আইসেন না আইসেন না বৈশাখ(রম্য রচনা)
১.
কেরামত মিয়া - নামের সাথে তার কামের কোন মিল নাই। বাস্তব জীবনে কিনি কোন কেরামতিই দেখাতে পারেন না। শুধুই মানুষের কেরামতি দেখেন আর মাথার চুল ছিঁড়েন। একবার তো নিজের মাথার চুল ছিঁড়তে গিয়ে অন্যের মাথার চুল ছিঁড়ে সে এক লম্বা কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
কয়েকদিন পরেই পহেলা বৈশাখ, শুভ নববর্ষ। নববর্ষকে বরণ নিয়ে মানুষের যে কাণ্ড তাতে কেরামত নববর্ষে শুভর চেয়ে অশুভর ইঙ্গিত পান বেশী। কেরামত মাছ বাজারের সামনে বসে চিন্তা করছে বৈশাখ এলেই ইলিশ নিয়ে হাহাকার শুরু হয়ে যায়। সে যুগে জীবনানন্দ হাহাকার করে বলেছিলেন, হায় চিল! সোনালি ডানার চিল। এ যুগে আমরা হাহাকার করে বলি, হায় ইলিশ! বৈশাখী উত্সবের ইলিশ! সত্যিই ইলিশ এখন হাহাকারের অপর নাম। ইলিশের বাজারে এমন আগুনই লেগেছে যে পুঁটি সাইজের ইলিশ মাছ কেনার ক্ষমতাও এখন আমজনতার নেই। কেরামত দেখলো কয়েকজন লোক এক সাথে ঘুরছে তাদের মধ্যে একজনের পেট বেশ মোটাসোটা । কেরামত মনে করলো কোন বড় লোক হবে হয়তো । সাথে যারা তারা সাঙ্গপাঙ্গ কিংবা বডিগার্ড টাইপের কেহ হবে হয়তো। পরে জানতে পারলেনন লোকগুলো তার বডিগার্ড নয়। দাম আকাশছোঁয়া বলে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তারা ছয়জন মিইল্যা শেয়ারে বর ইলিশটা কিইন্যা মাছের সাথে সেলফি দিয়ে ফেসবুকে পিক ডাউনলোড দিতে চাইতেছে।কিন্তু ইলিশ মাছের দাম আকাশ ছোঁয়া তাই ঐ গ্রুপের আর ইলিশ কেনা হলো না। কেরামত কেরামতির স্বরে বললো আরে ভাই সিলভার কার্প মাছ একটা কিন্না নিয়া যান।বাড়িওয়ালীকে বলবেন এটাই আসল ইলিশ।যে কথা সে কাজ। কেরামতের পরামর্শ মতো মোটা লোকটা একটা সিলভার কার্প নিয়া বাড়ি গেল। মাছ দেখে গিন্নি বললো-এই শোন, আমার কাছে তো এটাকে ইলিশ মাছ বলে মনে হচ্ছে না। ওগো সত্যি করে বলো তো এটা কি ইলিশ মাছ নাকি অন্য কোনো মাছ।লোকটি বললো- এটাতো টাটকা ইলিশ।চিনবা কেমন কইরা, সারা জীবন তো ফরমালিন দেওয়া ইলিশ মাছ খাইছ। আসল ইলিশ তো খাও নাই। তোমার জন্য এইবারের বৈশাখে ডাইরেক্ট চাঁদপুর থেকে এই টাটকা ইলিশ মাছ আনাইলাম, বুঝছ! মোটাসোটা লোকটার আলাভোলা মার্কা বিবি সাহেবান তার কথা বিশ্বাস করিল ফলে এ যাত্রায় পান্তা ইলিশ খাওয়ার স্বাদ পূরণ হইলো।
২.
কেরামত কাঁচা বাজার থেকে বের হয়ে একটি খালি মাঠের সামনে এসে উদাস হয়ে বসে রইলো আর ভাবতে থাকলো তার বুদ্ধিমত(?) সিলভার কিনে লোকটির কি দশা হয়েছে। ভাল নাকি দফারফা? ভাবতে ভাবতে দেখতে ফেল তার সামনে দিয়ে যাচ্ছে ইয়োইয়ো টাইপের এলাকার বড়ভাই সামস(নিজের দেয়া নাম।মা বাবার দেয়া নাম সামছু)।কেরামত ডাক দিল বড় ভাই একটু দাঁড়ান। কথা আছে-
কেরামত :একটা খবর শুনলাম।
সামছু :কান যেহেতু আছে, খবর তো শুনবাই।
কেরামত :ভাই, খবরটা আপনার ব্যাপারে।
সামছু:কী খবর কও দেখি।
কেরামত :আপনি নাকি পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিবেন?
সামছু :হ, ঠিকই শুনছ।
কেরামত:তা কিসের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিবেন?
সামছু:আমি গোটা কয়েকজন লোক নিয়োগ দিমু।
কেরামত:লোক নিয়োগ দিবেন! কিন্তু কেন?
সামছু:তারা পহেলা বৈশাখে সারাদিন আমার লগে লগে থাকব।
কেরামত :বুঝলাম। কিন্তু কেন ভাই?
সামছু :আসলে পহেলা বৈশাখে আমি লুঙ্গি পরমু তো! তাই কয়েকজন লোক লগে থাকলে ভালো। কখন আবার খুইলা পড়ে। আমি আসলে কোনো ঝুঁকি নিতাম চাই না।
কেরামত: এত কষ্ট কইরা একদিনের বাঙালী হওনের কি কোন দরকার আছে? গরীবের সাথে মস্করা।
এসব চিন্তা করতে করতে আবার সামনের দিকে হাঁটা শুরু করলো। আর চিৎকার করে এসবের জন্য বৈশাখ আসার দরকার নেই। আইসেন না আইসেন না বৈশাখ!
কেরামত মিয়া - নামের সাথে তার কামের কোন মিল নাই। বাস্তব জীবনে কিনি কোন কেরামতিই দেখাতে পারেন না। শুধুই মানুষের কেরামতি দেখেন আর মাথার চুল ছিঁড়েন। একবার তো নিজের মাথার চুল ছিঁড়তে গিয়ে অন্যের মাথার চুল ছিঁড়ে সে এক লম্বা কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
কয়েকদিন পরেই পহেলা বৈশাখ, শুভ নববর্ষ। নববর্ষকে বরণ নিয়ে মানুষের যে কাণ্ড তাতে কেরামত নববর্ষে শুভর চেয়ে অশুভর ইঙ্গিত পান বেশী। কেরামত মাছ বাজারের সামনে বসে চিন্তা করছে বৈশাখ এলেই ইলিশ নিয়ে হাহাকার শুরু হয়ে যায়। সে যুগে জীবনানন্দ হাহাকার করে বলেছিলেন, হায় চিল! সোনালি ডানার চিল। এ যুগে আমরা হাহাকার করে বলি, হায় ইলিশ! বৈশাখী উত্সবের ইলিশ! সত্যিই ইলিশ এখন হাহাকারের অপর নাম। ইলিশের বাজারে এমন আগুনই লেগেছে যে পুঁটি সাইজের ইলিশ মাছ কেনার ক্ষমতাও এখন আমজনতার নেই। কেরামত দেখলো কয়েকজন লোক এক সাথে ঘুরছে তাদের মধ্যে একজনের পেট বেশ মোটাসোটা । কেরামত মনে করলো কোন বড় লোক হবে হয়তো । সাথে যারা তারা সাঙ্গপাঙ্গ কিংবা বডিগার্ড টাইপের কেহ হবে হয়তো। পরে জানতে পারলেনন লোকগুলো তার বডিগার্ড নয়। দাম আকাশছোঁয়া বলে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তারা ছয়জন মিইল্যা শেয়ারে বর ইলিশটা কিইন্যা মাছের সাথে সেলফি দিয়ে ফেসবুকে পিক ডাউনলোড দিতে চাইতেছে।কিন্তু ইলিশ মাছের দাম আকাশ ছোঁয়া তাই ঐ গ্রুপের আর ইলিশ কেনা হলো না। কেরামত কেরামতির স্বরে বললো আরে ভাই সিলভার কার্প মাছ একটা কিন্না নিয়া যান।বাড়িওয়ালীকে বলবেন এটাই আসল ইলিশ।যে কথা সে কাজ। কেরামতের পরামর্শ মতো মোটা লোকটা একটা সিলভার কার্প নিয়া বাড়ি গেল। মাছ দেখে গিন্নি বললো-এই শোন, আমার কাছে তো এটাকে ইলিশ মাছ বলে মনে হচ্ছে না। ওগো সত্যি করে বলো তো এটা কি ইলিশ মাছ নাকি অন্য কোনো মাছ।লোকটি বললো- এটাতো টাটকা ইলিশ।চিনবা কেমন কইরা, সারা জীবন তো ফরমালিন দেওয়া ইলিশ মাছ খাইছ। আসল ইলিশ তো খাও নাই। তোমার জন্য এইবারের বৈশাখে ডাইরেক্ট চাঁদপুর থেকে এই টাটকা ইলিশ মাছ আনাইলাম, বুঝছ! মোটাসোটা লোকটার আলাভোলা মার্কা বিবি সাহেবান তার কথা বিশ্বাস করিল ফলে এ যাত্রায় পান্তা ইলিশ খাওয়ার স্বাদ পূরণ হইলো।
২.
কেরামত কাঁচা বাজার থেকে বের হয়ে একটি খালি মাঠের সামনে এসে উদাস হয়ে বসে রইলো আর ভাবতে থাকলো তার বুদ্ধিমত(?) সিলভার কিনে লোকটির কি দশা হয়েছে। ভাল নাকি দফারফা? ভাবতে ভাবতে দেখতে ফেল তার সামনে দিয়ে যাচ্ছে ইয়োইয়ো টাইপের এলাকার বড়ভাই সামস(নিজের দেয়া নাম।মা বাবার দেয়া নাম সামছু)।কেরামত ডাক দিল বড় ভাই একটু দাঁড়ান। কথা আছে-
কেরামত :একটা খবর শুনলাম।
সামছু :কান যেহেতু আছে, খবর তো শুনবাই।
কেরামত :ভাই, খবরটা আপনার ব্যাপারে।
সামছু:কী খবর কও দেখি।
কেরামত :আপনি নাকি পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিবেন?
সামছু :হ, ঠিকই শুনছ।
কেরামত:তা কিসের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিবেন?
সামছু:আমি গোটা কয়েকজন লোক নিয়োগ দিমু।
কেরামত:লোক নিয়োগ দিবেন! কিন্তু কেন?
সামছু:তারা পহেলা বৈশাখে সারাদিন আমার লগে লগে থাকব।
কেরামত :বুঝলাম। কিন্তু কেন ভাই?
সামছু :আসলে পহেলা বৈশাখে আমি লুঙ্গি পরমু তো! তাই কয়েকজন লোক লগে থাকলে ভালো। কখন আবার খুইলা পড়ে। আমি আসলে কোনো ঝুঁকি নিতাম চাই না।
কেরামত: এত কষ্ট কইরা একদিনের বাঙালী হওনের কি কোন দরকার আছে? গরীবের সাথে মস্করা।
এসব চিন্তা করতে করতে আবার সামনের দিকে হাঁটা শুরু করলো। আর চিৎকার করে এসবের জন্য বৈশাখ আসার দরকার নেই। আইসেন না আইসেন না বৈশাখ!
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মধু মঙ্গল সিনহা ১৪/০৪/২০১৭অনেক শুভ কামনা।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ১৩/০৪/২০১৭আমাদের বৈশাখ আসবে, যাবে, থাকবে। আমরা সাধ্যমতো আনন্দ করবো। জোর করে ফুর্তির প্রয়োজন নাই।