেটেই দাঁড়ানো ছিলো।রাকেশ মাহিনকে চিনতেই পারেনা। রাকেশ আবার ফোন দেয়। মাহিন পাশে দাঁড়ানো। মাহিন বলে আরে এই গাধা ফোন দিচ্ছিস কেন? আমি তো তোর পাশেই দাঁড়ানো।
রাকেশ- আরে একি অবস্থা তোর। এমন কাঁদা মাটি মেখেছিস কেন? আমিত চিনতেই পারিনি তোকে।
মাহিন- আর বলিস না। ওরাই আমাকে এমন সাজিয়েছে। ওদের জন্য আজ জোর বাঁচা বেঁচে গেছি।এই যে ছেলেটাকে দেখছিস ওর নাম সাব্বির। আর এই মেয়েটার নাম পাতা। কোথয় কি হচ্ছে পাতা আগেই বলেদিতে পারে। আমারই তো এখন হাসপাতালে থাকার কথা ছিলো। জানিস আজ এই মেয়েটি আমাকে বাঁচিয়েছে। পথে অভি ওর সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে অপেক্ষায় ছিলো আমাকে মারার জন্য।
রাকেশ- অবাক হয়ে বলে বলিস কি?ও কেন তোকে মারতে চায়।
মাহিন- জানিনা তবে আমার মনে হয় ও জয়ীতাকে ভালোবাসে। আর তাই ...
রাকেশ- হতে পারে। তাই বলে...আচ্ছা তুই ঠিক বলছিস তো?
মাহিন- হুম ঠিকই বলছি এই যে তোর ভাবীকে রক্ত দিতে হবে এটাও ও বলেছিলো। তাই আমরা এদিকে আসছিলাম।
রাকেশ- আরে অবাক বিষয় তো।
মাহিন- চল আগে রক্ত দিয়ে আসি তোর সাথে আরো কথা আছে। তো বন্ধুরা অনেক ধন্যবাদ তোমাদের কাল আবার দেখা হবে ঈনশাআল্লাহ।
সামনে পা বাড়ায় মাহিন আর রাকেশ। সাব্বির ডাক দেয়-ভাইজান আপনের জামা। হেসে উঠে মাহিন সাব্বিরের মুখে আদর করে। চলে যায় পাতা কুড়ানির দল।মাহিন রাকেশের ভাবীকে রক্ত দিয়ে রাকেশকে সব খুলে বলে।রাকেশ বলে এত ভীষন ভাবনার বিষয়। কিন্তু কে শুনবে আমাদের কথা। কি ভাবে বাঁধা দিব আমরা?
ভাবছি কাল বন্ধুদের নিয়ে একটা মিটিংএ বসবো কিছু একটা সমাধান তো বের হবেই।
রাকেশ-হুম তা ঠিক।চল তোকে এগিয়ে দিয়ে আসি। শয়তানগুলো কোথাও ওৎ পেতে বসে আছে কিনা কে জানে।
মাহিন-অসম্ভব কিছু না। মেয়েটি বলেছিলো বাসার কাউকে খবর দিতে। তোরা যখন এগিয়ে দিয়ে আসতে চাইচ্ছিস তখন আর বাড়ি খবর দিলাম না।
কলেজ পড়ুয়ে ছেলে ফয়সাল আহমেদ মাহিন এসে হাজির হয় ওদের মাঝ। সাব্বির তুমি বলেছ তোমার বন্ধুদের।
সাব্বির- ছেলামালেকুম ভাইজান।ভাইজান আপনে আইসা পড়ছেন? না ভাইজান কাউরে কই নাই।
মাহিন- এইটা তুমি কেমন করে সালাম দিচ্ছ সাব্বির? বলো আসসালামুআলাইকুম
সাব্বিস-আস আস আসসা আসসা
মাহিম- কি হলো, তোললাচ্ছ কেন? হচ্ছেতো বলো আসসালামুআলাইকুম।
সাব্বির ঢোক গিলতে গিলতে বলে আস সা লা মু আ লা ই কুউউউম। যেন দাঁত ভেঙ্গে যেতে থাকে ওর।
মাহিন- গুড, এই তো হয়েছে। আরো চেষ্টা করো দেখো পারবে তুমি। এখন বলো কাউকে বলো নাই কেন?
সাব্বির-কবারই তো চাইছিলাম। কিন্তু কেমনে কমু। ওই যে পাতা ওই তোই সব গন্ডুগলটা পাকাইলো।
মাহিন- কেন পাতা আমার কি করলো?
সাব্বির- ও কয় এই পাকুইড় গাছডা কারা জানি কাইটা ফালাইব।
মাহিন- বলো কি কারা কেটে ফেলবে?
সাব্বির- জানিনা তয় পাতায় যদি কইতে পারে। অয় মাঝে মাঝে এমন দুই একখান কতা কয় না ভাইজান সব অক্ষরে অক্ষরে খাইটা যায়।
মাহিন-তাই নাকি দেখি দেখি সরতো আমি একটু যাই ওর কাছে।
সবাইকে সরিয়ে দিয়ে মাহিন পাতার কাছে যায়।পাতার পাশে বসে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে-পাতা কি হয়েছে তোমার বোন, আমাকে খুলে বলো তো।
পাতা-আপনে ক্যাডা?
মাহিন- আমি মাহিন, আমি এখন থেকে রোজ এই টাইমে এই পাকুড় গাছের নিচে তোমাদের লেখা পড়া শেখাব। আমাকে ভাইয়া বলে ডেকো কেমন।
পাতা- জ্বে ভাইয়া আমরাও লেখাপড়া শিখবার মন চাই কিন্তু এই পাকুইড় কাছের নিচে আপনে কেমনে শিখাইবেন। আমার বন্ধুরে তো কাইটা ফালাব।
মাহিন- হ্যা সাব্বিরও এই কথা বলছিলো কিন্তু কে কাটবে এই পাকুইড় গাছ? কেন কাটবে?
পাতা-ভাইয়া, কারা জানি এই হানে বস্ত বড় বেল্ডিং বানাইব।আরো কি সব বানাইব বন্ধুরে কাইটা ফালাইব।
মাহিন- বিল্ডিং বানাবে! কারা বানাবে? এটা তো সরকারের জায়গা।এই গাছটাও সরকারের।
পাতা- সামনের সাত দিনের ভিতরে ঘটব এই ঘটনা।
মাহিন- বলো কী? তুমি তাও বলতে পারছ? আর কি বলতে পার তুমি?
পাতা- ভাইজান গাছটা কাটা হইব নিশি রাইতে। যহন সব মানুষ ঘুমাইয়া থাকব।গাছ কাটার কিছু দিনের মাথায় এই হানে বিশাল বিশাল ম্যশিং আইনা কি সব জানি করব।
মাহিন-চিন্তার বিষয়। আচ্ছা এ নিয়ে আমি আমার বন্ধুদের মাঝে আলাপ করব দেখি কি করা যায়। তোমার কথা যদি সত্যি হয় তবে তার জন্য তো আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। এখন চলো ওখানটায় গিয়ে বসি।
পাতা তুমি এখানে বসো সাব্বির এখান। তোমরা সবাই গোল হয়ে বসো। এবং সবাই সবার নামটা বলো।
ওরা গোল হয়ে বসে একে একে বলতে থাকে। আমার নাম পাপড়ী, আমি পরাগ,আমি মরিয়ম,আমি রেদুয়ান, আমি... এভাবে একে একে সবাই সবার নাম বলার পর্ব শেষ করে।
মাহিন বলে- খুব সুন্দর তোমাদ নাম। আমি আজ তোমাদের সাথে পরিচিত হলাম কাল থেকে ক্লাস শুরু কেমন আজ উঠি তাহলে।হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ে সবাই। সামনে পা বাড়ায় মাহিন। পাতা পেছন থেকে ডাক দেয়- ভাইয়া ও ভাইয়া খা্রান
মাহিন- কি হয়েছে পাতা থামালে কেন?
পাতা- কারা জানি আপনারে খুঁজতাছে, আপনি এই ভাবে জাইয়েন না।
মাহিন- এই ভাবে জাবো না? তো কি ভাবে যাব?
পাতা- আপনের চেহারা পালটাইতে হইবো।
মাহিন-চেহারা পালটাব কিন্তু কি ভাবে এবং কেন?
পাতা-কয়েকটা পোলা আপনেরে মারতে চায়। চেহারা পালটাইলে আপনেরে চিনতে পারবো না ওরা, তাই মারতেও পারবোনা।
মাহিন হেসে বলে আমাকে মারতে কারা মারবে আমাকে?
পাতা- ৫/৬ ডা পোলা, তারাও আপনের মত কলেজে পড়ে তয় তারা খুব খারাপ।
মাহিন- কিন্তু তারা আমাকে কেন মারবে? আমি তো কোনো অপরাধ করিনাই।
পাতা-করছেন ভাইয়া।
মাহিন- করেছি কই আমার তো মনে পড়ছে না।
পাতা-ভাইয়া আপন এডডা মাইয়ারে ভালোপান।
অবাক হয়ে যায় মাহিন। আমি যে জয়ীতাকে পছন্দ করি তা ও জানলো কেমন করে। বিষয়টা তো খতাতে হয়। পাতা বলেই চলে এই মাইয়ারে আর এডডা পোলায় ভালোপায় হেই পোলায় তার বন্ধুদের লইয়া বইসা আছে। আপনে জামা খুইলা ফালান আমরা আপনের গায় মাথায় ধুলি কাঁদা মাখাইয়া আমাগো মত চেহারা বানাইয়া দিমু।
মাহিন- কিন্তু...
পাতা- আমি জানি আপনের ঘেণ্যা করবো তবু কইতাছি
মাহিন- হুম ঠিক আছে শুনি তোমার কথা দেখি কেমন লাগে।
পাতা- ভাইয়া আমরা আপনেরে হাসপাতাল পর্যন্ত আগাইয়া দিয়া আসমুনি।
মাহিন-হাসপাতালে কেন?
পাতা-ওই হানে একটা রোগী আইবো তার রক্তের দরকার হইবো তার যে রক্ত আপনের গায়ে সেই রক্ত। আর যারা আমনেরে মারতে চায় তারাও হেই পথেই আছে আমি ঈশারায় হ্যাগোরে দেহাইয়া দিমুনি। আপনে তাগোরে চিনতেও পারেন।
মাহিন- আচ্ছা ঠিক আছে।
পাতা- আপনে কি আপনার বাড়িতে খবর দিবার পারবেন? কেউ আইসা আগাইয়া নিয়া যাক।
মাহিন- হুম তা পারব।
মাহিকে কাঁদা মাটি মাখিয়ে পাতাকুড়ানী দলের একজন সাজিয়ে নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে ওরা। কিছু পথ যেতেই একটা মন্দীর বাধে সামনে। মন্দীরের পাশে দাঁড়িয়ে চার পাঁচটি ছেলে। হাতে তাদের হকিস্টিক। পাতা মাহিনের হাত ধরাই ছিলো সে টান দেয় । মাহিন পাতার দিকে তাকায়। পাতা ঈশারা করে।ছেলেগুলোকে চিনতে এতটুকু কষ্ট হয় না মাহিনের। মাহিনের খুব কাছের বন্ধু অভি ও তার বন্ধুরা দাঁড়িয়ে আছে। তবে কি জয়ীতাকে অভি... ওতো আমাকে বলতে পারতো। আচ্ছা জয়ীতাও কি...কয়েকটা দিন আমাকে দূর থেকে ফলো করতে হবে।
মন্দীর কোরাস করে সামনে আগায় ওরা। ভয়ে দুরু দুরু কাঁপছে মাহিনের বুক। মনে মনে বলছে মেয়েটার জন্য আজ জোর বাঁচা বেঁচে গেলাম।কিন্তু হাসপাতালে মুমুর্ষ রোগী...
পাতা ডাক দেয়- ভাইয়া ও ভাইয়া আপনের মোবাই্ল বাজতাছে আপনি বুঝবার পারতাছেন না?
মাহিন- ফোন বাজছে কই নাতো।
বলে প্যান্টের পকেটে হাত দেয় মাহিন। -সর্বনাশ আমি কখন মোবাইল সাইলেন্ট করেছি আমার তো খেয়ালই নেই। এত্তগুলো ফোন এসেছে। না জানি কী জরুরী ফোন ছিলো।
আবার বেজে ওঠে ফোন।
মাহিন- হ্যালো।
অপর প্রান্ত- হ্যালো কোথায় তুই? এতো ফোন দিচ্ছি তবু ফোন ধরছিস না কেন?
মাহিন- এই তো পথে আছি, ফোন সাইলেন্ট ছিলো, কেন কি হয়েছে?
অপর প্রান্ত- শোন আমার ভাবী খুব আসুস্থ। ভাবীর বাচ্চা হবে সিজার করা লাগবে ওটিতে ভাবী। রক্তের প্রয়োজন ভাবীর গ্রুপের রক্ত পাচ্ছি না যা আছে তোর শরীরে...
মাহিন-ঠিক আছে কোথায় তোরা এখন?
অপর প্রান্ত- হাসপাতালে।
চমকে ওঠে মাহিন। মেয়েটা তো আমাকে এই কথাটাও বলেছিলো। দুইটা প্রমান তো পেলাম। কালই বন্ধুদের সাথে আলাপ করতেই হবে বাঁচাতে হবে পাকুইড় গাছটি। আমাদের খেলার মত মাঠ কোথাও নেই এটাও যদি বেদখল হয়ে যায় কোথায় একটু খেলাধুলা করব আমরা। পাখিগুলো বা যাবে কোথায়!
মাহিনের সাথে ওরা হাসপাতাল পর্যন্ত যায়।মানহিনের বন্ধু রাকেশ হাসপাতালের গেটেই দাঁড়ানো ছিলো।রাকেশ মাহিনকে চিনতেই পারেনা। রাকেশ আবার ফোন দেয়। মাহিন পাশে দাঁড়ানো। মাহিন বলে আরে এই গাধা ফোন দিচ্ছিস কেন? আমি তো তোর পাশেই দাঁড়ানো।
রাকেশ- আরে একি অবস্থা তোর। এমন কাঁদা মাটি মেখেছিস কেন? আমিত চিনতেই পারিনি তোকে।
মাহিন- আর বলিস না। ওরাই আমাকে এমন সাজিয়েছে। ওদের জন্য আজ জোর বাঁচা বেঁচে গেছি।এই যে ছেলেটাকে দেখছিস ওর নাম সাব্বির। আর এই মেয়েটার নাম পাতা। কোথয় কি হচ্ছে পাতা আগেই বলেদিতে পারে। আমারই তো এখন হাসপাতালে থাকার কথা ছিলো। জানিস আজ এই মেয়েটি আমাকে বাঁচিয়েছে। পথে অভি ওর সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে অপেক্ষায় ছিলো আমাকে মারার জন্য।
রাকেশ- অবাক হয়ে বলে বলিস কি?ও কেন তোকে মারতে চায়।
মাহিন- জানিনা তবে আমার মনে হয় ও জয়ীতাকে ভালোবাসে। আর তাই ...
রাকেশ- হতে পারে। তাই বলে...আচ্ছা তুই ঠিক বলছিস তো?
মাহিন- হুম ঠিকই বলছি এই যে তোর ভাবীকে রক্ত দিতে হবে এটাও ও বলেছিলো। তাই আমরা এদিকে আসছিলাম।
রাকেশ- আরে অবাক বিষয় তো।
মাহিন- চল আগে রক্ত দিয়ে আসি তোর সাথে আরো কথা আছে। তো বন্ধুরা অনেক ধন্যবাদ তোমাদের কাল আবার দেখা হবে ঈনশাআল্লাহ।
সামনে পা বাড়ায় মাহিন আর রাকেশ। সাব্বির ডাক দেয়-ভাইজান আপনের জামা। হেসে উঠে মাহিন সাব্বিরের মুখে আদর করে। চলে যায় পাতা কুড়ানির দল।মাহিন রাকেশের ভাবীকে রক্ত দিয়ে রাকেশকে সব খুলে বলে।রাকেশ বলে এত ভীষন ভাবনার বিষয়। কিন্তু কে শুনবে আমাদের কথা। কি ভাবে বাঁধা দিব আমরা?
ভাবছি কাল বন্ধুদের নিয়ে একটা মিটিংএ বসবো কিছু একটা সমাধান তো বের হবেই।
রাকেশ-হুম তা ঠিক।চল তোকে এগিয়ে দিয়ে আসি। শয়তানগুলো কোথাও ওৎ পেতে বসে আছে কিনা কে জানে।
মাহিন-অসম্ভব কিছু না। মেয়েটি বলেছিলো বাসার কাউকে খবর দিতে। তোরা যখন এগিয়ে দিয়ে আসতে চাইচ্ছিস তখন আর বাড়ি খবর দিলাম না।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মহঃ ইসরাফিল সেখ ০২/০৬/২০১৭Great
-
আব্দুল হক ১২/০৮/২০১৬good
-
কষ্টের ফেরিওলা ১৪/০৭/২০১৬ভালো হ্য়েছে
-
শাওন মুহাম্মদ ১৯/০৫/২০১৬Nice
-
স্বপ্নীল মিহান ১২/০৫/২০১৬ভালো লাগল।
-
আজকের চাকরির বাজার বিডি.কম ১২/০৫/২০১৬দারুন!!
-
একরামুল হক ১১/০৫/২০১৬সুন্দর
-
পরশ ১০/০৫/২০১৬ভাল
-
অঙ্কুর মজুমদার ০৯/০৫/২০১৬সুন্দর
-
পরশ ০৭/০৫/২০১৬সুন্দর
-
পরশ ০৬/০৫/২০১৬ভাল হইছে